1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারতের প্রচুর সাপোর্ট পাচ্ছি’

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১১ অক্টোবর ২০১৯

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী মনে করেন, যারা বলেন বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে ভারত লাভবান হচ্ছে তারা না জেনেই কথা বলছেন৷ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হয়ে তারা এসব কথা বলছেন৷

ছবি: picture-alliance/AP Photo/D. Yasin

ডয়চে ভেলে: বলা হয়ে থাকে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে শুধু ভারতই লাভবান হচ্ছে৷ আপনার ভাবনা  কী?
. গওহর  রিজভী: একেবারেই না৷ যারা এটা বলছেন তারা কিসের ভিত্তিতে বলছেন? তাদের কাছে কোনো তথ্য আছে? এটা রাবিশ কথাবার্তা৷ আমাদের এখন ভারতের ব্যবসা-বাণিজ্যে ফ্রি অ্যাকসেস আছে৷ ৪০ বছরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানি দুইশ' মিলিয়ন ডলার পার হতে পারেনি৷ কিন্তু এখন এক বিলিয়ন ডলারের উপরে উঠেছে৷ আমাদের রপ্তানিকারকেরা আরেকটু চেষ্টা করলে এটা আরো পাঁচ থেকে ১০ গুণ বাড়ানো সম্ভব৷ আর আমরা যে লাইন অব ক্রেডিট পাচ্ছি ভারত থেকে তা দিয়ে আমাদের অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে৷ পাওয়ার , রোড, রেলওয়ে, ট্রান্সপের্টে আমরা কাজে লাগাচ্ছি৷ লাইন অব ক্রেডিটে কোনো রেসট্রিকশন নাই৷ সিদ্ধান্ত আমরাই নিই৷ কোন প্রজেক্টে আমরা কিভাবে এই পয়সাটা খরচ করব তা আমরাই ঠিক করি৷ আজ পর্যন্ত কোনো দেশ থেকে আমরা এই ধরণের শর্তহীন সহায়তা পেয়েছি? 

‘সীমন্ত হত্যা কমে সিঙ্গল ডিজিটে নেমে এসেছে’

This browser does not support the audio element.

তাহলে  যারা বলেন তারা কেন বলেন? উদ্দেশ্য  কী?
একটা হতে পারো তারা ইগনোর‌্যান্স৷ জানেন না তাই বলেন৷ দ্বিতীয়ত প্রতিবেশি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের অনেক সমস্যা সমাধানে সরকারের বড় সাফল্য অনেকের সহ্য হয় না৷ সারা বিশ্ব বলছে প্রতিবেশির সঙ্গে সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ এখন রোল মডেল৷ আমরা তিন বিঘা ফিরে পেয়েছি৷ আমরা ছিটমহল সমস্যার সমাধান করেছি, সীমান্ত সমস্যার সমাধান হয়েছে৷ সব ইন্টারন্যাশনাল ফোরামে ভারতের সাপোর্ট আমাদের জন্য আছে৷ আমরা ক্ষমতায় আসার আগে বাংলাদেশের মাটিতে আমরা টেররিস্টদের প্রশিক্ষণের সুযোগ দিতাম ভারতকে হ্যারাস করার জন্য৷ এটা বন্ধ করে আমরা কি লস করেছি না গেইন করেছি? আমরা যদি সেটা করতে দিতাম তাহলে ওখান থেকে আমাদের ভূমিতে এসে হামলা করে দিতে পারত৷

বাংলাদেশ কি তিস্তার পানি পাবে? আপনার আশা কী?
আমরা ২০১১ সালেই চিস্তা চুক্তি ফাইনাল করে ফেলি৷ কিন্তু মনমোহন সিং ঢাকায় এসে বললেন মমতার বিরোধিতার কারণে তিনি করতে পারছেন না৷ তখন আমাদের কিছু করার রইল না৷ এটা ভারতের কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যে বিরোধ৷ আমরা মমতাকেও বোঝানোর চেষ্টা করলাম৷ কিন্তু এটা তিনি কেন্দ্রের সঙ্গে বুঝবেন বলে জানালেন৷ কিন্তু পানিতো বন্ধ হয়নি৷ এটাকে চুক্তির মাধ্যমে নিশ্চিত করা এখন কাজ৷ ডাটা কালেকশন করতে হবে, কত পানি আছে৷ দুই পাশ থেকেই ডাটা কালেকশন করতে হবে৷ স্বীকার করি আমরা এখনো চুক্তি করতে পারিনি৷ তবে আমরা তাদের সঙ্গে দেখা হলেই ক্ষোভ প্রকাশ করি৷ আর মোদী সাহেব গত তিন বছরের বার বার বলেছেন তার মেয়াদের মধ্যে যেভাবেই হোক না কেন কিন্তু তিস্তার পানির একটা সমাধান করবেন৷

নাগরিকপঞ্জি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার মত কিছু আপনি দেখছেন কি না? 
আমাদের প্রধানমন্ত্রী মোদী সাহেবের সঙ্গে এটা নিয়ে নিউইয়র্কে কথা কথা বলেছেন৷ এরপর এই ভারত সফরেও এজেন্ডায় রেখে কথা বলেছেন৷ উনি আমাদের শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়েছেন, কিছুই হবে না৷ এটা মোদী সরকার করছে না৷ কোর্টের আদেশে হচ্ছে৷ এটা মাত্র শুরু হয়েছে৷ এটার পাঁচটি পর্যায় আছে৷ প্রথম পর্যায়ে যাদের নাম ছিলো আপিলে তা অর্ধেক হয়ে গেছে৷ এখনো আরো চারটি স্টেজ বাকি আছে৷ আমাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কী আছে? এরসঙ্গে তো আমাদের কোনো সম্পর্ক নাই৷ এটা ওদের ব্যাপার৷ 

আমরা একটি স্বাধীন দেশ৷ ওদের নাগরিকদের আমাদের এখানে ধাক্কা দিয়ে ঢুকিয়ে দেবে এটা কোনোভাবে সম্ভব নয়৷ আর ওরা সরকারি পর্যায়ে এটা নিয়ে কখনো কিছু বলেওনি৷ তবে আমাদের নাগরিক ওদের ওখানে সত্যিই যদি থেকে থাকে, তাহলে সে পাঁচ জন হোক আর ১০ জন হোক তাহলে আমাদের নাগরিকদের নেব না কেন? আমার মনে হয় এটা নিয়ে একটা অহেতুক বিতর্ক হচ্ছে৷

সীমান্ত হত্যাতো কমছে না৷  এটাতো শূন্যে নামিয়ে আনার কথা ছিলো-

আগে সীমন্ত হত্যা ডাবল ডিজিট, কখনো ট্রিপল ডিজিট ছিলো৷ সেটা এখন কমে সিঙ্গল ডিজিটে নেমে এসেছে৷ তবে এটাও বেশি৷ এটাইবা কেন হবে? আমরা চাই এটা শূন্যে নেমে আসুক৷ তবে এটাকে একটু তলিয়ে দেখতে হবে৷ যারা মারা যাচ্ছে তারা কি ড্রাগ স্মাগলার, আর্মস স্মাগলার, টেররিস্ট? যারা সাধারণ মানুষ তারা কি রাতে কাটাতারের বেড়া টপকিয়ে ভারতে যায়? তারাতো রেগুলার চ্যানেলে যায়৷ কথাটা পরিস্কার করতে পেরেছি? তবে সীমান্ত হত্যা শূন্যে আনতে হবে৷ তা না হলে আমরা মনব না৷

ভারতের সঙ্গেতো বাংলাদেশের অসম বাণিজ্য৷ বাণিজ্য ঘাটতি কমছে না কেন?

ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি আমাদের আছে৷ কিন্তু বাণিজ্য ঘাটতি কেন হয়? ভারততো জোর করে তাদের পণ্য কেনাচ্ছে না৷ চায়নার সাথেওতো আমাদের অনেক বাণিজ্য ঘাটতি৷ সেটা নিয়েতো কথা হয়না৷ আমরা দ্রুত শিল্পে উন্নয়ন করছি৷ ভারত থেকে আমাদের অনেক মেশিনপত্র, যন্ত্রপাতি কিনতে হয়৷ আমাদের বিজনেসম্যানরা কেন ভারত থেকে কেনেন? কেন চায়না থেকে কেনেন? কারণ ভারত ও চায়নায় কম দামে ভালো জিনিস পাওয়া যায়৷ আমরা যদি এগুলো নিজেরাই তৈরি করতে পারি বা অন্যকোনো দেশে সস্তায় পাই তাহলে কি ভারতে যাবো? কখনোই যাবোনা৷ কিন্তু তারপরও ভারতে আমাদের রপ্তানি বাড়ছে৷ আর এটা আরো বাড়াতে ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে আনছি৷ ওরা এখানে উৎপাদন করে ডিউটি ফ্রি সুবিধা নিয়ে আবার ভারতেই রপ্তানি করবে৷

রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ কি ভারতের সমর্থন পাচ্ছে?
একটা দেশের সম্পর্কতো শুধু একটা দেশের সঙ্গেই থাকে না৷ মিয়ানমারও ভারতের প্রতিবেশি৷ তাদের সাথে চায়নার প্রতিযোগিতা আছে৷ তারপরও রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারতের প্রচুর সাপোর্ট পাচ্ছি৷ ওরা ভিতর থেকে মিয়ানমারকে অনেক চাপ দিচ্ছে৷ প্রকাশ্যে হয়তো ততটা বলছে না৷ চায়নার সঙ্গেও আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি৷ আমি সত্যি বলছি, বলার জন্য বলছি না৷ আমরা এটাকে( রোহিঙ্গা সমস্যা) সমাধান করতে পারব৷ 

প্রিয় পাঠক, আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ