1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলা ছবির সম্মান

আরাফাতুল ইসলাম, লাইপসিশ৩১ অক্টোবর ২০১২

বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের কুপ্রভাব রুপালি পর্দায় সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন এক তরুণ বাংলাদেশি পরিচালক৷ ছবির নাম, ‘শুনতে কি পাও!' সোমবার লাইপসিশে এই ছবিটির ‘ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার' অনুষ্ঠিত হয়েছে৷

ছবি: DW/A. Islam

সুন্দরবনের কোলঘেঁষে বয়ে গেছে একটি নদী, নাম ভদ্রা৷ এই নদীর তীরে সুতরখালি গ্রামের অবস্থান৷ ২০০৯ সালে আইলার আঘাতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গ্রামটির মানুষ৷ সেই গ্রামেরই এক পরিবারের গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘শুনতে কি পাও!'

প্রামাণ্যচিত্র বিষয়ক বিশ্বের প্রাচীনতম উৎসব ‘ডক-লাইপসিশ' এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রদর্শন করা হয়েছে এই ছবিটি৷ গত সোমবার লাইপসিশে কানায় কানায় পূর্ণ প্রেক্ষাগৃহে ছবিটির ‘ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার' অনুষ্ঠিত হয়৷

কামার আহমেদ সায়মন ও সারা আফরিনছবি: DW/A. Islam

প্রতিযোগিতায় ‘শুনতে কি পাও!'

‘শুনতে কি পাও!' ছবির পরিচালক কামার আহমাদ সাইমন৷ তিনি জানালেন, এই প্রথম কোন বাংলা ছবি দিয়ে উৎসবের শুরু করলো ‘ডক-লাইপসিশ'৷ শুধু তাই নয়, ছবিটি আন্তর্জাতিক বিভাগে আরো বেশ কয়েকটি বিদেশি ছবির সঙ্গে প্রতিযোগিতায়ও রয়েছে৷ লাইপসিশে শুনতে কি পাও!'র প্রদর্শনী তাই বাংলা ছবির জগতে এক নতুন মাইলফ‍লক যোগ করেছে৷ এই প্রসঙ্গে কামার বলেন, ‘‘আমি খুবই আনন্দিত এবং উৎসাহিত৷ তরুণ প্রজন্ম বা একাত্তর পরবর্তী প্রজন্ম যারা চলচ্চিত্র নিয়ে কাজ করছে, তাদের মধ্যে নতুন ধরনের ধারা আমি দেখতে পাচ্ছি এবং সেটিরই ধারাবাহিকতায় আমি মনে করি, আমার ছবিটি এখানে এসেছে৷''

‘শুনতে কি পাও!' ছবিটির দৃশ্যায়ন এক কথায় অসাধারণ৷ সুতরখালি গ্রামের বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন অবস্থা চমৎকারভাবে ক্যামেরা বন্দি করেছেন পরিচালক৷ গ্রামবাংলার যে শাশ্বত রূপটি আমরা যুগ যুগ ধরে দেখে আসছি, সেটি এবার কামারের চোখে দেখছে গোটা বিশ্ব৷ এই ছবিটির পেছনের গল্প জানতে চাইলে পরিচালক বলেন, ‘‘২০০৯ সালে বাংলাদেশে যখন জলোচ্ছ্বাসটা হয়, তার পাশাপাশি সারা পৃথিবীতে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত যে সম্মেলনগুলো হচ্ছিল, দুটোই আমাকে একই সঙ্গে প্রভাবান্বিত করে৷ এই পরিবর্তনের ফলে আমার দেশের মানুষ যে ক্ষতির মুখে পড়ছে, তা আমি প্রতিদিনকার সংবাদের পড়ছিলাম৷ তখন আমি স্বাভাবিকভাবেই আলোড়িত বোধ করি এবং একজন চলচ্চিত্র কর্মী বা একজন মানুষ হিসেবে এই বিষয়ে কিছু একটা করার আকুতি অনুভব করি৷ সেই আকুতি থেকেই এই ছবিটি করা৷''

কানায় কানায় পূর্ণ পৃক্ষাগৃহে ‘ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার'ছবি: DW/A. Islam

‘চমৎকার ছবি'

লাইপসিশে ‘শুনতে কি পাও!' ছবির ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ারে হাজির ছিলেন খ্যাতনামা বাঙালি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা শাহীন দিল-রিয়াজ৷ ছবিটি দেখার পর তাঁর প্রথম মন্তব্য হচ্ছে ‘চমৎকার ছবি'৷ ডয়চে ভেলেকে শাহীন বলেন,‘‘অনেকদিন পর বাংলাদেশি একজন নির্মাতার তৈরি একটি ছবি দেখলাম৷ প্রচণ্ড ভালোবাসা দিয়ে বানানো ছবি এটি৷ ছবিটি দেখলেই বোঝা যায়, পুরো টিমটি অনেক সময় নিয়ে কাজটি করেছেন, অনেক কষ্ট করতে হয়েছে তাদেরকে৷ এবং ছবির চরিত্রগুলোর সঙ্গে তারা রীতিমত জীবনযাপন করেছেন৷ না করলে এরকম মুহূর্তগুলো ক্যামেরায় ধরা যেত না৷'' ‘শুনতে কি পাও!' ছবির নির্বাহী প্রযোজক সারা আফরীনও এসময় উপস্থিত ছিলেন৷

উল্লেখ্য, ডক-লাইপসিশ উৎসবের শুরু হয় ১৯৫৫ সালে৷ শুরুর দিকে অবশ্য এই উৎসব বেশ রাজনৈতিক বিতর্কের সৃষ্টি করে৷ এমনকি সরকারের বাধার কারণে শুরুর দিকে টানা কয়েক বছর এই উৎসব আয়োজন সম্ভব হয়নি৷ তবে এই উৎসব নিয়ে এখন আরো কোন রাজনৈতিক বিতর্ক নেই৷ বরং ইউরোপের অন্যতম প্রাচীন উৎসব হিসেবে সমাদৃত এটি৷ আর এরকম এক উৎসবের উদ্বোধনীতে জায়গা করে নিয়ে বাংলা চলচ্চিত্র এক উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিচ্ছে বৈকি!

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ