লক্ষাধিক জনতার বিক্ষোভে উত্তাল রাশিয়া
২৪ ডিসেম্বর ২০১১রাশিয়ায় এমন বড়মাপের বিক্ষোভের কারণ
গত ৪ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই রাশিয়ায় শুরু হয়েছে বিক্ষোভ-আন্দোলন৷ নির্বাচনের দিনই আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষরা অভিযোগ তুলেছিলেন নির্বাচনে কারচুপি ও জালিয়াতির৷ সেই অভিযোগ এখনও উত্তপ্ত করে রেখেছে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গন৷ গত দুই সপ্তাহ আগে একবার বিরোধীদের ডাকে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়৷ এরপর আজ শনিবার আবারও বিক্ষোভ পালিত হচ্ছে৷ তবে বিরোধী গোষ্ঠীর দাবি, এবারের বিক্ষোভে রাজধানী মস্কোর প্রাণকেন্দ্র স্যাডোভা প্রসপেক্ট চত্বরে অন্তত এক লাখ বিশ হাজার মানুষ সমবেত হয়েছে৷ তবে পুলিশের হিসাবে, বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা ২৯ হাজার এবং সেখানে প্রায় পাঁচ শ' সাংবাদিক হাজির ছিলেন৷
বিক্ষোভকারীদের দাবি
বিক্ষোভকারীরা মূলত বিতর্কিত নির্বাচনে জালিয়াতির প্রতিবাদ জানায়৷ এছাড়া ভোট জালিয়াতির সাথে জড়িতদের শাস্তি দাবি করে৷ বিক্ষোভকারীদের সরকার বিরোধী স্লোগান দিতে দেখা গেছে৷ এছাড়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার ভ্লাদিমির চোরভের অপসারণ দাবি করেছে বিরোধী গোষ্ঠী৷ বিরোধী দলীয় নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনি বিক্ষোভকারী জনতার উদ্দেশ্যে বক্তৃতায় ঘোষণা দিয়েছেন যে, এর পরের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে আরো লক্ষাধিক মানুষ হাজির করা হবে৷ এছাড়া আগামী বছরের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বর্তমান সরকারের পতনের ডাক দেন তিনি৷
এদিকে, রাশিয়ার সাবেক অর্থ মন্ত্রী অ্যালেক্সেই কুদরিন সতর্ক করে দিয়েছেন যে, ক্রেমলিন এবং বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সমঝোতা না হলে রাশিয়ায় নতুন বিপ্লব ঘটবে৷ মস্কোর বিক্ষোভকারীদের মাঝে বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘‘আলোচনার জন্য একটি উদ্যোগ নেওয়া জরুরি৷ অন্যথা এখানে বিপ্লব ঘটবে৷ আর সেক্ষেত্রে আমাদের সামনে এখন যে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা পরিবর্তনের সুযোগ রয়েছে তাও আমরা হারাবো৷''
সহিংস নয়, বরং শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ
অবশ্য বিশ্বের অন্যান্য দেশের বিক্ষোভ-আন্দোলনের থেকে একটু ভিন্ন চেহারা রাশিয়ার বিক্ষোভ কর্মসূচির৷ কারণ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভ হলেই তাতে নিরাপত্তা কর্মীদের বাধা, সংঘর্ষ, সহিংসতা এবং হতাহতের ঘটনা ঘটে৷ কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ভ্লাদিমির পুটিনের বিচক্ষণতায় রাশিয়ার পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচিগুলোতে এখন পর্যন্ত সব ধরণের সহিংসতা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে৷ শনিবারের বিক্ষোভ কর্মসূচি উপলক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তামূলক প্রস্তুতি৷ এমনকি নির্ধারিত বিক্ষোভ চত্বরে প্রবেশের আগে বিক্ষোভকারীদের মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে দেহ তল্লাশি চালানো হয়েছে৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম