1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রোহিঙ্গা শিশুরাও কি সন্ত্রাসবাদী?

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
২ অক্টোবর ২০১৭

মিয়ানমার থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে এসে পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ৪৪ জনের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট৷

বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মা ও তাদের সন্তানেরা ছবি: DW/M.M. Rahman

সর্বসাকুল্যে ৪৪ জন৷ ২৪ জন আছে আশ্রয় শিবিরে, আর ২০ জন সংশোধনাগারে৷ ৪৪ জনই শিশু৷ সবারই বয়স ৬ বছরের নীচে৷ ওদের মায়েরাও সঙ্গে আছে৷ মিয়ানমার থেকে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে, সড়কপথে বাংলাদেশ হয়ে, সীমান্ত পেরিয়ে ওরা এসে আশ্রয় নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে৷ কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বিধান মেনে নিলে, ওরা সবাই সন্ত্রাসবাদী, কারণ, ওরা সবাই রোহিঙ্গা৷ কীভাবে গোটা একটি সম্প্রদায়কে সন্ত্রাসবাদী হিসেবে চিহ্নিত করা যায়, ভারতের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের কাছে সেই প্রশ্ন তুলেছে পশ্চিমবঙ্গের শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন৷ জানতে চেয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ মানতে হলে ওই শিশুদেরও রাষ্ট্রের জন্য বিপজ্জনক ধরে নিতে হয়৷ কিন্তু কেউ কি জন্ম থেকেই জঙ্গি, সন্ত্রাসবাদী হয়?‌ আদালতের কাছে জানতে চেয়েছে কমিশন৷এই নিয়ে জমা পড়া জনস্বার্থ মামলাটি গৃহিত হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে, যার শুনানির তারিখ পড়েছে ৩ অক্টোবর৷

‘যাঁরা ওই নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের নয়, তাঁরা কি সব ধোয়া তুলসিপাতা!‌’

This browser does not support the audio element.

‘ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট কমিশন ফর প্রোটেকশন অফ চাইল্ড রাইটস’-এর চেয়ার পার্সন অনন্যা চ্যাটার্জি ডয়চে ভেলেকে জানালেন, তাদের মূল আপত্তি, কোনও নির্দিষ্ট ধর্ম, বা সম্প্রদায়ের ভিত্তিতে কাউকে সন্ত্রাসবাদী হিসেব দেগে দেওয়ার একপেশে নীতি নিয়ে৷ অনন্যা চ্যাটার্জির বক্তব্য, যাঁরা ওই নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের নয়, তাঁরা কি সব ধোয়া তুলসিপাতা!‌ তিনি যেটা বললেন না, ভারতের সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠীও সাম্প্রতিক অতীতে এমন অনেক অপরাধ ঘটিয়েছে, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ৷ সে গোরক্ষার অজুহাতে কোনও মুসলিমকে পিটিয়ে মারাই হোক, অথবা সমাজে ‘নীতি-পুলিশ' হয়ে শাস্তি দেওয়ায়৷ এমনকি ঈদের বাজার সেরে ফেরার পথে, স্রেফ ইসলামি পোশাক পরার অপরাধে কিশোরকে পিটিয়ে মারার ঘটনাও আছে৷ সেক্ষেত্রে যদি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক নির্দিষ্ট কিছু অপরাধীর জন্য গোটা সমাজকে অপরাধী হিসেবে না দেখে, তা হলে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হচ্ছে কেন?

স্বস্তির কথা যে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর সরকার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রশ্নে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গী বজায় রেখে চলেছেন এবং প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় ফরমানের বিরোধিতা করতেও পিছপা হবেন না৷ এর পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টও শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনের আবেদনটি শুনানির জন্য গ্রহণ করে বুঝিয়ে দিয়েছে, বিষয়টির আইনি দিকও খতিয়ে দেখা হবে৷ কেন্দ্রীয় সরকার চাইলেই একতরফা কোনও উদ্ভট নিয়ম চাপিয়ে দিতে পারবে না৷ অন্যদিকে জাতিসংঘও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় না দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তে ভারতের সমালোচনা করেছে৷ কাজেই সম্ভাবনা রয়েছে, চাইলেই যে কেউ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পশ্চিমবঙ্গ থেকে খেদিয়ে দিতে পারবে না। বিশেষ করে তারা যখন নেহাতই শিশু৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ