ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নস লিগের সবশেষ ফাইনালে রেয়াল মাদ্রিদের কাছে হেরেছিল জুভেন্টাস৷ এবার এই প্রতিযোগিতার কোয়ার্টার ফাইনালে সেই হারের প্রতিশোধ নেয়ার সুযোগ পেল ইটালির ক্লাবটি৷
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের ড্র'র অন্যান্য সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, লিভারপুল খেলবে ম্যানচেস্টার সিটির বিরুদ্ধে, বার্সেলোনা রোমার সঙ্গে আর জার্মানির বায়ার্ন মিউনিখের খেলা পড়েছে সেভিয়ার সঙ্গে৷
গতবারের ফাইনালে রেয়াল মাদ্রিদের কাছে ৪-১ গোলে হেরেছিল জুভেন্টাস৷ তবে তারাই আবার ২০১৫ সালের সেমিফাইনালে রেয়ালকে হারিয়েছিল৷ এবার নেইমারহীন পিএসজিকে হারিয়ে কোয়ার্টারে এসেছে রেয়াল৷ আর জুভেন্টাস শেষ ১৬-র খেলায় হারিয়েছে টটেনহামকে৷ ঐ লেগের দুই ম্যাচে জুভেন্টাসের প্রতিযোগিতামূলক মনোভাবের কথা উল্লেখ করে রেয়াল মাদ্রিদের ডিরেক্টর এমিলিও বুত্রাগেনো বলেন, রেয়াল ও জুভেন্টাসের মধ্যে ‘খুবই বিশেষ ম্যাচ' হবে৷
ফুটবল এখন টাকার খেলা
২০১৭-১৮ ফুটবল মরশুম চলছে৷ ফ্যানরা খুশি, কেননা ফুটবল বাদ দিয়ে আর কতদিন টেকা যায়৷ ওদিকে ক্লাবগুলোও খুশি, কেননা তাদের ট্যাঁক আজ ট্যাঁকশাল; চাইলে একটা কেন, দশটা প্লেয়ার কিনতে পারে...
ছবি: Fotolia
টাকার বন্যা
বাইশ কোটি বিশ লাখ ইউরো কিংবা ছাব্বিশ কোটি ডলার: নেইমার দা সিলভা সান্তোস জুনিয়র বার্সেলোনা ছেড়ে প্যারিসে ফুটবল খেলতে গেলেন এই মূল্যে৷ স্পেন বা ফ্রান্সের পক্ষে যা সম্ভব ছিল না, সেটা সম্ভব করলেন কাতারের এক শেখ৷ একেই বলে ফুটবলে বিশ্বায়ন৷
ছবি: picture alliance/MAXPPP/Y. Foreix
ট্যাঁক যেখানে যায়
যেমন ডর্টমুন্ডের প্রতিভাবান খেলোয়াড় উসমানে ডেম্বেলে৷ নেইমারকে বেচার কোটি কোটি ডলার বার্সেলোনায় পৌঁছানোর আগেই বার্সা ডর্টমুন্ডে প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে, ডেম্বেলেকে রাজি করানোর আশায়৷ যুক্তি অনেক: বার্সা কত বড় ক্লাব, স্পেনের ফুটবলের মানই আলাদা আর সবচেয়ে বড় কথা – সেখানে ডেম্বেলের রোজগার হবে অনেক বেশি!
ছবি: picture-alliance/Sport Moments/Paschertz
এ খেলা খেলে কম-বেশি সব ক্লাব
ফুটবলে ট্রান্সফার ফি তো আর শুধু আরব শেখ কিংবা রুশ কোটিপতিদের কল্যাণেই আকাশ ছোঁয়নি, অন্যান্য ক্লাবও কিছু কম যায় না; বা গেলেও, তা শুধু টাকার অঙ্কে৷ বোরুসিয়া ডর্টমুন্ড যেমন সম্প্রতি ফ্রাইবুর্গের উঠতি স্ট্রাইকার মাক্সিমিলিয়ান ফিলিপকে ডর্টমুন্ডে এনেছে দু’কোটি ইউরো মূল্যে, যা জার্মান ফুটবলের হিসেবে অনেক টাকা৷
ছবি: picture alliance/dpa/T. Eisenhuth
সবই আপেক্ষিক
ফুটবল মিলিওনেয়ারদের আয় কত? এ প্রশ্নের সঠিক জবাব পাওয়া মুশকিল৷ তবে এক্ষেত্রে মনে রাখা দরকার যে, জার্মানির একটি বড় কোম্পানির প্রধান গড়ে বছরে ৬৪ লাখ ইউরো রোজগার করে থাকেন; সে তুলনায় বুন্ডেসলিগার একজন খেলোয়াড় পান গড়ে বছরে ১৯ লাখ ইউরো৷ আর জার্মানি ফুটবল ফ্যানদের রোজগারই বা খারাপ কী? গড়ে বছরে ৪২ হাজার ইউরো৷
ছবি: picture alliance/dpa/P. Kneffel
শেষ কোথায়?
বুন্ডেসলিগার ১৮টি দলের সব প্লেয়ার মিলিয়ে পান বছরে সাড়ে সাত কোটি ইউরো৷ যুক্তরাজ্যের প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবদের তাদের প্লেয়ারদের খোরপোশ হিসেবে বছরে ১৫ কোটি ২০ লাখ ইউরো মজুদ রাখতে হয়৷ কিন্তু নেইমারের তিন কোটি ইউরোর ‘বেতন’ এবার সকলের হিসেব ভণ্ডুল করে দিয়েছে৷
ছবি: Reuters/c. Hartmann
যা পাওয়া যায়
প্লেয়ারদের জন্য বড় অঙ্কের টাকা যে শুধু স্পন্সরদের কাছ থেকেই আসে, এমন নয়৷ ফ্যানরাও তার অনেকটাই সরবরাহ করে থাকেন৷ হামবুর্গের একজন ফুটবল ফ্যানকে এইচএসভি-র সিজন টিকিটের জন্য ৮০০ ইউরো খরচ করতে হয়৷ এছাড়া ট্রু ফ্যানদের চাই ক্লাবের মাঠে পরার আটপৌরে জার্সি৷ অন্য মাঠে খেলতে যাওয়ার জার্সি, কাপ, প্লেট, প্যান, টোস্টার ইত্যাদি নানা নিত্যব্যবহার্য পদার্থ – সব কিছুর উপর ঝলমল করছে ক্লাবের প্রতীক৷
ছবি: picture-alliance/dpa
এখন ক্লাব কেনাটা হলো ফ্যাশন
জার্মানিতে সেটা তত সহজ নয়, কেননা খেলার লাইসেন্স পেতে হলে বুন্ডেসলিগার একটি ক্লাবকে তার নিজের ভোটাধিকারের অন্তত ৫০ শতাংশ নিজের কাছে রাখতে হবে৷ এবার আরো একটি দল এই বেসরকারি নীতিটি লঙ্ঘন করতে চলেছে৷ হানোফার ৯৬-এর প্রেসিডেন্ট মার্টিন কিন্ড তাতে দোষের কিছু দেখেন না৷ তাঁর নিজের কোম্পানি কিন্ড হিয়ারিং এইড তৈরি করে থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/K. Nietfeld
সবশেষে কিংবা সর্বাগ্রে বায়ার্ন
এবারও সবাই একমত যে, বায়ার্ন মিউনিখ আবার বুন্ডেসলিগা চ্যাম্পিয়ন হতে চলেছে৷ জার্মান লিগে সবচেয়ে দামি ক্লাব হলো এই বায়ার্ন, যাদের মূল্য ২৪০ কোটি ইউরো৷ বলুন তো, খেলার সঙ্গে তার সম্পর্কটা কি?
ছবি: picture-alliance/Sven Simon
8 ছবি1 | 8
এদিকে, কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা ইংলিশ প্রিমিয়ারের দু'টো দল লিভারপুল আর ম্যানচেস্টার সিটি পরস্পরের মুখোমুখি হবে৷ লিগের বর্তমান পয়েন্ট তালিকা অনুযায়ী, ম্যান সিটি শীর্ষে আছে৷ লিভারপুল আছে চতুর্থ অবস্থানে৷ পয়েন্টের হিসেবে ম্যান সিটির চেয়ে ২১ পয়েন্টে পিছিয়ে আছে লিভারপুল৷
কোয়ার্টার ফাইনাল সম্পর্কে ম্যান সিটির ডিরেক্টর শিকি বেগিরিস্টেইন বলেন, ‘‘আমরা একে অপরকে ভালোভাবে চিনি৷ তারা বেশ আক্রমণাত্বক খেলা খেলে৷ কিন্তু আসল কথা হচ্ছে, দারুণ দু'টো খেলা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে৷''
বার্সেলোনার সঙ্গে ড্র হয়ে রোমা বেশ উচ্ছ্বসিত বলে মন্তব্য করেছেন ক্লাবটির সাবেক অধিনায়ক ফ্রান্সেসকো টট্টি৷ একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে তিনি বলেন, ‘‘চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে বার্সেলোনার সঙ্গে খেলা – এমন একটা ম্যাচ ভোলা কঠিন হবে৷''
খেলার ইতিহাসের সেরা কিছু ম্যাচ
চলুন দেখে নেয়া যাক, ফুটবল, টেনিস, বক্সিং থেকে শুরু করে আরো কিছু জনপ্রিয় খেলার ইতিহাস-সেরা কিছু লড়াই৷
ছবি: picture-alliance/dpa
দাবায় সেরা
এতদিন অন্য অনেক ম্যাচ নিয়েই আলোচনা ছিল৷ তবে ২০১৬ সালে দাবা বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের পর থেকে ম্যাগনাস কার্লসেন আর সের্গেই কার্জাকিনের ম্যাচটিকে স্মরণকালের সব সেরা ম্যাচ থেকেই এগিয়ে রাখা হচ্ছে৷ নরওয়ের কার্লসেন শেষ পর্যন্ত টাই ব্রেকারে ৩-১-এ হারিয়েছেন রাশিয়ার কার্জাকিনকে৷ একসময় মনে হচ্ছিল, কার্লসেন হয়ত অঘটন ঘটিয়েই দেবেন৷
ছবি: Reuters/M. Kauzlarich
বায়ার্নের দুর্ভাগ্যের সেই ম্যাচ
১৯৯৯ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল৷ মুখোমুখি বায়ার্ন মিউনিখ আর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড৷ ম্যাচ প্রায় জিতেই গিয়েছিল বায়ার্ন৷ ইনজুরি টাইমে ১-০ গোলে এগিয়েছিল তারা৷ কিন্তু তখনই একটা কর্নার পেয়ে যায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড৷ সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সমতা ফেরান টেডি শেরিংহ্যাম৷ তারপর আরেকটি কর্নার এবং ওলে গানার সোলকায়ারের গোল৷ বায়ার্নের হৃদয় ভেঙ্গে দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যায় ম্যানইউ৷
ছবি: Imago
টেনিসের ‘এপিক’ ম্যাচ
টেনিসের ‘এপিক’ ম্যাচ বললে সবার আগে যে ম্যাচটির কথা মনে পড়ে সেটিতে মুখোমুখি হয়েছিলেন সর্বকালের অন্যতম সেরা দুই খেলোয়াড় রজার ফেদারার এবং রাফায়েল নাদালের সেই উইম্বলডনের ম্যাচটির কথা৷ সেটাও ফাইনাল৷ ৬-৪, ৬-৪-এ প্রথম দুই সেট জিতে ম্যাচ জয়ের পথে ছুটে চলছিলেন ফেদারার৷ কিন্তু তারপরই ঘুরে দাঁড়ালেন নাদাল৷ ৬-৭, ৬-৭ এবং শেষে ৯-৭-এর এক ম্যারাথন সেট জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেলেন৷
ছবি: Getty Images/AFP
ফর্মুলা ওয়ানে শুমাখারের ‘চালাকি’
১৯৯৪ সালের অ্যাডিলেড গ্রঁ প্রি-র ফাইনাল৷ সেখানে জার্মান কিংবদন্তি মিশায়েল শুমাখার এবং বৃটেনের ড্যামন হিলের জম্পেশ লড়াই হয়েছিল৷ স্বাভাবিকভাবে রেস শেষ হলে জিতে যেতেন হিল৷ কিন্তু শেষ দিকে হঠাৎ নিজের গাড়িটা হিলের গাড়ির সামনে নিয়ে গেলেন শুমাখার৷ সঙ্গে সঙ্গেই দুই গাড়ির সংঘর্ষ৷ রেস সেখানেই বন্ধ করতে হলো দুজনকে৷ মাত্র এক পয়েন্টে এগিয়ে থাকার সুবাদে চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেলেন শুমাখার৷
ছবি: picture-alliance/ASA
৫৬ বছর আগে...
১৯৬০ সালের রোম অলিম্পিকের সেই লড়াইটা হয়েছিল পুরুষদের ৪০০ মিটার দৌড়ে৷ শেষ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের ওটিস ডেভিসের খুব কাছাকাছি চলে এসেছিলেন জার্মানির কার্ল কাউফম্যান৷ যখন দেখলেন ডেভিস ফিনিশিং লাইন পেরিয়ে যাচ্ছেন তখনই ডাইভ দিয়ে আগে চলে যাওয়ার চেষ্টা করলেন কাউফম্যান৷ একেবারে এক সময়েই দৌড় শেষ হলো দু’জনের৷ কিন্তু ফটোফিনিশে সোনা জিতলেন ডেভিস৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বক্সিংয়ের ‘থ্রিলা ইন ম্যানিলা’
বক্সিংয়ের কোনো সাধারন পাঠকও ১৯৭৫ সালের মোহাম্মদ আলী বনাম জো ফ্রেজিয়ারের সেই স্নায়ুক্ষয়ী বাউটটির কথা জানেন৷ নিজেদের আগের দুই ম্যাচে দু’জনেই একটি করে জিতেছেন৷ ফলে সেই ম্যাচটি ছিল ফাইনালের মতো৷ ভয়ংকর লড়াই হয়েছিল সেটি৷ শেষ পর্যন্ত আলী জিতেছিলেন পয়েন্টের ব্যবধানে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
টেনিসের আরেক ম্যাচ
১৯৮৭ সাল৷ ডেভিস কাপের ম্যাচ৷ বদরাগের জন্য পরিচিত জন ম্যাকেনরোর প্রতিপক্ষ জার্মানির বরিস বেকার৷ পুরো ম্যাচ জুড়ে ম্যাকেনরো বেকারের উদ্দেশ্যে বকবকই করে গেলেন৷ ঠান্ডা মাথায় জবাব দিচ্ছিলেন বেকার৷ সমানে সমানে লড়াই৷ লড়াই চলল ৬ ঘণ্টা ৩৯ মিনিট ধরে এবং বেকার জিতলেন ৪-৬. ১৫-১৩, ৮-১০, ৬-২ এবং ৬-২ গেমে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Probst
7 ছবি1 | 7
তবে রোমার স্পোর্টিং ডিরেক্টর বলছেন, ‘‘আপনি বলতে পারেন না যে, আমরা এই ড্রতে বেশ ভাগ্যবান ছিলাম৷''
২০১৫ সালে বার্সেলোনার ন্যু ক্যাম্পে শেষ খেলেছিল রোমা৷ ঐ ম্যাচে ৬-১ গোলে হেরেছিল তারা৷
কোয়ার্টারে বার্সা আর রেয়ালকে এড়াতে পেরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন সেভিয়ার গোলরক্ষক স্ভেন উলরাইশ৷ তবে বায়ার্ন মিউনিখের সঙ্গে খেলাটাও কঠোরতর হবে বলেই মন্তব্য করেছেন তিনি৷ তবে তাদের সঙ্গে পেরে ওঠা সম্ভব বলে মনে করছেন উলরাইশ৷ এ প্রসঙ্গে তিনি শেষ ১৬-র খেলায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে হারানোর কথা সবাইকে মনে করিয়ে দিয়েছেন৷
বায়ার্ন মিউনিখের স্পোর্টস ডিরেক্টর হাসান সালিহামিদজিচও ম্যান ইউনাইটেডকে হারানোর বিষয়টি উল্লেখ করে বলেছেন, ‘‘সেভিয়া সহজ দল নয়৷ এটা কোনোভাবে সহজ ড্র ছিল না৷ তারা দুর্ঘটনাবশত এই পর্যায়ে আসেনি৷''
কোয়ার্টার ফাইনালের দুই পর্বের খেলা হবে ৩-৪ এপ্রিল ও ১০-১১ এপ্রিল৷ সেমিফাইনাল হবে ২৪-২৫ এপ্রিল ও ১-২ মে৷ এরপর ২৬ মে ইউক্রেনের কিয়েভে এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে৷
এদিকে, শুক্রবার ইউরোপা লিগেরও ড্র অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ আর্সেনাল খেলবে মস্কোর সঙ্গে৷ আর অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ খেলবে পর্তুগালের স্পোর্টিং ক্লাবের সঙ্গে৷
জেডএইচ/ডিজি (এএফপি, রয়টার্স)
ফুটবল এখন টাকার খেলা
২০১৭-১৮ ফুটবল মরশুম চলছে৷ ফ্যানরা খুশি, কেননা ফুটবল বাদ দিয়ে আর কতদিন টেকা যায়৷ ওদিকে ক্লাবগুলোও খুশি, কেননা তাদের ট্যাঁক আজ ট্যাঁকশাল; চাইলে একটা কেন, দশটা প্লেয়ার কিনতে পারে...
ছবি: Fotolia
টাকার বন্যা
বাইশ কোটি বিশ লাখ ইউরো কিংবা ছাব্বিশ কোটি ডলার: নেইমার দা সিলভা সান্তোস জুনিয়র বার্সেলোনা ছেড়ে প্যারিসে ফুটবল খেলতে গেলেন এই মূল্যে৷ স্পেন বা ফ্রান্সের পক্ষে যা সম্ভব ছিল না, সেটা সম্ভব করলেন কাতারের এক শেখ৷ একেই বলে ফুটবলে বিশ্বায়ন৷
ছবি: picture alliance/MAXPPP/Y. Foreix
ট্যাঁক যেখানে যায়
যেমন ডর্টমুন্ডের প্রতিভাবান খেলোয়াড় উসমানে ডেম্বেলে৷ নেইমারকে বেচার কোটি কোটি ডলার বার্সেলোনায় পৌঁছানোর আগেই বার্সা ডর্টমুন্ডে প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে, ডেম্বেলেকে রাজি করানোর আশায়৷ যুক্তি অনেক: বার্সা কত বড় ক্লাব, স্পেনের ফুটবলের মানই আলাদা আর সবচেয়ে বড় কথা – সেখানে ডেম্বেলের রোজগার হবে অনেক বেশি!
ছবি: picture-alliance/Sport Moments/Paschertz
এ খেলা খেলে কম-বেশি সব ক্লাব
ফুটবলে ট্রান্সফার ফি তো আর শুধু আরব শেখ কিংবা রুশ কোটিপতিদের কল্যাণেই আকাশ ছোঁয়নি, অন্যান্য ক্লাবও কিছু কম যায় না; বা গেলেও, তা শুধু টাকার অঙ্কে৷ বোরুসিয়া ডর্টমুন্ড যেমন সম্প্রতি ফ্রাইবুর্গের উঠতি স্ট্রাইকার মাক্সিমিলিয়ান ফিলিপকে ডর্টমুন্ডে এনেছে দু’কোটি ইউরো মূল্যে, যা জার্মান ফুটবলের হিসেবে অনেক টাকা৷
ছবি: picture alliance/dpa/T. Eisenhuth
সবই আপেক্ষিক
ফুটবল মিলিওনেয়ারদের আয় কত? এ প্রশ্নের সঠিক জবাব পাওয়া মুশকিল৷ তবে এক্ষেত্রে মনে রাখা দরকার যে, জার্মানির একটি বড় কোম্পানির প্রধান গড়ে বছরে ৬৪ লাখ ইউরো রোজগার করে থাকেন; সে তুলনায় বুন্ডেসলিগার একজন খেলোয়াড় পান গড়ে বছরে ১৯ লাখ ইউরো৷ আর জার্মানি ফুটবল ফ্যানদের রোজগারই বা খারাপ কী? গড়ে বছরে ৪২ হাজার ইউরো৷
ছবি: picture alliance/dpa/P. Kneffel
শেষ কোথায়?
বুন্ডেসলিগার ১৮টি দলের সব প্লেয়ার মিলিয়ে পান বছরে সাড়ে সাত কোটি ইউরো৷ যুক্তরাজ্যের প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবদের তাদের প্লেয়ারদের খোরপোশ হিসেবে বছরে ১৫ কোটি ২০ লাখ ইউরো মজুদ রাখতে হয়৷ কিন্তু নেইমারের তিন কোটি ইউরোর ‘বেতন’ এবার সকলের হিসেব ভণ্ডুল করে দিয়েছে৷
ছবি: Reuters/c. Hartmann
যা পাওয়া যায়
প্লেয়ারদের জন্য বড় অঙ্কের টাকা যে শুধু স্পন্সরদের কাছ থেকেই আসে, এমন নয়৷ ফ্যানরাও তার অনেকটাই সরবরাহ করে থাকেন৷ হামবুর্গের একজন ফুটবল ফ্যানকে এইচএসভি-র সিজন টিকিটের জন্য ৮০০ ইউরো খরচ করতে হয়৷ এছাড়া ট্রু ফ্যানদের চাই ক্লাবের মাঠে পরার আটপৌরে জার্সি৷ অন্য মাঠে খেলতে যাওয়ার জার্সি, কাপ, প্লেট, প্যান, টোস্টার ইত্যাদি নানা নিত্যব্যবহার্য পদার্থ – সব কিছুর উপর ঝলমল করছে ক্লাবের প্রতীক৷
ছবি: picture-alliance/dpa
এখন ক্লাব কেনাটা হলো ফ্যাশন
জার্মানিতে সেটা তত সহজ নয়, কেননা খেলার লাইসেন্স পেতে হলে বুন্ডেসলিগার একটি ক্লাবকে তার নিজের ভোটাধিকারের অন্তত ৫০ শতাংশ নিজের কাছে রাখতে হবে৷ এবার আরো একটি দল এই বেসরকারি নীতিটি লঙ্ঘন করতে চলেছে৷ হানোফার ৯৬-এর প্রেসিডেন্ট মার্টিন কিন্ড তাতে দোষের কিছু দেখেন না৷ তাঁর নিজের কোম্পানি কিন্ড হিয়ারিং এইড তৈরি করে থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/K. Nietfeld
সবশেষে কিংবা সর্বাগ্রে বায়ার্ন
এবারও সবাই একমত যে, বায়ার্ন মিউনিখ আবার বুন্ডেসলিগা চ্যাম্পিয়ন হতে চলেছে৷ জার্মান লিগে সবচেয়ে দামি ক্লাব হলো এই বায়ার্ন, যাদের মূল্য ২৪০ কোটি ইউরো৷ বলুন তো, খেলার সঙ্গে তার সম্পর্কটা কি?