বন্দর বা বাঁধের প্রাচীরই এক জার্মান শিল্পীর সৃষ্টির ক্যানভাস হয়ে ওঠে৷ সেই সৃষ্টিকর্ম কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিলীন হয়ে যায়৷ ফ্রান্সের দক্ষিণে একটি শহরে বন্দরের প্রাচীরে তিনি এমনই এক অভিনব প্রকল্প শোভা পাচ্ছে৷
বিজ্ঞাপন
জার্মানির শিল্পী ক্লাউস ডাউফেন প্রেশার ওয়াশার নিয়ে সৃষ্টির কাজে মেতেছেন৷ ফ্রান্সের দক্ষিণে সেট শহরে বন্দরের প্রাচীরই এবার তাঁর পট হয়ে উঠেছে৷ সেখানে ১৩টি ‘রিভার্স গ্রাফিটি’ সৃষ্টি করা হচ্ছে৷ তার জন্য প্রাচীর পরিষ্কার করা হচ্ছে৷ ক্লাউস বলেন, ‘‘নানা চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও চার দেওয়ালের বাইরে কাজ করতে দারুণ লাগে৷ একটি বিষয় নিয়ে ঠিক সমালোচনা নয়, আমাকে প্রশ্ন করা হয়৷ এই শিল্প অস্থায়ী হলেও আমাকে মোটেই পীড়া দেয় না, বরং আকর্ষণীয় মনে হয়৷’’
তাঁর সরঞ্জাম হলো প্রেশার ওয়াশার৷ ২ থেকে ৩ বার ইউনিট চাপে যন্ত্রটি প্রাচীরের উপর পানি নিক্ষেপ করে৷ চাপ আরও বাড়ালে প্রাচীরের কাঠামোর ক্ষতি হবে৷
ক্লাউস ডাউফেন ও ক্লিনিং টেকনিশিয়ান নিক হাইডেন বেশ কয়েক বছর ধরে একসঙ্গে কাজ করছেন৷ যন্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয় পানি সরাসরি ভূমধ্যসাগর থেকে আনা হয়৷ নিক বলেন, ‘‘শুধু পানি দিয়ে এমন দারুণ আবহ ফুটিয়ে তোলা যে সম্ভব, সেটা সত্যি অসাধারণ৷ প্রাচীরের গায়ে গজানো গাছপালা আর লতাপাতা পরিষ্কার করলেই এমন স্পষ্ট রূপ সৃষ্টি করা সম্ভব৷ মুখচ্ছবিগুলির অভিব্যক্তি সত্যি অসাধারণ৷’’
বিশ্বের দামি কিছু শিল্পকর্ম
বিখ্যাত শিল্পীদের আঁকা ছবি ও ভাষ্কর্যের জন্য সংগ্রাহকরা বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে থাকেন – ৪০ কোটি ডলারের বেশি দাম ওঠাও আশ্চর্যের কিছু নয়৷ দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: picture alliance/ZUMAPRESS/R.Tang
সালভাদর মুন্ডি
লিওনার্দো দা ভিঞ্চির আঁকা ২০টি অক্ষত ছবির একটি এটি৷ ধারণা করা হয়, ১৫০০ সালে এ ছবিটি আঁকা হয়৷ ১৯৫৮ সালে ছবিটিকে অনুলিপি ভেবে নিলামে মাত্র ৬০ মার্কিন ডলারে এটি বিক্রি হয়৷ যিশুখ্রিষ্টের এ ছবিটি ২০১৭ সালে ১০ কোটি মার্কিন ডলারে বিক্রি হবে ধারণা করা হলেও অজ্ঞাত এক ক্রেতা ৪৫ কোটি ডলার দিয়ে কেনেন এটি৷
ছবি: picture alliance/ZUMAPRESS/R.Tang
ইন্টারচেঞ্জ
ডাচ-অ্যামেরিকান শিল্পী উইলেম ডে কুনিং-এর আঁকা ইন্টারচেঞ্জ নামে একটি তৈলচিত্র ২০১৫ সালে ৩০ কোটি ডলারে বিক্রি হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
তাস খেলায় মগ্ন
উত্তর অভিব্যাক্তিবাদ ঘরানার ফরাসি শিল্পী পল সেজানের আঁকা এ ছবিটির নাম ‘দ্যা কার্ড প্লেয়ার’৷ ২০১১ সালে ২৫ কোটি ডলারে ছবিটি বিক্রি হয়৷
ছবি: picture-alliance/akg-images
‘যখন তুমি বিয়ে করবে’
এ ছবিটি আঁকা হয়েছিল ১৮৯২ সালে৷ শিল্পী ফ্রান্সের পল গগাঁ৷ ‘হোয়েন উইল ইউ মেরি’ শিরোনামের এ ছবিটির দাম ২১ কোটি ডলার৷
ছবি: picture-alliance/akg-images/E. Lessing
‘নাম্বার ১৭এ’
অ্যামেরিকান শিল্পী জ্যাকসন পোলোকের আঁকা ‘নাম্বার ১৭এ’ নামের একটি চিত্রকর্ম ২০১৫ সালে ২০ কোটি ডলারে বিক্রি হয়৷ উপরের ছবিটি পোলোকের আঁকা, যার নাম নাম্বার ৭৷
ছবি: picture-alliance/dpa
‘বিয়ের ছবি’
নেদারল্যান্ডসের বিখ্যাত মার্টেন ও ওপইয়েন এর ১৬৩৪ সালের অনুষ্ঠিত বিয়ের ছবি এটি৷ চিত্রকর ডাচ শিল্পী রেমব্রান্ট হারমেনসুন ফান রিন৷ ২০১৫ সালে বিক্রি হওয়া এ ছবিটির দাম পড়েছে ১৮ কোটি ডলার৷
ছবি: gemeinfrei/DW Montage
আলজিয়ার্সের মহিলারা
লেডি অব আলজিয়ার্স শিরোনামে ছবিটি স্পেনের জগদ্বিখ্যাত চিত্রকর পাবলো পিকাসোর ১৯৫৫ সালে আঁকা৷ নিলামে ছবিটির দাম উঠে ১৭ কোটি ৯৪ লাখ ডলারে৷
ছবি: Reuters
‘ন্যু কুশে’
ইটালির চিত্রকর আমেদেও মোদিগলিয়ানি এই ছবিটি আঁকেন ১৯১৭ সালে, তার মৃত্যুর তিন বছর আগে৷ ১৭কোটি চার লাখ ডলারে ২০১৫ সালে বিক্রি হয় ছবিটি৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
‘মাস্টারপিস’
অ্যামেরিকান পপ আর্টিস্ট রয় লিচটেনস্টাইনের ১৯৬২ সালে একেছিলেন বিখ্যাত এ ছবিটি৷ ২০১৭ সালে ১৬ কোটি ৫০ লাখ ডলারে ছবিটি বিক্রি হয়৷
ছবি: Dan Kitwood/Getty Images
লুসিয়ান ফ্রয়েডের তিনটি প্রতিকৃতি
আইরিশ চিত্রকর ফ্রান্সিস বেকন এই তিন খণ্ডের ছবিটি আঁকেন ১৯৬৯ সালে৷ ছবিতে যার আলেখ্য, তিনি হলেন ব্রিটিশ চিত্রকর লুসিয়ান ফ্রয়েড, পক্ষান্তরে মনস্তত্বের জনক সিগমুন্ড ফ্রয়েডের পৌত্র৷ ২০১৩ সালে ক্রিস্টি’স-এর নিলামে ছবিটির দাম ওঠে ১৪ কোটি ২৪ লাখ মার্কিন ডলার৷ রয়েছে মার্কিন শিল্পকলা সংগ্রাহক এলেইন ওয়াইনের সংগ্রহে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
অঙ্গুলিনির্দেশ
সুইস ভাস্কর আলবের্তো জাকোমেত্তির সৃষ্টি এই মানুষ-সমান ব্রোঞ্জ মূর্তিটি নিউ ইয়র্কে ক্রিস্টি’স-এ নিলাম করা হয় ২০১৫ সালে, কেনেন স্টিভ কোহেন নামের এক হেজফান্ড ম্যানেজার৷ মূর্তিটি আজ বিশ্বের সবচেয়ে দামি ক্রয়যোগ্য ভাস্কর্য বলে গণ্য৷ এটি বিক্রি হয়েছেল ১৪ কোটি ১৩ লাখ মার্কিন ডলারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/V. Hatfield/Christies
সোনার আডেলে
অস্ট্রিয়ার চিত্রকর গুস্তাফ ক্লিম্ট আডেলে ব্লখ-বাউয়ারের এই প্রতিকৃতিটি আঁকেন ১৯০৭ সালে৷ ম্যানহ্যাটানের ‘নয়ে গ্যালেরি’ নামের সংগ্রহশালার জন্য ২০০৬ সালে ছবিটি কেনেন মার্কিন ব্যবসায়ী রোনাল্ড লডার৷ ছবিটি ১৩ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলারে কেনার ব্যবস্থা করে ক্রিস্টি’স সংস্থা৷
ছবি: AUSSCHNITT: picture-alliance/Heritage Images
চিৎকার
নরওয়েজীয় চিত্রকর এডভার্ড মুঞ্চ ‘চিৎকার’ ছবিটি এঁকেছেন একাধিক বার ৷ দা ভিঞ্চির মোনালিসা ও ফান গখ-এর সূর্যমুখি ফুলের পরেই মুঞ্চের এই ছবিটিকে বিশ্বের খ্যাততম চিত্রকর্ম বলে গণ্য করা হয়৷ ছবিটির প্যাস্টেল রঙে আঁকা এই সংস্করণ নিলাম করা হয় ২০১২ সালে, নিউ ইয়র্কের সথেবি সংস্থায়৷ মার্কিন শিল্পপতি লিয়ন ব্ল্যাক ১১ কোটি ৯৯ লাখ মার্কিন ডলারে কিনেন এটি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
নগ্নমূর্তি, সবুজ পাতা, আবক্ষ
পাবলো পিকাসো এই তেলরঙের ছবিটি এঁকেছিলেন মাত্র একদিনে – দিনটা ছিল ৮ই মার্চ, ১৯৩২৷ প্রায় অজ্ঞাত ছবিটি নিউ ইয়র্কের নিলামে বিক্রি হয় ১০ কোটি ডলারের বেশি মূল্যে, কেনেন এক অজ্ঞাত ক্রেতা৷ ব্যক্তিগত মালিকানায় থাকলেও, ছবিটি লন্ডনের টেট মডার্ন গ্যালারিকে ধার দেওয়া হয়েছে ২০১১ সালে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
রুপোলি গাড়ি দুর্ঘটনা
মার্কিন চিত্রকর অ্যান্ডি ওয়ারহল ১৯৬৩ সালে এই সিল্ক স্ক্রিন প্রিন্টটি সৃষ্টি করেন – যার বিষয়বস্তু হল একটি গাড়ি দুর্ঘটনা৷ ২০ বছর ধরে ব্যক্তিগত সংগ্রহে থাকার পর ২০১৩ সালে সথেবি-তে ছবিটি নিলাম করা হয়৷ ক্রেতা অজ্ঞাতই থাকেন; তবে ছবিটি পপ আর্ট শিল্পী ওয়ারহলের সবচেয়ে দামী ছবি বলে গণ্য করা হয়৷
ছবি: AUSSCHNITT: picture-alliance/dpa/Sotheby's
15 ছবি1 | 15
ক্লাউস ডাউফেন-এর আরেকটি সরঞ্জাম হলো কাঠের স্টেনসিল৷ এগুলি দিয়ে বন্দরের প্রাচীরের গায়ে ১৩টি প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে৷ সেই সব মানুষ এই শহরেই বসবাস করেছেন৷ ক্লাউস বলেন, ‘‘আমি বেশ কয়েকটি বই কিনেছি, যাতে সিট শহরের পুরানো ছবির সংগ্রহ রয়েছে৷ সেখান থেকেই আমি কিছু অসাধারণ মুখচ্ছবি বেছে নিয়েছি৷ বিখ্যাত ব্যক্তিদের চাই নি, এমন মানুষ বেছে নিয়েছি, যাদের মুখচ্ছবি জীবনেরই কাহিনি তুলে ধরে৷ সেটাই একমাত্র শর্ত৷’’
সিট মঁপেলিয়ে শহরের প্রায় ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত৷ ভূমধ্যসাগর উপকূলে মাছ ধরার ক্ষেত্রে ফ্রান্সের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বন্দর এটি৷ শহরের মূল নিদর্শন হলো বন্দরের প্রাচীর, যা প্রায় ৬৫০ মিটার বিস্তৃত ও ২ মিটার ৮০ সেন্টিমিটার উঁচু৷ ক্লাউস ডাউফেন বলেন, ‘‘বন্দরের এই প্রাচীরই শহরের প্রথম নির্মাণের চিহ্ন, যে কারণে সিট আদৌ শহর হয়ে উঠেছে৷ বন্দরই শহরের উৎস৷ ৩৫০ বছর আগে সেটি তৈরি হয়েছিল৷ মানুষের বসতি গড়ে উঠেছিল৷ সেটাই আমার সৃষ্টিকর্মের প্রেক্ষাপট৷’’
ক্লাউস ডাউফেন শিল্প নিয়ে পড়াশোনা করেছেন৷ পেশায় তিনি শিক্ষক৷ অবসর সময়ে রিভার্স-গ্রাফিটি শিল্পচর্চা করেন৷ ২০০৭ সাল থেকে এক জার্মান কোম্পানির সঙ্গে তিনি এই কাজ করছেন৷
পিৎসা যখন শিল্পীর অনুপ্রেরণা
ইউনেস্কো ২০১৭ সালে পিৎসা তৈরির শিল্পকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে৷ অনেক শিল্পীর শিল্পকর্মের পরিকল্পনাও এসেছে পিৎসা থেকে৷
ছবি: Paul Barsch
পিৎসা, নাকি রুটি?
দেখে খুব সাধারণ পিৎসা মনে হচ্ছে? অনেকে হয়ত একে পিৎসাই বলবেন না৷ কারণ, টপিং কোথায়? মনে হচ্ছে যেন রুটির উপর শুধু একটি টমেটো বসিয়ে দেয়া হয়েছে৷ তবে যখন জানবেন মার্কিন শিল্পী লুক ফুলার এই পিৎসার ডিজাইন করেছেন, তখন আপনি নিশ্চিত হতে পারেন যে, এটি আসলে পিৎসাই৷ ২০১৫ সালে ভেনিসে অনুষ্ঠিত ‘কন্টেম্পরারি ভিজ্যুয়াল আর্টস’ প্রদর্শনীতে এই পিৎসার ডিজাইন করেছিলেন ফুলার৷
ছবি: Paul Barsch
দেয়ালে পিৎসা
শিল্পী পাউল বার্শের কাছে পিৎসা শুধু খাওয়ার জিনিসই নয়৷ পিৎসা দিয়ে তিনি এই শিল্পকর্মটি তৈরি করেছেন৷ নাম ‘পিৎসা ভোইয়ার’৷ দেখুন কেমন টেলিভিশনের মতো এটি দেয়ালে ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে৷
ছবি: Paul Barsch
যেন ভাস্কর্য
এ আবার কেমন পিৎসারে বাবা! ইটালীয় শিল্পী মার্কো ব্রুজোন তাঁর জাতীয় খাবারকে বোধ হয় একটু অন্যরূপে দেখতে চেয়েছেন৷ তাই তো চোখ আর মুখসহ দেখতে অনেকটা ভাস্কর্যের মতো করে তৈরি করেছেন এই পিৎসা শিল্পকর্ম৷ নাম দিয়েছেন ‘সেন্ডিং আউট ফর ইউ’৷ এটি তৈরিতে ময়দা নয়, সিরামিক ব্যবহার করেছেন ব্রুজোন৷
ছবি: Marco Bruzzone
কাপড়ের পিৎসা
ফরাসি শিল্পী ক্লদ ভিয়ালার পুরনো কাপড়ের টুকরো জোড়া লাগিয়ে এই পিৎসাটি তৈরি করেছেন৷ ১৯৯০ সালে তৈরি এই শিল্পকর্মটির নাম ‘১৯৯০/১১২’৷
ছবি: Aurélien Mole
‘পিৎসা গড’
নিউ ইয়র্কের শিল্পী স্পেন্সার সুইনি’র এই শিল্পকর্মের নাম ‘পিৎসা গড’৷ ইটালির নাপোলিতে জন্ম নেয়া পিৎসা, গত শতকের পঞ্চাশের দশকে যুক্তরাষ্ট্রের তরুণদের মন জয় করতে সমর্থ হয়েছিল৷
ছবি: Jake Palmert
5 ছবি1 | 5
তাদের প্রথম বড় প্রকল্প জার্মানিরই এলাকায় এক বাঁধের প্রাচীরে রূপায়িত হয়েছিল৷ ২০০৮ সালে জাপানে এক প্রাচীরে ফুলের সম্ভার ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল৷ ২০১২ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় বিশাল বাঘের আবির্ভাব ঘটেছিল৷ ক্লাউস ডাউফেন বলেন, ‘‘রিভার্স-গ্রাফিটি আমার কাছে শিল্পের নিখুঁত রূপ৷ অঙ্কনশিল্পী হিসেবে চিরকালই আমার বড় ফরম্যাট পছন্দ৷ বাঁধের প্রাচীরে আমি নিজস্ব সৃষ্টি ফুটিয়ে তুলতে পারি৷ এর থেকে বড় চিত্রপট আর নেই৷’’
শিল্পসৃষ্টির ক্ষেত্রে কেয়ারশার কোম্পানির পৃষ্ঠপোষকতার কর্মসূচি রয়েছে৷ মনুমেন্ট বা স্মৃতিস্তম্ভ পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে তাদের ৩৫ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে৷ তাদের অন্যতম চমকপ্রদ প্রকল্প ছিল অ্যামেরিকার বিখ্যাত মাউন্ট রাশমোর৷ ২০০৫ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্টদের মুখের আদলে তৈরি সেই পাহাড় সাফাইয়ের দায়িত্ব পেয়েছিল এই কোম্পানি৷ ব্রাজিলের রিও শহরে যিশুখৃষ্টের মূর্তি ও জার্মানিতে হেয়ারমান মনুমেন্টও সাফাই করেছে তারা৷ এখনো পর্যন্ত এই কোম্পানি গোটা বিশ্বে ১৪০টিরও বেশি দর্শনীয় স্থান বিনামূল্যে সাফাই করেছে৷
তিন দিনেই কাজ শেষ করেছেন ক্লাউস ডাউফেন৷ সিট শহরের বন্দরের প্রাচীর সম্ভবত ফ্রান্সের দক্ষিণে খোলা আকাশের নীচে সবচেয়ে বড় গ্যালারি হয়ে উঠেছে৷ তবে প্রকল্পটি চিরস্থায়ী নয়৷ ক্লাউস বলেন, ‘‘প্রাচীর কতটা কাত হয়ে রয়েছে, তার অ্যালাইনমেন্ট বা বিন্যাস এবং জলবায়ু – এই তিনটি বিষয়ের উপর সবকিছু নির্ভর করছে৷ আমার অভিজ্ঞতা বলে, উত্তর দিকে অ্যালাইনমেন্টের কারণে এখানে আদর্শ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে৷ কমপক্ষে ৫ বছর ধরে এই শিল্পকর্ম দেখা যাবে৷
এই সৃষ্টিকর্মের নাম ‘লোকজন’৷ ফ্রান্সের দক্ষিণের এই শহরের ১৩ জন বাসিন্দাকে নিয়ে এক মনুমেন্ট গড়ে তোলা হয়েছে৷ রিভার্স-গ্রাফিটির এই সৃষ্টি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিলীন হয়ে গেলেও ডাউফেন-এর এই শিল্পকর্মের স্মৃতি অমর হয়ে থাকবে৷