1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

লাশ জিম্মি করে বিল আদায় বেআইনি

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২১ নভেম্বর ২০১৭

বাংলাদেশের হাসপাতাল, বিশেষ করে প্রাইভেট ক্লিনিকগুলিতে রোগীর মৃত্যু হলে বিল আদায়ে লাশ জিম্মি করে রাখার অভিযোগ পাওয়া যায়৷ কিন্তু হাইকোর্টের রায় – মৃতের পরিবার চিকিৎসা খরচ পরিশোধে ব্যর্থ হলেও লাশ জিম্মি করা যাবে না৷

ছবি: DW

সোমবার এ নিয়ে একটি রিটের নিষ্পত্তি করেন হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খান৷ তাঁরা রায় দেন, ‘‘কোনো ক্লিনিক বা হাসপাতাল মৃত ব্যক্তির লাশ জিম্মি করতে (ধরে রাখতে) পারবে না৷''

একইসঙ্গে গরিব রোগীদের ঐ সকল অপরিশোধিত বিল পরিশোধের জন্য স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে তহবিল গঠনের নির্দেশ দেয় আদালত৷ শুধু তাই নয়, রোগী জিম্মি না করার বিষয়টি সার্কুলার জারির মাধ্যমে সমস্ত ক্লিনিক ও হাসপাতালকে জানানোর নির্দেশও দেয় আদালত৷

২০১২ সালের ৮ জুন মোহাম্মদপুর সিটি হাসপাতালে অসচ্ছল এক ব্যক্তি তাঁর সন্তানকে ভর্তি করেন৷ কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়৷ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ২৬ হাজার টাকা বেশি বিল দাবি করে এবং তা পরিাশোধ না হলে লাশ হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানায়৷ সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রকাশ হলে বিষয়টি নিয়ে ‘হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ' বা এইচআরপিবি হাইকোর্টে রিট দায়ের করে৷ সোমবার সেই রিট নিষ্পত্তির মাধ্যমেই আদালত লাশ জিম্মি করে হাসপাতাল-ক্লিনিকের বিল আদায়ের বিরুদ্ধে আদেশ দেয়৷

‘আদালতের এই নির্দেশনা যারা মানবে না তারা আদালত অবমাননার অভিযোগে অভিযুক্ত হবে’

This browser does not support the audio element.

রায়ে মোট চার দফা নির্দেশনা দেয়া হয়:

১. চিকিৎসা খরচ পরিশোধে ব্যর্থতার কারণে কোনো ক্লিনিক বা হাসপাতাল মৃত ব্যক্তির লাশ জিম্মি করতে (ধরে রাখতে) পারবে না৷

২. গরিব রোগীদের অপরিশোধীত বিল পরিশোধের জন্য স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে তহবিল গঠন করতে হবে৷

৩. রোগী জিম্মি না করার বিষয়টি সার্কুলার জারির মাধ্যমে সকল ক্লিনিক ও হাসপাতালের প্রতি অবহিত করতে স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে জানাতে হবে৷ এবং

৪. সিটি হাসপাতালে ওই শিশুর মৃত্যুর পর তার লাশ দ্রুত হস্তান্তর না করার ব্যর্থতায় হাসপাতালটিকে পাঁচ হাজার টাকা আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামকে দান করতে হবে৷

রিটকারী আইনজীবী ‘হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ'-এর প্রধান অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আদালতের এই নির্দেশনা যারা মানবে না তারা আদালত অবমাননার অভিযোগে অভিযুক্ত হবে৷ আদালত এই চার দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের কোনো সময় বেঁধে দেয়নি৷ তবে স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষকে আদালতের নির্দেশের কপি পাওয়ার পরই তা বাস্তবায়ন করতে হবে৷''

তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘দেশের শত শত হাসপাতাল ও ক্লিনিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কীভাবে চিঠি পাঠাবে এবং তা ‘মনিটর' করবে, এ ব্যাপারে তাদের স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে৷ একই সঙ্গে অস্বচ্ছল রোগীদের জন্য তহবিল গঠন এবং তা বিতরণ প্রক্রয়া কেমন হবে, তা ঠিক করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর৷ আর আদালত দেখবে বিল পরিশোধে ব্যর্থতার কারণে লাশ যেন জিম্মি করা না হয়৷''

‘লাশ জিম্মি করে চিকিৎসা খরচ আদায় কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়’

This browser does not support the audio element.

মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘‘রিটকারী হিসেবে বিষয়টি আমারও পর্যবেক্ষণে রাখবো৷''

এ নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বা স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি৷ তবে বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ও শমরিতা হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ বি এম হারুন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘লাশ জিম্মি করে চিকিৎসা খরচ আদায় কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়৷ হাসপাতালে কেউ মারা গেলেস্বজনদের কাছেলাশ হস্তান্তর করাই হলো প্রথম কাজ৷ এরপর মৃতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সামর্থ্য অনুযায়ী বিল নিতে হবে৷''

তিনি বলেন, ‘‘সরকার যদি এখন একটা ‘ফান্ড' গঠন করে তাহলে এতে রোগী ও ক্লিনিক উভয়েরই সুবিধা হবে৷ এটা একটা বড় ধরনের মানবিক কাজ হবে৷ তা না হলে অসচ্ছল রোগীরা বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে পারবে ননা৷ তাঁদের সরকারি হাসপাতালেই চিকিৎসা নিতে হবে৷''

তাঁর মতে, ‘‘হাইকোর্টের এই রায়ে ভালোই হবে৷ আমরা হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে চলবো৷''

হাইকোর্টের এই রায় নিয়ে আপনার অভিমত কী? জানান আমাদের, লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ