1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আইএসে যোগ দিচ্ছে রোহিঙ্গারা

সমীর কুমার দে ঢাকা
২৭ জানুয়ারি ২০১৭

মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গারা আগে স্থানীয়ভাবে অপরাধে জড়াতো৷ এখন কেউ কেউ তথাকথিত জঙ্গি সংগঠন আইএসেও যোগ দিচ্ছে৷ পুলিশের মহাপরির্দশক এ কে এম শহীদুল হক পুলিশ সুপারদের এ ব্যাপারে কঠোর ও সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন৷

রোহিঙ্গা
রোহিঙ্গাছবি: Reuters/M.P.Hossain

বৃহস্পতিবার পুলিশ সপ্তাহের অনুষ্ঠানের শেষ দিনে তিনি পুলিশ সুপারদের এই নির্দেশ দেন৷ অবশ্য কক্সবাজারের পুলিশ সুপার ড. এ কে এম ইকবাল হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আইএসে যোগ দিচ্ছে এমনটি নয়, আইজিপি স্যার আমাদের বলেছেন, রোহিঙ্গারা যেন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে না পড়ে – সেদিকে নজর রাখতে হবে৷ পাশাপাশি রোহিঙ্গারা যেখানে আছে সেখানে আমাদের পুলিশের ক্যাম্প আছে, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও সেখানে কাজ করছেন৷ তাদের সব কার্যক্রম মনিটরিং হয়৷ তারা সবসময় আমাদের নজরদারির মধ্যে থাকে৷''

সাংবাদিক আবু তাহের

This browser does not support the audio element.

তবে বাংলাদেশের শীর্ষ একটি ইংরেজি দৈনিকের খবর, পুলিশ সপ্তাহের অনুষ্ঠানে আইজিপি বলেছেন, ‘‘রোহিঙ্গারা আইএসে যোগ দিচ্ছে৷ এমনকি নব্য জেএমবি, হুজিসহ যত ধরনের জঙ্গি সংগঠন আছে, সেখানে যোগ দিচ্ছে তারা৷'' 

 

কক্সবাজারের স্থানীয় সাংবাদিক আবু তাহের ঢাকার একটি জাতীয় দৈনিকেও কাজ করেন৷ ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপকালে তিনি রোহিঙ্গাদের অপরাধের ধরণ ও আইএসে যোগদান প্রসঙ্গে কথা বলেছেন৷ তাঁর মতে, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আইএসের সম্পৃক্ততা নতুন কিছু নয়৷ তিনি বলেন, ‘‘রোহিঙ্গাদের তো অনেকগুলো গ্রুপ আছে৷ এর মধ্যে নতুন একটি গ্রুপ হয়েছে এএমএম৷ এই গ্রুপের প্রধান এক সময় আইএসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন৷ তিনি আফগানিস্তানে যুদ্ধ করেছেন৷ সিরিয়াতেও ছিলেন৷ তিনি নিজেকে আবু আম্মাস বলে পরিচয় দেন৷ আমরা জানি, তার নাম আতাউল্লাহ৷ তিনি মিয়ানমারের আরাকানেই থাকেন৷ গত ৯ অক্টোবর আরাকানে মিয়ানমার আর্মির উপর যে হামলা হয়, সেটা তিনিই করেছিলেন৷ ইউটিউবে তার স্বীকারোক্তিমূলক ভিডিও আছে৷ বাংলাদেশে যারা এসেছে, তাদের মধ্যেও তার লোক আছে৷''

এসপি ড. একেএম ইকবাল হোসেন

This browser does not support the audio element.

আবু তাহের আরো বলেন, ‘‘বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকেই তারা (আইএস) সদস্য সংগ্রহ করে৷ চুরি-ডাকাতিসহ নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে যুক্ত এই রোহিঙ্গারা৷ বর্তমানে ক্যাম্পে তিন লাখের মতো আর সব মিলিয়ে ৬ লাখের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আছে৷ কক্সবাজার শহরে রিক্সাওয়ালা থেকে শুরু করে মাছ ধরার বোট চালানো পর্যন্ত অনেক কাজই করে তারা৷ বাসা-বাড়িতে কাজ করে তাদের মেয়েরা৷ কক্সবাজার থেকে শুরু করে ঢাকা পর্যন্ত ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়েছে রোহিঙ্গা মেয়েরা৷ বর্তমানে কক্সবাজারের বিভিন্ন অপরাধী গ্রুপগুলোর সঙ্গে তো এই রোহিঙ্গারাই জড়িত৷''

 

রোহিঙ্গাদের জঙ্গি তত্‍পরতা, ভোটার হওয়া, বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমানো- – এমন অনেক বিষয়ই নিয়েই কথা হলো নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি জানান, রোহিঙ্গাদের কার্যক্রমের খোঁজ-খবর তিনি নিয়মিতই রাখেন৷ তাঁর মতে, ‘‘প্রথমত, এখানে যারা আশ্রয়প্রার্থী ছিল, তাদের সবাইকে গণনার মধ্যে আনা হয়নি৷ প্রথম দিকে যারা এসেছিল, তারা নানা ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপে যুক্ত ছিল৷ আমাদের ভোটার লিষ্টে তারা ঢুকেছে৷ সেখান থেকে বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে গিয়ে নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে৷ বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে৷ সেখানে এদের বেশ কিছু সদস্য পুলিশের হাতে গ্রেফতারও হয়েছে৷ এখন কথা হলো, রোহিঙ্গারা যে ধরনের পরিস্থিতিতে আছে, সেখানে তাদের অপরাধে যুক্ত হওয়া সহজ৷''

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত হোসেন

This browser does not support the audio element.

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘‘শরণার্থী শিবিরের বাইরে যারা আছে, তাদের রিক্রুট করে জঙ্গি কার্যক্রমে নিয়ে যাওয়া অত্যন্ত সহজ৷ মিয়ানমারে তারা যেভাবে অত্যাচারিত হয়েছে, তাতে তাদের টার্গেট আমাদের দেশ হতে পারে, আবার মিয়ানমারও হতে পারে৷ আমাদের ওই এলাকাটা তো ঝুঁকির মধ্যে আছে৷ পুলিশের মহাপরিদর্শক যেটা বলেছেন, সেটা একেবারেই ঠিক৷ আমিও তাঁর সঙ্গে একমত৷ তাদের যেভাবে নিবন্ধিত করা হচ্ছে, সেখানে অনেক শিথিলতা আছে৷ অনেক সময় স্থানীয় প্রভাবশালী লোকজনের ছত্রছায়ায় তারা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে গেছে৷ মাছের ঘের, লবনের ঘেরে তাদের সস্তায় ব্যবহার করা হয়৷ এই ধরনের মানুষ যারা রোহিঙ্গাদের উত্‍সাহিত করছে, তাদের খুঁজে বের করা ও নিবৃত্ত করাই এখন আমাদের প্রধান কাজ৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ