রহস্যাবৃত অপহরণ
১৮ এপ্রিল ২০১৪ পোশাক কারখানা হামিদ ফ্যাশন-এর কর্মকর্তা এবং সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের স্বামী আবুবকর সিদ্দিককে বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে দুর্বৃত্তরা নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকা থেকে অপহরণ করে৷ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে পকেটে ৩০০ টাকা দিয়ে অপহরণকারীর তাঁকে মিরপুর আনসার ক্যাম্পের কাছে নামিয়ে দিয়ে যায়৷ এরপর পুলিশের সহায়তায় বাসায় ফেরেন তিনি৷ বলা বাহুল্য, এই ৩৫ ঘণ্টার পুরো সময়টাতেই তাঁর চোখ বেধে রেখেছিল দৃর্বত্তরা৷
ফিরে আসার পর আবুবকর সিদ্দিক শুক্রবার বিকেলে রিজওয়ানাকে সঙ্গে নিয়ে নারয়ণগঞ্জে যান পুলিশ পাহারায়৷ এরপর আবুবকর নারায়ণগঞ্জ আদালতে জবানবন্দিও দেন৷ তবে জবানবন্দিতে অপহরণের কারণ এবং অপহরণকারী সম্পর্কে তিনি কোনো তথ্য দেননি৷ আবুবকর অপহরণকরীদের ব্যাপারে কিছুটা বর্ণনা দিলেও তাদের পরিচয় তিনি জানেন না৷ এছাড়া পুরোটা সময় তাঁকে কোথায়, কিভাবে রাখা হয়েছিল – তাও বলতে পারেননি আবুবকর৷
উদ্ধারের পর শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম জানান, ‘‘পুলিশের অব্যাহত তত্পরতা ও গণমাধ্যমের ফলাও প্রচারের কারণে ‘বেলা'-র নির্বাহী পরিচালক রিজওয়ানা হাসানের স্বামী আবুবকর সিদ্দিকের অপহরণকারীরা তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি৷ তবে অপহরণের কারণ সম্পর্কে এখনো ধোঁয়াশা রয়ে গেছে৷''
রিজওয়ানা বলেন, ‘‘ধরে নিয়ে যাওয়ার পর এক সেকেন্ডের জন্যও আবুবকরের চোখ খুলে দেওয়া হয়নি৷ কিন্তু কেন তাঁকে ধরে নিয়ে যাওয়া হলো, তা সম্পূর্ণ রহস্যাবৃতই রয়ে গেছে৷ তারা ‘মোটিভ ক্লিয়ার'' করেনি৷ অপহরণকারীরা নিজেরা নিজেরাই টাকার কথা বলছিল, তবে কেউ টাকা চায়নি৷ এমনকি তাঁর কাছে পরিবারের নম্বরও চায়নি৷''
তিনি বলেন, ‘‘টাকার জন্য এই অপহরণ করা হয়েছে বলে আমি প্রাথমিকভাবে মনে করছি না৷ প্রচণ্ড চাপের মধ্যে পড়ে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে৷'' প্রশ্ন হলো কিসের চাপ? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘গণমাধ্যমের চাপ তো ছিলই৷ এছাড়া প্রধানমন্ত্রী নিজে নির্দেশনা দিয়ে পুরো বিষয়টা তদারকি করছিলেন৷ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তত্পরতাও ছিল অনেক বেশি৷''
তিনি অবশ্য এ কথাও বলেন যে, ‘‘এটি এত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় যেটার সুরাহা বা শেষ আমাদের করতেই হবে৷ এর মাধ্যমে গোটা ঘটনার রহস্য উন্মোচিত হবেই৷'' রিজওয়ানা জানান, ‘‘অনিশ্চয়তার জগতে বাস করছিলাম৷ এখন উনি আমাদের কাছে ফিরে এসেছেন৷ উনি ভালো আছেন৷ তবে অনিশ্চয়তা এখনো পর্যন্ত যায়নি৷ ঘটনার সম্পূর্ণ সুরাহা এখনো হয়নি৷''