বুধবার ভোরে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এইচ ব্লকে অভিযান চালিয়ে১০ জনকে আটক করা হয়েছে; এ সময় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য জানান এপিবিএন-১৬ এর অধিনায়ক পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম৷ পুলিশ সুপার বলেন, সশস্ত্র লোকজন ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন খবরে অভিযান চালানো হয়৷ পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ১০ থেকে ১৫ জন পালানোর চেষ্টা করে৷ এ সময় ধাওয়া দিয়ে ১০ জনকে আটক করা হয়৷ তাদের কাছ থেকে একটি দেশি বন্ধুক উদ্ধার করা হয়েছে৷
আটকরা হলেন- ক্যাম্পের বাসিন্দা ফজল হকের ছেলে আকতার হোসেন (২০), জাহিদ হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ হাসান (১৮), আব্দুল হামিদের ছেলে মোহাম্মদ নূর (২০), আব্দুস সালামের ছেলে সাইফুর রহমান (১৮), মৃত আবু জাফরের ছেলে নুরুল আমীন (২৪), মিয়া হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ শাহীন (১৯), মো. শমসের আলমের ছেলে মোহাম্মদ ইলিয়াছ (৩০), নুরুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ রফিক (১৮), কামাল হোসেনের ছেলে খাইরুল আমীন (১৯) ও মৃত শহর আলীর ছেলে মোহাম্মদ ইলিয়াছ (২২) ৷
আটকদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে ডাকাতি, অপহরণ ও হত্যাসহ নানা অভিযোগে টেকনাফ থানায় একাধিক মামলা আছে৷ তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ৷
রোববার বিকেলে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের শফিউল্লাহ কাটা এলাকার ১৬নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুনের ঘটনায় শতাধিক রোহিঙ্গা বসতি পুড়ে যায়৷ তবে হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি৷
ছবি: Abdur Rahman
বছরের শুরুতে আগুন
২০২২ সালের দ্বিতীয় দিন ২ জানুয়ারি উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা পরিচালিত করোনা হাসপাতালে আগুন লাগে৷ এতে কেউ হতাহত না হলেও হাসপাতালের আইসোলেশন সেন্টারের ১৬টি কেবিন পুড়ে যায়৷
ছবি: MOHAMMAD PONIR HOSSAIN/REUTERS
পরিসংখ্যান
ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলোতে ৬৫টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে৷ ২০২০ সালে ঘটেছিল ৮২টি৷ যদিও রোহিঙ্গাদের হিসেবে এই সংখ্যা আরো বেশি৷ টেকনাফের চেয়ে বেশি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে উখিয়ার শরণার্থী শিবিরে৷
ছবি: Str/REUTERS
সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড
গত বছরের ২২ মার্চ উখিয়ার বালুখালীর একটি শিবিরে আগুন লেগে শিশুসহ ১১ জনের মৃত্যু হয়েছিল৷ আশ্রয় হারিয়েছিলেন প্রায় ৪৫ হাজার শরণার্থী৷ যদিও সেই সময় জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর নিহতের সংখ্যা ১৫ জন বলে উল্লেখ করেছিল৷
ছবি: Shafiqur Rahman/AP Photo/picture alliance
সম্ভাব্য কারণ
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের টেকনাফ স্টেশনের কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হক জানান, রোহিঙ্গা শিবিরগুলো ঘনবসতিপূর্ণ৷ সেখানে ঝুপড়ি ঘর আছে৷ দুর্গম পাহাড়ে অবস্থানের কারণে আগুন লাগলে দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয় না৷ বেশিরভাগ ক্যাম্পে রাস্তার কারণে ভেতরে প্রবেশ করা কঠিন হয়ে পড়ে৷ রোহিঙ্গা শিবিরের অস্থায়ী আশ্রয়গুলির বেশিরভাগ বাঁশ, ত্রিপলের মতো দাহ্য পদার্থ দিয়ে তৈরি৷ ফলে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে যায়৷
ছবি: AFP
টেকনাফে আগুন
২০২১ সালের জানুয়ারিতে টেকনাফে নথিভুক্ত শরণার্থী শিবিরে একাধিক ক্ষয়ক্ষতি হয়৷ পুড়ে যায় প্রায় ৪৫০টি ঘর৷ জানুয়ারি মাসে উখিয়ার ১৬ নম্বর শিবিরে আগুন লেগেছিল৷ ১৪ জানুয়ারি আরও একটি অগ্নিকাণ্ডে কয়েকশ ঘর পুড়ে গিয়েছিল৷
ছবি: Mohammad Ponir Hossain/REUTERS
আগুন বালুখালিতে
২০২১ সালের ১৩ এপ্রিল বালুখালী রোহিঙ্গা শিবিরে আগুন লাগে৷ ১৭ এপ্রিল আরও ১টি শিবিরে আগুনের ঘটনায় তিনটি দোকান পুড়ে যায়৷ সেই বছরের ২০ জুলাই বালুখালী রোহিঙ্গা শিবিরের ৯ নম্বর ক্যাম্পে আগুন লাগে৷
ছবি: MOHAMMAD PONIR HOSSAIN/REUTERS
কুতুপালংয়ে আগুন
২০২০ সালের মে মাসে কুতুপালংয়ের লাম্বাশেয়া শিবিরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে৷ ২০১৯ সালের এপ্রিলে কুতুপালংয়ের শিবিরে আগুন লেগে ২৪টি বাড়ি পুড়ে যায়৷ ক্ষতিগ্রস্ত হয় মসজিদও৷
ছবি: Shafiqur Rahman/AP Photo/picture alliance
ভারতে রোহিঙ্গা শিবিরেও আগুন
ভারতের দিল্লির মদনপুর খাদার এলাকার রোহিঙ্গা শিবিরে ২০১৮ এবং ২০২১ সালে আগুন লেগেছিল৷ হরিয়ানার নুহ এলাকার রোহিঙ্গা শিবিরেও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে৷