1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

লাদাখে কি জেন জি-র বিক্ষোভ দেখলো ভারত?

২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

লাদাখে পৃথক রাজ্যের দাবিতে বুধবার প্রবল সহিংস প্রতিবাদ হয়। চারজন মারা গেছেন। প্রতিবাদের নেতৃত্বে ছিলেন যুবরা।

লাদাখে বিক্ষোভ সহিংস হয়ে ওঠে। পুলিশের একটি গাড়ি জ্বলছে।
লাদাখের আন্দোলনকে কি জেন জি-র আন্দোলন বলা যায়?ছবি: Tsewang Rigzin/AFP/Getty Images

লাদাখেও কি পৃথক রাজ্যের দাবিতে সোচ্চার হয়ে জেন জি প্রতিবাদ করলো? শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, নেপালের পর ভারতও কি জেন জি-র বিক্ষোভ দেখলো? বুধবার লাদাখের বিক্ষোভ, আগুন, সহিংসতা, গুলি, চারজনের মৃত্যুর পর প্রশ্ন উঠেছে এটা কি জেন জি-র বিক্ষোভ ছিল?

কী হয়েছে লাদাখে?

সোনম ওয়াংচুকসহ ১৫ জন গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে চারদফা দাবিতে অনশন করছিলেন। সেই দাবির মধ্যে ছিল, লাদাখকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা দিতে হবে, চাকরিতে সংরক্ষণ চালু করতে হবে, লেহ ও কার্গিলকে নিয়ে একটি লোকসভা আসন করতে হবে।

মঙ্গলবার রাতে দুই অনশনকারীর শরীরের অবস্থা খারাপ হয়, তাদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। এরপর লাদাখ অ্যাপেক্স বডি(এলএবি)-র যুব শাখা আন্দোলনের ডাক দেয়। বুধবার সকাল থেকে লে শহর পুরোপুরি বন্ধ ছিল। পরে এনডিএস মেমোরিয়াল গ্রাউন্ডে বিশাল জমায়েত হয়। তারপর তারা স্লোগান দিতে দিতে বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে মিছিল করে যেতে থাকে।

বিজেপি সদরদপ্তর ও হিল কাউন্সিলের অফিসে পাথর ছোড়া শুরু হলে পরিস্থিতি খারাপ হয়। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায়। জনতা সহিংস হয়ে ওঠে।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে লিখিত বিবৃতি দিয়েছে তাতে বলা হয়েছে, বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ ওয়াচুংক উসকানিমূলক বক্তৃতা দিলে জনতা অনশনস্থন থেকে বেরিয়ে রাজনৈতিক দলের অফিস আক্রমণ করে, তারা সরকারি অফিসেও হামলা করে। তারা তিনটি অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশের গাড়ি ভাঙে। ৩০ জনের বেশি পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর কর্মী আহত হয়েছে। পুলিশ আত্মরক্ষায় গুলি চালায়। দুর্ভাগ্যজনকভাবে কয়েকজনের মৃত্যু হয়।

অনশনভঙ্গ করলেন ওয়াংচুক

এই ঘটনার পরেই অনশনভঙ্গ করেন সোনম ওয়াংচুক। তিনি একটা বিবৃতি দিয়ে বলেন, ''আমি সব যুবককে বলছি, তারা যেন অবিলম্বে সহিংসতা থামান। পরিস্থিতি যেন আর খারাপ না হয়। আমরা লাদাখ বা দেশে অস্থিরতা চাই না।''

তিনি বলেছেন, এটা লাদাখের জন্য ও তার কাছে সবচেয়ে দুঃখের দিন। কারণ, গত পাঁচ বছর ধরে তারা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করেছেন। পাঁচবার অনশন করেছেন। লেহ থেকে দিল্লি পর্যন্ত হেঁটেছেন। তারা শান্তির বার্তা নিয়ে গেছেন।

সোনম বলেছেন, ''আজ দেখছি, শান্তি পিছনের সারিতে চলে গেছে। সহিংসতা ও আগুন লাগানোর ঘটনা সামনে আসছে। এটা বন্ধ হোক। প্রশাসনও যেন কাঁদানে গ্যাস না ছোড়ে। আমরা অবিলম্বে অনশন তুলে নিচ্ছি। আমরা চাই না, আর একজন যুবক প্রাণ হারান। আলোচনাকে শান্তভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আমরা অহিংস পথে আন্দোলন করব। যখন শান্তির বার্তা উপেক্ষিত হয়, তখন এই অবস্থা হয়।''

কী বললো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়?

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ''সোনম ওয়াচুংক যে দাবি নিয়ে অনশন করছেন, সেই বিষয়গুলি নিয়ে লেহ ও কার্গিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের সঙ্গে আলোচনা চলছে। পরবর্তী বৈঠক ৬ অক্টোবর হবে। লাদাখের নেতাদের সঙ্গে তারা ২৫ ও ২৬ সেপ্টেম্বর বৈঠক করবেন।''

বলা হয়েছে, ''আলোচনার ফলে সংরক্ষণের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে, মেয়েদের জন্য এক তৃতীয়াংশ সংরক্ষণ চালু হয়েছে। ভোটি ও পুরগিতে সরকারি ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। খালি পদে নিয়োগ শুরু হয়েছে। কিন্তু কিছু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মানুষের তা সহ্য হয়নি। তারা আলোচনার প্রক্রিয়াকে অন্তর্ঘাত করার চেষ্টা করছে''।

লাদাখের বিক্ষোভ সহিংস হয়ে হয়ে ওঠে। পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীও কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায়, গুলি চালায়। ছবি: Tsewang Rigzin/AFP/Getty Images

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ''সোনম ওয়াংচুক জনতাকে উসকানিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে জনতাকে উসকানি দেয়েছেন। সহিংস ঘটনার পর তিনি অনশন ভঙ্গ করে অ্যাম্বুলেন্স করে গ্রামে ফিরে যান।''

এটা কি জেন জি-র আন্দোলন?

বুধবার লেহ-তে আন্দোলন ছিল মূলত যুবদের। এরপরই ভারতের সংবাদমাধ্যমে এই আলোচনা শুরু হয়, এটা কি জেন জি-র আন্দোলন? শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, নেপালের পর ভারতেও কি এইভাবে জেন জি তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করলো?

ডিডটাব্লিউ বাংলার সাংবাদিক স্যমন্তক ঘোষ মঙ্গলবার সকালেই লেহ থেকে কাশ্মীর গেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ''এটাকে জেন জি-র আন্দোলন বলা যেতে পারে। অনশনরত দুই জনের শরীর খারাপ হওয়ার পর তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হলে জেন জি-র একাংশ ক্ষুব্ধ হন। তারাই মূলত রাস্তায় নামেন। বিকেল চারটের পর থেকে পরিস্থিতি শান্ত হয়। যদিও কারফিউ বহাল রাখা হয়েছে। সিআরপিএফের গুলিচালানো নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। তবে এই আন্দোলনে যে জেন জিই মূলত ছিল তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।''

জাতীয় মিডিয়ার রিপোর্টেও বলা হয়েছে, এটা ছিল যুবদের আন্দোলন।

স্থানীয় বিজেপি নেতারা অবশ্য দাবি করেছেন, এটা জেন জি-র আন্দোলন নয়, এই সহিংস আন্দোলনের পিছনে আসলে কংগ্রেসের মদত আছে। তারাই অস্থিরতা তৈরি করছে।

জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এনডিটিভি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ