লকডাউনে সবচেয়ে বেশি ভুগছে শিশুরা
২৯ এপ্রিল ২০২০‘‘মা, করোনা কখন শেষ হবে?'' আমার আটবছর বয়সি সন্তান ক'দিন আগে প্রশ্ন করেছিল৷ সে তার বন্ধুদের সঙ্গে আবার ফুটবল মাঠে যেতে চায়৷ দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে, মায়ের কাছে কোনো উত্তর নেই৷
করোনা সংক্রমণের আগেও অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সহজ ব্যাপার ছিল না৷ পারিবারিক জীবন স্বাভাবিকভাবে যাপন করতে প্রয়োজনীয় কাঠামো তৈরি এবং সেটা চালিয়ে নেয়া এক কঠিন কাজ৷ আরো কঠিন ব্যাপার হচ্ছে পরিবারের জন্য নিজের আরোপিত নানা বিধিনিষেধ মানতে গিয়ে ব্যর্থ হওয়ার ব্যাপারটি৷
আর এ কারণেই করোনা ভাইরাসের প্রভাব পরিবারের উপর পড়েছে সবচেয়ে বেশি৷ বাবা-মায়ের উপর একই সঙ্গে কাজ ঠিক রাখা, সন্তানদের শিক্ষাদান এবং তাদের ইতিবাচক মনোভাব ধরে রাখার চেষ্টায় সৃষ্ট চাপের সঙ্গে যোগ হয়েছে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার চাপ৷ ‘একক’ অভিভাবকদের ক্ষেত্রে এই চাপ অনেকক্ষেত্রে অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে৷
শিশুদের উপর করোনা ভাইরাসের প্রভাব কেমন, সেটা জার্মান অ্যাকাডেমি ফর চিলড্রেন অ্যান্ড ইউথ মেডিসিন-এর এক বিবৃতি থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়৷
‘‘আকস্মিকভাবে স্কুল এবং অন্যান্য স্থাপনা বন্ধের পাশাপাশি বন্ধু এবং শিক্ষকদের সঙ্গে সপ্তাহের পর সপ্তাহ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার অর্থ হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন চরিত্রের সঙ্গে ভ্রান্ত এবং সম্ভাব্য ক্ষতিকারকভাবে সম্পর্ক ছিন্ন থাকা,’’ লেখা হয়েছে বিবৃতিতে৷
রাজনৈতিক আলোচনায় অবশ্য শিশুদের উপর করোনাসৃষ্ট মানসিক চাপের বিষয়টি এখনো উঠে আসেনি৷ বরং তাদের স্কুলে পারফর্ম্যান্সের বিষয়টি প্রাধান্য পাচ্ছে বেশি৷
জার্মান অ্যাকাডেমি ফর চিলড্রেন অ্যান্ড ইয়ুথ মেডিসিনের বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, ‘‘অতীতের সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় শিশু-কিশোরদের সম অধিকার পাওয়া মানুষ হিসেবে বিবেচনা করা হয়নি, বরং সম্ভাব্য ভাইরাসবাহক হিসেবে দেখা হয়েছে৷’’ বিভিন্ন পারিবারিক পটভূমি থেকে উঠে আসা কোনো কোনো শিশুর ক্ষেত্রে এই পরিস্থিতি শুধু অন্যায়ই নয়, ভীষণ মারাত্মকও৷
সেভ দ্য চিলড্রেনের এক জরিপ অবশ্য কিছু ইতিবাচক খবরও দিচ্ছে৷ সেখানে দেখা যাচ্ছে, করোনার কারণে গৃহবন্দি হয়ে পড়ায় অনেক পরিবারের সদস্যরা একে অপরের সঙ্গে ‘কোয়ালিটি টাইম' কাটাতে পারছেন৷
জুলিয়া ভার্জিন/এআই