ইউক্রেনের হাতে পৌঁছে গেল জার্মানির অত্যাধুনিক ও উচ্চ প্রযুক্তির লিওপার্ড টু ও যুক্তরাজ্যের চ্যালেঞ্জার টু ট্যাঙ্ক।
বিজ্ঞাপন
জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস জানিয়েছেন, ''ইউক্রেনকে ১৮টি লিওপার্ড টু ট্যাঙ্ক দিয়েছে জার্মানি। এই অত্যাধুনিক ট্যাঙ্ক কীভাবে চালাতে হয়, ইউক্রেনের সেনাকে তার প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে। ''
শলৎস বলেছেন, ''আমি নিশ্চিত, এই ট্যাঙ্ক যুদ্ধক্ষেত্রে বদল নিয়ে আসবে।'' জার্মানি ইউক্রেনকে লিওপার্ড টু ট্যাঙ্ক দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার দুই মাস পর তা জেলেনস্কি হাতে পেলেন।
এএফফি জানাচ্ছে, যুক্তরাজ্যের চ্যালেঞ্জার টু ট্যাঙ্কও ইউক্রেনে পৌঁছে গেছে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে এই খবর দিয়েছে এএফপি।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ''একবছর আগেও কেউ ভাবতে পারেননি, এভাবে বিভিন্ন দেশ আমাদের পাশে এসে দাঁড়াবে।''
লিওপার্ড টু ট্যাঙ্ক কী, ইউক্রেন কেন তা চাইছে?
যুদ্ধ তাড়াতাড়ি শেষ করতে জার্মানির তৈরি লিওপার্ড টু ট্যাঙ্ক চাইছে ইউক্রেন৷ কিন্তু জার্মানি তা দিতে চাইছে না৷ কিন্তু কেন, আর কেনইবা লিওপার্ড টু ট্যাঙ্ক এত গুরুত্বপূর্ণ?
ছবি: Philipp Schulze/dpa/picture-alliance
লিওপার্ড টু ট্যাঙ্ক চায় ইউক্রেন
ইউক্রেন ও তার মিত্ররা মনে করছে, রাশিয়া ইউক্রেনের যে অংশগুলো দখল করেছে সেগুলো থেকে রুশদের সরাতে পারলে যুদ্ধ তাড়াতাড়ি শেষ করা যাবে৷ কিন্তু সেটা করতে হলে জার্মানির তৈরি লিওপার্ড টু এর মতো ট্যাঙ্ক দরকার বলে জানিয়েছে ইউক্রেন৷ কারণ তাদের কাছে থাকা ট্যাঙ্কগুলো সেই সোভিয়েত আমলের৷
ছবি: Michael Kappeler/dpa/picture alliance
কেন লিওপার্ড টু?
১৯৭৯ সাল থেকে এই ট্যাঙ্ক ব্যবহৃত হয়ে আসছে৷ এটি প্রায় ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারে৷ সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৬৮ কিলোমিটার৷ এতে ১২০ মিমি নলের বন্দুক ছাড়াও আছে দুটি লাইট মেশিন গান৷ যুক্তরাষ্ট্রের আব্রামস ট্যাঙ্কের চেয়ে লিওপার্ড টু চালাতে কম জ্বালানি লাগে বলে ইউক্রেনের জন্য এটি বেশি উপযোগী মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷
ছবি: Moritz Frankenberg/dpa/picture-alliance
ইউরোপে বহুল ব্যবহৃত
ইউরোপের এক ডজনেরও বেশি দেশে বর্তমানে দুই হাজারেরও বেশি লিওপার্ড টু ব্যবহৃত হচ্ছে৷ ক্যানাডাও এটি ব্যবহার করছে৷ কসোভো, বসনিয়া, আফগানিস্তান ও সিরিয়া এটি ব্যবহৃত হয়েছে৷
ছবি: Michael Kappeler/dpa/picture alliance
জার্মানির চাওয়া
জার্মানি এখন পর্যন্ত ইউক্রেনকে সাঁজোয়া যানসহ অনেক অস্ত্র দিলেও একা লিওপার্ড ২ ট্যাঙ্ক দিতে রাজি হচ্ছে না৷ কারণ তারা মনে করছে এখন পর্যন্ত ইউক্রেনকে যা দেয়া হয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী হচ্ছে লিওপার্ড টু- যা একটি সমস্যার বিষয় বলে মনে করছে জার্মানি৷ তবে কোনো জোটের আওতায় ইউক্রেনকে ট্যাঙ্ক দেয়া হলে তার অংশ হিসেবে লিওপার্ড টু দেয়া যেতে পারে বলে জানিয়েছে জার্মানি৷
ছবি: Moritz Frankenberg/dpa/picture-alliance
পোল্যান্ড দিতে চায়
পোল্যান্ড বলেছে তারা ইউক্রেনকে লিওপার্ড টু দিবে৷ কিন্তু জার্মানির অনুমতি ছাড়া পোল্যান্ড সেটি ইউক্রেনকে দিতে পারবে না৷ তবে রোববার জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক জানিয়েছেন, পোল্যান্ড ইউক্রেনকে ওই ট্যাঙ্ক পাঠালে জার্মানি আপত্তি করবে না৷
ছবি: Michael Kappeler/dpa/picture-alliance
৩০০, নাকি ১০০?
ইউক্রেন বলছে, তাদের ৩০০টি লিওপার্ড টু ট্যাঙ্ক দরকার৷ তবে পশ্চিমা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ১০০টি ট্যাঙ্ক হলেই যুদ্ধের ভারসাম্যে পরিবর্তন আনা সম্ভব হতে পারে৷
ছবি: Philipp Schulze/dpa/picture-alliance
6 ছবি1 | 6
জেলেনস্কি-আইএইএ প্রধানের বৈঠক
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করলেন আএইএ-র প্রধান রাফায়েল গ্রসি। ঝাপোরিজ্বিয়া পরমাণু কেন্দ্রের কাছে বৈঠক হলো।
ঝাপোরিজ্বিয়া শহরে সোমবার এই বৈঠক হয়েছে। এই শহর ইউক্রেনের দখলে থাকলেও ঝাপোরিজ্বিয়া পরমাণু কেন্দ্র গতবছর থেকেই রাশিয়ার সেনা দখল করে রেখেছে।
গ্রসি টুইট করে বলেছেন, ''ঝাপোরিজ্বিয়া পরমাণু কেন্দ্র ও সেখানে থাকা কর্মীদের বিষয়ে জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলেছি। আমি আবার ইউক্রেনের পরমাণু কেন্দ্রগুলি নিয়ে পূর্ণ সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।''
রাশিয়া-ইউক্রেন লড়াইয়ে বারবার এই পরমাণু কেন্দ্র খবরের শিরোনামে এসেছে। বহুবার গোলার আঘাতে এই পরমাণু কেন্দ্রে বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে গেছে। তখন কর্মীরা ব্যাক আপের জন্য রাখা ডিজেল জেনারেটর চালাতে বাধ্য হয়েছেন। এই পরমাণু কেন্দ্র চালাচ্ছেন ইউক্রেনের কর্মীরা। আর রাশিয়ার সেনা তা দখল করে রেখেছে।
গ্রসি এই পরমাণু কেন্দ্রে আগে গেছেন। তিনি বলেছেন, এই পরমাণু কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হলে, শুধু ইউক্রেনে তার প্রভাব পড়বে তাই নয়, বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে তার প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে। তার প্রস্তাব ছিল, এই পরমাণু কেন্দ্রের তারপাশে একটা প্রোটেকশন জোন তৈরি হোক। রাশিয়া যেভাবে কামান ও সেনাদের পরমাণু কেন্দ্রের ভিতরে রেখেছে তিনি তার ঘোর বিরোধী।