রিমোট কন্ট্রোল ভেন্টিলেটরের নকশা করেছেন পোলিশ বিজ্ঞানীরা
১২ জুন ২০২০
ডাক্তাররা যেন নিরাপদ দূরত্বে থেকে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিতে পারেন, সেজন্য একদল পোলিশ বিজ্ঞানী রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে চালানো সম্ভব এমন ভেন্টিলেটরের নকশা করেছেন৷
বিজ্ঞাপন
এই ভেন্টিলেটরের নাম দেয়া হয়েছে ‘রেসপিসেভ’৷ এই ভেন্টিলেটরের রিডিংগুলো ডাক্তাররা অ্যাপের সাহায্যে হাসপাতালের যে কোনো অংশ থেকে দেখতে পারবেন৷ নকশাকারীদের বরাত দিয়ে এমন খবর প্রকাশ করেছে রয়টার্স৷
যদি কোনো কারণে ভেন্টিলেটরের সংযোগ খুলে যায়, কিংবা রোগীর অবস্থা অনেক খারাপ হয়ে যায়, তাহলে ডাক্তারদের কাছে সতর্কতা নোটিফিকেশন আসবে৷
প্রকল্পটির উপদেষ্টা লুকাস সজারপাক বলেন, এই ভেন্টিলেটর ব্যবহার করলে ডাক্তারদের রোগীর সরাসরি সংস্পর্শে আসার হার কমবে৷ ডাক্তারসহ স্বাস্থ্যসেবাকর্মীরা, বিশেষ করে গুরুতর অবস্থার রোগীদের সেবা দেন, তারা নিজেরা অসুস্থ হবার ঝুঁকিতে বেশি রয়েছেন৷ কারণ, অনেকের কাছেই পর্যাপ্ত সুরক্ষা পোশাক বা উপকরণ নেই৷
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা এই ভেন্টিলেটরের দাম কত হতে পারে তা নির্দিষ্ট করে না বললেও এটি প্রচলিত ভেন্টিলেটরের চেয়ে কম দামে পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন৷ আগামী কয়েকমাসের মধ্যে পোল্যান্ডের বাজারে মিলবে এই ভেন্টিলেটর৷ এরপর সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দেয়া হবে বলে জানান প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা৷ করোনা ভাইরাসের বিস্তারের পর সারাবিশ্বে ভেন্টিলেটরের চাহিদা বেড়ে গেছে৷
জেডএ/কেএম (রয়টার্স)
যেভাবে মানবদেহে আক্রমণ করে করোনা ভাইরাস
শুধু ফুসফুস নয় বরং করোনা ভাইরাসের আক্রমণে মানুষের হৃৎপিণ্ড, স্নায়ু, মস্তিষ্ক, কিডনি, ধমনি এবং ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে৷ ঘটতে পারে মৃত্যু৷
ছবি: picture-alliance/dpa/imageBROKER
হৃৎপিণ্ড
বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে করোনা ভাইরাসের কারণে হৃৎপিণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ হৃদরোগ বা উচ্চ রক্তচাপ থাকা ব্যক্তিদের কোভিড-১৯ এ মৃত্যুর হার অনেক বেশি৷ কিন্তু যাদের হৃদরোগ নেই তারাও আক্রান্তের পর হৃৎপিণ্ডের পেশির কোষ মারা যায়৷ তবে ভাইরাসের আক্রমণে কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় নাকি ভাইরাসের বিরুদ্ধে শরীরের তৈরি রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থার কারণে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/imageBROKER
ফুসফুস
কোভিড-১৯ এ ফুসফুস সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ ফুসফুস জটিলতাতেই বেশির ভাগ মানুষের মৃত্যু হয়েছে৷ যারা সুস্থ হয়ে উঠেন তাদের ফুসফুসও দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ কারণ, সুস্থদের ফুসফুসে ঘোলাটে সাদা মেঘের মত বস্তু দেখতে পেয়েছেন চীনের গবেষকরা৷ যেটা ফুসফুসের স্থায়ী ক্ষতির ইঙ্গিত দেয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Gollnow
শ্বাসকষ্ট
ফুসফুসের এই অবস্থা হলে রক্তে অক্সিজেন পৌঁছাতে বাধা পাবে৷ ফুসফুস আড়ষ্ট হয়ে পড়বে এবং শ্বাসপ্রশ্বাস ছোট ও দ্রুত গতির হবে৷ ফলে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট এবং শুকনো কফ দেখা দেবে৷ ফুসফুসের কোষ একবার ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেটা আর ঠিক হয় না৷
ছবি: Reuters/D. Siddiqui
স্নায়ুতন্ত্র
কোভিড-১৯ আক্রান্ত ৮০ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে দেখা গেছে তাদের স্বাদ এবং ঘ্রাণ শক্তি নষ্ট হয়ে গেছে৷ সংক্রমণের একেবারে শুরুর দিকেই এ উপসর্গ দেখা দেয়৷ সাধারণ ফ্লুর ক্ষেত্রে যেটা রোগের চূড়ান্ত পর্যায়ে হয়৷ ঘ্রাণ শক্তি বা অলফ্যাক্টরি নার্ভ অনুনাসিক ঝিল্লি থেকে খুলির হাড়ের মাধ্যমে সরাসরি মস্তিষ্কে পৌঁছায়৷
ছবি: Colourbox
ধমনি
জুরিখের একদল প্যাথলোজিস্ট করোনায় মারা যাওয়া কয়েকজনের ময়নাতদন্ত করে দেখেছেন কারো কারো রক্তনালি এবং লাসিকা গ্রন্থি ফুলে গিয়ে সেগুলোতে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছে৷ যার ফলে হৃৎপিণ্ড, কিডনিসহ অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এক সঙ্গে বিকল হয়ে মানুষ মারা যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Burgi
মস্তিষ্ক
মার্স এবং সার্স ভাইরাসের সময়ও মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেখা গেছে৷ নতুন করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রেও আক্রান্ত অনেকের খিচুনি এবং মৃগীরোগের চিকিৎসা দিতে হয়েছে৷ এ কারণেই হয়তো আক্রান্ত অনেকের মধ্যে কোনো পূর্ব লক্ষণ ছাড়াই তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়৷ তবে করোনা ভাইরাসের কারণে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ার বিষয়ে এখনো পরিষ্কার কিছু জানা যায়নি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Prefeitura Manaus/I. Anne
কিডনি
কোভিড-১৯ আক্রান্ত অনেকের শরীরে মারাত্মক নিউমোনিয়ার লক্ষণ থাকে এবং ভেন্টিলেশনের প্রয়োজন হয়৷ ফুসফুসে জমা তরল বের করতে ওই রোগীদের যে ওষুধ দেওয়া হয় তাতে তাদের পুরো শরীর থেকে তরল বের হয়ে যায়৷ ফলে কিডনিতে রক্ত সরবরাহ কমে যায় এবং কিডনি ঠিকমত কাজ করতে না পেরে অকেজো হয়ে পড়ে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Murat
রক্তপিণ্ড
কোভিড-১৯ এ গুরুতর আক্রান্ত ব্যক্তিদের শরীরে অনেক সময় রক্ত জমাট বেধে রক্তনালি বন্ধ হয়ে যায়৷ এটার কারণেও অনেক সময় কিডনিতে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে এ অঙ্গটি অকেজো হয়ে পড়ে৷
করোনা ভাইরাসের কারণে মানুষের ত্বকও ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ অনেক দেশে কোভিড-১৯ আক্রান্তদের ত্বকে ক্ষত বা র্যাশ সৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে৷ রক্ত জমাট বাধার কারণে ত্বকের নিচে এ ধরনের র্যাশ দেখা যায়৷