1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে ইন্দোনেশিয়া

সমীর কুমার দে ঢাকা
৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশের পাশে থাকবে ইন্দোনেশিয়া৷ মঙ্গলবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে পৃথক বৈঠক শেষে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ আশ্বাস দেন৷

Bangladesch Flucht der Rohingya aus Myanmar
ছবি: picture-alliance/AP Photo/B. Armangue

ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেনটো মারসুদি বলেন, ‘‘আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও বলেছি, আমরা বাংলাদেশের পাশে থাকব৷ তবে আমাদের সংকট সমাধানের উপায় খুঁজতে হবে৷ রোহিঙ্গাদের উপর এই অমানবিক নির্যাতনের অবসান হতে হবে৷'' এর আগে মিয়ানমারের সঙ্গে বৈঠকের পর মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকায় আসেন মারসুদি৷ বিকেলে বৈঠক হয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে৷ সন্ধ্যায় হয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক৷ একই ইস্যুতে আলোচনা করতে বুধবার রাতে ঢাকায় আসছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসোগলু৷

রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে এরই মধ্যে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেছেন ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারসুদি৷ সেখান থেকে আসেন ঢাকায়৷ এ ইস্যু নিয়ে আলোচনার জন্য গত ডিসেম্বরেও প্রথমে মিয়ানমার, তারপর বাংলাদেশে এসেছিলেন তিনি৷

বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিচার্স ইউনিটের প্রধান নির্বাহী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সি আর আবরার ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর সম্পর্কে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘একটা সমস্যা হয়েছে বলেই তো বিদেশি উচ্চ পদস্থরা এটা নিয়ে দৌড়ঝাঁপ করছেন৷ তবে তার আগে আমাদের নীতি ঠিক করতে হবে৷ আমাদের এখন দ্বিমুখী নীতি চলছে৷ একদিকে আমরা এই নির্যাতনের প্রতিবাদ করছি, অন্যদিকে আমাদের বিজিবি প্রধান তাদের সঙ্গে যৌথ সীমান্ত টহলের কথা বলছেন৷ এটা কোনোভাবেই ঠিক নয়৷''

সি আর আবরার

This browser does not support the audio element.

বুধবার আসছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

রোহিঙ্গা বিষয়ে আলোচনার জন্য বুধবার গভীর রাতে বাংলাদেশে আসছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসোগলু৷ নিজস্ব বিমানে আসছেন তিনি৷ তাঁর সরাসরি কক্সবাজারে যাওয়ার কথা রয়েছে৷ রোহিঙ্গা সমস্যার বিষয়ে তুরস্কের নীতির সঙ্গে বাংলাদেশের নীতির মিল থাকায় এ আলোচনাটি বিশেষ গুরুত্ব পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশে অবস্থানরত সব রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসন, রাখাইনে নিরাপদ পরিবেশ এবং কোফি আনানের নেতৃত্বে গঠিত রাখাইন পরামর্শ কমিশনের পূর্ণ বাস্তবায়ন দেখতে চায় বাংলাদেশ৷ এই তিনটি বিষয়ে তুরস্কের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে৷

মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টির আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

বাংলাদেশে থাকা মিয়ানমারের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে দেশটির ওপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টির কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ মঙ্গলবার ইন্দোনেশিয়ার নতুন রাষ্ট্রদূত রিনা প্রিথিয়াসমিয়ারসি সোয়েমারনোর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন৷ প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম পরে সাংবাদিকদের সামনে বৈঠকের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন৷ প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে জাতিগত নিপীড়নের মুখে পালিয়ে এসে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ গত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে আছে৷

বাংলাদেশ তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে এলেও মিয়ানমার তাতে সাড়া দেয়নি৷ বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়াদের মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবেও মেনে নিতেও তারা নারাজ৷ এদিকে গত ২৪ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে পুলিশ পোস্ট ও সেনাক্যাম্পে হামলার পর সীমান্তে নতুন করে এই রোহিঙ্গাদের ঢল নামে৷ জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর হিসাবে, গত ১৩ দিনে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা এক লাখ ২৩ হাজার মানুষ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে৷ রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বরতার নিন্দা জানিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছে মালদ্বীপ৷

কূটনীতিক তত্‍পরতা অব্যাহত

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কূটনীতিক তত্‍পরতা অব্যাহত আছে বলে মন্তব্য করেছেন সরকারের দুই জন প্রভাবশালী মন্ত্রী৷ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘‘রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করছেন৷ প্রধানমন্ত্রী তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন৷ সেই নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে৷ একইসঙ্গে কূটনৈতিক তত্‍পরতা অব্যাহত আছে৷''

একই প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘‘মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর যে অত্যাচার হচ্ছে, তা বন্ধে অতি সত্বর জাতিসংঘের একটি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত৷'' তিনি বলেন, ‘‘আমি মনে করি, বিশ্ববাসীরও এ বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত৷''

বালুখালিতে আশ্রয় পাবে রোহিঙ্গারা

মিয়ানমারে দমন-পীড়নের মুখে যে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসছেন, কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালিতে বনবিভাগের ৫০ একর জমিতে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করছে জেলা প্রশাসন৷ কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খালেদ মাহমুদ মঙ্গলবার সাংবাদিকদের জানান, গতবছরের অক্টোবরে রাখাইনে সহিংসতার পর রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ শুরু হলে উখিয়ার বালুখালিতে বনবিভাগের ওই জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়৷ মাস ছয়েক আগে এই বরাদ্দ দেয়া হয়৷

খালেদ মাহমুদ বলেন, গত বছর আসা কয়েক হাজার রোহিঙ্গাও সেখানে আছে৷ নতুন করে যাঁরা আসছেন, তাঁদেরও সেখানে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হবে৷ নতুন আসা রোহিঙ্গাদের ছড়িয়ে ছিটিয়ে না থেকে ওই ক্যাম্পের আশেপাশে থাকতে বলা হয়েছে৷ সেখানে থাকলে কাউকে বাধা দেওয়া হবে না৷ অন্য কোথাও থাকলে তাঁদের উচ্ছেদ করা হবে৷ গত কয়েক দিন ধরে উখিয়ার কুতুপালং থেকে শুরু করে থাইংখালী পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পাহাড়ে পাহাড়ে বাঁশ আর পলিথিনের অসংখ্য ঝুপড়ি গড়ে তুলেছে তারা৷ রোহিঙ্গাদের নতুন বসতি দেখা গেছে টেকনাফ সীমান্তবর্তী হোয়াইক্যং ইউনিয়নসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকাতেও৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ