1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

লাদেনের ধাঁচেই মারা হয়েছে আল-আওলাকি’কে

৪ অক্টোবর ২০১১

আল-আওলাকি হত্যার জন্য কী এবং কেমন পদ্ধতি ব্যবহার করেছিল মার্কিন গোয়েন্দাসংস্থা, তা আরও একটি রহস্য রোমাঞ্চ ছবির বিষয় হতে পারে৷ তবে, এবার সে পদ্ধতি জানিয়ে দিল সিআইএ৷

আল-আওলাকিছবি: dapd

বিন লাদেনকে ঠিক কীভাবে পাকিস্তানে অ্যাবোটাবাদের গোপন আস্তানা থেকে খুঁজে বের করে বিশেষ অপারেশন চালিয়ে সিআইএ হত্যা করেছে, তা এখন সকলেই জানে৷ লাদেন যে পাকিস্তানের কোথাও লুকিয়ে রয়েছে, সে খবর এবং তথ্য প্রথমে জানা গিয়েছিল৷ তারপরে তার ওপরে দীর্ঘ সময় ধরে নজরদারি চালানো৷ এবং অবশেষে  বিশেষ প্রশিক্ষিত কমান্ডোবাহিনী তার বাড়ির ছাদে নামিয়ে, কোনো রকমের প্রস্তুতির সুযোগ না দিয়েই লাদেনকে খতম করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ পরে তা নিয়ে দুনিয়াজুড়ে নানারকমের প্রতিক্রিয়া দেখা যায়৷ পাকিস্তানের অভ্যন্তরেও পুঞ্জীভূত হয় ক্ষোভ৷ অভিযোগ ওঠে, পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, প্রশাসনের বিনা অনুমতিতে এই অপারেশন চালিয়ে৷

ইয়েমেনে তৎপর আরেক আল-কায়েদা জঙ্গি, আল-আওলাকি'কে খতম করার অভিযানও এভাবেই বেশ সময় নিয়ে ধৈর্য ধরে চালিয়েছে সিআইএ৷ ইয়েমেনে জন্ম কিন্তু মার্কিন নাগরিক আল-আওলাকি'র বিষয়ে সিআইএ-র কাছে নানা তথ্য আগে থেকেই ছিল৷ তার বিরুদ্ধে অভিযোগও দীর্ঘদিন ধরে শোনা যাচ্ছিল৷ ফোর্ট হুড সেনা সদর দপ্তরে যে হত্যাকাণ্ড চালায় জঙ্গিরা, আওলাকি'র নাম তার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে৷ ২০১০ সালে নিউ ইয়র্কের টাইমস স্কোয়্যারে গাড়িতে বোমা রেখে হামলার যে ব্যর্থ চেষ্টা হয়েছিল, তার সঙ্গেও আল-আওলাকি জড়িয়ে রয়েছে বলে বিশ্বাস ছিল গোয়েন্দাদের৷

এহেন এক জঙ্গিকে হত্যা করাটা সময়ের ব্যাপার ছিল বলেই বলছেন বিশেষজ্ঞরা৷ কিন্তু কীভাবে, কোন পন্থায় সিআইএ এবং পেন্টাগন এদের মতো জাতীয় বিপদজনক জঙ্গিদের খতম করছে, বলা বাহুল্য তার পদ্ধতি অত্যাধুনিক৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কিছুদিন আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, আরব দুনিয়ায় আল-কায়েদার সবচেয়ে বিপদজনক বলে চিহ্নিত এই জঙ্গিকে হত্যা করার ছক কষা হচ্ছে৷ আল-আওলাকি হত্যাকাণ্ড যে কারণে আলোচনার জন্য একটি প্রাসঙ্গিক বিষয়৷ যাতে রয়েছে, প্রশাসনের নির্দেশ৷

আল-আওলাকি হত্যাকাণ্ডের জন্য সিআইএ এবং পেন্টাগনের প্রস্তুতি ছিল অনেকদিনের৷ সিআইএ জানাচ্ছে, গত দুই বছর ধরে আল-আওলাকি'র গতিবিধির ওপর নজর রাখছিল তারা৷ অত্যাধুনিক জিপিএস ব্যবস্থার মাধ্যমে তার প্রতিটি গতিবিধি জানা সম্ভবপর হয়ে উঠছিল৷ এরপরে সর্বশেষ হামলার জন্য বেছে নেওয়া হয় ইয়েমেনের রাজধানী সানার কাছে আল-আওলাকি'র গাড়িবহরে ড্রোন বিমান থেকে মিসাইল হামলার পরিকল্পনা৷ চালকবিহীন একটি ড্রোন বিমানকে আগেই নির্দিষ্ট করে রাখা হয়েছিল এই কাজের জন্য৷ আল-আওলাকি এবং তার কয়েকজন সহচর দুটি গাড়িতে সানা থেকে বেরিয়ে হাইওয়ে ধরে অন্যত্র যাওয়ার সময় আক্রান্ত হয় গাড়িদুটি৷ গাড়িতে আওলাকি ছাড়াও আরও বেশ কয়েকজন সহযাত্রীর মৃত্যু হয় সঙ্গে সঙ্গেই৷ মিসাইল বিস্ফোরণে নিহতদের দেহগুলি এতটাই পুড়ে যায়, যে আলাদা করে কাউকে সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি৷ কিন্তু আওলাকি'র মৃত্যু নিশ্চিত করার বিষয়ে সিআইএ এবং পেন্টাগনের কাছে প্রশ্ন করা হলে, সেই সূত্রে জানানো হয়, ওই গাড়িতে যে আওলাকি ছিল, সে বিষয়ে তাদের কাছে সঠিক খবর রয়েছে৷ তাই আওলাকি যে নিহত, তাতে কোনো সন্দেহ নেই৷

অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এই সঠিক ব্যবহার, তার সাফল্য এবং তার মাধ্যমে আরও একটি প্রশ্নেরও কিন্তু সৃষ্টি হচ্ছে৷ তা হলো, প্রথমে পাকিস্তান এবং পরে ইয়েমেন, দু'টি জায়গাতেই এই পদ্ধতি ব্যবহারের সময় কোনো রকম কারণ দেখানোর প্রয়োজন মনে করেনি যুক্তরাষ্ট্র৷ ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর তারা জানিয়েছে, কী পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়েছিল৷ অদূর ভবিষ্যতে এই একই পদ্ধতির ব্যবহার নতুন কিছু প্রশ্ন এবং সেইসঙ্গে সমস্যার জন্ম দেবে না তো? বিশ্বের সব রাষ্ট্র কী যুক্তরাষ্ট্র বা তার সহযোগীদের এ ধরণের স্ব-সিদ্ধান্তের সন্ত্রাস বিরোধী পদক্ষেপ সবসময়ে কী মেনে নিতে পারবে? বিশেষ করে যেখানে অন্য একটি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নটি জড়িয়ে রয়েছে!

প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ