রোহিঙ্গাদের ‘জাতিগতভাবে নিধন’ করছে মিয়ানমার
২৫ নভেম্বর ২০১৬![Myanmar Konfikte in Rakhine Region](https://static.dw.com/image/36374931_800.webp)
ম্যাককিসিক বলেন, মিয়ানমারের সৈন্যরা ‘‘মানুষ হত্যা করছে, তাদের গুলি করছে, শিশুদের মেরে ফেলছে, নারীদের ধর্ষণ করছে, বাড়িঘর পুড়িয়ে দিচ্ছে, লুটপাট চালিয়ে তাঁদের (রোহিঙ্গাদের) নদী পার হয়ে বাংলাদেশে চলে আসতে বাধ্য করছে৷''
বাংলাদেশের করণীয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে সীমান্ত খুলে দেয়ার ব্যাপারে ঘোষণা দেয়া কঠিন৷ কারণ সেটা করলে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের উপর অত্যাচার বাড়িয়ে দিবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে দেয়ার তাদের আসল লক্ষ্য পূরণ হয়৷''
মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের একজন মুখপাত্র ম্যাককিসিকের মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন৷ বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, ‘‘আমি জাতিসংঘের এই কর্মকর্তার পেশাদারিত্ব ও নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে চাই৷ তাঁর উচিত সত্য ও নির্দিষ্ট তথ্যের উপর ভিত্তি করে মন্তব্য করা৷ কোনো অভিযোগ আনা উচিত নয়৷''
তবে মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের জাতিগত নিধনের অভিযোগ এবারই প্রথম নয়৷ ২০১৩ সালেও একবার এই ধরণের অভিযোগ এনেছিল হিউম্যান রাইটস ওয়াচ৷ সেই সময়কার মিয়ানমার সরকারও এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছিল৷
জাতিসংঘের কর্মকর্তার বক্তব্য সংক্তান্ত বিবিসির প্রতিবেদনটি টুইটারে শেয়ার করে সিমন অ্যাডামস লিখেছেন, ‘‘সাবেক মানবাধিকার নায়ক অং সান সু চি বর্তমানে যে সরকারের নেতৃত্বে আছেন সেই সরকারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদের নিধনের অভিযোগ আনছে৷ লজ্জাকর৷''
‘আমার গর্ভবতী স্ত্রীকে গুলি করে হত্যা করেছে তারা’
দুই বছরের সন্তানকে কোলে নিয়ে মোহাম্মদ আয়াজ এএফপিকে বলেন, ‘‘তারা (সৈন্যরা) আমার স্ত্রী, ২৫ বছরের জান্নাতুন নাঈমকে গুলি করে হত্যা করেছে৷ সে সাত মাসের গর্ভবতী ছিল৷ আমি দুই বছরের সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে ছিলাম৷ তার মাথায়ও রাইফেলের বাট দিয়ে আঘাত করা হয়েছে৷'' এরপর ঘড়ি আর জুতা বিক্রি করে পাওয়া টাকা দিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন আয়াজ৷ কক্সবাজারে নিবন্ধনহীন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের এক ক্যাম্পে এখন আছেন তিনি৷ এএফপিকে তিনি বলেন, সেনারা গ্রামের বাজারে অন্ততপক্ষে ৩০০ জনকে হত্যা করেছে, কয়েক ডজন নারীকে গণধর্ষণ করেছে আর প্রায় ৩০০ বাড়ি, মুসলমানদের দোকান সহ যে মসজিদে তিনি ইমাম ছিলেন সেটিও পুড়িয়ে দিয়েছে৷
দীন মোহাম্মদ নামের একজন কৃষক, যিনি চারদিন আগে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে বাংলাদেশে পৌঁছান, তিনি এএফপিকে বলেন, ‘‘মিয়ানমারের সেনারা আমার ৯ ও ১২ বছর বয়সি ছেলেকে ধরে নিয়ে গেছে৷ আমি জানিনা এখন তারা কোথায়৷
‘‘তারা নারীদের ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে ভেতর থেকে বন্ধ করে দেয়৷ আমাদের গ্রামের প্রায় ৫০ জন নারী ও মেয়েকে নির্যাতন ও ধর্ষণ করা হয়েছে,'' বলেন ৫০ বছর বয়সি মোহাম্মদ৷
জেডএইচ/এসিবি (এএফপি)
প্রিয় পাঠক, আপনি কিছু বলতে চাইলে নীচে মন্তব্যের ঘরে লিখুন৷