1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে হবে’

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১১ জানুয়ারি ২০১৭

বাংলাদেশে আসা সব রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত নেয়ার জন্য চাপ দিয়েছে বাংলাদেশ৷ একইসঙ্গে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে মেনে নেয়া এবং তাদের ওপর নির্যাতন বন্ধ করার আহ্বানও জানানো হয়েছে৷

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman

বুধবার ঢাকায় মিয়ানমারের বিশেষ দূত ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী চ টিন-এর সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা জানিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক৷ তিনি বলেছেন, ‘‘রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক এবং এই সমস্যা মিয়ানমারকে সমাধান করতে হবে৷ তবে সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ মিয়ানমারকে সহযোগিতা করবে৷'' বুধবার বিকেলে শুরু হয়ে সন্ধ্যায় শেষ হওয়া বৈঠক সূত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে৷

বুধবার রাতে মিয়ানমারে বিশেষ দূতের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলির সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে৷ এরপর রাতে অথবা বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং হতে পারে৷ মিয়ানমারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী চ টিন মঙ্গলবার ঢাকায় এসেছেন৷ রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশের চাপের কারণেই মিয়ানমারের বিশেষ দূত হিসেবে তিনি ঢাকায় এলেন৷

বৈঠক সূত্র জানায়, ‘‘বাংলাদেশ মিয়ানমারকে স্পষ্ট করেই বলে দিয়েছে যে, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক৷ তাদের ফেরত নিতে হবে৷ এই সমস্যা যেহেতু মিয়ানমারের, তাই সমাধানও তাদের করতে হবে৷ বাংলাদেশ এই সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারের পাশে থেকে সহযোগিতা করবে৷ এবং বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিকভাবেই এই সমস্যার সমাধান চায়৷''

বাংলাদেশ জানিয়েছে, ‘‘১৯৭৮ এবং ১৯৯২ সালে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেরশে আসা রোহিঙ্গাদের দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমেই মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছিল৷ তখন দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তিতে মিয়ানমার স্বীকার করে নিয়েছিল রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের আইনগত নাগরিক৷''

বাংলাদেশ আরো জানায়, ‘‘গত তিন দশকে কয়েক লাখ মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে এবং তিন থেকে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে বসবাস করে আসছে৷ এবং গত অক্টোববরে নতুন করে প্রায় ৭০,০০০ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে৷''

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ‘‘আগামী ১৯ জানুয়ারি শুধুমাত্র রোহিঙ্গা বিষয়ে মালয়েশিয়াতে ইসলামি দেশগুলির সংস্থা ওআইসি-র পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক আছে এবং সেখানে রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে একটি শক্ত সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেবার বিষয়ে আলোচনা চলছে৷ বাংলাদেশ সেখানে তার একই অবস্থান তুলে ধরবে৷''

এদিকে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক সমন্বয়কারী সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘‘গত এক সপ্তাহে নতুন করে ২২ হাজার মানুষ রাখাইন রাজ্য থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে৷ ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত করা হিসেব অনুযায়ী, গত ৯ অক্টোবরের পর থেকে হত্যা ও নির্যাতনের মুখে ৬৫ হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে৷ তারা কক্সবাজারের রেজিস্টার্ড ক্যাম্প, অস্থায়ী বসতি এবং স্থানীয় লোকজনের আশ্রয়ে বাস করছেন৷''

ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ডিসেম্বরে অবিলম্বে রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধের জন্য একটি সর্বসম্মত প্রস্তাব গ্রহণ করেছে৷ মিয়ামারের প্রতিবেশী এবং আসিয়ান-এর সদস্য মালয়েশিয়া প্রকাশ্যে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা নির্যাতনের জন্য দায়ী করেছে৷

সি আর আবরার

This browser does not support the audio element.

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিচার্স ইউনিট (রামরু)-র সমন্বয়কারী অধ্যাপক সি আর আবরার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে যে শক্ত অবস্থান এবার নিয়েছে, তা আরো অনেক আগেই নেয়া উচিত ছিল৷ রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক, এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই৷ তাই সম্মানজনকভাবে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে দেয়াই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান৷ মিয়ানমারকে তার নাগরিকদের স্বীকৃতি দিয়ে সম্মানজনকভাবে ফেরত নিতে হবে৷''

তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ৷ বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবিক আচরণ করছে৷ তাই আমার ধারণা, বাংলাদেশ যে অবস্থান নিয়েছে তার প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও সমর্থন দেবে৷ তারাও চাইবে, রোহিঙ্গারা তাদের নিজেদের দেশে যাতে সম্মানজনকভাবে ফিরে যেতে পারে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ