কথাটা রেয়াল মাদ্রিদের কোচ কার্লো আনসেলত্তির নয়, পর্তুগালের কোচ পাওলো বেন্তোর৷ লা লিগা মরশুমের শেষে ক্রিস্টিয়ানোর কিছু শারীরিক সমস্যা ছিল৷ বিশ্বকাপে তিনি সুস্থ অবস্থাতেই পৌঁছাবেন, বলে বেন্তোর বিশ্বাস৷
ছবি: Jonathan NackstrandAFP/Getty Images
বিজ্ঞাপন
গত সপ্তাহে ভালাদোলিদের বিরুদ্ধে খেলায় রোনাল্ডো আবার চোট পান, এবং গত রবিবার সেল্টা ভিগোর বিরুদ্ধে খেলায় তাঁকে নামানো হয়নি৷ খুব সম্ভবত আগামী ২৪শে মে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালের পরিপ্রেক্ষিতে রোনাল্ডোকে রেস্ট দেওয়া হয়েছে – বেন্তোর অনুরোধ-উপরোধে নয়৷
‘‘জাতীয় দলের কোচ ক্লাবগুলোর ব্যাপারে নাক গলান না,'' জার্মান ডিপিএ সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন বেন্তো৷ ‘‘প্লেয়াররা খেললে আমার ভালোই লাগে৷ কিন্তু তাঁরা ফিট কিনা, সেটা অন্য ব্যাপার৷'' এক্ষেত্রে মনে করা যেতে পারে, জাতীয় কোচ পদে বেন্তোর পূর্বসূরি কার্লোস কুয়েরোজ দক্ষিণ আফ্রিকায় ২০১০ সালের বিশ্বকাপের পর অভিযোগ করেছিলেন যে, রোনাল্ডো একটি জোরদার ক্লাব ও ইউরোপীয় ফুটবল মরশুমের পর যখন বিশ্বকাপে পৌঁছান, তখন তিনি হা-ক্লান্ত জো-ক্লান্ত৷ কাজেই পর্তুগাল সেবার প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে স্পেনের কাছে হেরে বিদায় নেয়৷
২০১৪ বিশ্বকাপে যাঁদের জ্বলে ওঠার সম্ভাবনা
২০১৪ সালের বিশ্বকাপকে সেরা টুর্নামেন্টে পরিণত করায় রোনাল্ডো আর মেসির ভূমিকা থাকতেই পারে৷ কিন্তু আরো ১০ লুকানো রত্ন রয়েছে, যাঁরা সুযোগ পেলেই দেখাতে পারেন তাঁদের কেরামতি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
খোয়াদভো আসামোয়া (ঘানা)
সেন্ট্রাল মিডফিল্ডে অসাধারণ দক্ষতা ঘানার এই ফুটবলারের৷ ২৫ বছর বয়সি এই খেলোয়াড় তাই মাঠে হয়ে উঠতে পারেন প্রতিপক্ষের বিভীষিকা৷ ২০১০ সালের মতো ঘানা যদি তাদের সেরাটা দিতে পারে, এক্ষেত্রে অবশ্যই ভূমিকা রাখবেন আসামোয়া৷
ছবি: Marco Bertorello/AFP/Getty Images
পল পগবা (ফ্রান্স)
অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ ফুটবলে পল পগবা অসাধারণ কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন৷ স্যার আলেকজান্ডার ফার্গুসনের মুখেও এই ফুটবলারের প্রতি প্রশংসা উচ্চারিত হয়েছে৷ তাঁর সিদ্ধান্তেই এই কিশোর ফুটবলার বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেয়েছেন৷ শক্তিশালী এই খেলোয়াড় যে বিশ্বকাপে মাঠ মাতাবে, তা বোধহয় বলাই যায়৷
ছবি: Marco Bertorello/AFP/Getty Images
অ্যাডাম লালানা (ইংল্যান্ড)
এবার বিশ্বকাপে ইংলিশ শিবিরের শিরোপা জেতার আশা অনেকটাই বেশি৷ ২০১৩/১৪ মৌসুমে লালানা যে আভিজাত্য এবং দক্ষতার সাথে খেলেছেন, তা এককথায় অসাধারণ৷ তাই এই মিডফিল্ডারের পায়ের জাদু দেখার অপেক্ষায় থাকবেন অনেকেই৷
ছবি: Getty Images
মিরালেম পিয়ানিচ(বসনিয়া)
কিশোর এই ফুটবলারকে নিয়ে ইটালির মিডিয়ায় বরাবরই মতামাতি৷ বসনিয়ায় এই ফুটবলারকে বলা যায় স্বভাবজাত ফুটবলার৷ অসাধারণ পাস, দূর দৃষ্টি এবং ফুটবল নিয়ন্ত্রণে অসাধারণ দক্ষতা রয়েছে তাঁর৷
ছবি: Getty Images
ইয়োইচিরো কাকিতানি (জাপান)
জাপানের অন্যতম আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার কাকিতানি৷ তাঁর পেস, গতি এবং লিঙ্ক আপের দক্ষতা অসাধারণ৷ ২৪ বছর বয়সি কাকিতানি ব্রাজিল বিশ্বকাপে তাঁর সেরাটা দিয়ে সামুরাই ব্লুদের অনেক এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে৷
ছবি: Getty Images
কেভিন দে ব্রয়না (বেলজিয়াম)
বেলজিয়ামের স্বর্ণ প্রজন্মের অন্যতম অংশীদার কেভিন দে ব্রয়না৷ বুন্ডেসলিগায় তাঁর অসাধারণ অভিষেক এখনো মনের মধ্যে গেঁথে আছে ফুটবল ভক্তদের৷ মাত্র ২৩ বছর বয়সি এই শক্তিশালী ফুটবলারের পায়ের জাদু দেখার অপেক্ষায় থাকবেন বিশ্ববাসী৷
ছবি: Getty Images
লুকাস মুরা (ব্রাজিল)
২১ বছর বয়সি এই ফুটবলার ব্রাজিল শিবিরে কয়েক বছর আগে প্রবেশ করেছে৷ ফরাসি ফুটবল ক্লাব পিএসজি-র গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়ারে পরিণত হয়েছেন তিনি৷ আর বিশ্বকাপে ব্রাজিলের আক্রমণ ভাগেও এই প্রতিভাবান ফুটবলারের খেলা দেখার অপেক্ষায় থাকবেন ভক্তরা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
জেমস রোদ্রিগেজ (কলম্বিয়া)
এ বছর বিশ্বকাপে সবার চোখ থাকবে কলম্বিয়ার দিকে৷ কেননা দক্ষিণ অ্যামেরিকার এই দলটি এখন দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছে৷ মোনাকো তারকা রোদ্রিগেজ কাঁধে রয়েছে দলের সব চাপ৷ ২২ বছর বয়সি এই ফুটবলারের গতি এবং খেলার ধরণ অসাধারণ৷ তিনি এই দলের একটি রত্নে পরিণত হয়েছেন৷
ছবি: Getty Images
এদুয়ার্দো ভার্গাস (চিলি)
ফার্গাস এখন ভ্যালেন্সিয়ায় রয়েছেন৷ তবে খুব শিগগিরই স্টুটগার্ডে জার্মান ভক্তরা প্রীতি ম্যাচে তাঁর দেখা পাবেন৷ তবে ২৪ বছর বয়সি প্রতিভাবান এই ফুটবলারের জন্য ব্রাজিল বিশ্বকাপ একটি নতুন দ্বার খুলে দিতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ইয়োর্দি ক্লাসি (নেদারল্যান্ডস)
ইয়োর্দি ক্লাসির মধ্যে লুকিয়ে আছে সহজাত ফুটবলার৷ নেদারল্যান্ডসের জাতীয় দলের পুরো দায়িত্ব এখন এই মিডফিল্ডার এ কাঁধে৷ মাত্র ২২ বছর বয়সেই ১০০ ম্যাচ খেলার মাইল ফলক ছুঁয়েছেন তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
10 ছবি1 | 10
অপরদিকে ২০১২ সালের ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপ সম্পর্কে কুয়েরোজের উত্তরসূরি বেন্তো বলেছেন, ‘‘রোনাল্ডো বহু গেম খেলার পর পৌঁছান এবং একটিও ‘ট্রেনিং সেশন' মিস করেননি ও একটি ভালো ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপ খেলেছেন৷'' রোনাল্ডোর ক্লাব রেয়াল মাদ্রিদের সামনে এখন চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল – তাতে রেয়াল জিতলেই পর্তুগালের জাতীয় দলের লাভ, অন্তত মানসিকতা ও প্রেরণার দিক দিয়ে৷ কাজেই বেন্তো অ্যাটলেটিকোর পরিবর্তে রেয়ালকেই সাপোর্ট করছেন৷
অপরদিকে ৪৪ বছর বয়সি কোচ এ-ও জানেন যে, ‘‘ক্লাবের ব্যাপার-স্যাপার জাতীয় দলের প্রসঙ্গ থেকে একটু সরিয়ে রাখা দরকার৷ প্লেয়াররা যখন জাতীয় দলে আসে, তখন তারা ক্লাব থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং যে টুর্নামেন্টে তারা খেলতে চলেছে, তার কথা ভাবতে শুরু করে৷'' এবং সে টুর্নামেন্টের চেয়ে বড় আর কিছু হতে পারে না, কারণ সেটা বিশ্বকাপ৷