ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা হবে বলে জানিয়ে দিল অ্যামেরিকা, জার্মানি, ইটালি, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্য।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কথা বলবেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুটিনের সঙ্গে। তার আগে সোমবার অ্যামেরিকা, জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও ইটালি সারাদিন ধরে ইউক্রেন নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করলো। এই পশ্চিমা দেশগুলি ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং জানিয়ে দিয়েছে, রাশিয়ার আগ্রাসন তারা মানবে না।
গত সপ্তাহে মার্কিন মিডিয়ার রিপোর্ট ছিল, গোয়েন্দারা মনে করছেন, রাশিয়া এবার ইউক্রেন আক্রমণ করবে। তারা সেজন্যই এক লাখ ৭৫ হাজার সেনা সমাবেশ করেছে।
শীর্ষ নেতারা আলোচনায়
অ্যামেরিকার সেক্রেটারি অফ স্টেট অ্যান্টনি ব্লিংকেন সোমবার ইউক্রেনের প্রেসিডন্টের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানিয়ে দেন, ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব বজায় রাখতে অ্যামেরিকা সব ধরনের সাহায্য করবে। রাশিয়ার আগ্রাসন তারা মানবে না।
উত্তেজনার মধ্যেই রাশিয়ার সামরিক মহড়া শুরু
03:27
পরে মার্কিন প্রেসিডেন্টের অফিস এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর অফিস জানিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যায় অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট বাইডেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, জার্মানির চ্যান্সেলার ম্যার্কেল, ইটালির প্রধানমন্ত্রী দ্রাঘি ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ ইউক্রেনের পরিস্থিতি নিয়ে ফোনে কথা বলেছেন।
বরিস জনসনের মুখপাত্র জানিয়েছেন, নেতারা ইউক্রেনের প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন এবং রাশিয়াকে উত্তেজনা কমাবার কথা বলেছেন।
মাক্রোঁর অফিস জানিয়েছে, ইউরোপে শান্তি ও সুরক্ষা বজায় রাখতে নেতারা তাদের দায়বদ্ধতার কথা জানিয়েছেন।
কৃষ্ণসাগরে বৃহত্তম নৌ-মহড়া
অ্যামেরিকার নেতৃত্বে কৃষ্ণসাগরে বিশ্বের সব চেয়ে বড় নৌ-মহড়া শুরু হয়েছে। সমালোচনায় রাশিয়া।
ছবি: Konstantin Sazonchik/dpa/picture alliance
যুক্তরাজ্যের জাহাজ
গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের একটি নৌ সেনার জাহাজকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল রাশিয়া। রাশিয়ার দাবি, জাহাজটি বেআইনি ভাবে তাদের সীমান্তে ঢুকে পড়েছিল, তাই ওয়ার্নিং ফায়ার করা হয়। জাহাজের রাস্তা ধরে বোমাবর্ষণও করা হয়।
ছবি: Ministry of Internal Affairs via REUTERS
যুক্তরাজ্যের দাবি
যুক্তরাজ্যের দাবি, তাদের জাহাজটি আইনভঙ্গ করেনি। ইউক্রেনের জলপথ দিয়ে জাহাজটি যাচ্ছিল। রাশিয়ার দাবি ভিত্তিহীন।
ছবি: Ben Mitchell/AP/picture alliance
ক্রিমিয়া সমস্যা
জাহাজটি আসলে ছিল ক্রিমিয়ার কাছে। রাশিয়া ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলে নেয়। আগে তা ছিল ইউক্রেনের। কিন্তু অ্যামেরিকা, যুক্তরাজ্য সহ একাধিক দেশ রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখলকে মান্যতা দেয় না। ফলে যুক্তরাজ্যের দাবি, ক্রিমিয়ার জলসীমা ইউক্রেনের। রাশিয়ার নয়।
ছবি: DW
মার্কিন হুমকি
যুক্তরাজ্যের সঙ্গে রাশিয়ার এই বিতর্কের মধ্যেই কৃষ্ণসাগরে বিশ্বের বৃহত্তম নৌ-মহড়ার আয়োজন করে বসেছে অ্যামেরিকা। এটাই রাশিয়াকে মার্কিন হুমকি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ছবি: Reuters/A. Perawongmetha
বিশাল আয়োজন
ছয়টি মহাদেশের ৩২ টি দেশ এই মহড়ায় অংশ নিয়েছে। ১৯৯৭ সাল থেকে কৃষ্ণসাগরে এই নৌ-মহড়া শুরু হয়েছে। তবে এবারের মহড়া সব চেয়ে বড়।
ছবি: Getty Images/AFP/STR
অসংখ্য জাহাজ
বিভিন্ন দেশের পাঁচ হাজার নৌ-সেনা, ৩২টি জাহাজ, ৪০টি বিমান এই মহড়ায় অংশ নিয়েছে। ১৮টি স্পেশাল অপারেশন ফোর্স যোগ দিয়েছে। সেখানে প্রশিক্ষিত ডাইভাররা আছেন।
ছবি: Getty Images/AFP/S. Maina
ইউক্রেনের ভূমিকা
নৌ-মহড়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ইউক্রেন। অ্যামেরিকার সঙ্গে তারাও এই মহড়ার আয়োজন করেছে। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে রাশিয়ার বিতর্কেও বিবৃতি দিয়েছে ইউক্রেন। জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের জাহাজ তাদের জলসীমায় ছিল।
নৌ-মহড়ার কড়া সমালোচনা করেছে পুটিন প্রশাসন। ক্রেমলিনের বক্তব্য, এই নৌ-মহড়া আসলে রাশিয়াকে খোঁচা দেওয়ার জন্য আয়োজন করা হয়েছে। প্রয়োজনে রাশিয়া জবাব দেবে।
ছবি: Sergei Karpukhin/TASS/dpa/picture alliance
ক্রিমিয়া নিয়ে রাশিয়া
ক্রিমিয়া নিয়েও রাশিয়া নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে। রাশিয়ার দাবি, ক্রিমিয়া রাশিয়ার অংশ। ফলে ওই অঞ্চলের জলও তাদের আওতাধীন। সেখান দিয়ে যাতায়াত করতে হলে রাশিয়ার অনুমতি নিতে হবে, ইউক্রেনের নয়। তবে কৃষ্ণসাগরের যে অংশ নৌ-মহড়ার আয়োজন হয়েছে, তার থেকে ক্রিমিয়ার দূরত্ব খুব বেশি নয়।
ছবি: DW
9 ছবি1 | 9
সিআইএ ডিরেক্টর উইলিয়াম বার্নস সোমবার বলেছেন, পুটিন সবসময় ঝুঁকি নিতে ভালোবাসেন। তিনি এই কথা মাথায় রাখছেন।