ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে)-তে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে গাম্বিয়া৷ ২০১৯ সালে এর শুনানিতে অংশ নিয়েছিলেন অং সান সু চি৷ তবে সোমবার থাকছেন না তিনি৷ তার বদলে থাকবেন বর্তমান আন্তর্জাতিক সহায়তা মন্ত্রী৷
বিজ্ঞাপন
মামলায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা মুসলমানদের গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে৷ ৫৭ জাতির জোট ‘অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কো-অপারেশন' ওআইসি মামলাটি করতে গাম্বিয়াকে সহায়তা করেছিল৷
নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরের পিস প্যালেসে ২০১৯ সালের ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর মামলার প্রথম শুনানি হয়েছিল৷ এতে গাম্বিয়ার নেতৃত্বে ছিলেন সে দেশের বিচারমন্ত্রী আবু বকর মারি তামবাদু আর মিয়ানমারের নেতৃত্বে ছিলেন অং সান সুচি৷ শুনানিতে অংশ নিয়ে সামরিক কর্মকর্তাদের পক্ষ নিয়ে সমালোচিত হয়েছিলেন তিনি৷ সেই কর্মকর্তারাই গতবছর অভ্যুত্থানের পর সু চিকে গৃহবন্দি করেন৷
এদিকে, সোমবার মামলার আরেক শুনানিতে অংশ নিচ্ছে মিয়ানমার৷ এবার তারা বলার চেষ্টা করবে যে, এই মামলা পরিচালনার এখতিয়ার আইসিজের নেই৷ মিয়ানমারের পক্ষে এবার অংশ নেবেন আন্তর্জাতিক সহায়তা মন্ত্রী কো কো লায়িং ও অ্যাটর্নি জেনারেল থিদা৷ তারা শুনানিতে ভার্চুয়ালি অংশ নেবেন৷ অভ্যুত্থানের পর এই দুজনের উপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র৷
বুধবার গাম্বিয়া পালটা যুক্তি দেয়ার সুযোগ পাবে৷
২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে করা মামলায় গাম্বিয়াকে সহায়তা করার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছিল ক্যানাডা ও নেদারল্যান্ডস৷ সেই সময় এক যৌথ বিবৃতিতে ক্যানাডা ও নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা জানিয়েছিলেন, দুই দেশ এখন ‘গণহত্যা সংক্রান্ত অপরাধ থামাতে এবং দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে' জেনোসাইড কনভেনশন পর্যালোচনা করছে৷
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বিবাদ মেটাতে আইসিজে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল৷ এই আদালতের রায় মানা বাধ্যতামূলক, তবে এটা কার্যকর করার মতো বাস্তব ব্যবস্থা আদালতের নেই৷
জেডএইচ/এসিবি (এএফপি)
হেগ শহরে মিয়ানমারের পক্ষে-বিপক্ষে প্রতিবাদ
নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে যখন মিয়ানমারের বিপক্ষে গণহত্যা মামলার শুনানি চলছিল তখন পিস হাউসের বাইরে জড়ো হন প্রতিবাদকারীরাও৷ মিয়ানমারের সমর্থকরাও এসেছিলেন সেখানে৷ সেসব চিত্র দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: DW/A. Islam
‘ঐক্যবদ্ধ থাকুন’
মিয়ানমারের জনগণ এই বিচারকে দেখছে দেশটির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র হিসেবে৷ আদালতের বাইরে দেশটির সমর্থকরা তাই জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান৷ এক নারী তেমনই এক স্লোগান সম্বলিত স্টিকার লাগিয়েছেন তার গালে৷
ছবি: DW/A. Islam
সুচিকে সমর্থন
আদালতের বাইরে মানববন্ধন করেছেন মিয়ানমারের সমর্থকরা৷ সুচির ছবিসহ বিশাল ব্যানার হাতে প্রতিবাদ জানাতে দেখা যায় তাদের৷ যেখানে লেখা ছিল, ‘আমরা স্টেইট কাউন্সিলরকে সমর্থন করি’৷
ছবি: DW/A. Islam
‘সুচির সাথে আছি’
মিয়ানমারের সমর্থকরা দেশটির নেত্রী অং সান সুচির পোস্টার নিয়ে হাজির হয়েছেন৷ সেখানে লেখা, ‘আমরা তোমার সাথে আছি’৷
ছবি: DW/A. Islam
সুচি সমর্থকদের জন্য খাবার
সুচির সমর্থকদের মধ্যে খাবার বিতরণ করতে দেখা যায় কয়েকজনকে৷ সেখানে বসবাসরত একজন বার্মিজ এই খাবার সরবরাহ করেছেন বলে জানিয়েছেন তারা৷
ছবি: DW/A. Islam
গণহত্যা নয়?
রাখাইনে সহিংসতার কথা স্বীকার করলেও একে কোনোভাবেই গণহত্যা বলা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন সুচি৷ আদালতের বাইরে অবস্থান নেয়া মিয়ানমারের সমর্থকরাও তেমনটাই মনে করে৷
ছবি: DW/A. Islam
প্রতিবাদে রোহিঙ্গারা
ট্রাকে বিশাল এক ব্যানার৷ তার বেশিরভাগটা জুড়ে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী প্রধানের ছবি৷ এক পাশে লেখা, ‘রোহিঙ্গাদের গণহত্যার জন্য সন্ধান চাই’৷ ব্যানারের নীচে রয়েছে সেনাবাহিনীর অন্য উচ্চপদস্থদের নাম৷ এভাবেই প্রতিবাদ জানিয়েছে ইউরোপীয় বসবাসরত রোহিঙ্গাদের সংগঠন দ্য ইউরোপিয়ান রোহিঙ্গা কাউন্সিল৷
ছবি: DW/A. Islam
‘স্টপ জেনোসাইড’
মিয়ানমারের গণহত্যা থামানোর আহবান নিয়ে হাজির হয়েছেন ইউরোপে বসবাসরত এই রোহিঙ্গারা৷ আদালত ভবনের বাইরে তাদের স্লোগান দিতেও দেখা যায় ৷
ছবি: DW/A. Islam
৭০ বছরের সামরিক আগ্রাসন
এরা এসেছেন আরাকার রোহিঙ্গা ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন নামের একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে৷ ‘যুদ্ধাপরাধীদের’ পক্ষে না দাড়াতে সুচির প্রতি আহবান জানিয়েছেন তারা৷ মামলা করার জন্য ধন্যবাদ জানান গাম্বিয়ার প্রতিও৷ দেশটির ৭০ বছরের সামরিক আগ্রাসন বন্ধেরও দাবি তুলে ধরেছেন একজন৷
ছবি: DW/A. Islam
প্রতিবাদে অন্যরাও
মিয়ানমারে শুধু রোহিঙ্গা নয় নির্যাতিত হচ্ছে অন্য সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলোও৷ তেমনই একটি কারেন৷ এই সম্প্রদায়ের মানুষেরাও দ্য হেগের আদালতের সামনে এসেছেন কারেনদের জন্য বিচার চাইতে৷
ছবি: DW/A. Islam
বিচারের বিকল্প নেই
বাবা মায়ের সাথে এই দুই শিশুও এসেছে রোহিঙ্গাদের উপর চালানো নির্যাতনের ন্যয়বিচার চাইতে৷ তাদের একজনের পোস্টারে লেখা ‘বিচার অনিবার্য, এর বিকল্প নেই৷’ আরেক শিশুর হাতে ছিল মিয়ানমারের সেনাপ্রধানের ছবি৷ যাতে লেখা, ‘ওয়ান্টেড’৷
ছবি: DW/A. Islam
ছুটে এসেছেন বাংলাদেশিরা
ইউরোপের অনেক প্রবাসী বাংলাদেশিরাও হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের সামনে জড়ো হয়েছেন মিয়ানমারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে৷ তাদের সঙ্গে ছিল বাংলাদেশের পতাকা৷
ছবি: DW/A. Islam
শান্তি চাই
এই তরুণীরা এসেছেন বিচার, জবাবদিহি, সাম্য আর শান্তির দাবি নিয়ে৷ তারা প্রদর্শন করেছেন আরাকান আর্মির পতাকা৷
ছবি: DW/A. Islam
নিরাপত্তা
শুনানিটি যেই ভবনে চলছে তার নাম পিস হাউস৷ মূল ফটকের বাইরে নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিল পুলিশ বাহিনী৷