রাশিয়া নিয়ে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হবে না: অ্যামেরিকা
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২
রাশিয়া-ইউক্রেন বিরোধ নিয়ে কোনো পক্ষকেই সমর্থন করলো না ভারত। অ্যামেরিকা জানালো, এর ফলে সম্পর্ক খারাপ হবে না।
বিজ্ঞাপন
রাশিয়া-ইউক্রেন বিতর্কে কোনো পক্ষ নেয়নি ভারত। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে তারা জানিয়ে দেয়, ভোটাভুটি হলে তারা অংশ নেবে না। তারপরেও অ্যামেরিকা জানিয়ে দিল, এর জন্য ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হবে না। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেছেন, অ্যামেরিকার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অন্য কোনো বিষয়ের উপর নির্ভর করে না।
প্রাইসকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন বিরোধের জের কি ভারত-মার্কিন সম্পর্কের উপর পড়বে? বিশেষ করে ভারত যখন নিরাপত্তা পরিষদে অ্যামেরিকার পক্ষ সমর্থন করেনি? তখনই প্রাইস এই জবাব দেন।
ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার সঙ্গে অ্যামেরিকা ও ন্যাটো গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির বিরোধ বাড়ছে। অ্যামেরিকা ইউরোপে বাড়তি সেনা মোতায়েন করেছে। তাদের আশঙ্কা, রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করতে পারে। অ্যামেরিকার বন্ধু দেশগুলি সবাই বাইডেনকে সমর্থন করছে।
রাশিয়া-ন্যাটো বৈঠকেও মেলেনি সমাধানসূত্র
ইউক্রেন সংকট সেই তিমিরেই। ন্যাটোর বৈঠকেও সমাধানসূত্র মেলেনি। রাশিয়ার সঙ্গে আরো আলোচনার প্রস্তাব ন্যাটো সদস্যদের।
ছবি: Benoit Doppagne/dpa/picture alliance
ঐতিহাসিক বৈঠক
২০১৯ সালে শেষবার ন্যাটোর দেশগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল রাশিয়া। বুধবার ফের তারা ঐতিহাসিক বৈঠকে মিলিত হয়। এদিন ন্যাটোর ৩০টি সদস্য দেশের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করেন রাশিয়ার প্রতিনিধিরা।
ছবি: Olivier Hoslet/AFP
অধরা সমাধানসূত্র
ন্যাটো প্রধান জেন স্টলটেনবার্গ জানিয়েছেন, ইউক্রেনকে ঘিরে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সহজে তার সমাধানসূত্র খুঁজে পাওয়া মুশকিল। প্রথম আলোচনায় তা মিললেও আরো আলোচনার পরিসর তৈরি হয়েছে।
অ্যামেরিকা-সহ ন্যাটোর অভিযোগ, ইউক্রেন সীমান্তে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করে রেখেছে রাশিয়া। বিপুল পরিমাণ সেনা মজুত করা হয়েছে সেখানে। রাশিয়ার বক্তব্য, আত্মরক্ষার্থেই তারা সে কাজ করেছে। ইউক্রেনের বক্তব্য, আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করে ইউক্রেনের ভিতরে রাশিয়া সেনা মোতায়েন করেছে।
অ্যামেরিকা-সহ একাধিক পশ্চিমা দেশের দাবি, ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্যপদ দেওয়া হোক। রাশিয়া এর ঘোর বিরোধী। ন্যাটোর বৈঠকে তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ইউক্রেনকে সদস্যপদ দিলে ফলাফল ভালো হবে না।
ছবি: Nick Connolly/DW
বৈঠকের আলোচনা
স্টলটেনবার্গ জানিয়েছেন, ইউক্রেনের সদস্যপদ, রাশিয়ার সেনা মজুত সব বিষয়েই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। দুইপক্ষ একটি বিষয়ে সহমত হয়েছে। অস্ত্রের ব্যবহার কমাতে হবে। মিসাইলের ব্যবহার কমাতে হবে। শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমেই সমাধানসূত্র খুঁজতে হবে।
ছবি: Andriy Dubchak/AP Photo/picture alliance
অ্যামেরিকার প্রতিক্রিয়া
এদিনের বৈঠকের পর অ্যামেরিকার প্রতিনিধি জানিয়েছেন, রাশিয়া নিজের অবস্থানে অনড়। কিন্তু রাশিয়ার দাবি কাছে মাথা নত করা হবে না। আরো আলোচনার পক্ষে মত দিয়েছে অ্যামেরিকা।
সোভিয়েত আমলে ইউক্রেন ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ। পরবর্তী সময়ে তা রাশিয়া থেকে আলাদা হয়ে যায় এবং নতুন রাষ্ট্র তৈরি করে। সেই সময় থেকেই রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের বিতর্ক। বিত্রক আরো বাড়ে গত দশকে ক্রাইমিয়া রাশিয়া দখল করার পর। ইউক্রেনের দাবি, অবৈধভাবে রাশিয়া ক্রাইমিয়া দখল করেছে। অ্যামেরিকা এবং ন্যাটোর অধিকাংশ দেশ ইউক্রেনের সমর্থনে কথা বলেছে।
ছবি: AP Photo/picture alliance
তীব্র সংঘাত
এই পরিস্থিতিতে প্রবল বিতর্ক শুরু হয়েছে রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলির। জো বাইডেন এবং ভ্লাদিমির পুটিন একাধিক বৈঠক করেছেন। এবং একে অপরকে সতর্ক করেছেন। হুমকি পাল্টা হুমকির ঘটনা ঘটছে প্রায় রোজই। তারই মধ্যে ব্রাসেলসে ঐতিহাসিক বৈঠকে মিলিত হয়েছেন সকলে।
9 ছবি1 | 9
ভারতেরনীতি
ভারত জানিয়েছে, তারা গঠনমূলক কূটনীতির পথ নেবে। তারা কোনো শোরগোল করবে না। উত্তেজনা কমাবার জন্য এই নীতিই নেয়া দরকার। বিশ্বশান্তির বৃহত্তর পরিপ্রেক্ষিতের কথা ভেবেই ভারত এই নীতি নিয়ে চলছে। নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের পর ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ''নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে আমাদের মতামত জানিয়ে আমরা একটা বিবৃতি দিই। আমরা গঠনমূলক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার পক্ষে। আমরা চাই, দুই পক্ষই শান্তিপূর্ণভাবে বিরোধ মিটিয়ে ফেলুক।''