রাশিয়ায় ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনারের বিদ্রোহের দিকে এখন নজর গোটা বিশ্বের৷ দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন এর আগে নিজের দেশে এরকম কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েননি৷
বিজ্ঞাপন
রাশিয়ার ভাড়াটে আধাসামরিক বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপ নাটকীয়ভাবে মস্কোর দিকেই অস্ত্র তাক করেছে৷ এটির নেতা ইয়েভগেনি প্রিগোশিন ১৯৯৯ সাল থেকে রাশিয়া শাসন করা পুটিনকে হটানোর ঘোষণা দিয়েছেন৷ অন্যদিকে, পুটিন প্রিগোশিনকে বিচারের মুখোমুখি করার ঘোষণা দিয়েছেন৷
এতকাল রাশিয়ার সেনাবাহিনীর সঙ্গে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত ছিল ওয়াগনার গ্রুপ৷ কিন্তু এই গ্রুপটি এবার পুটিনবিরোধী হয়ে ওঠায় রাশিয়ায় তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে৷
বিশ্বনেতারা ইতোমধ্যে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখার কথা জানিয়েছেন৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে এই বিষয়ে জানানো হয়েছে উল্লেখ করে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র এডাম হজ বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতি নিয়ে মিত্র এবং অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে৷''
যখন সাবওয়েই তাদের ঘর, স্কুল এবং বিনোদনকেন্দ্র
ইউক্রেন যুদ্ধ বদলে দিয়েছে তাদের জীবন৷ সব সময় যেন প্রাণ হাতে নিয়ে বাঁচতে হয় তাদের৷ যেখানে যখন রাশিয়ার হামলা সেখানে তখনই হতে পারে জীবনাবসান৷ তবুও কাটছে জীবন৷ সাবওয়েতেও চলছে বসবাস, লেখাপড়া এবং বিনোদন৷ দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: Viacheslav Ratynskyi/REUTERS
আকস্মিক হামলা
রাশিয়ার মিসাইল বা বোমা হামলার বিভীষিকা নেমে আসে যখন তখন৷ তাই ইউক্রেনের মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে যাবার প্রস্তুতি রাখতে হয় সব সময়৷ রাজধানী কিয়েভেও জীবন চলছে একই নিয়মে৷
ছবি: Valentyn Ogirenko/REUTERS
এসকেলেটর যেন বিশ্রামাগার
প্রাণভয়ে মেট্রোস্টেশনে আশ্রয় নিয়েছেন তারা৷ তখন এসকেলেটরের সিঁড়িই তাদের আশ্রয়স্থল, সেখানে কেটে যাচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা৷ মিসাইল বা বোমা হামলার বিকট শব্দ না থামা পর্যন্ত কারো মেট্রো স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার উপায় নেই৷ গত ২৯ মে-র তোলা ছবি৷
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
শত শত মানুষের ভিড়
এই ছবিটিও গত ২৯ মে-র৷ কিয়েভে তখন আবার শুরু হয়েছে রাশিয়ার বিমান হামলা৷ মেট্রো স্টেশনটিতে তাই শত শত মানুষের ভিড়৷
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
সৈনিকের অসহায়ত্ব
হঠাৎ আকাশ থেকে বোমা হামলা শুরু হলে সৈন্যদেরও বিশেষ কিছু করার থাকে না৷ তাদেরও তখন ছুটতে হয় নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে৷ ২৯ মে-র ছবিটিতে ধরা পড়েছে এক মেট্রোস্টেশনে ইউক্রেনের দুই সেনা সদস্যের অসহায়ত্ব৷
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
বাবা-মেয়ে
এক সেনাসদস্য মেয়েকে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন মেট্রোস্টেশনে৷ বাবার কাছে বসে মেয়েটি মন দিয়েছে ট্যাবে৷ বাবা নিজের টুপি পরিয়ে দিয়েছেন মেয়েকে৷ গত ৯ মার্চের ছবি৷
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
অস্থায়ী স্কুল
রাশিয়ার হামলা শুরু হলে কখনো কখনো মেট্রোস্টেশন যে অস্থায়ী স্কুলের রূপ নেয়, ওপরের ছবিটি তার প্রমাণ৷ স্কুলের শিক্ষার্থীদের সেখানেই ক্লাস নিচ্ছেন এক শিক্ষক৷
ছবি: Viacheslav Ratynskyi/REUTERS
সাবওয়েতে কনসার্ট!
যুদ্ধ শুরুর পর থেকে একটা সময় পর্যন্ত মেট্রো রেল স্টেশনে আশ্রয় নেয়া মানুষদের প্রতিটি মুহূর্ত কাটতো মহাতঙ্কে৷ তবে ধীরে ধীরে যুদ্ধের এই নির্মম বাস্তবতা মানতে শুরু করেন তারা৷ বিশেষ করে এক বছর আগে রক ব্যান্ড ইউ-টু যখন সেখানে এসে কনসার্ট করলো, ইউক্রেনবাসীরাও যেন বুঝতে শুরু করলেন যুদ্ধপরিস্থিতিতে সব সময় সব পরিস্থিতেই মানিয়ে নিতে হবে নিজেদের৷ ওপরের ছবিতে নেচে নেচে গাইছেন ইউ-টু তারকা বোনো৷
ছবি: VALENTYN OGIRENKO/REUTERS
শিল্পী-সেনার দ্বৈত সংগীত
ইউ-টু তারকা বোনোর সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে গাইছেন ইউক্রেনের এক সেনা সদস্য৷ কিয়েভের এক মেট্রোস্টেশনের এই কনসার্টের ছবিটি ২০২২ সালের ৮ মে তোলা৷
ছবি: VALENTYN OGIRENKO/REUTERS
মগ্ন শ্রোতা
পল ডেভিড হিউসন, অর্থাৎ ইউ-টু রক ব্যান্ডের ভোকালিস্ট বোনোর গান মন দিয়ে শুনছেন কিয়েভের কয়েক শ মানুষ৷ গত বছরের ৮ মে-র ছবি৷
ছবি: VALENTYN OGIRENKO/REUTERS
সাবওয়েতে ভাষাশিক্ষা
বিমান হামলা সেই কখন শুরু হয়েছে, থামার কোনো লক্ষণই নেই৷ তাই এক শিক্ষক মেট্রোরেলেই শুরু করে দিয়েছেন ভাষা শেখানোর ক্লাস৷ গত ৩ মে-র ছবি৷
ছবি: Viacheslav Ratynskyi/REUTERS
10 ছবি1 | 10
ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান চার্লস মিশেল এই বিষয়ে টুইটারে লিখেছেন, ‘‘জোটটি রাশিয়ার পরিস্থিতির দিকে নিবিড়ভাবে চোখ রাখছে৷ এই বিষয়ে ইউরোপীয় নেতা এবং জিসেভেন অংশীদারদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখা হচ্ছে৷''
তবে তিনি এটাও উল্লেখ করেছেন যে, বিষয়টি রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং ইউক্রেনের প্রতি জোটের সমর্থন অপরিবর্তিত থাকবে৷
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক সবপক্ষকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে এবং বেসমারিক মানুষদের রক্ষায় সচেষ্ট থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন৷
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘‘আমরা এই পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের মিত্রদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছি৷ আমি আজকে তাদের সাথে কথা বলবো৷ তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সবপক্ষের দায়িত্বশীল আচরণ করা৷''
জার্মান সরকারও রাশিয়ার পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে৷ দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মস্কোর কেন্দ্রীয় অঞ্চলের পাশাপাশি সরকারি ও সামরিক ভবন এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে৷
এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলানস্কি জানিয়েছেন যে, ওয়াগনারের বিদ্রোহ দেখাচ্ছে যে রাশিয়া দুর্বল৷
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘‘রাশিয়ার দুর্বলতা স্পষ্ট৷ পূর্ণমাত্রায় দুর্বলতা৷ রাশিয়া আরো যত বেশি সময় এটির সেনা এবং ভাড়াটে সেনাদের আমাদের জমিনে রাখবে ভবিষ্যতে এটি ততই বিশৃঙ্খলা, যন্ত্রণা এবং সমস্যা ভোগ করবে৷''