1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রোহিঙ্গাদের ভাসানচর নিতে ধীরে চলো নীতি

১৩ আগস্ট ২০১৯

এই বর্ষার পর রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা ছিল বাংলাদেশ সরকারের৷ সেই পরিকল্পনা বাদ না হলেও এখন ভাসানচরের চেয়ে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর ওপরই জোর দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার৷

ছবি: DW/D. Cupolo

ডয়চে ভেলেকে এই তথ্য দিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান আরো বলেন, ‘‘তবে ভাসানচরে পাঠানোর ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী৷ প্রধানমন্ত্রী চাচ্ছেন সবার সঙ্গে আলোচনা করে, সমন্বয় করে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিতে৷ কারো দ্বিমত থাকলে তিনি এটা করবেন না৷''

তিনি বলেন, ‘‘এখন ভাসানচর বিষয়টি অনেকটা চাপা পড়ে গেছে৷ কারণ, আমরা চাচ্ছি, মিয়ানমার চাচ্ছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় চাচ্ছে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফেরত যাক৷ তারাও পূর্নাঙ্গ নাগরিকত্ব পেলে মিয়ামারে ফিরে যেতে রাজি আছেন৷ তাই ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আমরাও এখন জোর দিচ্ছি৷''

তবে এর আগে গত মে মাসে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মোহাম্মদ শাহ কামাল কক্সকাবাজারে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘‘বর্ষা মৌসুমের পরে এক লাখ রোহিঙ্গাকে কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হবে৷'' আর গত এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘‘রোহিঙ্গাদের জন্য ভাসানচরে সুন্দর আবাসনের ব্যবস্থা করা হলেও এনজিওগুলো নিজেদের সুবিধার কথা চিন্তা করে স্থানান্তরের বিরেধিতা করছে৷''

মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেয়ার কথা বলেছে: ডা. মো. এনামুর রহমান

This browser does not support the audio element.

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ভাসানচর এক দুর্গম দ্বীপ৷ এই দ্বীপেই বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে রোহিঙ্গাদের জন্য সাময়িক আবাসস্থল গড়ে তোলা হয়েছে৷ ১৬ হাজার একর জমির ১৫ হাজার একরে রোহিঙ্গাদের জন্য আবাসস্থল ছাড়াও আরো প্রয়োজনীয় স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর তত্ত্বাবধানে৷ এটি দুই হাজার ৩১২ কোটি বেশি টাকার প্রকল্প৷

প্রতিমন্ত্রী জানান, ‘‘আরসিসি পিলারের ওপর ইট ও টিন দিয়ে রোহিঙ্গাদের এক লাখ পরিবার থাকার  জন্য ঘর তৈরি করা হয়েছে৷ প্রতিটি ঘরে দু'টি বেডরুম, বারান্দা, টয়লেট, কিচেনসহ অন্যান্য সুবিধা আছে৷ তাছাড়া পানি সরবরাহের কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে৷ সেখানে পুলিশ স্টেশন, হাসপাতাল, কমিউনিটি ক্লিনিকও তৈরি শেষ হয়েছে৷ অন্যান্য অবকাঠামোর উন্নয়ন করা হয়েছে৷''

রোহিঙ্গারা ভাসানচরে তাদের স্থানান্তরের বিরোধিতা করছে৷ তারা মিয়ানমারে ফেরত যাওয়ার আগ পর্যন্ত কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোতেই থাকতে চায়৷ আর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও চায় না রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পাঠানো হোক৷

এই পরিস্থিতির মধ্যে গত জুলাইয়ে মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিন্ট থোয়ে বাংলাদেশ সফর করেন৷ তিনি কক্সবাজারে গিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে দুই দফা বৈঠক করেন৷ সেখানে তিনি বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের শর্তসাপেক্ষে নাগরিকত্ব দেয়ার কথা বলেন৷ মিয়ানমারের ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইনের অধীনে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব পেতে হলে নির্ধারিত ফর্মে আবেদন করতে হবে৷

এই আবেদন তারা কিভাবে করবেন? সরাসরি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ এখান থেকে আবেদন নেবে, নাকি বাংলাদেশ সরকার সহায়তা করবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়৷ তবে বাংলাদেশ মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য এ পর্যন্ত ৫৫ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীর তালিকা তৈরি করেছে৷ তালিকা তৈরির কাজ অব্যাহত আছে৷

এনামুর রহমান বলেন, ‘‘রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পাঠানোর ব্যাপারে জাতিসংঘ, ইউএনএইচসিআর, ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামসহ আরো যেসব সংশ্লিষ্ট এনজিও আছে তাদের সাথে আমরা সমঝোতায় আসতে পারিনি৷ মিয়নমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এখানে এসে রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলেছে৷ তাদের নাগরিকত্ব দেয়ার কথা বলেছে, যদিও তারা মিয়ানমারের শর্তে রাজি হয়নি৷ ফলে এখন রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিয়ে মিয়ানমারে ফেরত নেয়ার বিষয়টিই সামনে চলে এসেছে৷ এ নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপও বাড়ছে৷''

আমরা দেশে ফিরতে চাই: ইউনূস আরমান

This browser does not support the audio element.

এদিকে কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের মুখপাত্র ইউনূস আরমান মনে করেন, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের নেয়া কোনো সমাধান নয়৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা তো আমাদের দেশে ফিরতে চাই৷ কিন্তু মিয়ানমার যে প্রক্রিয়ায় নাগরিকত্ব দেয়ার কথা বলছে, এটা দীর্ঘকালীন প্রক্রিয়া৷ আসলে তারা নাগরিকত্ব দিতে চায় না৷ তাই বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আমাদের আবেদন তারা যেন মিয়ানমারের ওপর আরো চাপ সৃষ্টি করে আমাদের নিরাপত্তা এবং পূর্ণ নাগরিকত্বের ব্যবস্থা করে৷ তাহলে আমরা এই কক্সবাজার থেকে সহজেই আমাদের দেশে ফেরত যেতে পারব৷ ভাসানচরে নিলে বিষয়টি কঠিন হয়ে যাবে৷ আমরা আরো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ব৷''

হারুন উর রশীদ , ঢাকা

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ