একঘেয়েমি কাটাতে বাস স্টপে আর্ট গ্যালারি
২৮ এপ্রিল ২০২০করোনা সংকটের ফলে অনেক মানুষের জীবন থেকে আনন্দ, আমোদ, মনোরঞ্জন উধাও হয়ে গেছে৷ লকডাউনের বেড়াজালে বাসার চার দেওয়ালের মাঝেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে৷ লন্ডনের এক নারী এমন ক্লান্তিকর অবস্থা মেনে নিতে পারছিলেন না৷ তিনি স্থানীয় একটি বাস স্টপকে শিশুদের আর্ট গ্যালারিতে পরিণত করেছেন৷
লকডাউনের মধ্যে সামাজিক ব্যবধান বজায় রেখে এমন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা মোটেই সহজ ছিল না৷ সরাসরি কারো কাছে যাবার উপায় নেই৷ তাই ইনস্টাগ্রামের শরণাপন্ন হয়েছিলেন সারা লামার৷ হাতে লেখা একটি চিরকুটের ছবি আপলোড করে শিশু ও বড়দের ছবি এঁকে জমা দিতে উৎসাহ দিয়েছিলেন তিনি৷ সেই ডাকে সাড়া দিয়ে দেখতে দেখতে বাস স্টপ ছবিতে ভরে গেল৷ মোটিফের অভাব হয়নি৷ একশৃঙ্গ ইউনিকর্ন থেকে শুরু করে ব্রিটেনের স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতি সংহতি দেখাতে ফুল, রামধনু, কী নেই সেখানে! সঙ্গে রয়েছে ইতিবাচক বার্তা৷
কে এই সারা লামার? পার্ট-টাইম শিক্ষক ছাড়াও তিনি চার বছর বয়সি এক শিশুর মা৷ ব্রিটেনে লকডাউন শুরু হবার একদিন পর তিনি সকালে ঘুম থেকে উঠে বুঝতে পারলেন, যে অনির্দিষ্টকালের জন্য সপরিবারে তাঁকে ঘরবন্দি থাকতে হবে৷ জানালা দিয়ে শুধু ধূসর রংয়ের এক বাসস্টপের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে৷ একঘেয়েমি কাটাতে তখন তাঁর মাথায় এই আইডিয়া এলো৷ সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে সারা বলেন, তিনি ‘রেয়ার উইন্ডো' নামে অ্যালফ্রেড হিচককের এক থ্রিলার ছবির কথা ভাবলেন৷ ১৯৬৪ সালের সেই চলচ্চিত্রে এক ফটোগ্রাফার পা ভেঙে বাসায় বসে জানালা দিয়ে প্রতিবেশীদের পর্যবেক্ষণ করতেন৷
সারা আরও বলেন, শিশু নিয়ে বাড়ির যে তলায় আটকে থাকুন না কেন, জানালা দিয়ে কিছু না কিছু দেখা যাবেই৷ বাগান না থাকলেও ক্ষতি নেই৷ বাস স্টপকে আর্ট গ্যালারিতে পরিণত করে শুধু সারা ও তাঁর সন্তানই জানালা দিয়ে মনোরম দৃশ্য দেখতে পাচ্ছেন না, পথচলতি মানুষের মনও ভাল হয়ে যাচ্ছে৷ কঠিন এই সময়ে একঝলক রং ও উৎসাহের বার্তা তাদের জীবনের একঘেয়েমি কাটিয়ে তুলছে৷
শুধু নিজের বাসার সামনের বাসস্টপ রঙিন করে তুলেই সন্তুষ্ট নন সারা৷ ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে তিনি সবার উদ্দেশ্যেই এমন উদ্যোগ শুরু করতে উৎসাহ দিচ্ছেন৷ সত্যি তো, আমরাও কি সারার মতো এমন উদ্যোগের মাধ্যমে লকডাউনের একঘেয়েমি কাটাতে পারি না?
এসবি/জেডএইচ (রয়টার্স)