রাশিয়ার দাবি, তারা রেডক্রস এবং জাতিসংঘকে পরিদর্শনের জন্য ডেকেছে। যদিও রেডক্রসের দাবি, তাদের ওই এলাকায় ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না।
বিজ্ঞাপন
পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়া আগেই দখল করেছিল ওলেনিভকা। ওলেনিভকা জেলে রাশিয়া ইউক্রেনের বহু যুদ্ধবন্দিকে আটকে রেখেছে বলে জানা গেছে। সেই জেলেই মিসাইল হামলা হয়। যার জেরে অন্তত ৫০ জন যুদ্ধবন্দির মৃত্যু হয়। আহত ৭৩ জন। রাশিয়ার মদতপুষ্ট দনেৎস্কের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের দাবি ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
অভিযোগ, মিসাইল হামলার ফলেই ওই ঘটনা ঘটেছে। রাশিয়ার দাবি, ইউক্রেন মিসাইল হামলা চালিয়েছিল। অন্যদিকে ইউক্রেনের দাবি রাশিয়া গোলাবর্ষণ করেছে। রেডক্রস এবং জাতিসংঘকে হস্তক্ষেপের অনুরোধ জানিয়েছে ইউক্রেন।
শনিবার রাতে রাশিয়া জানিয়েছে, তারা চিঠি দিয়ে ওই এলাকা পরিদর্শনের জন্য রেডক্রস এবং জাতিসংঘকে ডেকেছে। কিন্তু রোববার রেডক্রস জানিয়েছে, তাদের ওই এলাকা পরিদর্শনের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। রাশিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্তারা তাদের ঢুকতে দিচ্ছেন না।
পূর্ব ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনে পথের কাঁটা যারা
রুশ বাহিনী যেখানে অবস্থান করছে, সেখান থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে রয়েছেন ইউক্রেনের এই যোদ্ধারা৷ সম্ভাব্য পরিণতি হয়ত মৃত্যু–তা জেনেও শত্রুশিবিরকে রুখতে সবসময় প্রস্তুত তারা৷ বিশেষ এই ব্যাটেলিয়নের কথা জানুন ছবিঘরে৷
ছবি: Marko Djurica/REUTERS
স্নায়ুর জোর
কার্পেথিয়ান জিশ নামে এই ব্যাটেলিয়নের ফিল্ড কমান্ডার ডজভিন বলেন, ‘‘যাদের মন শক্ত, এখন তারাই যুদ্ধ করতে পারবেন৷ কঠিন এবং ভীতিকর এই যুদ্ধা’’ যুদ্ধক্ষেত্রে তার নাম ডজভিন অর্থাৎ এটি হলো ‘নম দে গেররে’৷ নিরাপত্তার কারণে নিজের আসল নাম গোপন রেখেছেন তিনি৷ তার মতো সব যোদ্ধাই জানেন কখনো না কখনো বিধ্বংসী সামরিক ট্যাঙ্কের মুখোমুখি হতে পারেন তারা৷ সম্প্রতি প্রায় অক্ষত ট্যাঙ্ক ‘পাকড়াও’ করা হয়েছে৷
ছবি: Marko Djurica/REUTERS
যীশুর ছবির সামনে
পূর্ব ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর অগ্রগতি রুখতে কার্পেথিয়ান জিশ সবসময় প্রস্তুত৷ রুশ সেনা মোকাবিলায় কিয়েভের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এগিয়ে এসেছিল ইউক্রেনীয় এবং বিদেশি নাগরিকদের এই ইউনিট৷ দেখা যাচ্ছে, যীশু খ্রিস্টের একটি ছবির সামনে হ্যান্ড গ্রেনেড রেখে দিয়েছেন তারা৷ তাদের চিন্তা রুশ ড্রোনগুলিকে নিয়ে৷ সেগুলিকে ‘কালো মেঘ’ বলছেন এই ব্যাটেলিয়নের যোদ্ধারা৷
ছবি: Marko Djurica/REUTERS
শত্রুদের ঠেকিয়ে রাখা
এই যোদ্ধারা বলছেন, তারা ইউক্রেনের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ৷ এ এক ভয়ঙ্কর প্রতিশ্রুতি৷ এতে তারা সবাই একসঙ্গে যুক্ত৷ এক যোদ্ধা বলেন, ‘‘গতকাল ভোররাতে একটা, দুইটা এবং চারটায় গোলাবর্ষণ করছিল ওরা, যাতে আমাদের ঘুম ভেঙে যায়৷ তবে আমাদের ইতিবাচক থাকতেই হবে৷’’ মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে এই ব্যাটেলিয়নের যোদ্ধারা সামরিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে পেরেছেন৷ ফলে সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা পাবেন তারা, পাবেন সেনা ভাতাও৷
ছবি: Marko Djurica/REUTERS
অবকাশ কোথায়?
রুশিন নামের এক যোদ্ধা (নিরাপত্তার কারণে আসল নাম প্রকাশ গোপন রাখা হয়েছে) কার্পেথিয়ান জিশ ব্যাটেলিয়নের কমান্ডার৷ ছবিতে দেখা যাচ্ছে তিনি সোফায় বসে রয়েছেন৷ কিন্তু অবসর মোটেও নেই তাদের৷এক যোদ্ধা বলেন, ‘‘আমাদের এখানে থাকার সম্ভাব্য পরিণতি আমরা সকলেই জানি এবং আমরা সবাই এর মধ্যেই শান্তি খুঁজে চলেছি৷’’
ছবি: Marko Djurica/REUTERS
মর্টার দিয়ে আক্রমণ
কার্পেথিয়ান ব্যাটেলিয়নের যোদ্ধারা পাল্টা আক্রমণ চালাচ্ছেন মর্টার দিয়ে৷ আলোকচিত্রীর ছবিতে ধরা পড়েছে এই দৃশ্য৷ প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সাহায্যের আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন অসংখ্য ইউক্রেনীয় এমনকি অনেক বিদেশি সহযোগীও৷ লিও নামের বছর তেত্রিশের এক তরুণবলেন, ‘‘আমি নাৎসি নই, আমি জাতীয়তাবাদী৷ রাশিয়ান ছাড়া সব জাতীয়তার, সব বর্ণের মানুষকে আমি সম্মান করি৷ রাশিয়ানরা শত্রু৷’’
ছবি: Marko Djurica/REUTERS
টার্গেট পুটিনের ছবি
নিজেদের শারীরিক ক্ষমতায় যাতে কোনোভাবেই মরচে না ধরে, তার জন্য শারীরিক কসরত চালিয়ে যাচ্ছেন নতুন যোগ দেয়া সদস্যরা৷ প্রতিকূল পরিবেশে মানিয়ে নিতে তারা প্রশিক্ষণ নেন৷ রুশ প্রেসিডেন্ট পুটিনের ছবি সামনে রেখে সেটিকে টার্গেট করে অনুশীলন করছেন যোদ্ধারা এমন ছবিও দেখা গিয়েছে৷ ডেনিস পোলিশচুক নামে এক যোদ্ধা বলেন, ‘‘ যুদ্ধের সময় তিনি কী করেছিলেন- সন্তানরা জানতে চাইলে তিনি বলতে পারবেন যে দায়িত্ব পালন করেছিলেন৷’’
ছবি: Marko Djurica/REUTERS
জরুরি চিকিৎসা ব্যবস্থা
কার্পেথিয়ান জিশ ব্যাটেলিয়নের চিকিৎসক এবং সদস্য দেখে নিচ্ছেন ঘাঁটিতে পর্যাপ্ত ওষুধ রয়েছে কি না৷ ছবিতে ধরা পড়েছে এই দৃশ্য৷ কনর নামে এক ব্রিটিশ স্বেচ্ছাসেবক এবং ফ্রন্টলাইনে কর্মরত সাবেক সেনা চিকিৎসক বলেন, ‘‘যত বেশি সময় যুদ্ধ চলবে, এটি ততই ক্লান্তিকর হয়ে উঠবে৷’’ আহত নারী, শিশু এবং যোদ্ধাদের পর্যাপ্ত চিকিৎসা সহায়তা পেতে ব্যর্থ হওয়ার ছবি দেখে ব্রিটেন থেকে ইউক্রেনের হয়ে লড়তে এসেছেন তিনি৷
ছবি: Marko Djurica/REUTERS
7 ছবি1 | 7
রোববার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার দৈনিক ভিডিওবার্তায় জানিয়েছেন, ওই ঘটনার জন্য রাশিয়া সম্পূর্ণভাবে দায়ী। ফের রাশিয়াকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বলে অভিহিত করে জেলেনস্কি বলেছেন, ''রাশিয়া একের পর এক যুদ্ধাপরাধ ঘটিয়ে চলেছে।''
সমস্ত আক্রমণের প্রত্যুত্তর
রোববার জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়ার সমস্ত আক্রমণের প্রত্যুত্তর দেবে ইউক্রেন। দক্ষিণ ইউক্রেনের মাইকোলাইভ শহরেও বোমাবর্ষণ করেছে রাশিয়া। সেখানে এক শস্য ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। এরই জেরে জেলেনস্কি জানিয়েছেন, সমস্ত আক্রমণের যোগ্য জবাব দেওয়া হবে।
রাশিয়ার সেনা পূর্ব ইউক্রেন থেকে দক্ষিণ ইউক্রেনের দিকে এখন অগ্রসর হচ্ছে। তারা খেরসন অঞ্চল পুনর্দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়া সফল হবে না। বস্তুত, গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দারা একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিলেন। সেখানে বলা হয়েছিল, রাশিয়া পূর্ব থেকে দক্ষিণ ইউক্রেনে সেনা সরাচ্ছে।
রাশিয়ার নৌসেনার জন্য হাইপারসনিক মিসাইল
আগামী মাসেই রাশিয়ার নৌসেনার হাতে হাইপারসনিক মিসাইল পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন। রোববার রাশিয়ার নৌসেনার বার্ষিক অনুষ্ঠান ছিল। সেখানেই একথা জানিয়েছেন তিনি। এই মিসাইল শব্দের চেয়ে পাঁচগুণ দ্রুত গতিতে লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে। ঘণ্টায় ছয় হাজার ২০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে। এই অস্ত্র হাতে এলেই অ্যাডমিরাল গরশকভ এই মিসাইল নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে পৌঁছাবেন বলে এদিন ঘোষণা করেছেন পুটিন।