1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রোটা ভাইরাসের ডায়রিয়াও দূষিত পানির কারণে হয়

সমীর কুমার দে ঢাকা
১৪ মে ২০১৯

সুপেয় পানি পান না করলে স্বাস্থ্যের কী ধরনের ক্ষতি হয়? ওয়াসার পানি কি আসলেই শতভাগ সুপেয়? এ সব নিয়ে কথা বলেছেন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডাইরিয়াল ডিজিজ রিসার্চ বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) সিনিয়র ডিরেক্টর ডা. তাহমিদ আহমেদ৷

Bildergalerie Bangladesch Hygiene
ছবি: MUNIR UZ ZAMAN/AFP/Getty Images

ডয়চে ভেলে: পানি এবং সুপেয় পানির মধ্যে মূলত কোনো পার্থক্য আছে কি?

ডা. তাহমিদ আহমেদ: পানি বলতে ‘নরমাল' পানি বোঝায়৷ পানিতে অনেক কিছুই থাকতে পারে৷ সুপেয় পানি বলতে এমন পানিকে বোঝানো হয় যেখানে বাইরের কোনো জীবাণু থাকে না৷ যে পানি খেলে আপনার কোনো পানিবাহিত রোগ হবে না – এটাকেই আমরা বলি সুপেয় পানি৷

সুপেয় পানির প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো কী?

পানি একটি রাসায়নিক পদার্থ৷ এটার উপাদান ওই একই – হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন৷ এর মধ্যে অতিরিক্ত কোনো কিছু থাকার কোনো সুযোগ নেই৷ পানি পানিই৷ এটা যখন দূষিত হয়ে যায়, তখনই সমস্যা হয়৷ তখন এটাতে হয় কিছু জীবাণু ঢোকে বা এমন কিছু পদার্থ ঢোকে যা আমাদের শরীরে গেলে শরীরের ক্ষতি করে৷

সুপেয় পানি পান না করলে স্বাস্থ্যের কী ধরনের ক্ষতি হতে পারে?

কিছু পানি বাহিত রোগ আছে, সেগুলো হতে পারে৷ এই রোগগুলো হলো – কলেরা, আমাশয় ও টাইফয়েড৷ এমনকি এখন বলা হচ্ছে সবচেয়ে বেশি  যে রোটা হচ্ছে, সেটা হলো ভাইরাস জনিত ডায়রিয়া৷ সেটাও পানির কারণে হতে পারে৷ এছাড়া হেপাটাইটিজ বা লিভারে প্রদাহ – এটাও কিন্তু পানিবাহিত রোগ৷ কেউ যদি খারাপ পানি পান করে, তাহলে এ রোগ হতে পারে৷

ওয়াসার পানি কীভাবে সুপেয় করা যায়?

এটার কয়েকটা উপায় আছে৷ প্রথমত, পানির যে উপত্তি বা ‘সোর্স' সেটা ঠিক করা৷ সেটা ওয়াসা করতে পারে৷ বিভিন্নভাবে হয়ত ওয়াসা সেটা করে থাকে৷ আরেকটা হলো – এই পানি যখন ওয়াসার উপত্তিস্থল থেকে পাইপের মাধ্যমে বাসা-বাড়িতে যায়, তখন নানাভাবে দূষিত হতে পারে৷ যেমন কোনো পাইপে যদি ‘লিকেজ' থাকে এবং পানির ‘ফ্লো' যদি কম থাকে, তখন ওই ‘লিকেজ' দিয়ে বাইরের দূষিত পানি পাইপে প্রবেশ করতে পারে৷ এবং সেই পানি আপনি পান করলে নানা ধরনের রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হতে পারেন৷ এছাড়া পানি যে পাত্রে আপনি ধরে রাখবেন, সেই পাত্র যদি পরিষ্কার না হয় তাহলেও পানি দূষিত হতে পারে৷ তিনটে লেভেলে পানি দূষনের সম্ভাবনা থাকে৷ প্রথম ও দ্বিতীয়টা ওয়াসা করতে পারে৷ তিন নম্বরটা হলো আমাদের বাসাবাড়ি৷ সেখানে চাইলে আমরা পানি বিশুদ্ধ করে নিতে পারি৷

‘সুপেয় পানির একটা সহজ উপায় হচ্ছে বাসায় পানি ফুটিয়ে খাওয়া’

This browser does not support the audio element.

ঢাকায় ওয়াসার পানির বিশুদ্ধতা নিয়ে কোনো গবেষণা কি আছে?

এটা নিয়ে কোনো গবেষণার কথা আমার জানা নেই৷ তবে পানিতে দূষণ আছে কি নেই সেটা কিন্তু ওয়াসা পরীক্ষা করে থাকে৷ তাদের কাছে অবশ্যই এই তথ্য থাকবে৷

আপনি কিছু রোগব্যাধির কথা বলছিলেন, এই ব্যাধিগুলো থেকে পরিত্রাণের পথ কী?

পানিবাহিত যে রোগ এগুলো থেকে পরিত্রাণেরজন্য কয়েকটা কাজ করা যেতে পারে৷ প্রথমত সুপেয় পানি পান করা৷ সুপেয় পানির একটা সহজ উপায় হচ্ছে বাসায় পানি ফুটিয়ে খাওয়া৷ তবে শুধু ফুটালেই হবে না, পানি ফোটার পর ২০ মিনিট ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে ফোটাতে হবে৷ তাহলে যে ধরনের জীবাণু থাকতে পারে সেগুলো নষ্ট হয়ে যাবে৷ দ্বিতীয়ত ‘নরমাল' যে ‘হাইজিন'৷ অর্থাৎ হাত ধোয়া৷ আমরা টয়লেটে যাওয়ার পর বা খাবার আগে যদি ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নেই, তাহলেও কিন্তু এই রোগগুলো থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়৷

উচ্চতাপে পানি ফোটালে কি পানির গুণাগুণ ঠিক থাকে?

উচ্চতাপে ফোটালে এর গুণাগুণ বা মান নষ্ট হয় না৷

ওয়াসা পানি বিশুদ্ধ করতে কী উপাদান ব্যবহার করে?

এর উপর আমার কোনো কাজ নেই৷ আমি মূলত একজন চিকিৎসক৷ একটি হাসপাতাল দেখাশোনা করি৷ আমার সঙ্গে যে সব চিকিৎসক আছেন, তাঁদের কাজে সহযোগিতা করি৷ এটাই মূলত আমার কাজ৷ আমি জানি তারা ক্লোরিন ও ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করেন৷

সুপেয় পানির জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থার কোনো উদ্যোগ আছে?

আমি যা বললাম সেগুলো তো কেউ না কেউ কখনও গবেষণা করে জেনেছেন৷ তার ফলশ্রুতিতে আমরা জানি৷ আন্তর্জাতিক সংস্থা ডাব্লিউএইচও বলে দেয়৷ তাদের কিছু ‘গাইডলাইন' আছে৷ তারা বলে, পানি ফোটানো এটা একটা ভালো পদ্ধতি৷ পানিকে দূষণমুক্ত রাখার জন্য মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতেও তারা কাজ করে থাকেন৷ তাছাড়া যখন কোনো মানবিক সংকট হয়, তখন তারা কিছু ভূমিকা পালন করে৷ যেমন ধরুন, যখন রোহিঙ্গারা এ দেশে প্রথম এলো তখন তাঁদের মধ্যে সুপেয় পানির জার দেওয়া হয়েছে, যেটা আপনারা দেখেছেন৷ সেটা কিন্তু ডাব্লিউএইচও থেকে দেওয়া হয়েছে৷

বাংলাদেশে কতভাগ মানুষ সুপেয় পানি পান করার সুযোগ পান?

নিশ্চয় আছে৷ তবে এই মুহূর্তে সঠিক পরিসংখ্যান আমি বলতে পারব না৷

ঢাকায় কতভাগ মানুষ সুপেয় পানি পান করার সুযোগ পান?

ঢাকা তো বিরাট একটি নগরী৷ এখানে ১২ থেকে ১৫ মিলিয়ন মানুষ বাস করেন৷ একেবারে কত শতাংশ মানুষ সুপেয় পানি পান করেন তার কোনো সমীক্ষা খুব কাছাকাছি সময়ে হয়েছে বলে আমার জানা নেই৷

যাঁরা সুপেয় পানি পান করার সুযোগ পান না, তাঁদের প্রতি আপনার পরামর্শ কী হবে?

প্রথমত, অবশ্যই পানি ফুটিয়ে পান করবেন৷ পানি আপনারা বাসায় যে ‘স্টোর' করেন, সেটা অবশ্যই পরিষ্কার কোনো পাত্রে রাখবেন৷ তবে এটা অবশ্যই বেশি দিন রাখবেন না৷ যত দ্রুত সম্ভব সেটা শেষ করে নতুন করে আবারো পানি রাখবেন৷ দ্বিতীয়ত, নিজের যে ‘হাইজিন' সেটা ঠিক রাখতে হবে৷ অবশ্যই টয়লেটে যাওয়ার পর সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে৷ খাবার আগে সেটা করুন৷ বাচ্চাকে খাওয়ানোর আগে হাত ভালো করে ধুয়ে নিন৷ রান্না করা খাবারও ভালোভাবে রাখতে হবে৷ সকালে খাবার রান্নার পর উচ্চ তাপমাত্রায় রেখে দিয়ে রাতে খেলেন, তাহলে কিন্তু হবে না৷ ওই খাবার নষ্ট হয়ে যেতে পার৷ সেটা খেলেও আপনি নানা ধরনের রোগব্যাধিতে পড়তে পারেন৷ বিশেষ করে শিশুদের পরিচর্যা ভালোভাবে করতে হবে৷ যে শিশুটি মায়ের দুধ খায়, সেটা খাবে, পাশাপাশি অন্য খাবারও ভালোভাবে তাকে খাওয়াতে হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ