মিয়ানমারে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের হত্যা ও নির্যাতন, বাংলাদেশে হিন্দু ও সাঁওতালসহ সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনায় বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠেছে৷ পুরো বিশ্বের সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ৷
বিজ্ঞাপন
লাবনী মণ্ডল ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘ওপারে রোহিঙ্গা, এপারে হিন্দু, সাঁওতাল, আদিবাসী৷ এক্ষেত্রে মিয়ানমারেও নোবেল পাওয়া শান্তিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না৷ মিয়ানমারের শাসকের মতো এতো নির্মম, খুনি শাসক বর্তমান পৃথিবীতে কম আছে৷''
দীপক সুমন লিখেছেন, ‘‘রোহিঙ্গা মুসলিমদের নির্যাতন করে বাংলাদেশে পাঠাও, বাংলাদেশের হিন্দুদের নির্যাতন করে ভারতে পাঠাও, শিয়া দিয়ে সুন্নি মারো, সুন্নি দিয়ে শিয়া মারো – যেভাবেই হোক মানুষে মানুষে বিভাজন করো, মানুষকে ঐক্যভ্রষ্ট করো –এই চলছে দুনিয়া জুড়ে৷ যে ভূখণ্ডে যে জনগোষ্ঠী সংখ্যায় কম বা ক্ষমতাহীন, সেই দুর্বলদের ওপর সবলকে লেলিয়ে দিয়ে, উগ্র জাতীয়তাবাদের ঘুমপাড়ানি গান দিয়ে মানুষকে শাসন-শোষণের এই হিসাব আর কতোদিন হে পৃথিবীর ফ্যাসিস্ট শাসকেরা? তোমাদের এই উন্নয়নের ভাগাড়ে পঁচতে থাকা পৃথিবীর সব নিপীড়িত মানুষ এক হয়ে গেলে, তোমরা পালাবে কোথায়? বুঝতে পারছ নিশ্চয়ই, সেদিন বেশি দূরে নয়৷ কাজেই সময় থাকতে সৌরলোকের বাইরে কোথাও বসতি গড়ে তোলার চিন্তা করো আর সম্ভব হলে যাওয়ার সময় সঙ্গে করে পৃথিবীর নিরপেক্ষ অভিনয় করা শয়তানগুলোকে নিয়ে যেও৷''
ফেসবুক পাতায় নাট্যকর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সুদীপ চক্রবর্ত্তী লিখেছেন, ‘‘সহিংসতার সীমানা নাই, কাল নাই, জাত নাই৷ আছে শুধু হিংসা আর অর্থের প্রবল ক্ষুধা৷ বাংলাদেশ, মিয়ানমার, সিরিয়া, আফগানিস্তান, ইরাকের পথে পথে রক্ত৷ এই বর্বরতার শেষ নাই, সীমা নাই!''
ফেসবুকে অংচিং মার্মা এক সাঁওতালের আকুতি তুলে ধরেছেন৷ বেওয়া সরেন নামে ৬৫ বছর বয়সি সেই বৃদ্ধ বলছেন, ‘‘গত সাতদিনে ভাত খেয়েছি চার বার৷ পাড়া থেকে ওরা বের হতে দেয় না৷ কাজও করতে পারি না৷ বের হলেই ওরা মারবে বলেছে৷ কিন্তু কী করব? ক্ষুধার জ্বালা সইতে পারছি না আর৷ এবার মুক্তি দাও৷ শুধু পাড়া থেকে বের করে দাও৷ কথা দিচ্ছি, ভারত চলে যাব৷ এ দেশে আর ফিরব না৷''
জেসমিন চৌধুরী লিখেছেন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সবার প্রতিবাদ প্রসঙ্গে৷ লিখেছেন, ‘‘কয়দিন আগে ‘আমি মালাউন' বলে পোস্ট দিয়েছি, এখন কি ‘আমি সাঁওতাল' বলব? আমাদের প্রতিবাদকেও এখন হাস্যকর মনে হয়৷ সুপার মুনের আলো খেয়ে বেঁচে থাকে উচ্ছেদকৃত সাঁওতালরা, নিজেদের মানুষ হতে না পারার লজ্জা ঢাকতে আরো বেশি উদাসীন আমরা সেলফি কুলফি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ি৷''
লেখিকা তসলিমা নাসরিন লিখেছেন, ‘‘১৮৫৫ সালের সাঁওতাল বিদ্রোহ সম্পর্কে এক ইংরেজ আর্মি অফিসার বলেছিলেন, ‘ওটা যুদ্ধ ছিল না৷ সাঁওতালরা আসলে পরাজয় স্বীকার করতে জানতো না৷ যতক্ষণ তাদের ড্রাম বাজতো, ততক্ষণ তারা দাঁড়িয়ে থাকতো, আর গুলি খেতো৷ তাদের তীর আমাদের লোকদেরও মেরেছে, সে কারণেই আমরা ওদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছি, যতক্ষণ ওরা দাঁড়িয়ে ছিল, গুলি চালিয়েছি৷ ওদের ড্রাম বাজা বন্ধ হলে ওরা হাঁটতো, সিকি মাইল হেঁটে যাওয়ার পর আবার বাজনা শুরু হলে আবার ওরা দাঁড়িয়ে যেত৷ তখন আমরাও নিশ্চিন্তে ওদের বুকে গুলি চালাতাম৷ আমাদের এমন কোনো সৈন্য নেই, যে কিনা এই যুদ্ধে অপরাধবোধে ভোগেনি'৷''
ভূমিপুত্রদের আত্মত্যাগ, ঘরহারা শত পরিবার
৬ নভেম্বর গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে চিনিকলের বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ও সাঁওতালদের সংঘর্ষ থামাতে গুলি চালায় পুলিশ৷ এতে তিন সাঁওতাল নিহত হন, আহত হন অনেকে৷ সেখানে গিয়ে ছবি তুলে এনেছেন খোকন সিং৷
ছবি: bdnews24.com
ঘটনার সূত্রপাত
৬ নভেম্বর রংপুর চিনিকলের সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্মের বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ও সাঁওতালদের সংঘর্ষ থামাতে গুলি চালায় পুলিশ৷ এতে তিন সাঁওতাল নিহত হন, আহত হন অনেকে৷ নিহতরা হলেন শ্যামল হেমব্রম, মংগল মান্ডি, রমেশ টুডু৷
ছবি: bdnews24.com
ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে গুলি
সংঘর্ষের সময় সাঁওতালদের উপর গুলির নির্দেশ কর্তব্যরত ম্যাজিস্ট্রেটরা দিয়েছিলেন বলে স্থানীয় থানার ওসি সুব্রত কুমার সরকার গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন৷ সংঘর্ষের সময় সাঁওতালদের বাড়িঘরে লুটপাট হয়৷ তাদের ঘরে আগুন দেয়া হয় পুলিশের উপস্থিতিতেই৷
ছবি: bdnews24.com
উচ্ছেদ অভিযান
পরে পুলিশ-র্যাব ঐ দিন সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এক অভিযান চালিয়ে মিলের জমি থেকে সাঁওতালদের উচ্ছেদ করে৷
ছবি: DW/K. Singha
বিক্ষোভের ঝড়
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর উপর গুলিবর্ষণের এই ঘটনায় সমালোচনা চলছে দেশজুড়ে৷ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ কর্মসূচিও পালিত হচ্ছে৷
ছবি: DW/K. Singha
ট্র্যাক্টর দিয়ে চিহ্ন মুছে দেয়া
একচালা ঘরগুলো পুড়িয়ে দেওয়ার পর চিনিকল কর্তৃপক্ষ ট্র্যাক্টর দিয়ে মাটি সমান করে দিয়েছে৷ নির্যাতিত শালনি মুর্ম ঘুরে ঘুরে দেখাচ্ছিলেন পুড়ে যাওয়া ভিটা, মসজিদ, গির্জাঘর, মন্দির, ভূমি রক্ষা কমিটির অফিস ঘর৷ যেগুলোর চিহ্ন ট্র্যাক্টর চালিয়ে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে৷
ছবি: DW/K. Singha
ইতিহাস
সাঁওতাল ও বাঙালিদের ১৮টি গ্রামের ১ হাজার ৮৪০ দশমিক ৩০ একর জমি ১৯৬২ সালে অধিগ্রহণ করে চিনিকল কর্তৃপক্ষ আখ চাষের জন্য সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামার গড়ে তুলেছিল৷ চিনিকলের জন্য অধিগ্রহণ করা ওই জমিতে কয়েকশ’ ঘর তুলে সাঁওতালরা বসবাস করে আসছিল কয়েক বছর ধরে৷ চিনিকল কর্তৃপক্ষ ওই জমি উদ্ধার করতে গেলে সংঘর্ষ বাঁধে৷
ছবি: DW/K. Singha
খোলা আকাশের নীচে কয়েকশ’ পরিবার
চোখে মুখে অজানা আতঙ্ক নিয়ে এখনও খোলা আকাশের নীচে চারশ’ থেকে পাঁচশ’ মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন৷ ক্যাথলিক মিশন ভিত্তিক সংগঠন ‘মাদার টেরেসা’ তিন কেজি করে চাল, আধা কেজি ভোজ্য তেল, এক কেজি করে আলু সরবরাহ করেছেন ক্ষুদ্র পরিসরে৷ প্রয়োজনের তুলনায় তা নিতান্তই অপ্রতুল৷
ছবি: DW/K. Singha
ত্রাণ নিতে অস্বীকৃতি
উচ্ছেদ অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য দেওয়া সরকারি ত্রাণ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন মাদারপুর ও জয়পুর পল্লীর সাঁওতালরা৷
ছবি: DW/K. Singha
আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থলে
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল ১৩ নভেম্বর সাঁওতাল পল্লী পরিদর্শন করে ৬ নভেম্বরের ঘটনার তদন্ত করে দায়ীদের শাস্তির আশ্বাস দিয়েছে৷ সাঁওতাল সম্প্রদায়ের সদস্যরা তাদের উপর হামলায় ইন্ধন দেওয়ার জন্য স্থানীয় এমপি আবুল কালাম আজাদ ও সাপমারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাকিল আকন্দ বুলবুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন৷
ছবি: bdnews24.com
চার সাঁওতাল গ্রেপ্তার
সংঘর্ষের পর গোবিন্দগঞ্জ থানার পুলিশ এ ঘটনায় দু’টি মামলা করে৷ গ্রেপ্তার করা হয় চার সাঁওতালকে৷ রংপুর মেডিকেলে চিকিৎসাধীন সাঁওতালদের কোমরে দড়ি ও হাতকড়া পরানো নিয়ে গণমাধ্যমে খবর আসার পর হাইকোর্টে রিট আবেদনটি হয়৷ হাইকোর্টের নির্দেশের পর পুলিশ সাংবাদিকদের দেখলে হাতকড়া খুলে দেয়, সাংবাদিকরা চলে গেলে ফের হাতকড়া লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা৷
ছবি: DW/K. Singha
সাঁওতালদের দাবি
সাঁওতালরা উচ্ছেদকৃত জমিতেই পুনর্বাসন, জমির চার পাশ থেকে চিনিকল কর্তৃপক্ষের কাঁটাতারের বেড়া অপসারণ, আখ চাষ বন্ধ ও তাদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছে৷ এছাড়াও এমপি আজাদ ও ইউপি চেয়ারম্যান বুলবুলসহ তাদের উচ্ছেদ, হত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটে সহযোগিতাকারীদের বিচার ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছে সাঁওতালরা৷
ছবি: DW/K. Singha
11 ছবি1 | 11
মতিউর রহমান লিখেছেন, ‘‘ভারতীয় উপমহাদেশে প্রাচীনতম অধিবাসীদের অন্যতম সাঁওতাল৷ কারো কারো মতে, আর্যদেরও অনেক আগে থেকে এ উপমহাদেশে বসবাস তাদের৷ আর বাংলাদেশে সাঁওতালরা বাস করে মূলত উত্তরাঞ্চলে৷ বহুকাল ধরে এ অঞ্চল আঁকড়ে আছে তারা৷ স্বাধীনতার পর জীবনমানের উন্নয়ন হবে সব নাগরিকের মতো, এমন প্রত্যাশা ছিল সাঁওতালদের মধ্যেও৷ স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেলেও সাঁওতালদের অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে৷ কমেছে তাদের সংখ্যাও৷''
ইমরান এইচ সরকার গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতালদের কিছু ছবি ফেসবুকে আপলোড করে লিখেছেন, ‘‘এই করুণ দৃষ্টির কোনো জবাব আছে? এদের বাড়িঘর, সহায়সম্বল, এমনকি গবাদিপশুও পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে৷ খোলা আকাশের নীচে অনাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছেন এইসব মানুষ৷ গণমাধ্যমে দেখলাম বাধ্য হয়ে এমনকি নিজের দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার কথাও ভাবছেন এইসব মানুষ!
এই লজ্জা আমাদের সবার, এই লজ্জা বাংলাদেশের৷''
এদিকে, মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়ায় ন্যাশনাল পার্ক ও মাগুরছড়ায় বসবাসকারী দুইটি খাসিয়া পুঞ্জির লোকজনকে স্থানান্তরের প্রস্তাব পাঠিয়েছে বনবিভাগ৷ আর খাসিয়া আধিবাসীর অভিযোগ, তাদের না জানিয়ে মন্ত্রণালয়ে এ ধরনের প্রস্তাব পাঠানো অমানবিক৷
আহমেদ রাজন লিখেছেন, ‘‘না মানুষ না সাঁওতাল, একদিকে সনাতনদের বাড়িঘর জ্বালাবি পাশাপাশি অন্যদিকে সাঁওতালদের ভিটেমাটি ছাড়া করবি, রাষ্ট্র তুই কার? আম-জনতার না শ্রেণি বিশেষ দখলদারের৷''
সংকলন: অমৃতা পারভেজ
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ
নাসিরনগরের হিন্দুরা এখন যেমন আছেন
এক ব্যক্তি ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে- এই অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু জনপদে ব্যাপক সহিংসতা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা৷ শতাধিক বাড়ি ও বেশ কিছু মন্দিরে হামলা হয়েছে৷ সেখানে গিয়ে ছবি তুলে এনেছেন খোকন সিং৷
ছবি: Khukon Singha
রসরাজের বাড়ি-ঘরে হামলা
যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফেসবুকে ইসলাম অবমাননার অভিযোগ তোলা হয়েছে তার নাম রসরাজ দাস৷ অভিযোগ ওঠার পরই তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ তারপরও হামলা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর এবং হবিগঞ্জের মাধবপুরের হিন্দুদের অনেক বাড়ি এবং মন্দিরে৷ নাসিরনগর সদর থেকে ১৬ কিমি. দূরে হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামে রসরাজের বাড়িতেও হামলা চালানো হয়৷
ছবি: Khukon Singha
রসরাজ কি সত্যিই ধর্ম অবমাননা করেছে?
২৮শে অক্টোবর রসরাজের ফেসবুক পাতায় ধর্মীয় অবমাননাকর ছবি পোস্ট করা হয় বলে দাবি করা হয়৷ রসরাজ জানিয়েছে, কেউ হ্যাক করে এটি করেছে৷ তারপরও নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ছবিটি পোস্ট হওয়ায় ক্ষমা চেয়েছেন তিনি৷ তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রসরাজ মাত্র ফোর বা ফাইভ পর্যন্ত পড়েছে৷ ফলে ফটোশপ করে ছবি ফেসবুকে দেয়ার ক্ষমতা তার আছে কিনা এই প্রশ্ন উঠেছে৷
ছবি: Khukon Singha
ফটোশপ করতে জানেন না রসরাজ
এদিকে গ্রেপ্তার করার পর রসরাজকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ৷ নাসিরনগর ঘুরে এসে সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘‘ফোর-ফাইভ ক্লাস পাস ঐ যুবকের ফটোশপে কাজ করার মতো দক্ষতা নাই৷ আমরা সরেজমিন তদন্তে ধারণা করছি, একটি সাইবার ক্যাফে থেকে এ কাজ করা হয়েছে৷’’ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. ছায়েদুল হক, পুলিশ কর্মকর্তা এবং মানবাধিকার কর্মীরাও একই কথা বলেছেন৷
ছবি: Khukon Singha
পুলিশ ছিল নিষ্ক্রিয়
ধর্ম অবমাননার কথা বলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে মন্দির ও বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাটের সময় পুলিশ হামলাকারীদের রুখতে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন নির্যাতিতরা৷
ছবি: Khukon Singha
আবারও হামলা
৩ নভেম্বর আবার হামলা হয় নাসিরনগরে৷ হিন্দুদের বেশ কিছু বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়৷ এছাড়া গত কয়েকদিনে গোপালগঞ্জ, রংপুর, বরিশাল, ঠাকুরগাঁওসহ আরো কয়েকটি জায়গায় হিন্দুদের মন্দিরে হামলা হয়েছে৷ ছবিতে নাসিরনগরের একটি বাড়ি৷
‘হেফাজতে ইসলাম’ ও ‘আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের’ ব্যানারে বিক্ষোভ
রসরাজের শাস্তি দাবিতে ‘হেফাজতে ইসলাম’ ও ‘আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের’ ব্যানারে রোববার বিক্ষোভ-সমাবেশের পরপরই নাসিরনগরে এবং পাশের এলাকা হবিগঞ্জের মাধবপুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলে পড়ে একদল যুবক৷ ছবিতে নাসিরনগরের একটি ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি৷
ছবি: Khukon Singha
স্থানীয় আওয়ামী লীগের তিন নেতা বহিষ্কার
হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠায় স্থানীয় তিন নেতাকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে আওয়ামী লীগ৷ হামলা-ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগে তাদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ৷
ছবি: Khukon Singha
চলছে ঘর-বাড়ি ঠিক করার কাজ
পুড়ে যাওয়া ও ভাঙা ঘর-বাড়ি ঠিক করে কোনোমতে মাথা গোঁজার নিশ্চয়তা ফিরে পাওয়ার চেষ্টা চলছে৷
ছবি: Khukon Singha
মন্দিরের বেহাল দশা
এই পুরোহিতের চোখের ভাষা অনেক কিছুই বলে দেয়৷ মন্দিরগুলো কবে যে ঠিক করা হবে, কারো জানা নেই৷
ছবি: Khukon Singha
মাটিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে প্রতিমা
হামলার পর থেকে এখনো মন্দিরগুলোকে ঠিক করার কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি৷ তাই এই মন্দিরে প্রতিমা টুকরো টুকরো হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে মাটিতে৷
ছবি: Khukon Singha
ক্ষতিগ্রস্তরা পাচ্ছেন না ত্রাণ
স্থানীয় প্রশাসন বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ৬ হাজার করে টাকা ও টিন দেয়া হয়েছে৷ ক্ষতির তুলনায় তা খুবই কম৷ তবে খোকন সিং ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছেন, বেশিরভাগ পরিবার ছয় হাজার টাকাও পাননি৷ কেউ কেউ এক বান্ডিল টিনের সঙ্গে পেয়েছেন মাত্র তিন হাজার টাকা!
ছবি: Khukon Singha
12 ছবি1 | 12
বাংলাদেশের এ পরিস্থিতির জন্য কে দায়ী? জানান আমাদের, লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷