শীতকাল পর্যটনের মরশুম৷ কিন্তু এ বছর সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর অবধি ইয়াঙ্গন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পশ্চিমি দেশগুলি থেকে আগত অতিথিদের সংখ্যা প্রায় দশ শতাংশ কম৷ জানিয়েছে মিয়ানমার পর্যটন ফেডারেশন৷ এর কারণ কি রোহিঙ্গা সংকট?
বিজ্ঞাপন
২০১৭ সালের ২৫শে আগস্ট তারিখে উত্তরের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিম জঙ্গিরা ৩০টি পুলিশ ফাঁড়ি আক্রমণ করে অন্তত ১২ জন সরকারি কর্মচারিকে হত্যা করে৷ প্রত্যুত্তরে সরকারের তরফ থেকে যে নির্মম সামরিক অভিযান চালানো হয়, তার ফলশ্রুতি হিসেবে ৬ লাখ ৫৫ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে পলায়ন করেন৷
পলাতক রোহিঙ্গারা শোনান সরকারি সেনাবাহিনী ও রাখাইনের বুদ্ধ ধর্মাবলম্বী স্থানীয় বাসিন্দাদের দ্বারা ধর্ষণ, হত্যা ও অগ্নিসংযোগের কাহিনি৷ মিয়ানমারের বাস্তবিক নেত্রী ও শান্তি নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অং সান সু চি এই সব নিপীড়ন রোধ তো দূরের কথা, তার নিন্দা পর্যন্ত করতে ব্যর্থ হয়েছেন – অপরদিকে জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদের বিতাড়নকে সম্ভাব্য গণহত্যা ও ‘জাতিগত সম্মার্জনার' সঙ্গে তুলনা করেছে৷
জার্মান হোটেল মালিক গেরাল্ড শ্রাইবার-এর মিয়ানমারে একাধিক হোটেল আছে, যার মধ্যে একটি রাখাইন রাজ্যের এনগাপালি সৈকতাবাসে৷ স্থানটি মূল সংঘাতের এলাকা থেকে কয়েকশ' কিলোমিটার দূরে৷ শ্রাইবার মিয়ানমারে তাঁর প্রথম হোটেলটি খোলেন ১৯৯৬ সালে৷ সব মিলিয়ে গতবছর শ্রাইবারের হোটেলগুলিতে অতিথিদের রাত্রিবাসের সংখ্যা মোট ৩০ শতাংশ কমেছে, বলে শ্রাইবার জার্মান ডিপিএ সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন৷ ‘‘আমরা খুব বেশি নতুন বুকিং-ও পাচ্ছি না৷ (হবু পর্যটকরা) মিয়ানমারের পরিস্থিতি সম্পর্কে উদ্বিগ্ন,'' বলে শ্রাইবার মন্তব্য করেন৷
অর্থনীতি, পর্যটন শিল্পের উপর ছায়া
২০১৭-১৮ সালে মিয়ানমারের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৭ শতাংশে পৌঁছাবে, বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে৷ কিন্তু দেশের অর্থনৈতিক বিকাশের উপর রাখাইন রাজ্যের ঘটনাবলীর ছায়া পড়বে – বিশেষ করে পর্যটন শিল্প এই সংকটের দ্বারা প্রভাবিত হবে, বলে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ) গত মাসে আশঙ্কা প্রকাশ করে৷
রোহিঙ্গাদের ইতিহাস
একটা সময় ছিল যখন কয়েকজন রোহিঙ্গা মিয়ানমার সংসদে সাংসদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন৷ আর এখন রোহিঙ্গাদের ভোট দেয়ারই অধিকার নেই৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
স্বাধীনতার আগে
বর্তমানে মিয়ানমার নামে পরিচিত দেশে ১২ শতক থেকে মুসলমানরা বাস করছে বলে দাবি অনেক ইতিহাসবিদ ও রোহিঙ্গা গোষ্ঠীর৷ হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদন বলছে, মিয়ানমার যখন ব্রিটিশ শাসনের অধীন (১৮২৪-১৯৪৮) ছিল তখন বর্তমানের ভারত ও বাংলাদেশ থেকে অনেকে শ্রমিক হিসেবে সেখানে গিয়েছিল৷ তবে তারা যেহেতু ব্রিটিশ আমলে এসেছে তাই স্বাধীনতার পর মিয়ানমার তাদের অবৈধ হিসেবে গণ্য করে৷ প্রতিবেদন পড়তে ‘+’ চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: Reuters/Z. Bensemra
রোহিঙ্গা সাংসদ
বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের সংসদকে জানান, বার্মায় ১৯৫১ সালের নির্বাচনে পাঁচজন ও ১৯৫৬ সালে ছ’জন রোহিঙ্গা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন৷ সব মিলিয়ে মিয়ানমার সংসদে মোট ১৭ জন রোহিঙ্গা সাংসদ ছিলেন বলে জানান তিনি৷ এর মধ্যে দুজন ছিলেন নারী৷
ছবি: Getty Images/AFP/R. Gacad
অভ্যুত্থান
১৯৬২ সালে বার্মায় সামরিক অভ্যুত্থান হয়৷ এরপর সব নাগরিকদের জাতীয় নিবন্ধন কার্ড করতে বলা হলেও রোহিঙ্গাদের দেয়া হয়েছিল বিদেশি পরিচয়পত্র৷ ফলে রোহিঙ্গাদের জন্য চাকরি ও পড়াশোনার সুযোগ সীমিত হয়ে যায়৷ ছবিটি ১৯৬২ সালের ৪ মার্চ তৎকালীন বার্মার রাজধানী রেঙ্গুন থেকে তোলা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/AFP
প্রথমবার বিতাড়ন
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার থেকে তাড়াতে ১৯৭৭ সালে নির্যাতন শুরু করা হয়৷ ফলে ১৯৭৮ সালের মে মাসের মধ্যে প্রায় দু’লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে গিয়েছিল৷ এরপর জুলাইতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়৷ জাতিসংঘও মিয়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টি করেছিল৷ ফলে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছিল মিয়ানমার৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/K. Huda
‘গোপন’ চুক্তি
বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে স্বাক্ষরিত হওয়া ঐ চুক্তির উপর ‘সিক্রেট’ অর্থাৎ ‘গোপন’ শব্দটি লেখা ছিল৷ ২০১৪ সালে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়টি চুক্তিটি প্রকাশ করে৷ এতে দেখা যায়, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে যাঁদের পরিবারের একসময় জাতীয় নিবন্ধন কার্ড ছিল তাঁদের মিয়ানমার সরকার ‘বার্মার বৈধ বাসিন্দা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে৷ চুক্তিটি পড়তে উপরে (+) চিহ্ন ক্লিক করুন৷
ছবি: http://dataspace.princeton.edu
রাষ্ট্রহীন
১৯৮২ সালে পাস হওয়া নতুন নাগরিকত্ব আইনে রোহিঙ্গাদের বস্তুত রাষ্ট্রহীন করে দেয়া হয়৷ ঐ আইনে মিয়ানমারের ১৩৫টি জাতিগত গোষ্ঠীকে স্বীকৃতি দেয়া হয়, যার মধ্যে রোহিঙ্গাদের নাম নেই৷ এই আইনের কারণে রোহিঙ্গাদের জন্য পড়াশোনা, চাকরি, ভ্রমণ, ধর্মীয় রীতিনীতি পালন, স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া ইত্যাদি সীমিত হয়ে যায়৷ এছাড়া রোহিঙ্গাদের ভোটের অধিকারও কেড়ে নেয়া হয়৷
ছবি: Reuters/C. McNaughton
দ্বিতীয় পর্যায়ের বিতাড়ন
১৯৯১ ও ১৯৯২ সালে আবার রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন শুরু করে মিয়ানমার৷ ফলে প্রায় আড়াই লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে গিয়েছিল৷ এরপর তাদের ফিরিয়ে নিতে দুই দেশ একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছিল৷ বিবৃতিতে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের ‘মিয়ানমারের বাসিন্দা’ এবং ‘মিয়ানমার সমাজের সদস্য’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছিল৷
সবশেষ ঘটনা
গত আগস্টের এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইনে অভিযান শুরু করে৷ ইতিমধ্যে এই অভিযানকে ‘জাতিগত নিধন’ বলে আখ্যায়িত করেছে জাতিসংঘ৷ নিপীড়ন থেকে বাঁচতে ছয় লক্ষ ২০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে৷ তবে তাদের ফিরিয়ে নিতে দু’দেশের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
8 ছবি1 | 8
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাস অবধি ইয়াঙ্গন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পশ্চিমি দেশগুলি থেকে আগত অতিথিদের সংখ্যা দশ শতাংশ কমে গেছে, বলে জানিয়েছে মিয়ানমার টুরিস্ট ফেডারেশন৷ এছাড়া প্রায় দুই শতাংশ টুরিস্ট বুকিং বাতিল করা হয়েছে, বলে ফেডারেশনের উপসভাপতি মে মিয়াত মন উইন জানিয়েছেন৷ মে উইন ইমেল মারফৎ ডিপিএ সংবাদ সংস্থাকে বলেন, ‘‘(পর্যটন শিল্পের) কর্মীদের মূল উদ্বেগ হলো, আগামীতে কী পরিমাণ নতুন বুকিং হবে ও কী পরিমাণ পর্যটক আসবেন৷''
বহু বছরের সামরিক শাসন থেকে ২০১১ সালে মুক্তি পাওয়া যাবৎ মিয়ানমারে টুরিস্টদের আগমন বছরে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ করে বেড়েছে, বলে অক্সফোর্ড বিজনেস গ্রুপের পরিসংখ্যানে প্রকাশ৷ ওদিকে খনিজ তেলের দাম পড়ার পরে টুরিজম বিদেশি মুদ্রা অর্জনের একটি মুখ্য পন্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ মিয়ানমারের জিডিপি-র প্রায় ৬ দশমিক ৬ শতাংশ আসে পর্যটন শিল্প থেকে; শুধুমাত্র ২০১৬ সালে এই শিল্প আট লাখ নতুন চাকুরি সৃষ্টি করে, যা কিনা সামগ্রিক কর্মসংস্থানের ২ দশমিক ৭ শতাংশ৷রোহিঙ্গা সংকটের ফলে ঠিক এই পর্যটন শিল্পই বিপন্ন হতে পারে, বলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা৷
পশ্চিমি টুরিস্টরা গেলেও, চীন আছে
বিশেষ করে উত্তর অ্যামেরিকা ও ইউরোপের বাজারগুলি এ ব্যাপারে বিশেষ স্পর্শকাতর৷ মিয়ানমারে মানবাধিকার ভঙ্গ হচ্ছে, সম্ভাব্য পর্যটকদের এই ধারণা পশ্চিমি টুর অপারেটরদের বিশেষ চিন্তায় ফেলেছে৷ ওয়াকিবহাল মহলের খবর অনুযায়ী আগামীতে পশ্চিমি টুরিস্টরা মিয়ানমারের পরিবর্তে থাইল্যান্ড, কাম্বোডিয়া, লাওস ও শ্রীলঙ্কায় যেতে শুরু করবেন – বা করেছেন৷
অতীতে পশ্চিমি তরফে মিয়ানমারের উপর শাস্তিমূলক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা আরোপ করা হলে, মিয়ানমার চীন ও এশিয়ার অপরাপর দেশের কাছে বিনিয়োগের খোঁজ করত৷ টুরিজমের ক্ষেত্রেও মিয়ানমারের পর্যটন শিল্প এখন এশীয় টুরিস্টদের সংখ্যা বাড়ানোর দিকে মন দিচ্ছে৷ ইতিমধ্যেই মিয়ানমারে আগন্তুক বিদেশিদের ৬১ শতাংশ হলেন এশীয় টুরিস্ট৷
এ মাসের সূচনায় মিয়ানমারের হোটেল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় প্রথম চীন-মিয়ানমার পর্যটন বৃদ্ধির ওয়ার্কশপের আয়োজন করে৷ ইয়াঙ্গনের ঐ ওয়ার্কশপে মিয়ানমার টুরিজম ফেডারেশনের আরেক উপসভাপতি খিং অং তুন এই অভিমত প্রকাশ করেন যে, রাখাইন সংকটের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে বহু বছর সময় লেগে যেতে পারে৷ কাজেই এখন চীন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার টুরিস্টদের টানার চেষ্টা করা হচ্ছে, বলে স্থানীয় মিডিয়ার রিপোর্টে প্রকাশ – ওয়ার্কশপে পর্যটন মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিনিধি আরো বেশি চীনা পর্যটক আকর্ষণ করার জন্য ভিসার নিয়মকানুন শিথিল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷
এসি/ডিজি (ডিপিএ, রয়টার্স)
প্রতিবেদনটি কেমন লাগলো? লিখুন আমাদের, নীচের ঘরে৷
রোহিঙ্গাদের উপর নৃশংসতার চিত্র
মিয়ানমারের রাখাইনে সামরিক বাহিনীর হামলা থেকে বাঁচতে কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে চলে গেছে৷ রয়টার্সের আলোকচিত্রীর ছবিতে সেইসব নৃশংসতার ছবি ফুটে উঠেছে৷
ছবি: Reuters/J. Silva
একবছরের শিশু
মনকে নাড়া দেয়া ব্যান্ডেজে মোড়ানো তুলতুলে ছোট্ট এই দু’টি পা শহিদের৷ বয়স মাত্র এক বছর৷ মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর হামলা থেকে বাঁচতে দাদি তাহেরা যখন পালাচ্ছিলেন, তখন তাঁর কোল থেকে পড়ে যায় ছোট্ট শহিদ৷ ছবিটি কক্সবাজারে রেডক্রসের এক হাসপাতালে ২৮ অক্টোবর তোলা৷
ছবি: Reuters/H. McKay
কালাবারো, ৫০
রাখাইনের মংদুতে তাঁদের গ্রামে আগুন ধরিয়ে দেয় সেনা সদস্যরা৷ এতে স্বামী, মেয়ে ও এক ছেলেকে হারান কালাবারো৷ তাঁর ডান পায়ে আঘাত করা হয়৷ যেখানে পড়ে গিয়েছিলেন সেখানেই কয়েক ঘণ্টা মারা যাওয়ার ভান করে ছিলেন তিনি৷
ছবি: Reuters/J. Silva
সেতারা বেগম, ১২
নয় ভাই-বোনের মধ্যে একজন সে৷ সেনারা যখন তাদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়, তখন বাকি আটজন বের হয়ে যেতে পারলেও সে আগুনের মধ্যে আটকা পড়ে গিয়েছিল৷ পরে তাকে উদ্ধার করা হয়৷ তবে পা পুড়ে যায়৷ এই অবস্থায় বাংলাদেশে পৌঁছেছে সে৷ বাংলাদেশেই তার চিকিৎসা করা হয়৷ এখন তার দুই পা থাকলেও নেই কোনো আঙুল৷
ছবি: Reuters/J. Silva
নূর কামাল, ১৭
নিজের ঘরে লুকিয়ে ছিল সে৷ সেখান থেকে সৈন্যরা তাকে খুঁজে বের করে প্রথমে রাইফেলের বাট, পরে ছুরি দিয়ে মাথায় আঘাত করে৷ ছবিতে সেটিই দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Reuters/J. Silva
আনোয়ারা বেগম, ৩৬
ঘরে আগুনের উপস্থিতি টের পেয়ে ঘুম থেকে উঠে পালাতে গিয়েছিলেন তিনি৷ তবে এর মধ্যেই পুড়ে যাওয়া ছাদ তাঁর মাথায় ভেঙে পড়ে৷ ফলে শরীরে থাকা নাইলনের কাপড় গলে হাত পুড়িয়ে দেয়৷ ‘‘আমি মনে করেছিলাম, মরে যাব৷ তবে আমার সন্তানদের জন্য বেঁচে থাকার চেষ্টা করছি,’’ রয়টার্সকে বলেন তিনি৷
ছবি: Reuters/J. Silva
মমতাজ বেগম, ৩০
সেনারা তাঁর বাড়িতে ঢুকে মূল্যবান জিনিসপত্র দিতে বলেছিল৷ তখন মমতাজ তাঁদের দারিদ্র্যের কথা জানালে সৈন্যরা বলেছিল, ‘‘যদি তোমার কোনো অর্থ না থাকে, তাহলে আমরা তোমাকে হত্যা করব৷’’ এই বলে, সৈন্যরা তাঁকে ঘরে বন্দি করে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল৷ কোনোরকমে সেখান থেকে মুক্তি পেয়ে বের হয়ে দেখেন তাঁর তিন ছেলে মৃত, আর মেয়েকে প্রহার করা হয়েছে, তার রক্ত ঝরছে৷
ছবি: Reuters/J. Silva
ইমাম হোসেন, ৪২
মাদ্রাসায় পড়িয়ে ফেরার পথে তিন ব্যক্তি ছুরি নিয়ে তাঁর উপর হামলা করেছিল৷ পরের দিনই তিনি তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তানকে গ্রামের অন্যদের সঙ্গে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেন৷ এরপর তিনিও কক্সবাজারে পৌঁছান৷
ছবি: Reuters/J. Silva
মোহাম্মদ জাবাইর, ২১
গ্রামের বাড়িতে এক বিস্ফোরণে তার শরীরের এই অবস্থা৷ ‘‘আমি কয়েক সপ্তাহ অন্ধ ছিলাম৷ কক্সবাজারের এক সরকারি হাসপাতালে ২৩ দিন চিকিৎসাধীন ছিলাম,’’ বলেছে সে৷