জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পর অ্যাটর্নি জেনারেলকেও সম্ভবত হারাতে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ প্রশাসনের একাধিক ব্যক্তির রাশিয়ার সঙ্গে ‘অনৈতিক' যোগাযোগের অভিযোগ তীব্র হচ্ছে৷
বিজ্ঞাপন
নির্বাচনি প্রচারের সময় থেকে শুরু করে প্রেসিডেন্ট হবার পরেও রাশিয়ার ভূত কিছুতেই ট্রাম্পের ঘাড় থেকে নামছে না৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন প্রক্রিয়ার উপর কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের এমন অভূতপূর্ব প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ স্তিমিত হবার বদলে আরও বড় আকার ধারণ করছে৷ নির্বাচনি প্রচারের সময় থেকে ওয়াশিংটনে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়টি গোপন রাখার দায়ে এরই মধ্যে বিদায় নিতে হয়েছে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন-কে৷ এবার একই অভিযোগের মুখে পড়ছেন অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশনস৷ রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে যোগাযোগের কথা স্বীকার করলেও আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না৷
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, তিনি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে যোগাযোগের কথা জানতেন না বটে, তবে সেশনসের উপর তাঁর সম্পূর্ণ আস্থা আছে৷ ‘সম্পূর্ণ সৎ' এই মানুষটির বিরুদ্ধে বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক দলের বিষোদগারের তীব্র সমালোচনা করেছেন তিনি৷ উল্লেখ্য, বিরোধীরা সেশনসের পদত্যাগের পাশাপাশি ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারের সঙ্গে যুক্ত সব ব্যক্তির সঙ্গে মস্কোর যোগাযোগের অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করছে৷
এফবিআইসহ একাধিক মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এই অভিযোগের তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে৷ তাদের মতে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের সরাসরি নির্দেশে মার্কিন রাজনৈতিক জগতের উপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চলেছে৷ মার্কিন সংসদের ৪টি কমিটি এই অভিযোগ খতিয়ে দেখছে৷ তবে বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক দলের অনেকে মনে করছেন, বিষয়টি ধামাচাপা দেবার চেষ্টা চলছে৷
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত নিউ ইয়র্ক টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী, রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসলিয়াক গত ডিসেম্বর মাসে ট্রাম্প টাওয়ারে মাইকেল ফ্লিন ও ট্রাম্পের জামাই ও উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন৷ সেশনস তারও আগে, জুলাই ও সেপ্টেম্বর মাসে কিসলিয়াকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন৷ তবে তাঁর দাবি, প্রচার অভিযানের অংশ হিসেবে নয়, সাংসদ হিসেবেই তিনি বিশ্ব রাজনীতি সম্পর্কে রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা করেছেন৷
এসবি/এসিবি (এএফপি, ডিপিএ)
ট্রাম্পকে নিয়ে কার্টুন: না হেসে উপায় কী!
ট্রাম্পের জয়ে বিশ্ব জুড়ে কার্টুনিস্টদের পোয়াবারো
ছবি: Getty Images/AFP/Y. Cortez
মেক্সিকোয় ট্রাম্পের জন্য ‘দেয়াল’
মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল তোলার কথা বলেছিলেন ট্রাম্প৷ তাই অলঙ্করণ শিল্পী আর্টুরো কেম্চস মেক্সিকো সিটির ক্যারিকেচার মিউজিয়ামে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছেন৷ কেম্চস ইবেরো-অ্যামেরিকান ইউনিয়ন অফ গ্র্যফিক হিউমরিস্টস সমিতির সভাপতি৷ প্রদর্শনীর জন্য তিনি তাঁর সতীর্থদের কাছ থেকে শত শত ড্রয়িং পেয়েছেন৷
ছবি: Getty Images/AFP/Y. Cortez
২০১৭ সাল থেকে ভ্রাম্যমান প্রদর্শনী
‘ট্রাম্প: এ ওয়াল অফ ক্যারিকেচার্স’ প্রদর্শনীটির উদ্বোধন হয় গত অক্টোবর মাসে৷ ইউরোপীয় শিল্পীরাও এই প্রদর্শনীতে অবদান রেখেছেন৷ অনেক কার্টুনে নাৎসিদের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে৷ সাড়া জাগানো প্রদর্শনীটি ২০১৭ সালের সূচনায় অন্যান্য শহরে যাবে, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক শহরে দেখানো হবে৷
ছবি: Getty Images/AFP/Y. Cortez
ফ্যাশন গুরু কার্ল লাগারফেল্ডও কম যান না
ট্রাম্প সম্পর্কে ফ্যাশন ডিজাইনার কার্ল লাগারফেল্ড লিখেছেন, ‘‘রাজনীতিতেও উনি মহিলাদের দিকে এমনভাবে তাকান যেন ঘোড়ার ব্যাপারি৷’’ কার্টুনের মাঝখানে যে মূর্তিটিকে রেখেছেন, তিনি হলেন জার্মানির দক্ষিণ ঘেঁষা এএফডি দলের প্রধান ফ্রাউকে পেট্রি৷ পেট্রিরও নাকি কার্টুনটা ভালো লেগেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Frankfurter Allgemeine Magazin
#হেয়ারফোর্সওয়ান
ট্রাম্পের চুল নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা গোড়া থেকেই চলেছে৷ কোথায় নরওয়ের কোন মাঠে খড় পড়ে রয়েছে, তার ছবি ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘পরচুলোর খামার’ হিসেবে ইন্টারনেট মাতিয়েছে৷ কাজেই মার্ক নাইট মার্কিন প্রেসিডেন্টের এয়ারফোর্স ওয়ান বিমানকেও ট্রাম্পের হেয়ারস্টাইলে সজ্জিত করেছেন৷
ছবি: Twitter/@Knightcartoons
আফ্রিকান দৃষ্টিকোণ
আব্দুলকরিম বাবা আমিনু নাইজেরিয়ার একজন বিশিষ্ট সাংবাদিক, শিল্প সমালোচক ও অলঙ্করণ শিল্পী৷ তাঁর কার্টুনের ক্যাপশন হলো, ‘‘ডোনাল্ড ট্রাম্প কৃষ্ণাঙ্গদের ঘৃণা করেন বলে আমরা দেশ ছেড়ে চলে যাব৷ তারপর তিনি এই দেশ নিয়ে যা খুশি করুন!’’
ছবি: DW/Abdulkareem Baba Aminu
স্ট্যাচু অফ লিবার্টি ক্যানাডার দ্বারস্থ
কার্টুনিস্ট ইগ্রেক-এর ট্রাম্প-বিরোধী কার্টুনগুলোতে প্রায়ই স্ট্যাচু অফ লিবার্টির দেখা পাওয়া যায়৷ এখানে ট্রাম্পের জয়ের পর ‘লিবার্টি’ বা স্বাধীনতা দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন৷ টুইটারে ইংরেজিতে @ইগ্রেক দেখুন৷
ছবি: Twitter/@ygreck
যে কেউ প্রেসিডেন্ট হতে পারে
বেলজিয়ামের অলঙ্করণ শিল্পী লেকটরর (টুইটারে ইংরেজিতে @লেকটরর) ট্রাম্পকে নিয়ে অনেক কার্টুন এঁকেছেন৷ এই কার্টুনটার বক্তব্য হলো, ‘‘যে কেউ প্রেসিডেন্ট হতে পারে’’, এই কথাটার মানে মাত্র আট বছরে কিভাবে বদলে গেছে...
ছবি: Twitter/@lectrr
দেয়াল লিখন
স্পেনের বার্সেলোনায় ২০১৬ সালের গ্রীষ্মে এই গ্র্যাফিটির উদয়: চোয়াড়ে চেহারার এক গুণ্ডা প্রকৃতির মানুষ৷ সেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ে ‘অর্ধেক পৃথিবী নির্বাক’, লিখেছিলেন স্প্যানিশ দৈনিক ‘এল পাইস’-এর এক কলামনিস্ট৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Lago
গুয়ের মাছি
পথশিল্পী হানস্কি যখন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই কার্টুনটি আঁকেন, ট্রাম্প তখনো রিপাবলিকান দলের মনোনয়ন পাননি৷ নিউইয়র্কের লোয়ার ইস্ট সাইডের একটি শপিং এলাকার দেয়ালে স্প্রে করে ছবিটি আঁকা হয় ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে৷
ছবি: picture-alliance/abaca/Van Tine Dennis
ধর্মের নামে
গাডো আফ্রিকার সবচেয়ে বিখ্যাত কার্টুনিস্টদের অন্যতম৷ ট্রাম্প তাঁর নির্বাচনি প্রচারণায় বলেছিলেন, ‘‘আমি খ্রিষ্টধর্মের ঐতিহ্য বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি৷’’ তাই গাডো তাঁর কার্টুনে দেখিয়েছেন, ট্রাম্প কিভাবে মুসলিমদের ক্রুশবিদ্ধ করছেন৷