1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাশিয়ায় ইতিহাসের ছোঁয়ায় ভরা বসতবাড়ি

৩ নভেম্বর ২০১৭

অতীত যুগের চিহ্ন কি শুধু মিউজিয়ামে রাখার জন্য? রাশিয়ায় এক পরিবার নিজেদের বাসায় অতীত ও বর্তমানের মেলবন্ধন ঘটিয়ে চলেছেন৷ সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরে তাঁদের গোটা পাড়াই হেরিটেজ ভবনে ভরা৷

Russland St. Petersburg Eremitage Museum
ছবি: picture alliance/augenklick/GES

সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরের ঐতিহাসিক কেন্দ্রস্থলে ভসনেসেন্সকি সড়ক৷ কাছেই আইজ্যাক্স ক্যাথিড্রাল ও চার্চ অফ দ্য সেভিয়ার অন ব্লাড৷ ৩১ নম্বর বাড়িতে শহরের ঊনবিংশ শতাব্দীর নির্মাণশৈলির ছাপ দেখা যায়৷ ফ্রান্স ও স্পেনের নব্য রেনেসাঁস যুগের অনুপ্রেরণায় বাড়িটি তৈরি হয়েছিল৷

ডিজাইনার জেসইয়া মিখাইলোভা ১১ বছর ধরে সেখানে বসবাস করছেন৷ ১৫৬ বর্গমিটার আয়তনের ফ্ল্যাটে ৪টি ঘর৷ সরু করিডোর দিয়ে সেগুলি যুক্ত৷ হেরিটেজ বিল্ডিংয়ের সরকারি স্বীকৃতি রয়েছে বাড়িটির৷ বসার ঘর থেকে সরাসরি শোবার ঘরে যাওয়া যায়৷ তার ঠিক উলটোদিকে মেয়ে লিকা'র ঘর৷ জেসইয়া বলেন, ‘‘এটাই আমার ফ্ল্যাট, আমার বাসা, আমার পরিবার৷ একেবারেই মিউজিয়ামের মতো মনে হয় না৷ এখানে যা কিছুই অতীত যুগের হেরিটেজ হিসেবে সংরক্ষিত আছে, সেসব আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার অংশ৷ আশেপাশে সেসব আছে বলে ভালোই লাগে৷'' 

বাড়ির ঐতিহাসিক অংশের মধ্যে সাড়ে তিন মিটার উচ্চতায় সিলিংয়ে লাগানো স্টাকোর কাঠামোও রয়েছে৷ শহরের আর্কাইভে রাখা ছবির সাহায্যে ১৩ বছর আগে সেগুলি আবার স্বমহিমায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে৷ যেমন, এইসব হাঁসের মোটিফ৷ শোবার ঘরের ফায়ারপ্লেসও মূল অংশগুলির মধ্যে পড়ে৷ শীতকালে ঘর গরম রাখতে সেটি আজও ব্যবহার করা হয়৷ জেসইয়া মিখাইলোভা কয়েক বছর আগে সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরে ‘সিস্টার্স' নামে এক ডিজাইন স্টুডিও চালু করেছেন৷ তাঁর কাছে সরকারি হেরিটেজ তালিকা মোটেই কোনো বোঝা নয়৷ জেসইয়া বলেন, ‘‘কোনো জায়গায় এসে অসাধারণ বা পুরানো কিছু পেলে তা প্রেরণা হয়ে উঠতে পারে৷ যেমন আমার এই ফ্ল্যাট৷ আমি যেন এক উত্তরাধিকারী৷''

বাথরুমের ডিজাইনের ক্ষেত্রেও জেসইয়া ঐতিহাসিক স্টাকোর কাঠামো থেকে প্রেরণা পেয়েছেন৷ তবে পানির কলগুলি আধুনিক যুগের৷ রান্নাঘরেও সেই একই ডিজাইন৷ জেসইয়া ও তাঁর স্বামী ইয়েভগেনি তাঁদের ফ্ল্যাটে পুরানো ও নতুনের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন৷ মূল ইটের প্রাচীর অক্ষত রেখে তাতে শুধু রং করা হয়েছে৷ বসার ঘরে ঊনবিংশ শতাব্দীর রুশ সামগ্রী শোভা পাচ্ছে৷ এক অ্যান্টিক গুদামে জেসইয়া সেগুলি খুঁজে পেয়েছিলেন৷

একটি চেয়ার ফ্ল্যাটে প্রবেশের সময়েই সেখানে ছিল৷ ডিজাইনার হিসেবে তিনি সেটি মেরামত করে রং করেছিলেন৷ দেওয়ালের মূল সাজেও কোনো পরিবর্তন করা হয়নি৷ অতীতে ওয়াল পেপারের সস্তা বিকল্প হিসেবে খবরের কাগজ ব্যবহার করা হতো৷ সেই চিহ্ন এমন এক যুগের কথা মনে করিয়ে দেয়, যখন ফ্ল্যাটটি এক ‘কমুনালকা' ছিল৷ এমন সব ফ্ল্যাটে একাধিক পরিবার একই রান্নাঘর, বাথরুম ও করিডোর ব্যবহার করতো৷ আজও বাড়ির প্রায় অর্ধেক ফ্ল্যাট সেভাবে বিভক্ত রয়েছে৷ গোটা পাড়ার প্রায় এক চতুর্থাংশও তাই৷ প্রায় অর্ধেক বাড়ি সরকারি হেরিটেজ তালিকার অন্তর্ভুক্ত৷

জেসইয়া মিখাইলোভা ও তাঁর স্বামী স্থপতি ইয়েভগেনি রুসাকভ ফ্ল্যাটের মৌলিক ডিজাইন খুব পছন্দ করেন বলে তাতে কোনো রদবদল করেন নি৷ ইয়েভগেনি বলেন, ‘‘আমরা সব সময়ে নতুন কিছু করার চেষ্টা করি, এখানে-সেখানে কিছু যোগ করি, রং করি অথবা সামান্য কিছু রদবদল করি৷ তবে সব মিলিয়ে সবকিছু যেমন ছিল, তেমনই রেখে দিয়েছি৷ কারণ, আমাদের যুগের আগেই এখানে সবকিছু ভালো করে পরিকল্পনা করা হয়েছিল৷''

ঘর সাজানোর সময় জেসইয়া এশিয়ার কিছু সামগ্রী সংগ্রহ করেছিলেন৷ তাঁর মতে, সেই সব ডিজাইন ঐতিহাসিক পরিবেশকে আরও জোরদার করে৷ যেমন চীনে তৈরি এই আলমারিগুলি তাঁর খুব প্রিয়৷

জেসইয়া মিখাইলোভা ও ইয়েভগেনি রুসাকভ-এর কাছে ডিজাইন ও স্থাপত্য শুধু পেশা নয়, নেশাও বটে৷ নিজেদের বাড়িতেই তার পরিচয় পাওয়া যায়৷

প্রতিবেদন: এমিলি শেরউইন/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ