1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: প্রধান উপদেষ্টার আশা কি শুধুই আশ্বাস?

১৫ মার্চ ২০২৫

ঝুলে থাকা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া আবার শুরু হবে বলে আশা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার৷ রাখাইনে মানবিক সহায়তা পাঠাতে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে একটি চ্যানেল তৈরির আলোচনা হচ্ছে, যা প্রক্রিয়াটিকে সহায়তা করতে পারে৷

রোহিঙ্গা শিশুদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন জাতিসংঘ মহাসচিব ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস৷
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী রোজার কথা বললেও বাস্তবে আগামী ১০ বছরেও রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো সম্ভব কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রাখছেন কেউ কেউ৷ছবি: CA Press Wing Bangladesh

প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘এই ঈদে না হোক, আগামী রোজার ঈদ যেন আপনারা নিজ মাতৃভূমিতে স্বজনদের সঙ্গে উদযাপন করতে পারেন, সে লক্ষ্যে আমরা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি৷''

শুক্রবার বাংলাদেশ সফররত জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে নিয়ে কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি৷

প্রধান উপদেষ্টার এই বক্তব্যের পর নতুন করে আলোচনায় এসেছে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার বিষয়টি৷ তবে কি নতুন কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে? প্রধান উপদেষ্টা হঠাৎ করে নির্দিষ্ট দিনক্ষণ ধরেই কেন এমন বক্তব্য দিলেন?--এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সংশ্লিষ্টদের মনে৷

বিষয়টি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলী সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে ডয়চে ভেলে৷ লিখিত বক্তব্যে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘জাতিসংঘ থেকে আবারও যে প্রতিশ্রুতি এসেছে এবং মিয়ানমারের বর্তমান উদ্ভুত পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা সংকটের একটি টেকসই সমাধানের সুযোগ এসেছে বলে প্রতীয়মান হয়৷ এই প্রেক্ষিতে আমাদের সকলকে একসঙ্গে কাজ করার জন্য প্রধান উপদেষ্টা উৎসাহমূলক সময়ের কথা উল্লেখ করেছেন৷''

'আগামী ১০ বছরেও সেটা সম্ভব কিনা তা নিয়ে আমার প্রশ্ন আছে'

This browser does not support the audio element.

তবে কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী বিষয়টিকে এতটা সরলভাবে দেখতে চান না৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘এগুলো জনপ্রিয় বক্তব্য৷ এমন বক্তব্য দেয়া সহজ৷ কিন্তু বাস্তবতা হলো রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে এখন কোনো উদ্যোগই নেই৷ প্রধান উপদেষ্টা তো আগামী রোজার কথা বলেছেন, বাস্তবে আগামী ১০ বছরেও সেটা সম্ভব কিনা তা নিয়ে আমার কাছে প্রশ্ন আছে৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘ধরেন কাল থেকেই প্রত্যাবাসন শুরু হলো, প্রতি মাসে ১০ হাজার জন যাবেন৷ ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে পাঠাতে কত বছর লাগবে? আর আরাকানে রোহিঙ্গাদের যে বসতবাড়ি ছিল সেগুলো তো গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে৷ বানানো হচ্ছে ইকনোমিক জোন৷ এই প্রত্যাবাসের সঙ্গে জিও পলিটিক্স জড়িত৷ চীন ও মিয়ানমারকে রাজি করাতে হবে৷ পাশাপাশি আরাকান এখন বিদ্রোহীদের দখলে৷ ফলে তাদেরও সম্মতি প্রয়োজন৷ ফলে আমার মনে হয়েছে প্রধান উপদেষ্টা পপুলিস্ট বক্তব্য দিয়েছেন৷'' 

বাংলাদেশে সফরে আসার পরদিন শুক্রবার কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে দেখা করতে যান জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস৷ তার সঙ্গে ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস৷ তারা অংশ নিয়েছেন এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে সলিডারিটি ইফতারে৷ কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালি ক্যাম্প ঘুরে রোহিঙ্গাদের খোঁজ খবর নিয়েছেন আন্তোনিও গুতেরেস৷

জাতিসংঘ মহাসচিব সেখানে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘রোহিঙ্গাদের বিষয়ে একমাত্র সমাধান তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন৷'' তবে এই মুহূর্তে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতময় পরিস্থিতিতে প্রত্যাবাসন কতটা সম্ভব, সেটি নিয়েও উদ্বেগ জানান তিনি৷

আট বছর আগে মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে কোনোরকমে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন রোহিঙ্গারা৷ আট বছরে বহুবার তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করেছে বাংলাদেশ৷ কিন্তু সম্ভব হয়নি৷

জাতিসংঘ মহাসচিব এবং প্রধান উপদেষ্টার ইফতারে অংশ নেওয়া রোহিঙ্গারা তাদের ওপর গণহত্যা বন্ধ করা ও তাদেরকে নিজ দেশে ফেরানোর দাবি জানান৷ পরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন৷ সেখানে তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গাদের কীভাবে দ্রুত তাদের দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা যায়, সে ব্যাপারে গুরুত্ব দিচ্ছে বর্তমান সরকার৷

উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা আবু মুসা ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘প্রত্যাবাসন নিয়ে আমরা হতাশ হয়ে পড়েছিলাম৷ কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের পর আমাদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে৷ আমরা আশা করছি, উনি যখন একটা ডেটলাইন দিয়েছেন, ফলে এই সময়ে মধ্যে একটা পরিস্থিতি তৈরি হবে৷''

আগামী সেপ্টেম্বরে রোহিঙ্গাদের নিয়ে একটা আন্তর্জাতিক সম্মেলন হওয়ার কথাও জানানলেন তিনি৷ বলেন, ‘‘সেখানেও বিশ্ব নেতৃবৃন্দ প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে মিয়ানমারকে চাপ দেবে বলে আশা করছি৷''

জাতিসংঘ মহাসচিব রোহিঙ্গা লার্নিং সেন্টার ও রোহিঙ্গা কালচারাল সেন্টার পরিদর্শন করেন৷ সেখানে রোহিঙ্গাদের সংস্কৃতি ও জীবন যাপন সম্পর্কে ধারণা নেন৷ পাশাপাশি কিছু রোহিঙ্গা তরুণের সঙ্গে কথাও বলেন৷ সেখানে মনোযোগ দিয়ে শুনেন শরনার্থী শিবিরের নারী ও শিশুদের কথাও৷ গুতেরেস আশ্রয় শিবিরের কয়েকটি রোহিঙ্গা পরিবারের কাছে গিয়ে তাদের খোঁজখবর নেন৷তাদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন৷ এসব জায়গায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের যারা জাতিসংঘ মহাসচিবকে পেয়েছিলেন তারা অনেকেই তাদের দুঃখ দুর্দশার কথা তুলে ধরেন৷

রোহিঙ্গাদের মধ্যে কনফিডেন্স তৈরি হয়েছে: মিজানুর রহমান

This browser does not support the audio element.

প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া নিয়ে জানতে চাইলে রোহিঙ্গা শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বলার মতো কিছু নেই৷ আমরা যেটি মনে করি, প্রধান উপদেষ্টা যেটা বলেছেন, সেটি হচ্ছে গতকালের ইফতারের মাধ্যমে রোহিঙ্গারা কনফিডেন্স ফিরে পেয়েছে৷ তাদের নিজ বাসভবনে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে কনফিডেন্স তৈরি হয়েছে৷ এটাই হয়ত উনি মিন করেছেন৷ ফেরত যাওয়ার প্রক্রিয়ার বিষয়টি সবাই জানতে পারবেন৷ আমার মনে হয়, রোহিঙ্গাদের কনফিডেন্সটা খুবই জরুরি৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘জাতিসংঘের মহাসচিবের সফরের মাধ্যমে তাদের উপর যারা নির্যাতন চালিয়েছে বা চালাচ্ছে তাদের কাছে বার্তা পৌঁছে গেছে যে, বিশ্ব সম্প্রদায় তাদের পাশে আছে৷ প্রফেসর ইউনূসের বক্তব্যের মাধ্যমে তাদের কাছে এই বার্তা পৌঁছেছে যে, বাংলাদেশও তাদের পাশে আছে৷ রোহিঙ্গারা এতদিন যে শঙ্কার মধ্যে ছিলেন তাদের সেটা কেটে যাবে৷ তারাই এখন সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন৷ এক বছরের মধ্যে রোহিঙ্গারা ফেরত যাবেন এমনটিই বুঝিয়েছেন তিনি৷''

এপ্রিল থেকে কমছে খাদ্য সহায়তা

রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘ প্রধান যখন বাংলাদেশ সফরে এসেছেন, তখন আগামী মাস অর্থাৎ এপ্রিল থেকে রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা অর্ধেকেরও বেশি কমানোর ঘোষণাএসেছে৷ যে কারণে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দাদের মধ্যে রয়েছে অসন্তোষ৷ সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট সহায়তা বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণার কারণে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা বাজেট কমে গেছে, যা এপ্রিল থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে৷

রাখাইনে মানবিক সহায়তা পাঠাতে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে একটি চ্যানেল তৈরির আলোচনা হচ্ছে, যা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে সহায়তা করতে পারে বলে মনে করে জাতিসংঘ৷ ছবি: CA Press Wing Bangladesh

জাতিসংঘ মহাসচিব জনাব গুতেরেস রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন৷ এসময় তিনি বলেন, ‘‘খাদ্য সহায়তা কমালে লোকজন আরো বেশি ভোগান্তিতে পড়বে এবং অনেকে মারাও যাবেন৷ আমরা সেটা কোনোভাবেই হতে দিতে পারি না যে, বিশ্ববাসী রোহিঙ্গাদের ভুলে যাবে৷ তাই আমি জোরালো ভাবে এই বিষয়টি বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরবো যে, এখানে জরুরি ভিত্তিতে সহায়তা দরকার৷''

‘ছয় ডলার আসলে আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে’

This browser does not support the audio element.

উখিয়ার ১ নম্বর ক্যাম্পের বাসিন্দা আবু মো. তৈয়ব ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এমনিতেই আমাদের যে সাড়ে ১২ ডলার দেওয়া হয় সেটাই অনেক কম৷ এখন ৬ ডলার আসলে আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে৷ এতে করে অনেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করবেন৷ ফলে তাদের অনেকেই পাচারের শিকার হতে পারেন৷ পাশাপাশি অনেকে অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়তে পারেন৷ এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের সংঘাত বেড়ে যেতে পারে৷ বিশ্ব সম্প্রদায় নিশ্চয় রোহিঙ্গাদের এমন বিপদে ফেলবে না৷''

রোহিঙ্গা শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এখন যে সাড়ে ১২ ডলার দেওয়া হয় সেটাই তো অনেক কম৷ আর এটা ৬ ডলার হলে পরিস্থিতি খুবই খারাপ হবে৷ পেটে খাবার না থাকলে অনেকেই ক্যাম্প থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করবেন৷ এতে ওই এলাকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে৷ এমনিতেই ওই এলাকায় মাদক ও অস্ত্রের অবৈধ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হচ্ছে৷ সেটা আরো কঠিন হয়ে পড়বে৷ বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন৷''

উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি গফুর উদ্দিন চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘যত দিন যাচ্ছে আমরা স্থানীয়রা অসহায় হয়ে পড়ছি৷ আর খাদ্য সহায়তা কমলে ওরা বাইরে আসবে আর আমাদের সঙ্গে ওদের প্রতিদিন সংঘাত হবে৷ ওরা মাদক আর অস্ত্র নিয়ে ব্যবসা শুরু করবে, যা এলাকাকে আরও বেশি অশান্ত করে তুলবে৷ ফলে দিন দিন আমাদের এলাকায় টিকে থাকা আরো কঠিন হয়ে যাচ্ছে৷''

বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে মানবিক করিডোর

ঢাকায় শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আসেন গুতেরেস৷

রোহিঙ্গা ইস্যুতে করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘যেটা এখন খুবই প্রয়োজন তা হচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং মিয়ানমারের সব প্রতিবেশীকে কাজে লাগিয়ে সেখানে সহিংসতা বন্ধে চাপ সৃষ্টি করা৷ একইসঙ্গে সংলাপের একটি কর্মপন্থা তৈরি করা, যা মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক সমাধান আনবে৷ আর এটা স্বাভাবিকভাবেই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়াকে সহায়তা করবে৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘একইসঙ্গে মিয়ানমারের ভেতরে মানবিক সহায়তা পাঠানোর প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে হবে যাতে তাদের প্রত্যাবাসন সফল করা যায়৷ এবং একারণে আমাদের আলোচনাগুলো মধ্যে একটি ছিল যদি পরিস্থিতি সুযোগ দেয় তাহলে মানবিক সহায়তা বাংলাদেশ থেকে পাঠানোর চ্যানেল তৈরি করা৷ তবে এটা একটা বিষয়, যা করতে সম্পৃক্তদের অনুমোদন এবং সহায়তা লাগবে৷''

জাতিসংঘ মহাসচিব আরো বলেন, ‘‘এ বছর আমি রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং তাদের গ্রহণকারী বাংলাদেশিদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করতে বাংলাদেশে আসার সিদ্ধান্ত নিই৷''

এছাড়াও জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, সংস্কার ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার গুরুত্বপূর্ণ পর্বে রয়েছে বাংলাদেশ৷ এই সন্ধিক্ষণে শান্তি, সংলাপ ও ঐকমত্যে সহায়তা দিতে জাতিসংঘ তৈরি আছে বলেও জানান তিনি৷

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও রাজনীতিবিদদের সঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিবের বৈঠক

এর আগে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে গোলটেবিল আলোচনা করছেন বাংলাদেশ সফররত জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস৷ শনিবার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে এই আলোচনা হয়৷

বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মিয়া গোলাম পরওয়ার ও নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ তাহের, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদসহ আরও অনেকেই অংশ নিয়েছেন বলে জানা গেছে৷

বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘মূলত সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে জানতে চেয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব৷ আমরা কয়েকটি পয়েন্ট লিখিত আকারে তাকে দিয়েছি৷ বিএনপি মহাসচিব সেখানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দিয়েছেন৷ তিনি দ্রুত নির্বাচনের উপর গুরুত্ব দিয়েছেন৷''

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে কেন এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে সেটা ‘বুঝতে পারেননি' বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর৷ বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আসলে এই গোলটেবিলটা...আমি ঠিক বুঝিনি আর কী!''

ওই বৈঠকে আরও ছিলেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান আলী রীয়াজ, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার বিষয়ক কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী৷

জাতিসংঘের রেশন ছাঁটে শঙ্কায় বাংলাদেশের রোহিঙ্গারা

02:30

This browser does not support the video element.

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ