রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে মিয়ানমারের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রত্যাশা নিয়ে শুরু হয়েছে দু'দিনব্যাপী বাংলাদেশ-মিয়ানমার বৈঠক৷
বিজ্ঞাপন
বুধবার দু' দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে শুরু হয় এ বৈঠক৷ সকালের বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক৷ বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলি ও মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলের দপ্তর মন্ত্রী কিউ টিন্ট সোয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হবে দিনের দ্বিতীয় বৈঠক৷
বৃহষ্পতিবার মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি'র সাথে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বৈঠক হবার কথা রয়েছে৷
এ বছরের আগস্ট থেকে সহিংসতার হাত থেকে বাঁচতে ছয় লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে৷ এ বৈঠকের মূল লক্ষ্য একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে নির্বিঘ্নে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করা৷
রোহিঙ্গা শিশুদের খোঁজ নিচ্ছে না কেউ
01:26
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণের আহ্বান জানানো হতে পারে৷ আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মঙ্গলবার মিয়ানমারে এক সংবাদ সম্মেলনে অং সান সু চি জানান, বাংলাদেশের সাথে এ সপ্তাহের মধ্যেই একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করা যায়৷ তবে, রাখাইন রাজ্যে রাতারাতি শান্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন সু চি৷ তিনি বলেন, ‘‘রাতারাতি কিছুই করা যাবে না৷ কিন্তু আমাদের বিশ্বাস আমরা ধীরে ধীরে অবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে সক্ষম হবো৷’’ তবে বাংলাদেশের এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অন্তর্ভুক্ত করার আগ্রহ থাকলেও মিয়ানমারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে সম্মতি পাওয়া যায়নি৷
সদ্য শেষ হওয়া আসেম বৈঠকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণ ও দ্রুত প্রত্যাবাসনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি ফ্রেডরিক মোঘেরিনি বলেন, ‘‘মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সত্যিকারের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে৷’’ তিনি বলেন, ইইউ সামনের দিনগুলোতে এ প্রক্রিয়াতে সাহায্য করতে প্রস্তুত থাকবে৷ ইইউ'র পক্ষ থেকে রাখাইনে সব ধরনের সহিংসতা বন্ধে কোফি আনান কমিশনের সুপারিশ বিবেচনার আহ্বান জানানো হয়৷
আরএন/এসিবি (ইউএনবি)
রোহিঙ্গাদের বর্তমান দিনকাল
আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কেয়ার-এর ত্রাণ সহায়তা নিয়ে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ঘুরে এলেন জেনিফার বোস৷ সেখানকার ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের দিনযাপনের ছবি তুলে এনেছেন তিনি৷
ছবি: DW/ P. Vishwanathan
উদ্বাস্তু জীবন
এ বছরের আগস্ট থেকে মিয়ানমারে সহিংসতার মুখে বাংলাদেশে এসেছে ৬ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা৷ এর আগে বিভিন্ন সময়ে যারা এসেছিলেন তারাসহ বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু বাস করছে৷
ছবি: CARE/T. Rahman
শিশুদের অসহায়ত্ব
নির্যাতন, সহিংসতার স্মৃতি গাঢ় হয়ে চেপে বসেছে রোহিঙ্গা শিশুদের চোখে-মুখে৷ প্রায় ৩ লাখ ৪০ হাজার জন শিশু রয়েছে এখন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে৷
ছবি: CARE/J. Bose
টিকে থাকার সংগ্রাম
স্বল্প পুঁজি নিয়ে ক্যাম্প এলাকার মধ্যেই ব্যবসা শুরু করেছেন এক রোহিঙ্গা ৷ এর মধ্যে অনেক রোহিঙ্গাই দিনমজুরের কাজ থেকে শুরু করে ছোটখাট ব্যবসা করে আয়ের পথ সচল রাখছেন৷
ছবি: CARE/J. Bose
ক্যাম্পজীবন
প্লাস্টিক ঢাকা বাঁশের আচ্ছাদনে দিন কাটছে নতুন আসা রোহিঙ্গাদের৷ কক্সবাজারের নির্ধারিত ক্যাম্পে গাদাগাদি করে বাস করছে রোহিঙ্গারা৷
ছবি: CARE/J. Bose
বনভূমি উজাড়
কক্সবাজারে পাহাড় ও বনভূমি উজাড় করে গড়ে উঠেছে রোহিঙ্গা বসতি৷ ক্যাম্প এলাকার আশেপাশের অনেক গাছ এরই মধ্যে উজাড় হয়েছে রোহিঙ্গাদের বসতি স্থাপন ও জ্বালানির প্রয়োজনে৷
ছবি: CARE/J. Bose
অনিশ্চয়তা
পরিবারের সাথে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা এই রোহিঙ্গাদের সংগ্রাম টিকে থাকার প্রয়োজনে৷ অন্যসব অনিশ্চয়তা ছাপিয়ে সন্তানের মুখে খাবার তুলে দেয়ার চিন্তাই বড় হয়ে দাঁড়ায়৷
ছবি: CARE/J. Bose
ক্যাম্পে শিশুকাল
মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা নারীদের মধ্যে অন্তত ৫৪ হাজার গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারী রয়েছেন৷ অনেকে ক্যাম্পের আসার পথে বা ক্যাম্পেই জন্ম দিয়েছেন শিশুর৷
ছবি: CARE/J. Bose
নিবন্ধিত রোহিঙ্গা
গত দু’ মাসে নিবন্ধিত হয়েছেন অন্তত ৩ লাখ রোহিঙ্গা৷ ক্যাম্প এলাকায় কয়েকটি কেন্দ্রে চলছে এই নিবন্ধন কার্যক্রম৷
ছবি: CARE/T. Haque
টিকাদান কর্মসূচি
শরণার্থী শিবিরগুলোতে সরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন বয়সের শিশুদের প্রয়োজনীয় টিকা দেয়া হচ্ছে৷ বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে ছোঁয়াচে রোগ প্রতিরোধে নেয়া হয়েছে ব্যবস্থা৷
ছবি: CARE/J. Bose
ত্রাণ সহায়তা
সরকারের আশাবাদ সত্ত্বেও ৬ লাখেরও বেশি নতুন আসা রোহিঙ্গার জন্য মিলছে না পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা৷
ছবি: CARE/A. Captain
রোহিঙ্গা শিশু-কিশোর
সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে প্রায় ২০ হাজার রোহিঙ্গা এতিম শিশুকে পুর্নবাসিত করতে কাজ করছে মনোচিকিৎসক, স্বেচ্ছাসেবক ও চিকিৎসক৷