রিপাবলিকান বনাম ওবামা
২৩ নভেম্বর ২০১৪২০০৮ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর ওবামা এখনও মনে করেন, তিনি দুই দলের মধ্যে একধরনের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করতে পারবেন, যিনি দুই দলের মধ্যকার ব্যবধান ঘুচিয়ে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটা সমাধান বের করতে পারবেন৷
তবে ওবামার প্রস্তাবিত স্বাস্থ্য খাত সংস্কার বিষয়ক আইনের পুরোপুরি বিরোধিতা করে রিপাবলিকানরা জানিয়ে দিয়েছে যে, কংগ্রেসের বেশিরভাগ রিপাবলিকানের অভিধানে ‘আপোশ' বিষয়টি নেই৷ শেষবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ওবামা ও তাঁর উপদেষ্টারা বুঝতে পারেন, তাঁরা রিপাবলিকানদের সঙ্গে আর রাজনৈতিক সহযোগিতায় যেতে পারবেন না৷
প্রচারণার সময় দেয়া অঙ্গীকার
কয়েক সপ্তাহ আগে হয়ে যাওয়া মধ্যবর্তী নির্বাচনে বড় পরাজয়ের পর – যে কারণে জানুয়ারিতে কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ পাবেন রিপাবলিকানরা – ওবামার আর সম্ভাব্য ভোটারদের বিবেচনায় নেয়ার প্রয়োজন নেই৷ তাঁর সামনে আর কোনো নির্বাচন নেই৷ সেই কারণে নির্বাচনি প্রচারণার সময় দেয়া বিভিন্ন অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে তাঁকে এখন একলাই চলতে হবে৷
প্রচারণার সময় অভিবাসন সংস্কারের বিষয়ে বেশ গুরুত্ব দিয়েছিলেন ওবামা৷ ২০০৮ সালে যখন তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন তখন বলেছিলেন, ক্ষমতা গ্রহণের ১০০ দিনের মধ্যে অভিবাসন আইন করতে না পারলেও এক বছরের মধ্যে সেটা হবেই৷ ছয় বছর পর তিনি সেটা করলেন নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করে৷ তাঁর আর কোনো উপায় ছিল না৷ নিজেকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে, নিজের ক্ষমতাকালীন সময়কে স্মরণীয় করে রাখতে এবং তাঁর দলের যোগ্যতা প্রমাণে, এ কাজ তাঁকে করতে হতো৷
নির্বাহী ক্ষমতার মাধ্যমে সংস্কার সব সমস্যার সমাধান না করলেও এর ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষের উপকার হবে৷ এর মধ্যে বেশিরভাগই মেক্সিকো থেকে আসা অভিবাসী, যাঁরা বৈধ কাগজ ছাড়া বছরের পর বছর যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন৷
আরও দুটি বিষয়
ক্ষমতা ছাড়ার আগে ওবামাকে আরও দুটি বিষয় নিয়ে কাজ করতে হবে৷ এর মধ্যে একটি হলো জলবায়ু পরিবর্তন ও অন্যটি গুয়ানতানামো কারাগার বন্ধ করা৷ দুটোই অভ্যন্তরীণ হিসেবে বেশ উত্তপ্ত বিষয়৷ তাই কয়েকবার উদ্যোগ নিয়ে ব্যর্থ হলেও ওবামা আবারও বিষয়গুলো উত্থাপন করবেন৷ জলবায়ু পরিবর্তন প্রসঙ্গে প্রচারণার সময় ওবামা এই বলে অঙ্গীকার করেছিলেন যে, এ বিষয় যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্ব দেবে৷ আর প্রথমবার ক্ষমতা আসার প্রথব বছরের মধ্যেই গুয়ানতানামো বন্ধ করে দেয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন তিনি৷
কিন্তু কোনোটাই ঘটেনি৷ ওবামার হাতে আর সময়ও নেই৷ অভিবাসী আইন সংস্কার প্রসঙ্গে রিপাবলিকানদের পক্ষ থেকে শক্ত বাধার মুখোমুখি হতে হবে তাঁকে৷ কারণ অভিবাসী বিষয়ের মতোই এই দুটো ইস্যুতেও ওবামা কোনো কিছু না করে থাকতে পারবেন না৷