এই প্রথম যুদ্ধপরাধের মামলা শুরু করল ইউক্রেন। এখনো পর্যন্ত ৬০০ রুশের বিরুদ্ধে মামলা।
বিজ্ঞাপন
দুইদিন আগেই জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে তিনি জানিয়েছিলেন, রাশিয়ার সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের তথ্য সংগ্রহ করছেন তিনি। বুধবার ইউক্রেনের প্রসিকিউটার জেনারেল ইরিনা ভেনেডিকটোভা রাশিয়ার সেনার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলা শুরু করেছেন। এই প্রথম ইউক্রেন এই পদক্ষেপ নিল।
ইরিনা জানিয়েছেন, তার হাতে পুঙ্খানপুঙ্খ তথ্য আছে। আরো তথ্য হাতে আসছে। তারই ভিত্তিতে মামলা করা হচ্ছে।
এক ২১ বছরের রাশিয়ার অফিসারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। ওই অফিসার একটি ট্যাঙ্ক বাহিনী নিয়ে উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনের এক শহরে ঢুকছিল। সে সময় সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন নিরস্ত্র এক বৃদ্ধ। কোনো প্ররোচনা ছাড়া ওই অফিসার বৃদ্ধকে লক্ষ্য করে গুলি করে। বৃদ্ধের মৃত্যু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান-সহ এমন আরো অনেক তথ্য সংগ্রহ করেছেন ইরিনা। সব মিলিয়ে ১০ হাজার ৭০০ যুদ্ধাপরাধের ঘটনা ঘটেছে বলে তার দাবি। এরমধ্যে ধর্ষণের ঘটনাও আছে। এখনো ৬০০ রুশ অফিসারের বিরুদ্ধে তথ্য মিলেছে।
রাশিয়া কি ভ্যাকিউম বোমা ব্যবহার করছে?
অ্যামেরিকায় ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত অভিযোগ করেছিলেন, রাশিয়া ভ্যাকিউম বোমের মতো মারণাস্ত্র ব্যবহার করছে।
ছবি: Anton Vergun/TASS/dpa/picture alliance
ভ্যাকিউম বোমা কী
নিউক্লিয়ার বোমা নয়। কিন্তু প্রায় তার কাছাকাছি ক্ষতি করতে পারে ভ্যাকিউম বোমা। একটি গোটা অঞ্চলকে মুহূর্তে তছনছ করে দেওয়ার ক্ষমতা থাকে এই বোমায়।
ছবি: Leonid Faerberg/ZUMAPRESS/picture alliance
কীভাবে তৈরি হয়
এই বোমায় ১০০ শতাংশ তেল বা ফুয়েল ব্যবহার করা হয়। সাধারণ বোমায় তেলের সঙ্গে অক্সিডেন্ট পার্টিকেল ব্যবহার করা হয়। ভ্যাকিউম বোমায় তা হয় না। বাতাস থেকে অক্সিজেন টেনে নেয় এই বোমা।
ছবি: Konstantin Mihalchevskiy/SNA/imago images
বোমার মারণ ক্ষমতা
এই বোমা ছুঁড়লে প্রথমে তা বিরাট মাপের বিস্ফোরণ ঘটায়। এরপর বাতাসে তেলের একটি চাদর তৈরি হয়। সেই চাদর বাতাস থেকে অক্সিজেন টেনে নিয়ে ফের বিস্ফোরণ ঘটায়। চারদিক কার্যত জ্বলে যায়।
যে এলাকায় এই বোমা ফাটানো হয়, সেখানে কারও পক্ষে বাঁচা সম্বব নয়। আশপাশের অঞ্চলেও ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। শরীরের ভিতরে রক্তক্ষরণ হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
ছবি: Irina Rybakova/REUTERS
রাশিয়া কি এই বোমা ব্যবহার করছে
সিএনএন প্রথম একটি রিপোর্টে জানায়, রাশিয়া এই বোমা ব্যবহার করছে। রাশিয়ার টিওএস-১ ট্যাঙ্ক দেখা গেছে। যে ট্যাঙ্ক এই বোমা ছুঁড়তে পারে।
ছবি: Viacheslav Ratynskyi/REUTERS
কোথায় হয়েছে বিস্ফোরণ
ইউক্রেনের ওখতিরকা শহরে রাশিয়া এই বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, তারা ফুটেজ দেখেছে। কিন্তু এখনো ওই বোমাই ফাটানো হয়েছিল কি না, তা প্রমাণ হয়নি। তবে এই বোমা ফাটানো যুদ্ধাপরাধের মধ্যে পড়ে বলে তারা জানিয়েছে।
ছবি: Maksim Levin/REUTERS
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বিস্ফোরণের ইমপ্যাক্ট দেখে মনে হচ্ছে, রাশিয়া ভ্যাকিউম বোমাই ব্যবহার করেছে।
ছবি: Maksim Levin/REUTERS
ইউক্রেন পরিস্থিতি
ইউক্রেন পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ চেহারা নিয়েছে। কিয়েভ, খারকিভ-সহ একাধিক শহরে ব্যাপক লড়াই চলছে। আরো ভয়াবহতার হুমকি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। কিয়েভের মেট্রো স্টেশনেও রাশিয়ার সেনা ঢুকে পড়েছে বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি।
ছবি: Viacheslav Ratynskyi/REUTERS
8 ছবি1 | 8
বেআইনি অস্ত্রের ব্যবহার
রাশিয়া এবং ইউক্রেন দুই তরফই একটি বিশেষ ধরনের অস্ত্রের ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ। ২০০৮ সালে একটি কনভেনশনের মাধ্যমে ওই অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছিল। যদিও ইউক্রেন এবং রাশিয়া তাতে যোগ দেয়নি।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ওই বোমাটি বাতাসে ফাটার পর তার ভিতর থেকে অসংখ্য বোমব্লেটস বা ছোট ছোট বোমা ছড়িয়ে পড়তে থাকে। একটা বড় এলাকা জুড়ে বিস্ফোরণ হতে থাকে। এরফলে বেসামরিক মানুষের আহত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
রাশিয়া এবং ইউক্রেন দুইপক্ষই এই বোমার ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ হিউম্যান রাইটস ওয়াচের।