সিরিয়ায় হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র৷ দুই পক্ষই বলছে তাদের লক্ষ্য জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট বা আইএস৷ যদিও রাশিয়া আসলেই আইএস-এর বিরুদ্ধে নেমেছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন অনেকে৷
ছবি: Colourbox/krbfss
বিজ্ঞাপন
রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ওদিকে জিহাদে নামতে মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আইএস৷ এই জঙ্গি গোষ্ঠীর এক মুখপাত্র অনলাইনে প্রকাশ করা এক ভিডিওতে বলেন, দেশ দুটি মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছে৷
এদিকে, সিরিয়ায় সক্রিয় আল-কায়েদা সমর্থিত গোষ্ঠী আল-নুসরা ফ্রন্ট-এর প্রধান আবু মোহামেদ আল-জোলানি রাশিয়াকে হুমকি দিয়েছেন৷ তিনি বলেন, রাশিয়া যে সিরিয়ায় হামলা করছে সেজন্য তাকে চরম পরিণতি ভোগ করতে হবে৷ ককেশাস অঞ্চলে থাকা জিহাদিদের উদ্দেশ্যে জোলানি বলেন, ‘‘রাশিয়ার সৈন্যরা যদি সিরিয়ার মানুষকে হত্যা করে তাহলে তোমরাও তাদের মানুষদেরও হত্যা কর৷''
মঙ্গলবার সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাসে রাশিয়ার দূতাবাসে হামলা হয়েছে৷ লন্ডনভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলছে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থারা দামাস্কাসের পূর্বাঞ্চল থেকে হামলা চালানো হয়েছে৷ চলতি বছর এর আগেও দামাস্কাসের রুশ দূতাবাসে হামলার ঘটনা ঘটেছে৷
এদিকে, সিরিয়ায় হামলা করার সময় আকাশে যেন রুশ ও মার্কিন সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষ না ঘটে তা নিশ্চিত করতে বুধবার দু'পক্ষের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে৷
সিরিয়ায় হামলা চালাতে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়াকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করছেনা বলে দেশটির সমালোচনা করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন৷
ইতিহাসের কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করে মার্কিন পত্রিকা ‘ওয়াশিংটন পোস্ট' সিরিয়ায় রাশিয়ার উপস্থিতির কারণ খোঁজার চেষ্টা করেছে৷
ইউক্রেন ইস্যু থেকে বিশ্বের নজর সরাতে পুটিন সিরিয়ায় হামলা করছেন বলে মনে করেন অনেকে৷ এক্ষেত্রে পুটিন সফল হচ্ছেন বলে জানিয়েছে দ্য ইকোনমিস্ট৷
রাশিয়া বলছে যে তারা সিরিয়ায় সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গেছে৷ তাহলে তারা আইএস-এর উপর কেন আঘাত হানছে না? প্রশ্ন দ্য ইকোনমিস্ট-এর৷
আসাদ সম্পর্কে বিশ্ব নেতাদের বক্তব্য
সিরিয়ায় চার বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সংকটের সমাধান চান বিশ্বের প্রায় সব নেতাই৷ কিন্তু কীভাবে? সমাধান পরিকল্পনা নিয়ে তাঁদের মধ্যে রয়েছে চরম মতভেদ৷
ছবি: Reuters/P. Wojazer
যুক্তরাষ্ট্র
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে সোমবার যে বক্তব্য দেবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সেখানে তিনি সিরিয়া সংকট নিরসনে একটি রাজনৈতিক সমাধানের উপর গুরুত্ব আরোপ করতে পারেন৷ তবে এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে চান না প্রেসিডেন্ট ওবামা৷
ছবি: Reuters
রাশিয়া
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন মনে করেন, সিরিয়ার সংকট সমাধানে সে দেশের বর্তমান সরকারি কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করার বিকল্প নেই৷ অর্থাৎ আসাদের প্রতি পূর্ণ সমর্থন রয়েছে রাশিয়ার৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Druzhinin
ইরান
প্রেসিডেন্ট হাসান রোহানি বলেন, জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস এর বিরুদ্ধে লড়তে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদকে অবশ্যই ক্ষমতায় থাকতে হবে এবং তাঁর সরকারকে দুর্বল করা যাবে না৷
ছবি: picture-alliance/Geisler-Fotopress
যুক্তরাজ্য
প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের অংশ হতে পারেন আসাদ, কিন্তু দেশটির ভবিষ্যৎ রাজনীতির অংশ নয়৷
ছবি: Reuters/J. Giles
জার্মানি
চ্যান্সেলর আঙ্গেরা ম্যার্কেল বলেছেন, সিরিয়ার সংকট নিরসনের চেষ্টা প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে নিয়েই করতে হবে৷ তাঁর মতে, আসাদকে দূরে রেখে সিরিয়া এবং সিরিয়ার পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোয় শান্তি ফেরানো সম্ভব নয়৷
ছবি: Reuters/M. Segar
তুরস্ক
প্রধানমন্ত্রী আহমেদ দাভুতোলু বলেন, সিরীয়রা তাদের সংকটের সমাধান যেভাবে চাইবে, তুরস্ক সেটা সমর্থন করবে৷ তবে সেখানে আসাদ থাকতে পারবে না৷
ছবি: Reuters/Umit Bektas
ফ্রান্স
ইরানি প্রেসিডেন্ট রোহানির সঙ্গে বৈঠকের সময় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদ বলেন, সিরিয়ার সমস্যা সমাধানে ইরান সহায়তা করতে পারে, তবে প্রেসিডেন্ট আসাদ তার অংশ হতে পারেন না৷