ইউক্রেনবিরোধী এবং ইউক্রেনপন্থিরা একে অপরের বিরুদ্ধে সরব হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার সমালোচনায় স্থানীয় প্রশাসন।
বিজ্ঞাপন
পূর্ব ইউক্রেনের লাইপসিশে সোমবার রাতে এই ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসন জানিয়েছে, সোমবার রাতে মাঝে মধ্যেই লাইপসিশের নির্দিষ্ট এলাকায় বিক্ষোভ হয়। গত সোমবারেও সেভাবেই বিক্ষোভ প্রদর্শন করছিলেন কিছু ব্যক্তি। মিডিয়ার এবং সামাজিক মাধ্যমের ফুটেজে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীরা ইউক্রেনবিরোধী স্লোগান দিচ্ছেন। কিছুক্ষণের মধ্যে উল্টো ফুটপাথে ইউক্রেনের পতাকা হাতে আরো কিছু আন্দোলনকারী দাঁড়িয়ে পড়েন। তারা ইউক্রেনপন্থি স্লোগান দিতে থাকেন। দুই দলের মধ্যে রীতিমতো বাক-যুদ্ধ হয়। মঙ্গলবার লাইপসিশের প্রশাসন ইউক্রেনবিরোধী বিক্ষোভকারীদের থেকে নিজেদের দূরত্ব তৈরি করেন। যা ঘটেছে, তার সামালোচনা করেছেন লাইপসিশের মেয়র।
ইউক্রেন যুদ্ধ: পরমাণু যুদ্ধ কি আসন্ন!
ফের ঝাপোরিজ্ঝিয়া পরমাণু কেন্দ্রের সামনে রকেট হামলা রাশিয়ার। আরো অঞ্চল পুনর্দখলের দাবি জেলেনস্কির।
ছবি: REUTERS
রকেট হামলা
বৃহস্পতিবার পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের খুব কাছে রকেট হামলা চালায় রাশিয়া। রকেটের আঘাতে একটি বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। দুই জনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে।
ইউক্রেন প্রশাসনের স্থানীয় সূত্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, ভাঙা বাড়ির নীচে এখনো অন্তত পাঁচজন আটকে আছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। মৃতদের মধ্যে একজন নারী। অন্যজনের অ্যাম্বুলেন্সে মৃত্যু হয়েছে।
ঝাপোরিজ্ঝিয়া পরমাণু কেন্দ্রটি রাশিয়া দখল করতে চায়। বুধবার এবিষয়ে দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন একটি ডিক্রি জারি করেছিলেন। পরমাণু কেন্দ্রটির সম্পূর্ণ হস্তান্তর চেয়েছিলেন তিনি।
ছবি: REUTERS
ইউক্রেনের বক্তব্য
ইউক্রেন কোনোভাবেই পরমাণু কেন্দ্রটি রাশিয়ার হাতে দিতে প্রস্তুত নয়। বুধবার দেশের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, ইউক্রেন ঝাপোরিজ্ঝিয়া অঞ্চলে আরো তিনটি জায়গা পুনর্দখল করেছে। কোনোভাবেই ঝাপোরিজ্ঝিয়া পরমাণু কেন্দ্র রাশিয়ার হাতে তুলে দেওয়া হবে না।
ছবি: Ukrainian Presidency/AP/picture alliance
পরমাণু সংস্থার প্রধান ইউক্রেনে
ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সির প্রধান কিয়েভে গিয়ে জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করেছেন। কীভাবে ইউরোপের সবচেয়ে বড় পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটিকে রক্ষা করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করেছেন তিনি। জেলেনস্কিকে আশ্বাস দিয়েছেন।
ছবি: Valentyn Ogirenko/REUTERS
রাশিয়ার অধিকারে
যুদ্ধ শুরু হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটি রাশিয়া দখল করে। তার ভিতর থেকেই তারা লড়াই চালাচ্ছিল। কিন্তু পরমাণু কেন্দ্রটি দখল করলেও কর্মীদের তারা তাড়িয়ে দেয়নি। ইউক্রেনের কর্মীরাই সেখানে কাজ করছিলেন।
ছবি: Alexander Ermochenko/REUTERS
বাইডেনের ভয়
বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, রাশিয়ার সেনা লড়াইয়ে অনেক পিছিয়ে পড়েছে। এবং সে কারণেই তার ভয়, পুটিন যে কোনো সময় পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারেন। ঠান্ডা লড়াইয়ের পর পরমাণু অস্ত্র নিয়ে এত চিন্তা করতে হয়নি বলে এদিন মন্তব্য করেছেন বাইডেন।
ছবি: picture alliance / Consolidated News Photos
রাশিয়ার অবস্থান
পুটিন আগেই জানিয়ে রেখেছেন, দেশের সার্বভৌমত্ব আঘাত পেলে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতেও তিনি ভয় পাবেন না।
ছবি: Dmitry Astakhov/Sputnik/REUTERS
ইউক্রেনের অবস্থান
জেলেনস্কি জানিয়েছেন, ২০১৪ সালে ইউক্রেনের যে জমি দখল হয়েছে, দেশের সেনা তা উদ্ধeর করতেও বদ্ধপরিকর। যার অর্থ ইউক্রেন ক্রাইমিয়া দখলেরও চেষ্টা করবে। পুটিন আগেই জানিয়েছিলেন, ক্রাইমিয়ায় আঘাত হানলে রাশিয়া ফের কিয়েভের অভিমুখে যাত্রা করবে।
ছবি: dpa/APA Images/Zuma/picture alliance
9 ছবি1 | 9
জার্মানির এনার্জি সংক্রান্ত নীতি, রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে এদিন প্রতিবাদ শুরু করেছিলেন বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভকারীদের হাতের পোস্টারে লেখা ছিল , 'শান্তি, স্বাধীনতা এবং আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার।' কিন্তু শেষপর্যন্ত বিক্ষোভকারীদের স্লোগান ইউক্রেনবিরোধী হতে থাকে। ততক্ষণে উল্টোদিকে ইউক্রেনপন্থিরা দেশের পতাকা নিয়ে হাজির হয়ে গেছিলেন।
ইউক্রেনবিরোধীদের স্লোগানে সবচেয়ে বিতর্কিত স্লোগান ছিল, 'জার্মানি থেকে নাজিদের তাড়াতে হবে'। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট একাধিকবার বলেছেন, ইউক্রেনে নব্য নাৎসিরা বসবাস করছে। তাদের বিরুদ্ধে রাশিয়ার এই আক্রমণ। লাইপসিশের বিক্ষোভকারীদের মুখেও সেই একই কথা শোনা গেছে।
জার্মান পুলিশ জানিয়েছে, তারা সমস্ত ভিডিও ফুটেজ পরীক্ষা করেছে। মামলা করার মতো কোনো ঘটনা সেখানে ঘটেনি। তবে যা ঘটেছে, তা অনভিপ্রেত। স্থানীয় প্রশাসনের বক্তব্য, অতি বামপন্থি এবং অতি দক্ষিণপন্থি সংগঠনগুলিই অধিকাংশ সময় সোমবারের বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। অতি দক্ষিণপন্থি সংগঠনগুলি রাশিয়াপন্থি স্লোগান দেয়। রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিতর্ক তৈরি করে। অন্যদিকে, অতি বামপন্থি সংগঠনগুলি মূল্যবৃদ্ধি, খাদ্যসংকটের মতো বিষয়গুলি নিয়ে আওয়াজ তোলে। তবে গত সোমবারের ঘটনার থেকে প্রায় সমস্ত স্থানীয় রাজনীতিবিদই নিজেদের দূরত্ব তৈরি করার চেষ্টা করছেন।
লাইপসিশের মেয়র জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীরা সরাসরি ইউক্রেন থেকে আসা শরণার্থীদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছে। যারা একাজ করেছে, তারা গণতন্ত্রের শত্রু বলে চিহ্নিত করেছেন মেয়র।