আগের ২৪ ঘণ্টায় মোট ২,১৯০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী৷ এর মধ্যে ২৬৬ জনের মধ্যে নভেল করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে৷ এ নিয়ে বাংলাদেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৮৩৮ জনে৷
নতুন করে নয় জন সুস্থ হয়ে উঠায় মোট সুস্থের সংখ্যা ৫৮ জন৷
সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ঢাকা (৪৬%) ও নারায়ণগঞ্জে (২০%)৷ এছাড়া নতুন করে গাজীপুরে অনেক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন৷ রাজধানী ঢাকার মধ্যে মিরপুরে রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি৷
করোনা: এসব গুজবে কান দেবেন না
পুরো বিশ্বে নভেল করোনা ছড়িয়ে পড়ার পর এ নিয়ে গুজবের শেষ নেই৷ বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে গুজব সবচেয়ে বেশি৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এমনই কয়েকটি গুজবের জবাব দিয়েছে৷ দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Geisler-Fotopress
১. ফাইভ-জি মোবাইল নেটওয়ার্কে করোনা ছড়ায়?
রেডিও তরঙ্গ বা মোবাইল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কোন ভাইরাস ছড়ায় না৷ এমন অনেক দেশেই করোনা’র সংক্রমণ হয়েছে, যাদের ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক নেই৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Roessler
২. রোদের তাপ কি করোনা প্রতিরোধ করে?
তাপমাত্রা যত বেশিই হোক না কেনো, যেকোন তাপমাত্রায় আপনি সংক্রমিত হতে পারেন৷ ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা আছে এমন অনেক দেশেই এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. van den Bergh
৩. একবার সংক্রমণ, সারাজীবনের সংক্রমণ?
করোনা আক্রান্ত যেকোন মানুষ পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেন৷ আপনার লক্ষণ চিনতে হবে এবং সেই বুঝে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে৷ আপনার যদি জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট থাকে তাহলে ডাক্তারকে ফোন দিন৷
ছবি: AFP/B.R. Smith
৪. ১০ সেকেন্ডের নাই ভরসা
অনেকে মনে করেন কোনো ধরনের কষ্ট বা কাশি ছাড়া ১০ সেকেন্ড বা তার বেশি সময় শ্বাস আটকে রাখতে পারলে তার করোনা নেই৷ এই ধারণা ভুল৷ করোনা ভাইরাসের খুব সাধারণ একটি লক্ষণ হল শুকনো কাশি, ক্লান্তি এবং জ্বর৷ কারো কারো ক্ষেত্রে ভয়াবহ ধরনের নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা যায়৷ আপনার উচিত এসব লক্ষণ থাকলে আগে পরীক্ষা করা৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Campodonico
৫. মদে মুক্তি?
বেশি বেশি মদ বা অ্যালকোহল খেলে করোনা প্রতিরোধ হয় না বরং তা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে৷
ছবি: Getty Images/AFP/J.-P. Muller
৬. তীব্র শীতে করোনা মরে?
এটা বিশ্বাস করার কোন কারণ নেই যে তীব্র শীত বা বরফে করোনা ভাইরাস টিকে থাকতে পারে না৷ কারণ বাইরের তাপমাত্রা যাই হোক না কেনো আপনার শরীরের তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷
ছবি: picture-alliance/AA/A. Ozdil
৭. হ্যান্ড ড্রায়ার করোনা মারে?
না৷ হাত শুকানোর যে মেশিন, করোনা ভাইরাসের উপর তার কোন প্রভাব নেই৷ আপনার যা করণীয় তা হল: বার বার সবান পানি বা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়া৷ এরপর টিসু, তোয়ালা বা গরম ড্রায়ার দিয়ে হাত শুকাতে পারেন৷
ছবি: picture-alliance/AP/NIAID-RML
৮. নিউমোনিয়ার ভ্যাকসিন কি করোনায় কার্যকর?
না৷ নিউমোনিয়ার ভ্যাকসিন যেমন: নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন বা হিমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা টাইপ বি ভ্যাকসিন করোনার ক্ষেত্রে কার্যকর নয়৷ এই ভাইরাস একেবারে নতুন এবং ভিন্ন ধরনের, যার জন্য চাই আলাদা ভ্যাকসিন৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তায় গবেষকরা এ বিষয়ে কাজ করছেন৷
ছবি: Reuters/B. Guan
৯. নাকের ড্রপ কি সংক্রমণ থেকে বাঁচায়?
না৷ এমন কোন তথ্য-প্রমাণ এখনো মেলেনি যে নিয়মিত স্যালাইন পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করলে এই সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যায়৷
ছবি: Imago Images/Panthermedia/A. Guillem
১০. করোনা প্রতিরোধে বিশেষ কোন ওষুধ?
করোনা প্রতিরোধে এখন পর্যন্ত কোন ওষুধ নেই৷ কেবল লক্ষণ অনুযায়ী এ রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসা দিচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকেরা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Geisler-Fotopress
10 ছবি1 | 10
বাংলাদেশে ৪০টির বেশি জেলায় করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে৷ জেলা পর্যায়ে শনাক্ত ব্যক্তিদের অধিকাংশ ঢাকা বা নারায়ণগঞ্জ থেকে গেছেন জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জনগণকে ‘কঠোরভাবে লকডাউনের নীতি অনুসরণ’ করে বাড়িতে অবস্থান করার অনুরোধ করেছেন৷
তিনি বলেন, “আমরা যদি কষ্ট করে আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ঘরে থাকি তবে করোনা ভাইরাস আর বেশি ছড়াতে পারবে না৷ করোনার বিরুদ্ধে আমাদের জয় হবে বলে আশা করি৷”
তিনি প্রশাসনকে মানুষকে ঘরে রাখতে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেন৷ একই সঙ্গে তিনি সাধারণ মানুষকে ভয় বা আতঙ্কিত না হয়ে বেশি বেশি পরীক্ষা করার অনুরোধও করেছেন৷
আইইডিসিআর-র পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা নিজ বাসা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ব্রিফিংয়ে যোগ দেন৷ তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের বেশিরভাগের বয়স ২১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে৷ তাদের মধ্যে পুরুষ ৬৮ শতাংশ এবং নারী ৬২ শতাংশ৷ আক্রান্তদের মধ্যে ৬৮ শতাংশ বাড়িতে বসে এবং ৩২ শতাংশ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন৷
হাসপাতালে যারা চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের অনেকে বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা করাতে পারতেন জানিয়ে অধ্যাপক মীরজাদী আরো বলেন, “মৃদু উপসর্গ হলে হাসপাতালে ভিড় না বাড়িয়ে আমি আপনাদের বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নেওয়ার অনুরোধ করছি৷ যাতে গুরুত্ব অসুস্থ অন্য কেউ চিকিৎসার সুযোগ পান৷”
বাড়িতে বসে চিকিৎসার বিষয়ে জানতে স্বাস্থ্য বাতায়নের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি৷