জার্মানির ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিয়েভ সফরে গিয়ে ডিডাব্লিউকে একথা বলেছেন।
ছবি: REUTERS
বিজ্ঞাপন
বুধবারই কিয়েভ পৌঁছেছেন জার্মানির ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্না লুহারমান। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে সাতজন মন্ত্রীর একটি প্রতিনিধি দল বুধবার কিয়েভ পৌঁছেছে। ইউক্রেন সরকারের প্রতিনিধি কিয়েভের আশপাশে ধ্বংসচিত্র ঘুরে দেখিয়েছেন তাদের। ইউক্রেনের অবস্থা দেখার পর সংবাদমাধ্যমকে লুহারমান বলেছেন, ''রাশিয়া সাধারণ মানুষের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে। তারা সন্ত্রাস চালাচ্ছে গোটা ইউক্রেন জুড়ে।'' জার্মান মন্ত্রীর দাবি, একমাত্র সন্ত্রাসী রাষ্ট্রের পক্ষেই একাজ করা সম্ভব। লুহারমান বলেছেন, জার্মানির সীমান্ত থেকে কয়েকঘণ্টার দূরত্বে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এঘটনা অভূতপূর্ব।
বস্তুত, এই প্রথম জার্মানির কোনো কর্মকর্তা রাশিয়ার বিরুদ্ধে সরাসরি 'সন্ত্রাসী' শব্দটি ব্যবহার করলেন। লুহারমান বলেছেন, ইউক্রেনের এনার্জি খাতে যে ক্ষতি হয়েছে, তা সারানোর জন্য জার্মানি সবরকম সাহায্য করবে।
ইউক্রেনের প্রতিনিধি টুইট করে বলেছেন, ইউরোপের মন্ত্রীদের একাধিক জায়গা তিনি ঘুরে দেখিয়েছেন। কিয়েভের সামান্য দূরে একটি জায়গায় কয়েক ঘণ্টা আগে হামলা চালিয়েছিল রাশিয়া। সেখানে বোমার আঘাতে তিনজন বেসামরিক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। ইউরোপীয় প্রতিনিধি দলকে সেখানেও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
বুধবারই ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা ভোট দিয়ে রাশিয়াকে সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়া রাষ্ট্র বলে ঘোষণা করেছে। যদিও তাদের এই পদক্ষেপে রাশিয়ার বিশেষ কোনো ক্ষতি হবে না। কারণ, এবিষয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইইউ কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবে না। কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়াও ইইউ-র পক্ষে সম্ভব নয়।
খেরসন ফিরে পেয়ে ইউক্রেনে আনন্দ, উল্লাস
ইউক্রেনীয় সৈন্যদের প্রবল প্রতিরোধের মুখে খেরসন ছাড়তে বাধ্য হয়েছে রুশ সৈন্যরা৷ স্বভূমের মুক্ত হাওয়ায় শ্বাস নিতে পেরে ইউক্রেনের মানুষ উল্লাসে মেতেছে৷ সৈন্যদের বীরের মর্যাদায় বরণ করছেন তারা৷ দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: Lesko Kromplitz/REUTERS
মুখে ফিরেছে প্রাণখোলা হাসি
পরাধীন খেরসনে যেন হাসতে ভুলেই গিয়েছিল সবাই৷ পাল্টা আ্ক্রমণের মুখে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরটি থেকে রুশ সৈন্যরা চলে যেতে বাধ্য হতেই প্রশাসনিক ভবনের সামনে নামে উল্লসিত জনতার ঢল৷ সেখানেই গায়ে, হাতে ইউক্রেনের পতাকা নিয়ে দুই তরুণীর ভুবন ভোলানো হাসি৷
ছবি: Lesko Kromplitz/REUTERS
‘মুক্তাঙ্গন’ ফিরে পেয়েছে শিশুরা
যুদ্ধের কারণে খেরসনের সব মানুষই ছিল আতঙ্কে৷ বড়রা জরুরি কাজে অনেক সময় বাইরে যেতে বাধ্য হলেও, অনেক শিশু দীর্ঘদিন চার দেয়ালের বাইরে পা ফেলার সুযোগই পায়নি৷ রুশ সৈন্যরা চলে যাওয়ায় খেরসনের শিশুরা আবার মুক্ত৷ সেই আনন্দ উদযাপন করছে দুই শিশু৷
ছবি: Valentyn Ogirenko/REUTERS
আনন্দমুখর ওডেসা
রাশিয়ার আক্রমণের মুখে খেরসনের অনেক মানুষ ইউক্রেনের তৃতীয় বৃহত্তম শহর ওডেসায় আশ্রয় নিয়েছিলেন৷ খেরসন ‘স্বাধীন’ হওয়ায় সেখানেও আনন্দে মেতেছেন সবাই৷
ছবি: Igor Tkachenko/REUTERS
সৈন্যরা এখন মহাতারকা
তাদের কারণেই খেরসন আবার ‘শত্রুমুক্ত’৷ খেরসনবাসীর কাছে ইউক্রেনীয় সৈন্যরা তাই পরম শ্রদ্ধা, ভালোবাসার পাত্র৷ ওপরের ছবিতে গণদাবির মুখে একজনের পিঠে অটোগ্রাফ দিচ্ছেন এক সেনাসদস্য৷
ছবি: Lesko Kromplitz/REUTERS
খেরসনে প্রেসিডেন্ট
রুশ সৈন্যমুক্ত খেরসন দেখতে গিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি৷ তার সঙ্গে সেল্ফি তুলছেন কয়েকজন নগরবাসী৷
ছবি: Ukrainian Presidential Press Service/REUTERS
বীরের সঙ্গে সেল্ফি
খেরসনের প্রাণকেন্দ্রে ইউক্রেনের এক সৈন্যের সঙ্গে সেল্ফি তোলার ধুম পড়েছে৷ নিজের সন্তানকে কাঁধে নিয়ে একের পর এক অনুরোধ রেখে চলেছেন সেই সৈন্য৷
ছবি: Lesko Kromplitz/REUTERS
বীরের সঙ্গে কোলাকুলি
মুক্ত খেরসনে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়েছে বীর সেনাদের৷ এক সৈন্যের সঙ্গে সগর্বে কোলাকুলি করছেন এক খেরসনবাসী৷
ছবি: Lesko Kromplitz/REUTERS
ব্যানার, পোস্টার, স্লোগানে খেরসন
ইউক্রেনীয়দের সবার মুখে মুখে এখন খেরসন৷ রুশ সৈন্যরা চলে যাওয়ার পর ‘খেরসন, খেরসন’ বলতে বলতে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন অনেকে৷ ওপরের ছবির তরুণীর মতো অনেকের হাতেই ছিল খেরসন লেখা পোস্টার৷
ছবি: Genya Savilov/AFP/Getty Images
স্বাধীনতা চত্বরে স্বাধীন মানুষদের ঢল
গত ১১ নভেম্বর রাতে খেরসন রুশ সৈন্যমুক্ত হওয়া মাত্রই শহরের ইন্ডিপেন্ডেন্স স্কয়ারে নামে উল্লসিত জনতার ঢল৷ স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে চারপাশ৷
ছবি: Danylo Antoniuk/ZUMA/picture alliance
বীর নারীর আনন্দ
খেরসন থেকে রুশ সৈন্যদের তাড়াতে ছবির এই নারীও যুদ্ধ করেছেন৷ মুক্ত শহরে পা রেখেই খেরসন লেখা ফলকের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন তিনি৷
ছবি: Dagaz/AP/picture alliance
10 ছবি1 | 10
রাশিয়ার হামলা
এদিকে বুধবারও গোটা ইউক্রেনজুড়ে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। বিমান হামলা এবং গোলাবর্ষণ হয়েছে একইসঙ্গে। অভিযোগ, ইউক্রেনের বেসামরিক পরিকাঠামোগুলি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। ধ্বংস করা হয়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং গ্যাসকেন্দ্র। জাতিসংঘে এবিষয়ে আগেই নালিশ করেছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তার অভিযোগ, বিদ্যুৎ এবং গ্যাসকেন্দ্রগুলি ধ্বংস করে ইউক্রেনের বেসামরিক মানুষকে ঠান্ডায় মেরে ফেলতে চাইছে রাশিয়া। বস্তুত, বুধবার রাশিয়ার আক্রমণের পর ইউক্রেনের বহু অঞ্চলে দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎ ছিল না।
শলৎসের মন্তব্য
জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস বুধবার বলেছেন, ''একটি বিষয় পরিষ্কার, রাশিয়া আর কোনোভাবেই লড়াইয়ের ময়দানে দাঁড়িয়ে এই যুদ্ধ জিততে পারবে না।'' বস্তুত, এর আগে অ্যামেরিকাও এই মন্তব্য একাধিকবার করেছে। অন্যদিকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ ফের রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন। যুদ্ধ থামানোর আর্জি নিয়ে তিনি কথা বলবেন বলে জানা গেছে।