1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রুপনগরে আগুন: নিঃস্ব বস্তিবাসী যাবে কোথায়?

সমীর কুমার দে ঢাকা
১৮ আগস্ট ২০১৯

রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরে আগুনে পুড়ে নিঃস্ব হয়েছেন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ৷ আট থেকে দশ হাজার পরিবার সেখানে বসবাস করতেন৷ নিঃস্ব এই মানুষগুলো এখন কোথায় যাবেন? কীভাবে চলবে তাঁদের দিন?

Bangladesch Dhaka Großfeuer in Slum
ছবি: Reuters/M.P. Hossain

রূপনগর থানার পেছনের সড়ক থেকে সাত-আট ফুট নিচু জমিতে ঝিলপাড় বস্তির অবস্থান৷ এর চারদিকে আবাসিক বহুতল ভবন৷ ঝিলের ওপর কাঠের পাটাতনে বাঁশ, কাঠ ও টিন দিয়ে সাত-আট হাজার ঘর তোলা হয়৷ এর মধ্যে টিনের দোতলা ঘরও ছিল৷ শুক্রবারের আগুনে সেগুলো পুড়ে ছাই হয়ে গেছে৷ একটি ঘরও অবশিষ্ট নেই৷ গৃহকর্মী, পোশাকশ্রমিক, রিকশাচালকসহ দিনমজুর শ্রেণীর লোকজনই সেখানে বসবাস করতেন৷

আপাতত আশপাশের স্কুল কলেজগুলোতে তাঁদের থাকতে দিয়েছি: আতিকুল ইসলাম

This browser does not support the audio element.

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা আপাতত আশপাশের স্কুল কলেজগুলোতে তাঁদের থাকতে দিয়েছি৷ প্রতিদিন খাবার দেওয়া হচ্ছে৷ ভ্রাম্যমান টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ দেওয়া হচ্ছে খাবার পানিও৷'' সিটি কর্পোরেশন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় এটা করছে বলে জানান তিনি৷

এই বস্তিবাসীদের কিভাবে পূর্ণবাসন করা হবে? জানতে চাইলে মেয়র বলেন, ‘‘বস্তিবাসীর পুনর্বাসনের জন্য ২০১৭ সালে বাউনিয়া বাঁধে জায়গা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ সেখানে ইতিমধ্যে পুনর্বাসনের কাজ শুরু হয়েছে৷ এখানকার ১০ হাজার পরিবারকে পর্যায়ক্রমে সেখানে স্থানান্তর করা হবে৷ জাতীয় পরিচয়পত্রে যাদের ঠিকানা বস্তি উল্লেখ আছে, শুধু তাদেরই বাউনিয়া বাঁধে জায়গা দেওয়া হবে৷ যদিও বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত নয়৷’’   

জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ ১৯৭৩ সালে রূপনগর থানার পেছনের ওই ঝিলের ২০ একর জমি অধিগ্রহণ করে৷ তখন স্থানীয়রা এই নিচু জমিতে ময়লা ফেলতে শুরু করে৷ এতে ঝিলটি ভরে যায়৷ এরপর কাঠের পাটাতন দিয়ে বস্তিঘর গড়ে উঠতে শুরু করে৷ ২০০০ সালে পুরো জমি বস্তিতে ভরে যায়৷ শুরুর দিকে যারা বস্তিতে ছিলেন, তারা প্রথমে নিজেরা থাকার পাশাপাশি ঘর তুলে ভাড়া দিতে থাকেন৷ ২০০১ সালের নির্বাচনের পর বিএনপি ও যুবদলের কিছু নেতাকর্মী বস্তির নিয়ন্ত্রণ নেন৷ ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা ঘর তুলে ভাড়া দিতে শুরু করেন৷ তারা বস্তিতে অবৈধ পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে প্রতিটি ঘর থেকে দুই হাজার টাকা করে আদায় করছিলেন৷

মিরপুরের রূপনগর এলাকার বস্তিতে আগুনে পুড়ে যাওয়া বাড়িঘর৷ছবি: Reuters/M.P. Hossain

বস্তির বাসিন্দা নাসির মিয়া ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমি হেলাল মিয়ার কেয়ারটেকার ছিলাম৷ তার ৩০টি ঘর আছে৷ এই ঘরগুলো থেকে আমি টাকা তুলে তাকে দিতাম৷ এর বিনিময়ে তিনি আমাকে থাকতে দিয়েছেন, আর প্রতিদিন এক-দেড়শ টাকা দিতেন৷ এভাবেই আমি চলেছি৷ আমার সবকিছু পুড়ে গেছে৷ ঈদের আগে ১১ হাজার টাকা দিয়ে একটি খাট কিনেছিলাম, সেটাও শেষ৷ কাপড়, টিভি সবকিছু শেষ৷ এখন সরকার খাবার দিচ্ছে, কেউ পাচ্ছে, কেউ পাচ্ছে না৷ এ দিয়েই আমাদের দিন পার হচ্ছে৷ সরকার আমাদের যেখানেই থাকতে দিক সেখানে আমরা যাব৷ আমরা সরকারের কাছে থাকার জায়গা চাই৷’’ 

সরকারের কাছে থাকার জায়গা চাই: নাসির মিয়া

This browser does not support the audio element.

বস্তিবাসীর ভাষ্য, ৮-১০ হাজার পরিবারের ৩০ থেকে ৫০ হাজার মানুষ সেখানে বসবাস করতেন৷ আগুনে কি পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সে ব্যাপারে কেউ ধারণা দিতে পারেনি৷ তবে ক্ষয়ক্ষতি তদন্তের জন্য একটি কমিটি করেছে ফায়ার সার্ভিস৷

অন্যদিকে এই বস্তিতে মাদক ব্যবসার অভিযোগও ছিল৷ পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘‘মাঝে মধ্যেই ওই বস্তিতে মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযান চালাত৷ অনেক মাদক উদ্ধারও হয়েছে৷’’ তবে বস্তির বাসিন্দা নাসির মিয়া বলেন, ‘‘কেউ করলে করতে পারে৷ আমরা এসব জানি না৷ অধিকাংশ মানুষ তো এখানে ভাড়া থাকতেন৷ তাদের অধিকাংশই শ্রমিক, দিনমজুর৷’’ 

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ