লিবিয়ার কয়েকটি শহরে হামলা, বিরোধী শিবিরে হতাশার ছাপ
১২ মার্চ ২০১১রাস লানুফের সর্বশেষ পরিস্থিতি
বিদ্রোহীদের হাত থেকে সবগুলো শহর পুনরুদ্ধারে একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে লিবীয় নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির অনুগত বাহিনী৷ শনিবার সাঁজোয়া যান এবং যুদ্ধ বিমান থেকে হামলা করা হয় তেল সমৃদ্ধ শহর রাস লানুফে৷ অবশেষে শহরটির নিয়ন্ত্রণ সরকারি বাহিনীর হাতে চলে গেছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন বিদ্রোহী মুখপাত্র কর্নেল বশির আব্দুল কাদর৷ কাদর বলেন, ‘‘আমরা রাস লানুফ থেকে বের হয়ে এসেছি৷ অব্যাহত বোমা হামলা চালিয়ে তারা আমাদের পিছু হটতে বাধ্য করেছে৷ গত রাতের অবস্থান থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার সরে এসেছি কারণ তেল শোধনাগারে বিস্ফোরণ হতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি৷''
মিসরাটা শহরে হামলার আশঙ্কা
এদিকে, বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা পশ্চিমাঞ্চলের শেষ শহর মিসরাটা ঘিরে ফেলেছে সরকারি বাহিনী বলে জানিয়েছেন অপর বিদ্রোহী মুখপাত্র মোহাম্মাদ আহমেদ৷ যে কোন সময় গাদ্দাফির অনুগত সেনাদের আক্রমণের শিকার হতে পারে বলে জানান তিনি৷ আহমেদ বলেন, ‘‘আমরা জানি যে, জাউইয়াহ শহরের মতোই হামলার শিকার হতে যাচ্ছি আমরা৷ গাদ্দাফি এবং তার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার মতো সামর্থ্য আমাদের নেই৷ তবে আমরা শুধু স্রষ্টার উপর বিশ্বাস ও ভরসা রাখছি৷'' জাউইয়াহ শহরে নিজেদের পরাজয় সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘জাউইয়াহ শহরে যা ঘটেছে তাকে আমরা পরাজয় বলে মনে করি না বরং তা হচ্ছে মানবতার বিরুদ্ধে গাদ্দাফি বাহিনীর অপরাধ৷ তারা হত্যাযজ্ঞ চালাতে সব ধরণের ভারি অস্ত্র ব্যবহার করছে৷'' আহমেদ আরো বলেন যে, বিশ্ব সম্প্রদায় গাদ্দাফির উপর কূটনৈতিক চাপ বাড়ালেও আকাশ সীমায় নিষেধাজ্ঞা কিংবা কোন সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হওয়ায় বিদ্রোহীরা নিজেদের পরিত্যক্ত বলে ভাবতে শুরু করেছে৷
আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন
আহমেদের মতোই লিবিয়ার সংকট সমাধানে গোটা বিশ্ব তাকিয়ে ছিল পশ্চিমসহ বিশ্ব সম্প্রদায়ের দিকে৷ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থাসহ বেশ কিছু দেশ ইতিমধ্যে গাদ্দাফির উপর কূটনৈতিক চাপ বাড়িয়েছে৷ তবে লিবিয়ার আকাশ সীমায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ কিংবা গাদ্দাফি বাহিনীর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত ঐকমত্যে পৌঁছতে পারেনি ন্যাটো, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘ কিংবা আরব লিগ৷ অবশ্য আজ শনিবার মিশরের রাজধানী কায়রোতে লিবিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করছে আরব লিগ৷ আকাশ সীমায় নিষেধাজ্ঞার কথাও বিবেচনা করছেন লিগ নেতারা৷ তবে আরব লিগের বৈঠকেও ইইউ এর মতোই ফল দাঁড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: সাগর সরওয়ার