অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল মনে করে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরতে বাধ্য করা ঠিক হবে না৷ রাখাইনে সহিংসতা ও নির্যাতন বন্ধ হওয়ার আগে সেখানে ফেরত পাঠানোর মানে হবে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেয়া৷
বিজ্ঞাপন
অ্যামনেস্টি বলছে, ‘‘জোর করে যেন রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো না হয়, তা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একসঙ্গে কাজ করতে হবে৷ বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠককে ইতিবাচক উল্লেখ করে অ্যামনেস্টির আন্তর্জাতিক বিষয়ক পরিচালক অড্রি গোরান বলেন, ‘‘রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেশে ফেরার ব্যাপারটি অবশ্যই স্বেচ্ছামূলক হতে হবে৷ তাঁদের ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে নিরাপত্তা এবং তাঁদের মর্যাদার ব্যাপারটি খেয়াল রাখতে হবে৷ ভয়াবহ মানবাধিকার হরণ, কাঠামোগত বৈষম্য আর পৃথকীকরণের পরিস্থিতি বিদ্যমান থাকা অবস্থায় তাঁদের ফিরতে বাধ্য করা যাবে না৷’’
রোহিঙ্গাদের দিকে বাংলাদেশের সাহায্যের হাত
গত ২৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ৪ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমার সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে৷ তাঁদের আশ্রয় দেয়ার পাশাপাশি নানান সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার৷ ছবিঘরে তারই কিছু নমুনা...
ছবি: DW/M. Mostqfigur Rahman
বায়োমেট্রিক নিবন্ধনে দীর্ঘ লাইন
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের জন্য রোহিঙ্গাদের লাইন৷ কুতুপালং ছাড়াও টেকনাফ ও উখিয়ার বিভিন্ন এলাকার কয়েকটি কেন্দ্রে চলছে এই নিবন্ধন কার্যক্রম৷
ছবি: DW/M. Mostqfigur Rahman
নিবন্ধনে বিজিবি
কতুপালং শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক নিবন্ধনে কাজ করছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা৷ একেকটি কেন্দ্রে দিনে গড়ে ৭০০ জনের মতো রোহিঙ্গার বায়োমেট্রিক নিবন্ধন হচ্ছে৷
ছবি: DW/M. Mostqfigur Rahman
নিবন্ধিত
বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের পর দুই রোহিঙ্গা শরণার্থী হারুনুর রশীদ ও মোহাম্মদ দিনার৷
ছবি: DW/M. Mostqfigur Rahman
সরকারি ত্রাণ
রোহিঙ্গাদের সহায়তা দিতে নানাভাবে এগিয়ে এসেছে বাংলদেশ সরকার৷ উখিয়ার কুতুপালংয়ে ট্রাক থেকে নামানো হচ্ছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ সামগ্রী৷
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে যান বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী৷ ৪৬টি দেশের কূটনীতিকরাও ছিলেন তাঁর সঙ্গে৷
ছবি: DW/M. Mostqfigur Rahman
কূটনীতিকদের আশ্বাস
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন শিবিরে গিয়ে শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন কূটনীতিকরা৷ বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ সহায়তার ঘোষণাও দেন তাঁরা৷
ছবি: DW/M. Mostqfigur Rahman
শিশুসেবা
টেকনাফের শরণার্থী শিবিরগুলোতে সরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন বয়সের শিশুদের টিকা দেয়া হচ্ছে৷
ছবি: DW/M. Mostqfigur Rahman
নতুন শিবির
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া নতুন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য বালুখালীতে দুই হাজার একর জায়গায় শিবির গড়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার৷
ছবি: DW/M. Mostqfigur Rahman
তাঁবুর রাজ্য
শরণার্থীর চাপে এরইমধ্যে বালুখালীর এই অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রের সীমানা কয়েকগুণ বড় হয়েছে৷ উখিয়ার পাহাড়-টিলার সবখানেই এখন শরণার্থীদের অস্থায়ী তাঁবু৷
ছবি: DW/M. Mostqfigur Rahman
নতুন বসতি
নতুন নতুন পাহাড়ের গাছপালা কেটে প্রতিদিনই নিজেদের বসতি গড়ছেন রোহিঙ্গারা৷
ছবি: DW/M. Mostqfigur Rahman
11 ছবি1 | 11
জাতিসংঘের মঙ্গলবারের তথ্য অনুযায়ী, ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে ৫ লাখ ৯ হাজার রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে৷ জাতিসংঘের আবাসন বিষয়ক সমন্বয়ক রবার্ট ওয়াটকিনস বলেন, ‘‘কক্সবাজারে থাকা রোহিঙ্গারা খুবই নাজুক অবস্থায় আছে৷ তাঁদের অনেকেই এখন সেই বিভীষিকা কাটিয়ে উঠতে পারেনি৷ তাঁদের বসবাসও করতে হচ্ছে অনেক মানবেতর পরিস্থিতিতে৷ আমাদের লক্ষ্য, ১২ লাখ রোহিঙ্গার মানবিক সহায়তা নিশ্চিতের জন্য প্রস্তুত থাকা৷ কারণ, ইতোমধ্যে ৮ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে বাংলাদেশে৷ আর আগামী ৬ মাসে আরও ৩ লাখ রোহিঙ্গার বাংলাদেশে প্রবেশের সম্ভাবনা রয়েছে৷’’
এএফপির খবরে বলা হয়েছে, এখনও রাখাইনে থেকে যাওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অবশিষ্ট মানুষকে তাড়িয়ে দিতে দ্বিগুণ শক্তিতে অভিযান শুরু করেছে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী৷ এতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে থাকা রোহিঙ্গাদের স্রোত আবারো বেড়েছে৷ বাংলাদেশে অবস্থানরত ৯ লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে সেখানকার অবশিষ্ট ৩ লাখ রোহিঙ্গা যুক্ত হলে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ১২ লাখে দাঁড়াবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে৷
রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার ঘোষণার পর রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীরা এএফপিকে বলছেন, ‘‘পশ্চিম রাখাইনে থেকে যাওয়া অবশিষ্ট রোহিঙ্গাকে দেশছাড়া করতে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী ফের তাণ্ডব শুরু করেছে৷ রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে দিতে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান দ্বিগুণ জোরদার করা হয়েছে৷’’ পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বলছেন, ‘‘প্রতিদিন বাংলাদেশের সীমান্তে ছুটছে হাজার হাজার মানুষ৷ বহু গ্রাম এখন একেবারেই জনমানবশূন্য৷’’ এএফপি জানিয়েছে, ‘‘বাংলাদেশে চার সপ্তাহে প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয়ার পর কয়েকদিন ঢল কিছুটা থেমেছিল৷ তবে গত কয়েকদিনে তা আবারও বেড়েছে৷ এখন প্রতিদিন ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসছে৷’’
টেকনাফে রোহিঙ্গা শরণার্থী
মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সংঘাতের মুখে সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশের টেকনাফে এসেছেন সাড়ে তিন লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী৷ সেখানে তাঁদের জীবনযাত্রা, তাঁদের জীবনের দুঃসহ স্মৃতির বর্ণনা জানুন ছবিঘরে৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
টেকনাফের লম্বার বিল এলাকা দিয়ে দলে দলে রোহিঙ্গা শরণার্থী আসছে আশ্রয়ের সন্ধানে৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
রোহিঙ্গা শরণার্থীরা দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে এসে পৌঁছান টেকনাফে৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
পরিবারের অসুস্থ ও বৃদ্ধ সদস্যদের এভাবে কাঁধে নিয়ে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে টেকনাফে এসেছেন অনেকেই৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
শরণার্থীরা মিয়ামনমার থেকে অনেকটা খালি হাতেই পালিয়ে এসেছেন৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
শরণার্থীদের মধ্যে অনেকেই চোখের সামনে দেখেছেন স্বজন হত্যার বিভৎস দৃশ্য৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
রোহিঙ্গা শরণার্থী নারী ও শিশুরা বাংলাদেশে আসার দীর্ঘপথে নদী-খালও পাড়ি দিয়েছেন৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, ২৫ আগস্টের পর থেকে প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী এসেছে বাংলাদেশে৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
টেকনাফ ও নাইক্ষংছড়ির বিভিন্ন সীমান্ত থেকে আসা কমে গেলেও শাহপরীর দ্বীপ থেকে এখনও দলে দলে শরণার্থীরা আসছেন৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
টেকনাফের নাফ নদীর ওপারে প্রতিদিনিই দেখা যাচ্ছে রোহিঙ্গাদের বসতি জ্বালিয়ে দেয়ার দৃশ্য৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
তিন দিন ধরে আগুন দেয়া হচ্ছে মংডু ও রাসিডাং এলাকার রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর৷ শাহপরীর দ্বীপ থেকে তোলা ছবি৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
বাংলাদেশে আসা শরণার্থীদের অনেকেই নিয়ে আসছেন গবাদি পশু৷ এক্ষেত্রে তাঁরা ব্যবহার করছেন নাফ নদীকে৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
গত কয়েকদিন ধরে আসা মানুষদের বড় একটা অংশের শরণার্থী শিবিরে ঠাঁই মেলেনি৷ কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের পাশেই দিন কাটছে তাঁদের৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
অনেকে আবার জায়গা করে নিয়েছেন সড়কের পাশের বিভিন্ন টিলার উপরে৷ সোখানে খোলা আকাশের নীচেই দিন রাত পার করছেন তাঁরা৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
টেকনাফের বালুখালীতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নুতন শিবির৷ বিশাল এ এলাকায় সব শরণার্থীরই জায়গা করে দিতে কাজ করছে বাংলাদেশ সরকার৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
মিয়ানমার থেকে আসা প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে ২ লাখের বেশিই শিশু, যা এবার আসা মোট শরণার্থীর ৬০ শতাংশ৷ ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, ২৫ শে আগস্টের পর থেকে ১১শ’রও বেশি শিশু অভিভাবক ছাড়া রাখাইন থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর হাতে ২৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত তিন হাজার রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ শুরু হয়েছে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধনের কাজ৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
২৫ আগস্টের পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে নির্যাতনের মুখে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসা শুরু করলে প্রথমে সীমান্ত সিল করা দেয়া হয়েছিল৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
কিন্তু কয়েকদিন পরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবিক আচরনের নির্দেশ দিলে সীমান্ত শিথিল হয় এবং ব্যাপকহারে নির্যাতিত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসতে শুরু করে৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ সীমান্ত এলাকায় আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা খাবারের তীব্র সংকটে ভুগছেন৷ কোনো গাড়ি থেকে শুকনা খাবার দিতে দেখলেই খাবার সংগ্রহ করতে তাঁদের মধ্যে শুরু হয় কঠিন প্রতিযোগিতা৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
২৫শে আগস্ট মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, অস্ত্রধারী বিদ্রোহীরা ২৪টি পুলিশ চেকপোস্ট ও একটি সেনাঘাঁটিতে একযোগে হামলা চালায়৷ তাদের পাল্টা হামলা চালালে তা সহিংসতায় রূপ নেয়৷ দু’পক্ষের সংঘর্ষে সেইদিনই রাখাইন রাজ্যে অন্তত ৮৯ জন নিহত হয়৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
22 ছবি1 | 22
এদিকে জতিসংঘের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জাতিসংঘ কর্মকর্তারা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ব্যাপারে বাংলাদেশের মানসিকতাকে ‘মানবতার অনুপ্রেরণাদায়ক উদাহরণ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন৷ রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশে তিন দিনের মিশনে অংশ নেন জাতিসংঘের জরুরি ত্রাণ সমন্বয়ক মার্ক লোকক এবং ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক অ্যান্থনি লেক৷ মিশন শেষে তারা সাধারণ উদারতার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান৷ তাঁরা বলেন, ‘‘২৫ আগস্টের পর থেকে এখন পর্যন্ত পাঁচ লাখ মানুষ মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসেছে৷ তাঁদের জন্য বাংলাদেশের নেতৃত্ব ‘মানবতার একটি অনুপ্রেরণাদায়ক উদাহরণ৷’’
তিন দিনের মিশনে জাতিসংঘ ও ইউনিসেফের এ দুই কর্মকর্তা রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো পরিদর্শন করেন৷ শরণার্থীদের বসবাসের অবস্থা দেখেন৷ তাঁরা জানান, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোর পরিস্থিতির যে উন্নতি হয়েছে, তাতে তাঁরা অভিভূত৷ তবে তাঁরা সেখানে মানবিক সাহায্যকর্মীদের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন৷
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের খাবার, আশ্রয়স্থল, পানি, স্যানিটেশন সুবিধা, স্বাস্থ্যসেবা এবং প্রয়োজনীয় সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এই মুহূর্তে জরুরিভিত্তিতে তহবিল প্রয়োজন৷
ইতিমধ্যে শরণার্থীরা বহু কষ্ট ভোগ করেছেন৷ সাহায্যের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না হলে নিজ দেশ থেকে পালিয়ে আসা এই মানুষগুলো আরেকটি বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে পারেন৷
জাতিসংঘ ও ইউনিসেফের দুই কর্মকর্তাই রোহিঙ্গাদের ভয়ংকর পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন৷ তাঁরা বলেন, এখনও মিয়ানমার থেকে লোকজনের বাংলাদেশে পালিয়ে আসা অব্যাহত রয়েছে৷
মিয়ানমার সরকারের প্রতি রাখাইন রাজ্যে পরিপূর্ণ ত্রাণ তৎপরতার অনুমতি দেওয়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন এই দুই কর্মকর্তা৷
রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং তাঁদের আশ্রয়দানকারী দেশ বাংলাদেশের জন্য জাতিসংঘের ৪৩৪ মিলিয়ন ডলারের ত্রাণ সাহায্যের পরিকল্পনা রয়েছে৷ এছাড়া নতুন ১২শ' শরণার্থীর জন্য আশ্রয় শিবির নির্মাণে অতিরিক্ত ১২ মিলিয়ন ডলারের তহবিল দিয়েছে সেন্ট্রাল ইমারজেন্সি রিলিফ ফান্ড (সিইআরএফ)৷
‘রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি’
মানবাধিকার কর্মী এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাবেক নির্বাহী পরিচালক নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি৷ মিয়ানমার সেনাবাহিনী এখনো রাখাইনে নির্যাতন ও সহিংসতা অব্যাহত রেখেছে৷ সেখানে এখনো বাড়ি-ঘরে আগুন দেয়া হচেছ৷ রোহিঙ্গাদের এই পরিস্থিতিতে ফেরত পাঠানো হলে তাঁদের বিপর্যয়ের মুখেই ঠেলে দেয়া হবে৷’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে অথবা ‘সেফ জোন’ তৈরি করার পরই তাঁদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো যেতে পারে৷’’
আরেক প্রশ্নের জবাবে নূর খান বলেন, ‘‘মিয়ানমার আসলে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার কথা বলে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সময় পার করার কৌশল নিয়েছে৷ কারণ, তারা একদিনের জন্যও সহিংসতা বন্ধ করেনি৷ জাতিসংঘের সরাসরি হস্তক্ষেপ ছাড়া মিয়ানমারে সাহিংসতা বন্ধ হবে না৷’’
প্রিয় পাঠক, আপনি কিছু বলতে চাইলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে...