মঙ্গলবার জার্মানির ফ্রাংকফুর্টে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বইমেলার উদ্বোধন হয়ে গেল৷ বইমেলায় এবারের অতিথি দেশ ইন্দোনেশিয়া৷ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ব্রিটিশ-ভারতীয় লেখক সালমান রুশদি৷ তাই বইমেলা বয়কট করেছে ইরান৷
বিজ্ঞাপন
এক বিবৃতিতে ইরানের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় জানায়, ‘‘বাক স্বাধীনতার নামে কর্তৃপক্ষ এমন একজনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে যাঁকে ইসলামি বিশ্ব ঘৃণা করে৷'' অন্যান্য ইসলামি দেশকেও একই সিদ্ধান্ত নেয়ার আহ্বান জানায় ইরান৷
এদিকে, মঙ্গলবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বক্তব্য রাখতে গিয়ে ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস'-এর লেখক সালমান রুশদি বলেন, ‘‘বাকস্বাধীনতা ছাড়া অন্য কোনো স্বাধীনতা নেই৷''
রুশদি বলেন, ‘‘মানুষ হচ্ছে গল্প বলা প্রাণী, বাকস্বাধীনতার উপর হামলা মানে হলো মানুষের স্বভাবের উপর হামলা৷''
চলতি বছর ফ্রাংকফুর্ট বইমেলার অতিথি দেশ হচ্ছে ইন্দোনেশিয়া৷
এবারের বইমেলায় জার্মানিতে আশা শরণার্থীদের বিনামূল্যে বইমেলায় প্রবেশের ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ তাঁদের জন্য তাঁদের ভাষা জানা গাইডেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে, যেন শরণার্থীরা ঠিকমতো বইমেলা ঘুরে দেখতে পারেন৷ এছাড়া বইমেলায় আলোচনার অন্যতম বিষয় এবার শরণার্থী৷
মিরোস্লাভ ভল্ফ টুইটারে লিখেছেন, ‘‘ফ্রাংকফুর্টের গাড়ি মেলায় দর্শণার্থী হয় প্রায় ১০ লক্ষ৷ আর বইমেলায় হয় দুই লাখ ৭০ হাজার৷ বইয়ের চেয়ে গাড়ি কীভাবে ইন্টারেস্টিং হয়?''
বুধ থেকে শুক্রবার পর্যন্ত শুধু প্রকাশক, ব্যবসায়ী ও সাংবাদিকদের জন্য মেলা খোলা থাকবে৷ এরপর শনি ও রবিবার সাধারণ দর্শণার্থীরা মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন৷
নানা রঙের ফ্রাংকফুর্ট বইমেলা
শেষ হলো ফ্রাংকফুর্ট বইমেলা ২০১৪৷ বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই বইমেলার এবারের আয়োজন ছিল পাঁচদিনের৷ ছবিঘরে ফ্রাংকফুর্ট বইমেলার দারুণ কিছু ছবি৷
ছবি: DW/A. Chakraborty
সানন্দে পড়ুন
শুধু জ্ঞান আহরণের জন্য নয়, স্রেফ আনন্দ উপভোগের জন্যও বই পড়া যায়৷ অনেক পাঠকের কাছে বই পড়ার আনন্দ সত্যিই অতুলনীয়৷ ফ্রাংকফুর্ট বইমেলার এক স্টলে বড় করে লেখা ছিল, ‘রিডিং ফর প্লেজার’, যার একটাই অর্থ, ‘পড়ুন আনন্দের জন্য৷’
ছবি: DW/A. Chakraborty
পড়া সত্যিই আনন্দের
বিশ্বের সবচেয়ে বড় বইমেলায় চাইলেই কিন্তু যে কোনো বই কেনা যায় না৷ কেনার জন্য কিছু বই বেশ কিছু স্টলে আলাদা করা ছিল৷ কোনো কোনো স্টলে বিনা মূল্যেও কিছু বই দেয়া হয়েছে৷ এক বইপ্রেমীর আর তর সইছিল না৷ কোথায় বসছেন, চারিদিকে কত কোলাহল – এ সব না ভেবেই বসে পড়লেন পছন্দের বই নিয়ে৷
ছবি: DW/A. Chakraborty
শিশুও জানে....
মায়ের হাত ধরে এসেছে শিশুটি৷ এইটুকু শিশু হলে কী হবে, তার বই পড়ার ঝোঁকও অসাধারণ৷ সামনে কত লোকের আনাগোনা, এর মাঝেই মা-কে পাশে রেখে দিব্যি বই পড়ায় মন দিয়েছে সে৷
ছবি: DW/A. Chakraborty
লেখকের সঙ্গে....
ফ্রাংকফুর্ট বইমেলায় লেখক, প্রকাশক আর পাঠকদের কদরই আলাদা৷ নানা আয়োজন ছিল তাঁদের নিয়ে৷ কোথাও আলোচনা সভা, কোথাও লেখকের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন পাঠককুল, কোথাও বা টিভি ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে লেখক, পাঠক কিংবা প্রকাশক৷ এখানে এক লেখিকার সাক্ষাৎকার নিচ্ছে একটি টেলিভিশন চ্যানেল৷
ছবি: DW/A. Chakraborty
বিশ্রাম
খাওয়া-দাওয়া আর বিশ্রামের খুব ভালো ব্যবস্থা থাকে ফ্রাংকফুর্ট বইমেলায়৷ কিন্তু কারো কারো তো নিজের পছন্দের পরিবেশও চাই৷ এই তরুণ-তরুণীরা বোধহয় এ কারণেই বিশাল মেলা প্রাঙ্গনের সাজানো-গোছানো আয়োজন থেকে একটু দূরে গিয়ে বসে পড়লেন সিঁড়িতে৷
ছবি: DW/A. Chakraborty
প্রাচীন বই
একটি স্টল শুধু পুরোনো বইয়ে ঠাসা৷ ১৩শ বছর আগের বইও ছিল সেখানে৷
ছবি: DW/A. Chakraborty
ক্লান্তি দূর....
এক দিনে পুরো মেলা প্রাঙ্গন ঘুরতে গেলে শরীর-মন একসময় ক্লান্ত হবেই৷ সেই ক্লান্তি দূর করতেও ছিল দারুণ ব্যবস্থ৷ মেলায় এসেছিলেন এক ঝাঁক পোলিশ ফিজিওথেরাপিস্ট৷ ক্লান্ত শরীরটা একটা চেয়ারে ছেড়ে দিন৷ বাকি দায়িত্ব ফিজিওথেরাপিস্টের৷ মাত্র দশ মিনিটের মাজাজে শরীরটাকে আবার চাঙা করে দেবেন তিনি৷ খরচ মাত্র দশ ইউরো!