1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রোহিঙ্গা ইস্যু

২০ জুন ২০১২

বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ইস্যুতে উত্তাল বাংলা ব্লগ৷ মানবিক বিবেচনায় অনেক ব্লগার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার পক্ষে, কেউ কেউ আবার বিভিন্ন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করছেন, যা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার বিপক্ষে৷

Rohingya Muslims, fleeing from ethnic violence in Myanmar between Buddhists and minority Rohingya Muslims, are brought by Bangladeshi border guards to a boat jetty at Shahporir Dwip in Taknaf, Bangladesh, Monday, June 18, 2012. After a couple of days of quiet, 128 Rohingya Muslim men were intercepted while crossing the Naf river to Bangladesh, Sunday and Monday. (Foto: Saurabh Das/AP/dapd)
ছবি: AP

মিয়ানমারে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রেক্ষিতে গত কয়েকসপ্তাহ ধরে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে রোহিঙ্গারা৷ ছোট্ট ডিঙ্গিতে করে সমুদ্র পথে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টার অসংখ্য ছবি এখন প্রতিনিয়ত শেয়ার হচ্ছে ব্লগে, ফেসবুকে৷ বাংলাদেশ সরকার অবশ্য এক্ষেত্রে অত্যন্ত কড়া অবস্থান নিয়েছেন৷ রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ কঠোরভাবে প্রতিরোধ করছে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী৷

বাংলা ব্লগাররাও এই ইস্যুতে কার্যত দ্বিধাবিভক্ত৷ একপক্ষ সরকারের এই কঠোর অবস্থানকে সমর্থন করছে৷ অন্যপক্ষে মানবিক দিক এবং আন্তর্জাতিক ভাবমুর্তি বিবেচনায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় প্রদানের পক্ষে৷ বাংলা ব্লগার আরিফ জেবতিক রোহিঙ্গা ইস্যুতে শুরু থেকেই ফেসবুকে অত্যন্ত সরব৷ একজন ব্লগার হিসেবে এই বিষয়ে তাঁর মন্তব্য জানতে চাইলে আরিফ বলেন, ‘‘রোহিঙ্গা মিয়ানমারের কোনো সাময়িক সমস্যা নয় যে উদ্বাস্তুদেরকে আশ্রয় দেওয়ার পরে এর কোনো সমাধান তৈরি হবে৷ কারণ মিয়ানমার প্রায় দুই মিলিয়ন রোহিঙ্গাকে নাগরিক হিসেবেই স্বীকার করছে না৷ এটা অত্যন্ত বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন৷ আন্তর্জাতিকভাবে এই বিষয়ে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত৷''

রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশে তাদেরকে আশ্রয় দেওয়াটা কোনো সমাধান নয়৷ কারণ জনসংখ্যার বিচারে আমরা প্রচণ্ড ধরনের একটা জনবহুল দেশ৷ এবং আমাদের যে ছোট, ক্ষুদ্র অর্থনীতি, সেই অর্থনীতির জন্য এত লোকজনকে ঠাঁই করে দেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ৷''

আশ্রয়ের খোঁজে রোহিঙ্গা সদস্যরাছবি: AP

জনপ্রিয় বাংলা ব্লগ সাইট সামহয়্যার ইন ব্লগে এই বিষয়ে অসংখ্য নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন ব্লগাররা৷ ব্লগার ইমন জুবায়ের ঢাকায় এক রোহিঙ্গা পরিবারের সঙ্গে তাঁর ইতিবাচক অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন৷ তিনি তাঁর পোস্টের মন্তব্যের ঘরে লিখেছেন, ‘‘...জাতি হিসেবে আমরা অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব সত্ত্বেও গত ৪০ বছরে অনেক কিছু অর্জন করেছি৷ তার মানে বাংলাদেশের একটা ভালো ইমেজ আছে বর্হিবিশ্বে৷ তাই এখন যদি আমরা অনুদার হই, তাহলে একটা দাগ থেকে যাবে৷ বিশ্ব এখন আমাদের দিকেই তাকিয়ে আছে৷ শুধুমাত্র একটি মানবিক সিদ্ধান্তের জন্য ...৷''

একই সাইটে অপর ব্লগার মিল্টন লিখেছেন, ‘‘বাংলাদেশে আশ্রয় না পেয়ে তারা সমুদ্রের মাঝে নৌকায় করে ভাসছে৷ যে কোনো সময়ে ঢেউয়ের তোড়ে নৌকা উল্টে গিয়ে প্রাণহানি ঘটতে পারে৷ পত্রিকায় পড়লাম, বিজিবি একটি নৌকা উদ্ধার করেছে যেটাতে শুধু দেড়মাস বয়সি একটি বাচ্চা ছাড়া আর কিছু পাওয়া যায়নি৷ জানিনা বাদবাকি আরোহীদের ভাগ্যে কি ঘটেছে৷ এই দৃশ্যগুলো কল্পনা করলে চোখে পানি আসে৷''

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ব্লগে রোহিঙ্গা ইস্যুতে একটি ছবি ব্লগ প্রকাশ করেছেন শাহরিয়ার আহমেদ৷ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি ছবির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি, যেটিতে মিয়ানমারের সংঘাতের জন্য বাঙালিদেরকে দায়ী করা হয়েছে৷ এই বিষয়টির প্রতিবাদ জানিয়েছেন শাহরিয়ার৷ একইসঙ্গে তিনি লিখেছেন, ‘‘...মানবিক কারণেই আমরা চাই রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়াতে৷ কারণ আমরা বাংলাদেশিরা জানি শখ করে কেউ ভিটা মাটি ছেড়ে ক্যাম্পে আশ্রয় নেয় না৷ আমাদের মানবতা আছে বলেই লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা এখনো বাংলাদেশে আশ্রিত৷ মানবতাবোধ আমাদের অহংকার৷''

অপর ব্লগার মনিরুজ্জামান সজল এই বিষয়ে লিখেছেন, ‘‘আমাদের দেশে এখনো অনেক রোহিঙ্গা অবস্থান করছে৷ কিন্তু মিয়ানমার তাদের ফেরত নিচ্ছে না৷ আর অতীত থেকে আমরা যে শিক্ষা পেয়েছি, সেই শিক্ষা নিয়ে কেন নিজেদের বিপদ ঢেকে আনবো?''

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ব্লগের ব্লগার আরিফ হোসেন সাইদ এই বিষয়ে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘মানবতার যে বিষয়টি উঠেছে সেটি বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক মহল যদি বাংলাদেশকে সবরকমের সহায়তার আশ্বাস দেয়, তাহলে বাংলাদেশের অবশ্যই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া উচিত৷ কিন্তু এই বিষয়ে অতীতে আন্তর্জাতিক মহল বাংলাদেশকে আশানুরূপ সহায়তা করেনি৷ আন্তর্জাতিক মহল যদি বাংলাদেশকে নিশ্চিন্ত করত, তাহলে অবশ্যই বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিত৷''

তিনি বলেন, ‘‘আমি মনে করি, রোহিঙ্গারা যেন তাদের দেশে সকল প্রকার নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিয়ে থাকতে পারে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে৷ এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক মহলকে এগিয়ে আসতে হবে৷''

উল্লেখ্য, রোহিঙ্গা ইস্যুতে এই বিতর্ক ফেসবুক এবং ব্লগ ছাড়িয়ে হ্যাকারদের কাছেও পৌঁছে গেছে৷ বাংলাদেশের একটি হ্যাকার গোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে মিয়ানমারের বিভিন্ন ওয়েবসাইটে আক্রমণ করছে, এমন তথ্যও প্রকাশ হয়েছে বিভিন্ন ব্লগ সাইটে৷

প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ