২০১৮ বিশ্বকাপের আয়োজক রাশিয়া৷ কিন্তু ইউক্রেনে মালয়েশীয় বিমান ভূপাতিত হওয়ার পর রাশিয়ার কাছ থেকে বিশ্বকাপ আয়োজনের অধিকার কেড়ে নেয়ার দাবি জানিয়েছেন জার্মানি, ইংল্যান্ড আর সুইডেনের কয়েকজন রাজনীতিবিদ৷
বিজ্ঞাপন
বুধবার জার্মানির হেসে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পেটার বয়েট বলেন, ‘‘(রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট) ভ্লাদিমির পুটিন যদি বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা তদন্তে সরাসরি অংশ না নেন তাহলে রাশিয়ায় বিশ্বকাপ আয়োজনের কথা অকল্পনীয়৷'' মালয়েশীয় বিমানটি রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে বিধ্বস্ত করেছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে৷ অথচ রুশ সরকার এর বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান না নিয়ে ইউক্রেন সংকট বৃদ্ধিতে ইন্ধন দিচ্ছে – এ অভিযোগ তুলে জার্মানির আরেক রক্ষণশীল সাংসদ মিশায়েল ফুক্স বলেছেন, রাশিয়ার কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে ২০১৮ বিশ্বকাপ আয়োজনের অধিকার জার্মানি, ফ্রান্স কিংবা ইটালিকে দেয়া হোক৷
বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের আগমন
লাখো ভক্তের অপেক্ষার অবসান হলো৷ দেশে ফিরেছে বিশ্বকাপ জয়ী জার্মান দল৷ বার্লিনের টেগেল বিমানবন্দরে লুফৎহানসার বিমান অবতরণের পর থেকে চলছে বিজয়ী সম্ভাষণ৷
ছবি: Reuters
ওই আসছে....
টেগেল বিমানবন্দরে জনসমুদ্র৷ কারো কারো আর তর সইছিল না৷ বিমানের দেখা পাওয়া মাত্রই তারকা খেলোয়াড়দের দেখতে হাতে দুরবিন তুলেন নেন তাঁরা৷ এখানে বিমানবন্দরে দর্শনার্থীদের টেরাসেই দুরবিন হাতে ব্যস্ত একজন৷
ছবি: ADAM BERRY/AFP/Getty Images
লুফৎহানসা হয়ে গেল ফ্যানহানসা
স্থানীয় সময় সকাল সোয়া দশটায় অবতরণ করে লুফৎহানসার বোয়িং ৭৪৭ বিমান৷ বিশেষ দিনে লুফৎহানসাও বিশ্বকাপজয়ী জার্মান দলের ফ্যান, অর্থাৎ ভক্ত৷ তাই বিমানের নামের জায়গায় লুফৎহানসা নয়, লেখা ছিল ফ্যানহানসা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সবার আগে অধিনায়ক
ফুটবলারদের বিমান থেকে নামিয়ে আনতে ব্যবহার করা হয় বিশেষ সিঁড়ি৷ বিশ্বকাপে জার্মানির চার সাফল্যের প্রতীক হিসেবে আঁকা ছিল চারটি তারকা৷ বিমানের গায়েও বড় বড় করে লেখা ১৯৫৪, ১৯৭৪, ১৯৯০ এবং ২০১৪৷ ২০১৪ বিশ্বকাপ জয়ের সুবাদে পাওয়া জুলে রিমে ট্রফির অনুরূপ ট্রফিটি নিয়ে বিমান থেকে প্রথমে নেমে আসেন অধিনায়ক ফিলিপ লাম, তাঁর পেছনেই জার্মানির পতাকা গায়ে সহ-অধিনায়ক বাস্তিয়ান শোয়াইনস্টাইগার৷
ছবি: Matthias Kern/Bongarts/Getty Images
বিজয় মঞ্চের দিকে যাত্রা
বিমান থেকে বাসে৷ ছাদখোলা বাসটির গায়েও লেখা ১৯৫৪, ১৯৭৪, ১৯৯০ এবং ২০১৪৷ ব্রাজিল থেকে সদ্য ফেরা দলটির খেলোয়াড়রা একে একে উঠলেন বাসে৷ ওঠার আগে সবাইকে পরিয়ে দেয়া হয় কালো টি-শার্ট৷ বিশ্বকাপ জয়ের স্মারক এই টি-শার্টগুলোর গায়ে লেখা #১, অর্থাৎ সবাই এক নম্বর৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ব্রান্ডেনবুর্গে অপেক্ষা
ব্রান্ডেনবুর্গ গেটে বিশাল মঞ্চকে ঘিরে অপেক্ষা করছে কয়েক হাজার ফুটবলভক্ত৷ ছেলে-বুড়ো, তরুণী-বৃদ্ধা সবাই এসেছেন বিশ্বকাপ জয়ীদের অভিনন্দন জানাতে৷ এই তরুণীকে আলাদাভাবেই ধরেছে ফটোগ্রাফারের ক্যামেরা৷
ছবি: ADAM BERRY/AFP/Getty Images
ভক্তের বিশ্বকাপ
জার্মান দলের দুই ভক্তের হাতেও ছিল বিশ্বকাপ ট্রফি৷ নকল হলেও তাঁদের ট্রফিটি কিন্তু আসলের তুলনায় বিশাল!
ছবি: picture-alliance/dpa
সমর্থক পরিবার
বিশ্বকাপ জয়ীদের সংবর্ধনা জানাতে ব্রান্ডেনবুর্গ গেটে ছিল ব্যাপক আয়োজন৷ নাচে-গানে মুখর চারপাশ৷ জার্মানির তারকা খেলোয়াড়দের কাছ থেকে দেখতে এক সমর্থক এসেছিলেন দুই সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে৷
ছবি: DW/B. Gräßler
তিন তরুণ
ব্রাজিল বিশ্বকাপে জার্মানির পুরো দলের পারফরম্যান্সই ছিল অসাধারণ৷ তবে শেষ হাসিটা ‘বিস্ময় বালক’ মারিও গ্যোটৎসের উপহার৷ তাঁর গোলেই আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে চতুর্থবারের মতো বিশ্বকাপ জিতেছে জার্মানি৷ এখানে গ্যোয়েটৎসের সঙ্গে টনি ক্রুস এবং শ্যুর্লে৷
ছবি: Reuters
ট্রফি হাতে বিশ্বজয়ীরা
হাজার হাজার সমর্থকের করতালি আর হর্ষধ্বনির মাঝে মঞ্চে উঠে আসেন জার্মান দলের খেলোয়াড়রা৷ শুরু হয় ট্রফি নিয়ে উল্লাস৷ জার্মানিতে আনন্দ-উল্লাস তো সবে শুরু৷ বিজয়ী বীরদের নিয়ে নানা আনুষ্ঠানিকতায় এ উল্লাস নিশ্চয়ই আরো কিছুদিন চলবে৷
ছবি: Reuters
9 ছবি1 | 9
ব্রিটেন আর সুইডেনেও উঠেছে একই দাবি৷ তবে ফিফা নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং জার্মান ফুটবল ফেডারেশন ডিএফবির সাবেক সভাপতি টেও সোয়ানসিগার মনে করেন রাশিয়ার কাছ থেকে বিশ্বকাপ আয়োজনের অধিকার কেড়ে নেয়ার দাবি জানানো ঠিক নয়৷ তাঁর মতে, ‘‘যে কোনো বিষয়ে খুব তাড়াতাড়ি ফিফার হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়৷ ক্রীড়াঙ্গনে বর্জনের পদক্ষেপ কখনোই কোনো সুফল বয়ে আনেনি৷ তাই আমি (রাশিয়ার কাছ থেকে বিশ্বকাপ আয়োজনের অধিকার কেড়ে নেয়ার) এই দাবিকে কোনো গুরুত্ব দিচ্ছিনা৷ বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব রাশিয়াকে দেয়া হয়ে গেছে, চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়ে গেছে – এখন এসব ভেবে কী লাভ!''
ব্রিটেনে বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে রাশিয়াকে এক হাত নেয়ার দাবি তুলেছেন রক্ষণশীল দলের সংসদ সদস্য ট্রেসি ক্রাউচ৷ কিন্তু জবাবে ব্রিটেনের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের বলেছেন, ‘‘রাশিয়ায় বিশ্বকাপ শুরু হতে এখনো চার বছর বাকি৷ দীর্ঘমেয়াদি চিন্তাভাবনা বাদ দিয়ে কেবল এক সপ্তাহের একটি ঘটনার ওপর ভিত্তি করে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া ঠিক হবে বলে আমি মনে করিনা৷''