রুয়ান্ডার রুগেজি জলাভূমির নৈসর্গিক দৃশ্য যেমন সুন্দর, তেমনই এলাকার মানুষদের বাঁচন-মরণের প্রশ্ন জড়িত এর সাথে৷ রুয়ান্ডার অর্থনীতিতেও রুগেজির গুরুত্ব আছে, কেননা এই পানি থেকেই নাকাতুরু জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের শক্তি আসে৷
বিজ্ঞাপন
জলাভূমির সাথে জড়িত বাঁচন-মরণের প্রশ্ন!
05:27
রুয়ান্ডার উত্তরে রুগেজি জলাভূমি প্রায় বিশ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে৷ ফ্রান্সিস মুসোকে হলেন এই এলাকার সবচেয়ে নামকরা পরিবেশ সংরক্ষণকারী৷ আইইউসিএন-এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার মুসোকে বলেন, ‘‘এই জলাভূমি জলকে ফিল্টার করে, জীববৈচিত্র্যের জন্য যা খুব জরুরি৷ আবার এই জলাভূমি থেকে বিভিন্ন নদীতে জল যায়৷ এছাড়া পাহাড়ের অন্যদিকে আরো দু'টি হ্রদের পানিও আসে এই জলাভূমি থেকে৷ নাতারুকা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জলও আসে এই জলাভূমি থেকে৷ কাজেই এই জলাভূমি বাঁচানোটা খুব দরকার৷’’
এই জলাভূমিতে বহু বন্যপাখি বাসা বাঁধে, তাদের মধ্যে পাটকিলে রংয়ের ঝুঁটিওয়ালা সারস বা আইবিস পাখির মতো বিরল প্রজাতিও আছে৷ কিন্তু প্রকৃতি এখন চাপের মুখে৷ ডিম পাড়া থেকে শুরু করে বাচ্চা মানুষ করা পর্যন্ত, এ সব কাজের জন্য পাখিদের চাই নিরিবিলি পরিবেশ, নির্জনতা৷ মুসোকে জানালেন, ‘‘একটা বড় বিপদ হলো, মানুষজন লুকিয়ে-চুরিয়ে এখানে ঢুকে পড়ে, কেননা সব কিছু সুরক্ষিত করা, সব জায়গায় প্রহরী রাখা সম্ভব নয়৷ ওরা ঢুকে ঘাস কাটে, যা জলাভূমির পক্ষে ভালো নয়, কেননা এর ফলে রোদে-তাপে আরো বেশি জল উপে যায়৷ কিন্তু মাটির ক্ষয় আরো খারাপ৷ বর্ষায় ক্রমেই আরো বেশি মাটি ধুয়ে ভ্যালিতে নেমে আসে, কেননা পাহাড়ের ঢালগুলোকে বাঁচানোর মতো গাছ নেই৷’’
অ্যামাজনের জঙ্গলে বেআইনি গাছ কাটার বিরুদ্ধে সংগ্রাম
দক্ষিণ অ্যামেরিকার অ্যামাজন নদীর অববাহিকার বৃষ্টিপ্রধান গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অরণ্য প্রায় দুশ’ কোটি টন কার্বন ডাইঅক্সাইড শুষে নেয়৷ ব্রাজিলের পরিবেশ দপ্তরের কর্মীরা পৃথিবীর এই সবুজ ফুসফুসকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন৷
ছবি: Reuters/U. Marcelino
সবুজ ফুসফুস
অ্যামাজন নদীর অববাহিকায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অরণ্যের আয়তন ভারতের প্রায় দ্বিগুণ৷ সেই অরণ্যের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ ব্রাজিলে৷ কিন্তু পৃথিবীর এই সবুজ ফুসফুস বেআইনি গাছ কাটা আর খনিজ সম্পদের জন্য খোঁড়াখুড়ির ফলে বিপন্ন৷
ছবি: Reuters/U. Marcelino
হাতে-নাতে ধরা
মিলিটারি পুলিশ সাথে নিয়ে ‘ইবামা’-র এজেন্টরা বেআইনি গাছ-কাটিয়েদের পিছনে ধাওয়া করছেন৷ ‘ইবামা’ বলতে বোঝায় ব্রাজিলের পরিবেশ ও নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ প্রতিষ্ঠান৷ ইবামার এজেন্টরা চোরা কাঠুরিয়াদের হাতে-নাতে ধরার চেষ্টা করেন৷ ছবিতে ইবামার এক এজেন্ট কাঠ বওয়ার ট্রাকের দিকে তাক করছেন৷
ছবি: Reuters/U. Marcelino
দেরি করা নেই...
ইবামা বেআইনি কাঠ-কাটিয়েদের প্রতি খুব সদয় নয়৷ ইবামার এজেন্টদের হাতে ধরা পড়লে আর নিস্তার নেই৷ পারা রাজ্যের নোভো প্রোগ্রেসো শহরের কাছে কাঠ সুদ্ধু ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দিতে দ্বিধা করেননি ইবামার কর্মকর্তারা৷
ছবি: Reuters/U. Marcelino
বিপজ্জনক
ইবামার কাজে ঝুঁকিও কম নয়৷ কিছু কিছু চোরা কাঠুরের কাছে গুলিবন্দুক থাকে৷ গত জুন মাসে এক পুলিশকর্মী অভিযান চালানোর সময় অপরাধীদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন৷
ছবি: Reuters/U. Marcelino
সাফল্যের চেয়ে অসাফল্যই বেশি
এক্ষেত্রে ইবামার কর্মকর্তারা সফল হয়েছেন বটে, কিন্তু এ ধরনের সাফল্য কমে আসছে৷ পরিবেশ বিভাগের উপরেও অর্থনৈতিক সংকটের ছাপ পড়েছে৷ বিগত কয়েক বছরে তাদের বাজেট কমেছে প্রায় ৩০ শতাংশ৷
ছবি: Reuters/U. Marcelino
ঢাল নেই, তলোযার নেই
‘‘কাঠ চোরাদের কাছে আমাদের চেয়ে ভালো সাজসরঞ্জাম থাকে’’, বললেন পারা রাজ্যে ইবামার প্রতিনিধি উইরাতান বারোসো৷ ‘‘যতদিন আমরা মার্কা-না-মারা গাড়ি আর ভালো রেডিও সেট না পাচ্ছি, ততদিন আমরা ভালোভাবে কাজ করতে পারব না৷’’
ছবি: Reuters/U. Marcelino
পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে
ইবামার উদ্যোগের ফলে ২০০৪ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে অ্যামাজনের অববাহিকা অঞ্চলে গাছ কাটা কমেছে প্রায় আশি ভাগ৷ কিন্তু তার পরের চার বছরে গাছ কাটা বেড়েছে ৩৫ শতাংশ৷ ২০১৫ সালে অ্যামাজন জঙ্গলের যে অংশটা কেটে ফেলা হয়, তার আয়তন হবে লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের চারগুণ৷
ছবি: Reuters/U. Marcelino
জার্মানি আর নরওয়ের সাহায্য
ব্রাজিল সরকার স্বীকার করেন যে, ইবামা যাতে ঠিকমতো তার দায়িত্ব পালন করতে পারে, সেজন্য পর্যাপ্ত অর্থসংস্থান করা হয়নি৷ এখন ফুন্ডো আমাজোনিয়া বা অ্যামাজন নিধি থেকে আরো ১৫ লাখ ইউরো পরিমাণ অর্থ দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে৷ অ্যামাজন নিধির পুঁজি আসে প্রধানত জার্মানি ও নরওয়ে থেকে৷
ছবি: Reuters/U. Marcelino
8 ছবি1 | 8
স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘাস চাই তাদের গরুবাছুরের জন্য৷ এখনই ঘাস খুঁজে পাওয়া মুশকিল৷ পাহাড়ের ঢালগুলোয় আর গাছ নেই বললেই চলে৷ মাটি আর জল ধরে রাখতে পারে না, যা শুধু এই এলাকাতেই নয়, গোটা রুয়ান্ডাতেই একটা বিরাট সমস্যা৷ তার ফলে পানি, জলাভূমি, হ্রদ, সব কিছুই বিপন্ন হচ্ছে৷ ফ্রান্সিস মুসোকে নিয়মিত চাষিদের সঙ্গে দেখা করে সমাধান খোঁজেন, যদিও সহজ সমাধান বলে কিছু নেই৷ অপরদিকে এখানকার মানুষরাও জানেন যে, এভাবে চললে তাদের অস্তিত্বের সংকট দেখা দেবে৷ চাষি ইমাকুলে মাকানগারাম্বে বলেন, ‘‘বিশ বছর আগে এখানে বড় বড় গাছ ছিল, অনেক জঙ্গল ছিল৷ লোকে অনেক গাছ কেটে ফেলেছে৷ আজ তাদের রান্নার কাঠ দরকার, জনসংখ্যাও বেড়ে চলেছে৷ এখন এখানে জন্তুজানোয়ার প্রায় দেখাই যায় না৷’’
সমাধান
একটা সম্ভাবনা হলো পুনর্বনানীকরণ৷ নতুন গাছ লাগিয়ে মাটির ক্ষয় রোধ করা হবে, আবার তা মানুষেরও কাজে লাগবে৷ যেমন হ্যাজেল বাদামের ঝাড় বসিয়ে সেখানে সবজির চাষ করা চলে৷ বাদামগাছের ডালপালা গরুবাছুরের খাদ্য হতে পারে, কাজেই জলাভূমি থেকে ঘাস কাটার দরকার পড়বে না৷ মুসোকে জানালেন, ‘‘আগে লোকে ভাবত, গাছপালা বাগানের পক্ষে ভালো নয়; ভাবত, গাছ লাগালে তা তাদের ফলের গাছ, সবজির গাছ ইত্যাদির বাড় আটকে দিতে পারে৷ কিন্তু ক্রমে ক্রমে, বহু আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ওদের বোঝানো গেছে যে, গাছ লাগানো চাষবাসের পক্ষে উপকারী৷’’
বিশুদ্ধ বাতাসের স্বাদ দেয় যে টাওয়ার
দূষিত নগরে বিশুদ্ধ বাতাসের স্বাদ দিতে শুরু হয়েছে এক অভিনব প্রকল্প৷ শুধু বিশুদ্ধ বাতাস নয়, গহনাও দেয় এই প্রকল্প৷
ছবি: Derrick Wang
এই ধরিত্রীর নয়!
স্মগ বা ধোঁয়া ও কুয়াশার মিশ্রন মুক্ত টাওয়ার দেখতে খু্বই আধুনিক, তবে এটির কাজ সাধারণ: বিশুদ্ধ বাতাস দেয়া৷
ছবি: Derrick Wang
আশেপাশের বাতাস বিশুদ্ধ করা
টাওয়ারের ভেতরে রয়েছে খুবই কার্যকর এয়ার ফিল্টার, যেটি খুব কম জ্বালানি ব্যবহার করে, কিন্তু বাতাসে ভেসে বেড়ানো ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণাও আটকে ফেলে৷ ফলে টাওয়ারের আশেপাশের বাতাস নগরীর তুলনায় ৭৫ শতাংশ বেশি পরিষ্কার থাকে৷
ছবি: Derrick Wang
মুক্তভাবে শ্বাস নেয়ার জায়গা
নিঃসন্দেহে একটি টাওয়ারের পক্ষে পুরো শহরের বাতাস পরিষ্কার করা সম্ভব নয়৷ তাই এটি স্থাপনের উদ্দেশ্য হচ্ছে, মানুষকে উৎসাহ দেয়া এবং তাদের জন্য এমন একটি জায়গা তৈরি করা যেখানে তারা সমবেত হতে পারবে এবং মুক্তভাবে নিশ্বাস নিতে পারবে৷ এমনকি বেইজিংয়ের মতো দূষিত শহরেও তা সম্ভব৷
ছবি: Laard Buurman
কিন্তু ধুলা দিয়ে কী করা হবে?
যেহেতু রোসেনগার্ডে এমন এক ভবিষ্যতে বিশ্বাস করেন, যেখানে আবর্জনা বলে কিছু থাকবে না, তাই তিনি ধুলিকণাগুলোকে কাজে লাগানোর এক উপায়ও যোগ করেছেন স্মগ মুক্ত টাওয়ারে৷
ছবি: Studio Roosegaarde
মূল্যবান কিছু একটা
রোসেনগার্ডের দল ঠিক করেছে দূষিত বাতাস থেকে সংগৃহীত ধুলিকণা ত্রিশ মিনিট ধরে কম্প্রেস করে এক্রাইলিক দিয়ে মুড়ে ফেলতে হবে৷ ফলে সেগুলো অত্যাশ্চর্য কিউবে পরিনত হয় যা দিয়ে এরকম ‘স্মগমুক্ত রিং’ তৈরি করা যায়৷
ছবি: Studio Roosegaarde
একটি সাহসী স্বপ্ন
এই প্রকল্পের পেছনে রয়েছেন ডাচ ডিজাইনার ডান রোসেনগার্ড৷ তিনি মনে করেন, বিশুদ্ধ বাতাস পাওয়াটা মানবাধিকার৷ আর সেটা নিশ্চিত করতেই এই প্রকল্প এগিয়ে নিয়ে যেতে চান রোসেনগার্ড৷
ছবি: Willem de Kam
6 ছবি1 | 6
প্রকৃতি সুরক্ষা সংগঠন আইইউসিএন ইতিমধ্যে পাঁচটি নার্সারিতে গাছের চারা বড় করছে, যেমন ইউক্যালিপ্টাস গাছের চারা৷ এই সব নার্সারিতে মানুষজন কাজ করছে৷ এভাবে চার লক্ষ গাছের চারা তৈরি করা সম্ভব হয়েছে৷ কিছু কিছু গাছ রাখা হবে, অন্যগুলো রান্নার কাঠ হবে৷ তবে গোটা এলাকাতে আরো বেশি করে গাছ লাগানো প্রয়োজন৷ নয়ত প্রকৃতির ‘জলচক্র' বিপন্ন হবে৷ জলবিদ্যুৎ রুয়ান্ডার পক্ষে ক্রমেই আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে৷ ইতিমধ্যে দেশের ৪০ শতাংশ জ্বালানি শক্তি আসে জলবিদ্যুৎ থেকে৷ বৃষ্টি না হওয়ার ফলে তাও বিঘ্নিত হচ্ছে৷ নাতাকুরু হাইড্রোপাওয়ার-এর ম্যানেজার জঁ তোয়াজামহোরো বললেন, ‘‘আজকাল জলের উচ্চতা আগের চেয়ে কম, কাজেই পাওয়ার স্টেশনটা চালানো আগের থেকে শক্ত হয়ে পড়েছে৷ জলাভূমি একটি নাজুক পরিবেশ প্রণালী৷ কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আমাদের বিশেষভাবে পানির প্রয়োজন৷’’
জলাভূমি থেকে যে জলধারাগুলি আসে, তাদের আগের মতো বেগ নেই৷ কাজেই জলাভূমি রক্ষা করা আরো জরুরি হয়ে পড়েছে৷ মুসোকে বলেন, ‘‘আমি চাই যে, জলাভূমি বেঁচে থাকুক৷ জলাভূমি আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণ করে, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রকে দেয় শক্তি৷ অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য আমাদের পানি চাই৷ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও এই পরিবেশ প্রণালীকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে৷’’
রুগেজি জলাভূমি রুয়ান্ডার একটি গুরুত্বপূর্ণ পানির আধার এবং ভবিষ্যতেও তা থাকবে৷
ইউলিয়া হেনরিশমান/এসি
পানির উপর হচ্ছে সবজি চাষ
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কয়েকটি গ্রামের বেশিরভাগই বছরের পুরোটা সময় জলাবদ্ধ থাকে৷ এ সব গ্রামের মানুষেরা ভাসমান পদ্ধতিতে গাছের চারা এবং সবজি উৎপাদন করে কৃষিক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটিয়েছেন৷
ছবি: DW
কৃষকের কৌশল
বছর জুড়েই জলাবদ্ধতা, সাথে কচুরিপানার মিছিল৷ ফলে পিরোজপুরের নাজিরপুর এলাকার নিম্নাঞ্চলে স্বাভাবিক উপায়ে কৃষিকাজ কার্যত অসম্ভব৷ তবে বৈরী এই পরিবেশের সঙ্গে লড়াই করে নাজিরপুরের কৃষকরা নিজেদের কৌশলে চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষিকাজ৷
ছবি: DW
ভাসমান কৃষিক্ষেত্র
নাজিরপুরের মুগাঝোর এলাকার জলাভূমিতে ভাসমান কৃষিক্ষিত্র৷ নিজেদের উদ্ভাবিত ‘ধাপ’ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করেন এ সব এলাকার মানুষরা৷ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) ‘কৃষি ঐতিহ্য অঞ্চল’ হিসেবেও স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে নাজিরপুরে উদ্ভাবিত ভাসমান পদ্ধতির এ চাষাবাদ৷
ছবি: DW
যেভাবে তৈরি হয় ধাপ
নাজিরপুরের পানিতে ডোবা নিম্নাঞ্চল কচুরিপানা, দুলালীলতা, শ্যাওলা ও বিভিন্ন জল সহিষ্ণু ঘাসসহ নানান জলজ উদ্ভিদে ভরপুর৷ এ সব জলজ উদ্ভিদকে স্তূপ করে পচিয়ে তারা তৈরি করেন ভাসমান এক ধরণের ধাপ৷ এই ভাসমান ধাপের উপরেই চাষাবাদের এক নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেন তাঁরা৷
ছবি: DW
পুরনো ধারা
কৃষি জমির বিকল্প হিসেবে জলাশয়ে ভাসমান চাষাবাদ দীর্ঘকাল ধরে চলে আসছে এ অঞ্চলে৷ কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, এ পদ্ধতিতে কৃষির উৎপাদনশীলতা জমির চেয়ে ১০ গুণ বেশি৷
ছবি: DW
জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদ
ধাপ পদ্ধতির এ চাষাবাদ হয় সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতিতে৷ রাসায়নিক সারের ব্যবহার নেই বললেই চলে৷ ফলে উৎপাদন খরচও কম এবং স্বাস্থ্যকর৷
ছবি: DW
ভাসমান বীজতলা
জলাভূমিতে প্রথমে কচুরিপানা, শ্যাওলা ও বিভিন্ন জলজ ঘাস স্তরে স্তরে সাজিয়ে দুই ফুট পুরু ধাপ বা ভাসমান বীজতলা তৈরি করা হয়৷ এগুলো কয়েকদিন ধরে পচানো হয়৷ একেকটি ভাসমান ধাপ ৫০-৬০ মিটার লম্বা ও দেড় মিটার চওড়া হয়৷
ছবি: DW
চাষ করা যায় অনেককিছু
ভাসমান এ সব ধাপে সাধারণত লাউ, সিম, বেগুন, বরবটি, করলা, পেঁপে, টমেটো, শশা, পুঁইশাক, মিষ্টি কুমড়া, চালকুমড়া, মরিচ ইত্যাদি শাকসবজি ও মশলার চারা উৎপাদন করে থাকেন কৃষকরা৷ অনেক কৃষক আবার লাল শাক, ঢেঁড়স, হলুদ ইত্যাদিও চাষ করে থাকেন৷
ছবি: DW
নেই কোনো কৃষিঋণের ব্যবস্থা
মুগারঝোরের চাষীদের জন্য কৃষি ঋণের কোনো ব্যবস্থা নেই৷ স্থানীয় মহাজনদের কাছ থেকে চরা হারে সুদ নিয়ে গরিব এ চাষীরা তাঁদের কৃষি কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন৷ স্থানীয় কৃষক আশুতোষ জানান, সরকার সহজশর্তে ঋণ দিলে তাঁরা ভাসমান এ চাষাবাদের আরও বিস্তৃতি ঘটাতে পারবেন৷
ছবি: DW
বিক্রি হয় কচুরিপানা
নাজিরপুরের মুগারঝোরে নৌকা বোঝাই কচুরিপানা নিয়ে ক্রেতার খোঁজে এক বিক্রেতা৷ এক নৌকা কচুরিপানা সাধারণত বিক্রি হয় ২-৩ হাজার টাকায়৷ এছাড়া নাজিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় এসব কচুরিপানার হাটও বসে৷