২০১১ সালের ২ মে পাকিস্তানে অভিযান চালিয়ে আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করা হয়৷ ঘটনার পাঁচ বছর পূর্তিতে লাইভ-টুইট করে সেই সময়কার ঘটনাগুলো জানিয়ে দিল সিআইএ৷
বিজ্ঞাপন
হ্যাশট্যাগ ইউবিএলরেইড (#UBLRaid) ব্যবহার করে একের পর এক টুইট করে মার্কিন ঐ গোয়েন্দা সংস্থাটি৷ পাঁচ বছর আগে কোন সময়ে কী কী ঘটেছিল তা জানিয়েছে সিআইএ৷ প্রথম টুইটে সংস্থাটি লাইভ-টুইটে সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়ে লেখে, ‘‘... যেন অভিযানটি আজকে ঘটছে৷''
পরের টুইটে জানানো হয় ১:২৫ পিএম ইডিটি (অর্থাৎ বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা ২৫ মিনিট) সময়ে অ্যাবোটাবাদে অভিযান চালানোর অনুমতি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্টসহ অন্যান্যরা৷
এর দুই ঘণ্টা পাঁচ মিনিট পরের এক ছবিতে দেখা যাচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টনসহ অন্যান্যরা ‘সিচুয়েশন রুম'এ বসে অভিযানটি সরাসরি দেখছেন৷ হোয়াইট হাউস থেকে ছবিটি সেই সময় প্রকাশ করা হয়েছিল৷
সিআইএ-র টুইট থেকে জানা যায়, ৩:৩৯ পিএম ইডিটি (অর্থাৎ বাংলাদেশ সময় রাত ১টা ৩৯ মিনিট) সময়ে লাদেনকে হত্যা করা হয়৷
সিআইএ-র লাইভ-টুইট বিষয়ে টুইটারে অনেকে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন৷ টোবি কনাপ লিখেছেন, ‘‘লাদেন হত্যার অভিযান আমাকে এটাই মনে করিয়ে দেয় যে, আমি সেই সব নারী ও পুরুষ নিয়ে গর্বিত যাঁরা যা করতে চান তা-ই করেন৷''
তবে সিআইএ-র এই উদ্যোগে সবাই খুশি নন৷ যেমন ক্রিস নাইট সিআইএ-র কাছে জানতে চেয়েছেন, হিরোশিমায় বোমা নিক্ষেপের বিষয়েও কি লাইভ-টুইট করা হবে?
জেডএইচ/এসিবি (এএফপি, ডিপিএ)
আইএস কী, কোথায় এবং কেন?
প্রতিদিনই খবরে আইএস৷ কোনোদিন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের জন্য, কোনোদিন হয়তো ইরাক বা সিরিয়ায় কোনো অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার জন্য৷ আইএস বলছে, ইসলামি খেলাফত কায়েম করার জন্য যুদ্ধে নেমেছে তারা৷ ছবিঘরে আইএস সম্পর্কে কিছু তথ্য....
ইসলামিক স্টেট বা আইএস আসলে কী?
আল কায়েদা থেকে তৈরি হওয়া সুন্নি মুসলমানদের জঙ্গি সংগঠন আইএস৷ সাদ্দাম পরবর্তী সময়ে ইরাকে এবং বাশার আল আসাদের আমলে সিরিয়ায় সুন্নিদের হতাশা থেকেই জন্ম সংগঠনটির৷ আইএস-এর পতাকায় লেখা থাকে, ‘মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর নবী’ এবং ‘আল্লাহ ছাড়া আর কোনো সৃষ্টিকর্তা নেই৷’
ছবি: AP
আইএস কোথায় সক্রিয়?
শরিয়া আইন অনুযায়ী পরিচালিত হবে এমন রাষ্ট্র, বা ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠা করতে চায় আইএস৷ সিরিয়া এবং ইরাকেই প্রত্যক্ষভাবে সক্রিয় তারা৷ দুটি দেশেই রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সুযোগে বেশ বড় অঞ্চল দখল করে নিয়েছে আইএস৷
আইএস কেন আলাদা?
মূলত নিষ্ঠুরতার জন্য৷ শত্রুপক্ষ এবং নিরীহ মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়াতে তারা এমন বর্বরতা এবং নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন করে যা আগে কেউ করেনি৷ জবাই করে ভিডিও প্রচার, পুড়িয়ে মারা, বাবার সামনে মেয়েকে জবাই করা এবং তার তার ভিডিও প্রচার, মেয়েদের যৌনদাসী বানানো আর পণ্যের মতো বিক্রি করা – এসব নিয়মিতভাবেই করছে আইএস৷ কোনো অঞ্চল দখলে নেয়ার পর সেখানে শাসন প্রতিষ্ঠায় মন দেয় আইএস৷
ছবি: gebphotography - Fotolia.com
অন্য জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক
আইএস যদিও শুধু সিরিয়া এবং ইরাকেই সক্রিয়, তবে বিশ্বের অন্যান্য ইসলামি জঙ্গি সংগঠনগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন নয়৷ নাইজেরিয়ার জঙ্গি সংগঠন বোকো হারাম কয়েকদিন আগেই জানিয়েছে, আইএস-কে তারা সমর্থন করে৷ দুটি সংগঠনের মধ্যে একটি জায়গায় মিলও আছে৷ আইএস-এর মতো বোকো হারামও নিষ্ঠুরতা এবং বর্বরতার প্রতিভূ হয়ে উঠেছে৷ অন্য ধর্মের নারীদের প্রতি দুটি সংগঠনের দৃষ্টিভঙ্গি এবং আচরণই মধ্যযুগীয়৷
ছবি: Getty Images/A. Katib
আইএস-এর অনুসারী কারা?
অনুসারী সংগ্রহের সাফল্যেও আইএস অন্য সব জঙ্গি সংগঠনের চেয়ে আলাদা৷ এ পর্যন্ত অন্তত ২০ হাজার বিদেশী যোদ্ধা আইএস-এ যোগ দিয়েছে৷ তাদের মধ্যে ৪ হাজারই পশ্চিম ইউরোপ এবং উত্তর অ্যামেরিকার৷
আইএস-কে রুখতে অন্য দেশগুলো কী করছে?
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বেশ কিছু পশ্চিমা এবং আরব দেশ সিরিয়া ও ইরাকে আইএস ঘাঁটির ওপর বিমান থেকে বোমা হামলা চালাচ্ছে৷ বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ পর্যন্ত সিরিয়ায় ১৪২২ এবং ইরাকে ২২৪২ বার হামলা হয়েছে৷ কোনো কোনো সরকার দেশের অভ্যন্তরেও কিছু ব্যবস্থা নিচ্ছে৷ সিরিয়া ফেরত অন্তত ৩০ জন সন্দেহভাজন জঙ্গির বিচার শুরু করবে জার্মানি৷ গত মাসে সৌদি পুলিশও ৯৩ জন সন্দেহভাজন আইএস জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে৷