চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে পড়ে কোনোভাবেই সমালোচনা এড়াতে পারছে না স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনা৷ মঙ্গলবার রাতে নিজেদের মাটিতে ইটালিয়ান পরাশক্তি রোমা তাদের হারিয়েছে ৩-০ গোলে৷
বিজ্ঞাপন
বুধবার সকালের স্প্যানিশ পত্রিকাগুলো জুড়ে শুধু বার্সার সমালোচনা৷ স্পোর্টস ডেইলি ডিয়ারিও এএস বলছে, ‘‘একদল মোষের পায়ের তলায় শূন্য থেকে ৯৪ মিনিট পর্যন্ত তারা (বার্সা) পিষ্ট হয়েছে৷ কোনো অজুহাত চলবে না৷''
এক সপ্তাহ আগে নিজেদের মাঠ বার্নাব্যুতে ৪-১ গোলে রোমাকে হারিয়েছিল বার্সা৷ হোম-অ্যাওয়ে মিলে ৪-৪ গোলে সমতা এলেও অ্যাওয়ে গোল পাওয়ার সুবাদে ইউরোপ সেরার লড়াইয়ের সেমিফাইনালে পৌঁছে গেছে রোমা৷ আরেক স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক মার্কা'র হেডলাইন ছিল, ‘‘ইউরোপে পুরোপুরি ব্যর্থ৷'' এ নিয়ে টানা তৃতীয়বার শেষ চারে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে কাটালানরা৷ এক সম্পাদকীয়কে এল মুন্ডো ডিপোর্টিভো লিখেছে, ‘‘এটা শুধু একটি পরাজয় নয়৷ তার চেয়েও বেশি কিছু৷''
খেলোয়াড়দের পাশাপাশি হারের দায় চাপানো হয়েছে বার্সা কোচ এর্নেস্তো ভালভের্দি‘র ওপর৷ লিওনেল মেসির ওপর অতি-নির্ভরতা, অনেক দাম দিয়ে কেনা ফ্রেঞ্চ ফরোয়ার্ড আউসমানে ডেম্বেলের ওপর আস্থা রাখতে না পারা এবং বার্সার কৌশলে পরিবর্তন আনা–সব কিছু নিয়েই কোচের দিকে গেছে সমালোচনার তির৷
মেসি পারফর্ম করতে ব্যর্থ হওয়ায় পুরো দলই ডুবেছে বলে মনে করছে পত্রিকাগুলো৷
ফেসবুকে জনপ্রিয় যাঁরা
বাস্তব জীবনে ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো সেরা ফুটবলার কিনা – তা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে৷ তবে ফেসবুকে তিনি অন্যতম সেরা৷ ভক্তের সংখ্যা দশ কোটির বেশি৷ ফেসবুক এবং টুইটারে জনপ্রিয় এরকম আরো কয়েক তারকাকে নিয়ে ছবিঘর৷
ছবি: Reuters
সবার সেরা রোনাল্ডো
ফেসবুকে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রীড়াবিদ হচ্ছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো৷ রেয়াল মাদ্রিদের হয়ে খেলা এই পর্তুগিজ তারকার ফেসবুক ভক্তের সংখ্যা দশ কোটির বেশি৷ টুইটারে তাঁর অনুসারী তিন কোটি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
টুইটার মেসির বিষয় নয়
আর্জেন্টিনার ফুটবল তারকা লিওনেল মেসি গত বছর ফিফার বিশ্বসেরা খেতাবটি জিততে পারেননি৷ সেটা নিয়েছেন রোনাল্ডো৷ ফেসবুকেও মেসি তাঁর পেছনে রয়েছেন৷ ভক্তের সংখ্যা সাড়ে সাত কোটির মতো৷ তবে টুইটারে মেসির ভক্ত মাত্র ২০ লাখ৷
ছবি: Reuters
এগিয়ে যাচ্ছেন নেইমার
রোনাল্ডো বা মেসির পর্যায়ে না পৌঁছালেও দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছেন নেইমার৷ ২২ বছর বয়সি এই ব্রাজিলীয় ফুটবল তারকার ভক্তের সংখ্যা প্রায় পাঁচ কোটি৷ টুইটারে চতুর্থ জনপ্রিয় ক্রীড়াবিদ তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Ghement
অনলাইনে জনপ্রিয় কাকা
ফুটবল ক্যারিয়ারের ভালো সময়গুলো সম্ভবত ইতোমধ্যে পার করে ফেলেছেন কাকা (ছবিতে স্ত্রী ক্যারোলিনের সঙ্গে কাকা)৷ ৩২ বছর বয়সি এই তারকার টুইটার অনুসারীর সংখ্যা দুই কোটির বেশি৷ মাইক্রো ব্লগিং সাইটটিতে দ্বিতীয় জনপ্রিয় ক্রীড়াবিদ তিনি৷ আর ফেসবুকে তাঁর ভক্তের সংখ্যা প্রায় চার কোটি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ব্যতিক্রমী কিং জেমস
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনপ্রিয়দের তালিকায় শুরুর দিকে অধিকাংশই ফুটবলার৷ ব্যতিক্রম শুধু এনবিএ সুপারস্টার লিব্রন৷ ফেসবুকে তাঁর ভক্তের সংখ্যা সোয়া দুই কোটির মতো, আর টুইটারে দেড় কোটির বেশি৷
ছবি: Getty Images
ও্যাজিলও কম যান না
প্রথমে খারাপ ছিল ফর্ম, এখন ইনজুরির কবলে৷ বিশ্বকাপ জয়ী জার্মান দলের তারকা মেসুত ও্যজিল বর্তমানে সম্ভবত কঠিন সময় পার করছেন৷ তবে সময়টা তিনি দিব্যি কাটিয়ে দিতে পারেন অনলাইন ভক্তদের সঙ্গে৷ ফেসবুকে তাঁর ভক্তের সংখ্যা প্রায় তিন কোটি, টুইটারে প্রায় ১ কোটি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
অনলাইনে মন্থর বোল্ট
বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুততম মানব ইউসেইন বোল্ট অনলাইন জগতে বেশ পিছিয়ে আছেন৷ ফেসবুকে তাঁর ভক্তের সংখ্যা মাত্র ১৬ মিলিয়ন! আর টুইটারে সাড়ে তিন মিলিয়নের মতো৷
ছবি: Getty Images
বেকহাম এখনো জনপ্রিয়
ফুটবল মাঠে খেলোয়াড়ের বেশে এখন আর দেখা যাচ্ছে না ডেভিড বেকহামকে৷ তবে তাই বলে ইংল্যান্ড দলের সাবেক এই অধিনায়কের ফেসবুক জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি৷ ফেসবুকে পাঁচ কোটি ভক্ত রয়েছে তাঁর৷
ছবি: Reuters
8 ছবি1 | 8
প্রথম লেগে ৪-১ গোলে পিছিয়ে থেকে অলিম্পিকো স্টেডিয়ামে অতিথিদের বিরুদ্ধে খেলতে নামে রোমা৷ ছয় মিনিটেই ডি রসির লম্বা পাস থেকে বার্সার জালে বল জড়ান রোমার বসনিয়ান স্ট্রাইকার জেকো৷ ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে ইটালিয়ান জায়ান্টরা৷
দ্বিতীয়ার্ধে সেই জেকো'র সুবাদেই পাওয়া পেনাল্টি থেকে গোল ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ডি রসি৷ খেলা শেষ হবার কয়েক মিনিট আগে বার্সার কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন মানোলাস৷ কর্নার থেকে পাওয়া একটি বল সাইড হেড করে চমৎকারভাবে লা লিগার অন্যতম সেরা দলটির জালে পাঠান তিনি৷ বার্সাও সুযোগ তৈরি করেছিল ম্যাচে৷ কিন্তু খেলোয়াড়রা সেগুলো কাজে লাগাতে পারেননি৷ রাতের অন্য ম্যাচে ইংলিশ প্রতিপক্ষ ম্যানচেস্টার সিটিকে ২-১ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে৷ প্রথম লেগে নিজেদের মাটিতে সিটিকে ৩-০ গোলে হারিয়েছিল তারা৷
এদিকে, গতকাল পর্যন্ত বার্সেলোনার সামনে রোমা যেভাবে দাঁড়িয়ে ছিল, ঠিক একইভাবে স্প্যানিশ লা লিগার আরেক পরাশক্তি রেয়াল মাদ্রিদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে সিরি আ'র আরেক জায়ান্ট জুভেন্টাস৷ জুভদের বিপক্ষে প্রথম লেগে ৩-০ গোলে জেতায় অনেকটাই এগিয়ে আছে রেয়াল৷ সে ম্যাচটি হয়েছিল জুভেন্টাসের মাটিতে৷ তাই দ্বিতীয় লেগ নিজেদের মাটিতেই খেলবে মাদ্রিদের দলটি৷ বার্সার হার থেকেও হয়তো শিক্ষা নিয়ে স্বাভাবিক খেলাই উপহার দেবেন ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোরা৷ অন্যদিকে, জুভেন্টাসও স্বদেশী রোমার পারফরম্যান্স থেকে উজ্জ্বীবিত হতে পারে৷ এছাড়া নিজের মাটিতে রেয়ালের সুবিধা যেমন আছে, তেমনি চাপও থাকবে৷
তাছাড়া লিগের সর্বশেষ ম্যাচে জুভদের ৪-২-এর একটি জয়ও আছে৷ তবে দুঃসংবাদ হলো, সে ম্যাচে হ্যাট্রিক পাওয়া স্ট্রাইকার ডিবালা খেলবেন না রেয়ালের বিপক্ষে৷ কারণ, প্রথম লেগে দু'বার কার্ড দেখে ৬৬ মিনিটেই মাঠ ছেড়েছিলেন তিনি৷ অন্যদিকে, রেয়াল ডিফেন্ডার সার্জিও রামোসও খেলবেন না এ ম্যাচে৷ এছাড়া দু'দলেই রয়েছে ইনজুরি সমস্যা৷
ফুটবল এখন টাকার খেলা
২০১৭-১৮ ফুটবল মরশুম চলছে৷ ফ্যানরা খুশি, কেননা ফুটবল বাদ দিয়ে আর কতদিন টেকা যায়৷ ওদিকে ক্লাবগুলোও খুশি, কেননা তাদের ট্যাঁক আজ ট্যাঁকশাল; চাইলে একটা কেন, দশটা প্লেয়ার কিনতে পারে...
ছবি: Fotolia
টাকার বন্যা
বাইশ কোটি বিশ লাখ ইউরো কিংবা ছাব্বিশ কোটি ডলার: নেইমার দা সিলভা সান্তোস জুনিয়র বার্সেলোনা ছেড়ে প্যারিসে ফুটবল খেলতে গেলেন এই মূল্যে৷ স্পেন বা ফ্রান্সের পক্ষে যা সম্ভব ছিল না, সেটা সম্ভব করলেন কাতারের এক শেখ৷ একেই বলে ফুটবলে বিশ্বায়ন৷
ছবি: picture alliance/MAXPPP/Y. Foreix
ট্যাঁক যেখানে যায়
যেমন ডর্টমুন্ডের প্রতিভাবান খেলোয়াড় উসমানে ডেম্বেলে৷ নেইমারকে বেচার কোটি কোটি ডলার বার্সেলোনায় পৌঁছানোর আগেই বার্সা ডর্টমুন্ডে প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে, ডেম্বেলেকে রাজি করানোর আশায়৷ যুক্তি অনেক: বার্সা কত বড় ক্লাব, স্পেনের ফুটবলের মানই আলাদা আর সবচেয়ে বড় কথা – সেখানে ডেম্বেলের রোজগার হবে অনেক বেশি!
ছবি: picture-alliance/Sport Moments/Paschertz
এ খেলা খেলে কম-বেশি সব ক্লাব
ফুটবলে ট্রান্সফার ফি তো আর শুধু আরব শেখ কিংবা রুশ কোটিপতিদের কল্যাণেই আকাশ ছোঁয়নি, অন্যান্য ক্লাবও কিছু কম যায় না; বা গেলেও, তা শুধু টাকার অঙ্কে৷ বোরুসিয়া ডর্টমুন্ড যেমন সম্প্রতি ফ্রাইবুর্গের উঠতি স্ট্রাইকার মাক্সিমিলিয়ান ফিলিপকে ডর্টমুন্ডে এনেছে দু’কোটি ইউরো মূল্যে, যা জার্মান ফুটবলের হিসেবে অনেক টাকা৷
ছবি: picture alliance/dpa/T. Eisenhuth
সবই আপেক্ষিক
ফুটবল মিলিওনেয়ারদের আয় কত? এ প্রশ্নের সঠিক জবাব পাওয়া মুশকিল৷ তবে এক্ষেত্রে মনে রাখা দরকার যে, জার্মানির একটি বড় কোম্পানির প্রধান গড়ে বছরে ৬৪ লাখ ইউরো রোজগার করে থাকেন; সে তুলনায় বুন্ডেসলিগার একজন খেলোয়াড় পান গড়ে বছরে ১৯ লাখ ইউরো৷ আর জার্মানি ফুটবল ফ্যানদের রোজগারই বা খারাপ কী? গড়ে বছরে ৪২ হাজার ইউরো৷
ছবি: picture alliance/dpa/P. Kneffel
শেষ কোথায়?
বুন্ডেসলিগার ১৮টি দলের সব প্লেয়ার মিলিয়ে পান বছরে সাড়ে সাত কোটি ইউরো৷ যুক্তরাজ্যের প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবদের তাদের প্লেয়ারদের খোরপোশ হিসেবে বছরে ১৫ কোটি ২০ লাখ ইউরো মজুদ রাখতে হয়৷ কিন্তু নেইমারের তিন কোটি ইউরোর ‘বেতন’ এবার সকলের হিসেব ভণ্ডুল করে দিয়েছে৷
ছবি: Reuters/c. Hartmann
যা পাওয়া যায়
প্লেয়ারদের জন্য বড় অঙ্কের টাকা যে শুধু স্পন্সরদের কাছ থেকেই আসে, এমন নয়৷ ফ্যানরাও তার অনেকটাই সরবরাহ করে থাকেন৷ হামবুর্গের একজন ফুটবল ফ্যানকে এইচএসভি-র সিজন টিকিটের জন্য ৮০০ ইউরো খরচ করতে হয়৷ এছাড়া ট্রু ফ্যানদের চাই ক্লাবের মাঠে পরার আটপৌরে জার্সি৷ অন্য মাঠে খেলতে যাওয়ার জার্সি, কাপ, প্লেট, প্যান, টোস্টার ইত্যাদি নানা নিত্যব্যবহার্য পদার্থ – সব কিছুর উপর ঝলমল করছে ক্লাবের প্রতীক৷
ছবি: picture-alliance/dpa
এখন ক্লাব কেনাটা হলো ফ্যাশন
জার্মানিতে সেটা তত সহজ নয়, কেননা খেলার লাইসেন্স পেতে হলে বুন্ডেসলিগার একটি ক্লাবকে তার নিজের ভোটাধিকারের অন্তত ৫০ শতাংশ নিজের কাছে রাখতে হবে৷ এবার আরো একটি দল এই বেসরকারি নীতিটি লঙ্ঘন করতে চলেছে৷ হানোফার ৯৬-এর প্রেসিডেন্ট মার্টিন কিন্ড তাতে দোষের কিছু দেখেন না৷ তাঁর নিজের কোম্পানি কিন্ড হিয়ারিং এইড তৈরি করে থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/K. Nietfeld
সবশেষে কিংবা সর্বাগ্রে বায়ার্ন
এবারও সবাই একমত যে, বায়ার্ন মিউনিখ আবার বুন্ডেসলিগা চ্যাম্পিয়ন হতে চলেছে৷ জার্মান লিগে সবচেয়ে দামি ক্লাব হলো এই বায়ার্ন, যাদের মূল্য ২৪০ কোটি ইউরো৷ বলুন তো, খেলার সঙ্গে তার সম্পর্কটা কি?
ছবি: picture-alliance/Sven Simon
8 ছবি1 | 8
রাতের শেষ আটের অন্য ম্যাচে জার্মান বুন্ডেস লিগার সেরা দল বায়ার্ন মিউনিখ ঘরের মাঠে খেলবেস্প্যানিশ দল সেভিয়ার বিপক্ষে৷ প্রথম লেগে ২-১ গোলে এগিয়ে আছে জার্মান জায়ান্টরা৷
সব মিলিয়ে একটি উত্তেজনাপূর্ণ রাতের অপেক্ষায় ফুটবল বিশ্ব৷