1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রেড অ্যালার্ট জারির বিষয়টি অপপ্রচার ও মিথ্যা: বিএনপি

সমীর কুমার দে, ঢাকা১৫ এপ্রিল ২০১৫

বিএনপি নেতা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোল৷ তবে দলটির অভিযোগ, ইন্টারপোলকে ব্যবহার করে সরকার রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে৷

Tarique Rahman BNP Bangladesh
ছবি: cc-by-Shamsul alam66

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলা ও হত্যার অভিযোগে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়৷ ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে তালিকাভুক্ত ব্যক্তি (ওয়ান্টেড পারসনস) হিসেবে তারেক রহমানের নাম-পরিচয় ও বিবরণ রয়েছে৷

তবে বুধবার এক আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘‘তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড অ্যালার্ট জারির বিষয়টি অপপ্রচার ও মিথ্যা৷ ইন্টারপোল রেড অ্যালার্ট জারি করে না৷ তারা সদস্য দেশের দেওয়া তথ্য প্রকাশ করে৷ তাই এদেশ থেকে যে তথ্য পাঠানো হয়েছে তা প্রকাশ করেছে মাত্র৷ এর আগে সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী বলেছেন ইন্টারপোলের মাধ্যমে তারেককে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করা হবে৷ এই রেড অ্যালার্ট মন্ত্রীদের বক্তব্যের বহিঃপ্রকাশ৷''

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘এটি একটি নাটক৷ তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারির অপপ্রচার চালিয়ে বিএনপিকে দমিয়ে রাখা যাবে না৷ সরকারের কোনো অপচেষ্টা সফল হবে না৷'' তিনি বলেন, ‘‘তারেক রহমান পলাতক নন, তিনি চিকিৎসার জন্য লন্ডনে রয়েছেন৷ তিনি এমন দেশে রয়েছেন যে দেশ আইনের শাসনে বিশ্বাসী এবং মানুষের অধিকারের প্রতি সচেতন৷ তারেক রহমান ও জয় (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে) সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচারণা চালানো ভবিষ্যৎ রাজনীতির জন্য ভালো হবে না৷ জয় রাজনীতিতে এসেছেন, তাঁকে সাধুবাদ জানাই৷ তারেক রহমানও নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হয়েছেন৷ সেটা কোনো চাপিয়ে দেওয়া পদ নয়৷ কাউন্সিলেই সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি৷''

এদিকে, তারেক রহমানের আইনজীবী ব্যারিষ্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ইন্টারপোল কোনো রাষ্ট্র বা সরকারের রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডায় কাজ করে না বলেই আমরা জানি৷ কিন্তু এক্ষেত্রে সরকার রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য ইন্টারপোলকে ব্যবহার করেছে৷ সরকারের কোনো অসৎ উদ্দেশ্যই সফল হবে না৷''

যেভাবে রেড অ্যালার্ট জারি করে ইন্টারপোল

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক নুরুল হুদা ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ইন্টারপোল রেড অ্যালার্ট জারি করে৷ কারো বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি করার ক্ষমতা ইন্টারপোলের৷ বাংলাদেশের ইন্টারপোল ডেস্ক থেকে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে রেড অ্যালার্ট জারির সুপারিশ করতে পারে৷ সেসব তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পরই ইন্টারপোল থেকে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়৷'' কী ধরনের তথ্য ইন্টারপোলকে দিতে হয়- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আদালত কর্তৃক ফেরারি ঘোষণা হতে হবে৷ আদালতে দাখিল করা পুলিশ রিপোর্টে সুনির্দিষ্টভাবে বলতে হবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি দেশের বাইরেই পালিয়ে আছেন৷ তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ সেটা গুরুত্বপূর্ণ হতে হবে৷ এসব তথ্য নিশ্চিত হলে ইন্টারপোল রেড অ্যালার্ট জারি করে, তাতে অপরাধী যেই হোন না কেন৷''

আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলা ও হত্যার অভিযোগে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়ছবি: AP

তারিখ উল্লেখ নেই

ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে তারেক সম্পর্কে কয়েকটি তথ্য দেয়া হলেও রেড অ্যালার্ট জারির কোনো তারিখে উল্লেখ নেই৷ তবে ইন্টারপোলের বাংলাদেশ শাখা ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি)-র প্রধান পুলিশের সহকারী মহাপরিদর্শক মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘প্রায় ৪ মাস আগে আমরা ইন্টারপোলে এ নোটিশ পাঠিয়েছিলাম৷ এতদিনে তারা নানাভাবে ক্যোয়েরি করার পর মঙ্গলবার সকালে তাদের ওয়েবসাইটে আমরা বিষয়টি দেখতে পাই৷ ইন্টারপোলের চাহিদা অনুযায়ী সব তথ্য সরবরাহ করা হয়েছে বলেই তারা এটি তাদের সাইটে প্রকাশ করেছে৷''

তারেকই প্রথম রাজনীতিক নন

ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের ৬১ জন তালিকাভুক্ত ব্যক্তির নাম রয়েছে৷ তালিকায় সবার শেষে তারেক রহমানের নাম, ছবি ও বিবরণ রয়েছে৷ তার আগে আছে মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ড পাওয়া পলাতক আসামি আবদুল জব্বারের নাম৷

বাংলাদেশের কোনো রাজনীতিকের বিরুদ্ধে এটাই প্রথম ইন্টারপোলের রেড অ্যালার্ট নয়৷ এর আগেও বেশ কয়েকজন রাজনীতিকের বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি করে ইন্টারপোল৷ এর মধ্যে আওয়ামী লীগের জয়নাল হাজারী, মকবুল হোসেন, শামীম ওসমান এবং বিএনপির হারিস চৌধুরীসহ আরো অনেকের নামেই ওয়ান ইলেভেনের সময় ‘রেড ওয়ারেন্ট' জারি হয়েছিল৷

প্রসঙ্গত, ইন্টারপোলের নোটিশে মামলার কথা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি৷ তবে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা করা হয়৷ এই গ্রেনেড হামলায় ২২ জন নিহত হন৷ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ কয়েক শ' লোক আহত হন৷ ২০০৮ সালের ১১ জুন এ মামলায় ২২ জনকে আসামি করে সিআইডি প্রথম অভিযোগপত্র দেয়৷ পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এ মামলার অধিকতর তদন্ত করে ২০১১ সালের ৩ জুলাই তারেক রহমানসহ আরও ৩০ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি৷ মোট ৫২ আসামির মধ্যে তারেক রহমানসহ ১৯ জন পলাতক আছেন৷ আসামিদের তালিকায় আরও আছেন জামায়াত নেতা ও একাত্তরে যুদ্ধপরাধের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ ৫২ জন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ