রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে সংলাপে মেলেনি নতুন কিছু
২৬ আগস্ট ২০২৫
বিশ্লেষকরা বলছেন, তিন দিনের এই আয়োজনে তেমন কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। রোহিঙ্গা সংকটের গুরুত্বপূর্ণ স্টেক হোল্ডার মিয়ানমার, চীন, ভারত, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকেও তেমন কোনো উদ্যোগ বা প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়নি। সংলাপে তারা অংশও নেয়নি।
সোমবার সংলাপের দ্বিতীয় দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গা সমস্যা সামাধানে সাত দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন। বিশ্লেষকদের একাংশ এই সাত দফায় নতুন কিছু খুঁজে পাননি। এসব কথা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আগেও বলা হয়েছে বলে মনে করেন তারা।
ড. ইউনূসের সাত সফা প্রস্তাবের মধ্যে আছে- রোহিঙ্গাদের দ্রুত, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের জন্য বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ প্রণয়ন, দাতাদের অব্যাহত সমর্থন, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ ও আরাকান আর্মির কাছে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও জীবিকা নিশ্চিত করার আহ্বান, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে গঠনমূলক সংলাপ ও অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, আসিয়ানসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় ভূমিকা, গণহত্যার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান এবং আন্তর্জাতিক আদালতে জবাবদিহি ত্বরান্বিত করা।
মিয়ানমারের সিটওয়ে মিশনে বাংলাদেশের সাবেক হেড অব মিশন মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে ডয়চে ভেলেকে বলেন, " আসলে প্রধান উপদেষ্টা যে দাবিগুলো তুলেছেন তা নতুন কিছু নয়। এই দাবি আগেও করা হয়েছে। মূল কাজ হলো রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারকে বাধ্য করা। আর সেজন্য মিয়ানমার নিজেই সবচেয়ে বড় স্টেক হোল্ডার। আরো আছে চীন,ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। তাদের নানা ধরনের স্বার্থ জড়িত । ফলে, তারা যদি না চায়, তাহলে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের রাখাইনে ফেরত পাঠানো সম্ভব নয়।”
কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মোহাম্মদ জোবায়ের ডয়চে ভেলেকে বলেন, "বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আন্তর্জাতিক ডায়ালগে যে সাত দফা তুলে ধরেছেন, তা আমাদের জন্য আশার সঞ্চার করেছে। কিন্তু এখন এর বাস্তবায়ন দরকার। এজন্য আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতে হবে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, মিয়ানমারে এখন কোনো লেজিটিমেট গভার্নমেন্ট নাই।”
বুধবার শেষ হওয়া তিন দিনের এই আন্তর্জাতিক ডায়ালাগের নাম ‘স্টেকহোল্ডার্স' ডায়ালগ: টেকঅ্যাওয়ে টু দ্য হাই-লেভেল কনফারেন্স অন দ্য রোহিঙ্গা সিচুয়েশন'। এতে অংশ নেন মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত বিশেষ দূত থমাস এইচ. অ্যান্ড্রুজ, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক (ভারপ্রাপ্ত) রানা ফ্লাওয়ার্স, মিয়ানমারের জন্য স্বাধীন তদন্ত সংস্থার প্রধান নিকোলাস কৌমজিয়ান এবং ইউএনএইচসিআরের সহকারি হাইকমিশনার রাউফ মাজুও।
ঢাকায় অবস্থানরত বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধি, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, আন্তর্জাতিক সংগঠন, সংবাদমাধ্যম, বিশেষজ্ঞ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং গণঅধিকার পরিষদসহ প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাও এ সংলাপে অংশগ্রহণ করেন। ছিলেন বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিরা। রবিবার সম্মেলন শুরু হলেও সম্মেলনের মূল অধিবেশন সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
গত মার্চে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের উপস্থিতিতে লাখো শরণার্থীর সামনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস আশা প্রকাশ করেছিলেন রোহিঙ্গারা আগামী রোজার ঈদ তাদের নিজ দেশে, অর্থাৎ মিয়ানমারে পালন করবে।
এরপর এপ্রিলে ব্যাংককে ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে এক বৈঠকে মিয়ানমারের উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী উ থান শিউ বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমানকে জানান, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসনের যোগ্য (ভেরিফাই) হিসাবে চিহ্নিত করেছে মিয়ানমার। বৈঠকের এই তথ্য জানান ড. খলিলুর রহমান নিজেই। এরপর প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে দাবিকরে, "রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের দিকে এটি একটি বড় ও নিশ্চিত পদক্ষেপ।''
কিন্তু বাস্তবে ওই কথার পর একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি মিয়ানমার আর নতুন কোনো উদ্যোগও দেখা যাচ্ছে না।
গত এপ্রিলে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেছিলেন, "রোহিঙ্গাদের ভেরিফিকেশন তাদের মিয়ানমারের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করে না, তাদের রেসিডেন্সি নিশ্চিত করে। রোহিঙ্গারা তাদের মূল আবাসভূমিতে নাগরিক হিসাবে ফিরতে চায়। কিন্তু মিয়ানমার তাদের অন্য জায়গায় রাখতে চায়। ফলে, এর আগে তিনবার তাদের প্রত্যাবাসনের চেষ্টা সফল হয়নি।”
ভেরিফিকেশন অনেক দিন ধরেই চলছে জানিয়ে তখন তিনি আরো বলেছিলেন, "বাংলাদেশ থেকে আট লাখ ২৯ হাজার ৩৬ জন রোহিঙ্গার তালিকা ২০১৮ সালেই পাঠানো হয়েছে। তখন তারা ৩৭ হাজার ৭০০ জন রোহিঙ্গা যে মিয়ানমারের বসিন্দা তা নিশ্চিত করেছিল। তারপর এক লাখের এবং এরপর তারা এক লাখ ৮০ হাজারের ভেরিফিকেশনের কথা বলছে।”
বুধবার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সঙ্গে ডয়চে ভেলে আবার যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, "এরমধ্যে নতুন কোনো উদ্যোগের কথা আমাদের জানা নাই, নতুন করে আরো তারা ভেরিফিকেশন করেছে কিনা আমরা জানি না। আর এর মধ্যে কাউকে ফেরত নেয়া বা ফেরত নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়নি।”
তার কথা, "আমরা তো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তথ্য পাই, তাদের মাধ্যমে যোগাযোগ করি। কিন্তু আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নতুন কোনো তথ্য পাইনি।”
এদিকে গত মে মাসে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে ঢাকায় ফোরত আনা হয়। রাখাইনে আরাকান আর্মি প্রশ্নে নানা জটিলতার কারণে তাকে ফেরত আনা হয়।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, "২০১৮ সালে এই ভেরিফিকেন প্রক্রিয়া শুরু হয়। ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে দুইবার তাদের প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ ব্যর্থ হয়। সর্বশেষ ২০২৩ সালে তাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সফল না হওয়ার কারণ হলো, রোহিঙ্গারা বলেছিল তারা তাদের প্লেস অব অরিজিনে ফেরত যেতে চায়। তারা যে জায়গা থেকে বাস্তুচ্যূত হয়েছে, সেই জায়গায় ফেরত যেতে চায়। কিন্তু মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ সেই নিশ্চয়তা দিতে পারেনি। এছাড়া আরো কারণ আছে। তাদের নিরাপত্তার দাবি আছে। নাগরিকত্বের বিষয় আছে। কারণ, মিয়ানমার তো তাদের নাগরিক বলছে না। তারা যে সেখানে ছিল, সেটা বলছে।”
শীর্ষ রোহিঙ্গা নেতাদের একজন মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, "বাংলাদেশ সরকার আট লাখ রোহিঙ্গার তালিকা দিয়েছে। এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা ভেরিফাই করতে মিয়ানমারের আট বছর লেগেছে। রোহিঙ্গা আছে ১২ লাখ। সবাইকে ভেরিফাই করতে তাহলে ৪০ বছর লাগবে। আর ভেরিফাই করার প্রশ্ন কেন? আমরা তো রোহিঙ্গা, মিয়ানমারের নাগরিক। আমরা পূর্ণ নিরাপত্তা নিয়ে নাগরিক হিসাবে আমাদের মাতৃভূমিতে ফিরতে চাই। সেখানে আন্তর্জাতিক উদ্যোগে ‘সেফ জোন' করে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।”
তার কথা, "এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, মিয়ানমারে কোনো বৈধ সরকার নাই। আর রাখাইন এখন আরাকান আর্মির দখলে। ফলে আমাদের সেখানে নিরাপত্তা দেবে কে? একমাত্র আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি উদ্যোগ নেয়, তারা যদি আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, তাহলেই এটা সম্ভব।”
তিনি আরো বলেন, "বাংলাদেশের মিয়ানমার সীমান্তে এখন ৫০ হাজারের মতো রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। তাদের নিরাপদ আশ্রয় প্রয়োজন। তারা নির্যাতন ও প্রাণনাশের হুমকির মুখে সীমান্তে জড়ো হচ্ছেন।”
সাবেক কূটনীতিক সাকিব আলী বলেন, "এই ডায়ালগে যারা এসেছেন, তাদের মধ্যে আমি মূল স্টেক হোল্ডার চীন, ভারতকে দেখলাম না। রাশিয়াও না। আমি অবাক হয়েছি যে, যুক্তরাষ্ট্র থেকেও কেউ আসেননি। দেখলাম অষ্ট্রেলিয়া আর ইউরোপের কিছু দেশের প্রতিনিধিরা এসেছেন। তারা আবার মন্ত্রী পর্যায়ের কেউ না- কর্মকর্তা পর্যায়ের। যখন আন্তোনিও গুতেরেস এসেছিলেন, তখন তো উনি (প্রধান উপদেষ্টা) অনেক সহসী কথাবার্তা বলেছিলেন। বলেছিলেন, ‘এর পরের কোরবানীর ঈদ ইনশাল্লাহ আপনারা(রোহিঙ্গা) আপনাদের বাড়িতে করবেন।‘ কিন্তু এবার তো তিনি তেমন কিছু বললেন না। ”
তার কথা, "আমার মনে হচ্ছে আগামী মাসে নিউইয়র্কে রোহিঙ্গাদের নিয়ে জাতিসংঘের একটা কনফারেন্স হবে। সেখানে তো রোহিঙ্গারা যেতে পারবে না। তাই তাদের দুঃখ-কষ্টের কথা শোনানোর জন্য এই ডায়ালগ। কিন্তু রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবসানে কোনো অগ্রগতি এখানে হয়নি।”
তিনি আরো বলেন, "এখন মিয়ানমারে তো যুদ্ধ চলছে। রাখাইন আরাকান আর্মির দখলে। তারা আবার সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে সিটুয়ে এবং কিয়াফকু দখলের চেষ্টা করবে। আমাদের সমস্যা হচ্ছে, এখন মিয়ানমারে আমাদের রাষ্ট্রদূত নাই। আবার অরাকান আর্মি আমাদের বিশ্বাস করছে না। তাদের আশঙ্কা- রাখাইনের ভিতরে না আবার রোহিঙ্গাদের জন্য কোনো শক্তি আলাদা জায়গা তৈরি করে। ফলে, মূল স্টেক হোল্ডার মিয়ানমারকে নিয়ে আমরা কিছু করতে পারছি না। আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে তাদের বাধ্য করতে পারছি না।”
"এর আগে যে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমারের পক্ষ থেকে চিহ্নিত করার কথা আমাদের বলা হয়েছিল, সেটা নতুন কিছু ছিল না। আর ওটা হলো ওই রোহিঙ্গারা যে মিয়ানমারে ছিল তা নিশ্চিত করা। কিন্তু মিয়ানমার তাদের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করেনি। আর পূর্ণ নাগরিকত্ব ও নিরাপত্তা ছাড়া তো তারা ফেরত যাবে না,” বলেন তিনি।
মিয়ানমারের সিটওয়ে মিশনে বাংলাদেশের সাবেক হেড অব মিশন মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম বলেন, " রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবসানের জন্য মিয়ানমার হলো সুপ্রিম স্টেক হোল্ডার। আর ওখানে চীনের বিনিয়োগ আছে, রাজনীতি আছে। ভারতের বিনিয়োগ আছে। আর যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ আছে। চীনকে ধরে রাশিয়াও এর সঙ্গে সংযুক্ত। আমরা যদি এইসব দেশকে দিয়ে চাপ দেয়াতে না পারি তাহলে কোনো কাজ হবে না।”
"আমি আপনাকে একটি নতুন শব্দ বলছি। সেটি হলো জিও-ইঞ্জিনিয়ারিং। রাখাইন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এখন জিও-ইঞ্জিনিয়াবিং পলিসি আছে। তাই তারা এই সমস্যা জিইয়ে রাখতে চায়। তাতে তাদের সুবিধা হবে। সেটা আমরা বুঝতে পারছি কিনা। তাই আমরা আসলে কী করছি তা আমি বুঝতে পারছি না। রোজার সময় আমরা শুনলাম এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা ফেরত যাবে। কিন্তু সেটা তো হলোই না। তারপরে উল্টো এক লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে নতুন করে প্রবেশ করেছে,” বলেন তিনি।
তার কথা, "আসলে আমাদের যা প্রয়োজন, তা হলো রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো। তার জন্য প্রয়োজন আন্তর্জাতিক উদ্যোগ। সেই উদ্যোগে মূল স্টেকহোল্ডাররা না থাকলে কাজ হবে না। মিয়ানমারে তো আমাদের রাষ্ট্রদূতই নাই। তাহলে কাজ হবে কীভাবে?”
২০১৭ সাল থেকে বংলাদেশে সব মিলিয়ে প্রায় ১.৫ মিলিয়ন, অর্থাৎ ১৫ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে।